নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
মাঝে মাঝে কিছু কিছু অনুভূতি অব্যক্ত থাকে। কারন এই অনুভূতিগুলো প্রকাশের ভঙ্গি আমাদের জানা নেই। এই অনুভূতিগুলো সারাজীবন অপ্রকাশিতই থেকে যায়!!!
অফিসের রিসিপশনে বসা মেয়েটা বারবার আড়চোখে ফারিয়ার দিকে তাকাচ্ছে। গার্ডটাও এরমাঝে দুইবার এসে উঁকি দিয়ে গেছে। সাদমানের অফিসে এসেছে ফারিয়া। সাদমান মিটিংয়ে বলে সে বসে আছে ওয়েটিং রুমে। বউয়ের সাজে কতোক্ষণ অপেক্ষা করা যায়! পার্লার থেকে বিয়ের আসরে যায় নি, রিকশা নিয়ে সোজা এখানে চলে এসেছে। ফোন অফ করে রেখেছে, এতোক্ষণে বোধহয় হাজারবার ফোন দিয়ে ফেলেছে বাসা থেকে, দিক...
ছেলেটা কি করছে মিটিংয়ে! দৌড়ে ভেতরে ঢুকে যাবে কি না ভাবছে ফারিয়া। নাহ এই ভারী সাজগোজ আর শাড়ি পরে দৌড়ানো যাবে না। কি একটা অদ্ভুত ব্যাপার হবে! নিজেকে শাড়ি পরে দৌড়ানো ওদিকে তাকে ধরতে আসা রিসিপশনের মেয়ে আর গার্ডটাকে কল্পনা করে হো হো করে হেসে ফেললো মেয়েটা। এবার রিসিপশনের মেয়েটা আর গার্ড দুইজন একসাথে চলে এসেছে। স্যরি.. বলে জিভ কাটলো সে।
বোকা সাদমান কখনো ফারিয়াকে বুঝতে পারে নি বলে বিশ্বাস ফারিয়ার। চেষ্টাও করে নি। ক্লাসের ছটফটে মেয়েটা যে ধুপ করে বোকাসোকা সাদমানের ওপরই উষ্টা খেয়ে আবেগ জমিয়ে ফেলবে সেটা ব্যাচের কেউ হয়তো কল্পনাও করে নি। অথচ তিন বছর পরে এসে এখনো দুজনই বন্ধুর অভিনয় করে যাচ্ছে।
যাক সাদমান এসেছে। সাদমানকে বেশ বিধ্বস্ত লাগছে। মুখে ম্লান হাসি, হাতে একটা অফিস ফাইল। 'ওয়াও! তোকে একদম বউয়ের মতো লাগছে রে! তোর জামাই তো একদম.. আমাকে ছাড়া বিয়েটাও করতে পারিস না! এখানেই চলে এলি.. চল তোকে বাসায় পৌঁছে দেই। রিকশায় যাবি নাকি উবার ডাকবো?
ফ্যাকাসে মুখে একবার ঢোক গিলেও গলার পাথরটা সরাতে পারলো না ফারিয়া। দাঁত দিয়ে জিভ চেপে কোনোমতে কান্না চেপে মাথাটা নাড়লো। বলে কি ছেলেটা? এই গর্দভের জন্য এতোদিন.. নাহ চিন্তা করতে পারছে না সে। এলোমেলো লাগছে নিজেকে।
রিকশায় ফারিয়ার পাশে নিজেকে বেমানান লাগছে সাদমানের। আশেপাশের লোকজন চোখ বড় বড় করে তাকাচ্ছে তাদের দিকে। সে বকবক করেই যাচ্ছে বিয়ের পর যেন ফারিয়া ভুলে না যায়, হানিমুনের সব প্ল্যান সে করে দিবে, নতুন বাসায় খুঁজতে হলে যেন জানায়, ঝগড়া হলে যেন খাওয়া বন্ধ না করে দেয়, বাচ্চাকাচ্চা হলে যেন নাম তার সাজেশনে রাখে..। এতো কথা বোধহয় এই তিন বছরেও বলে নি।
সাদমানের মাথাটা যে ঠিকভাবে কাজ করছে তাও না। অফিসের ফাইলে থাকা রিজাইন পেপারটার জন্য নাকি রিকশা ভাড়ার টাকাও পকেটে নেই বলে সেটা বলা মুশকিল। মেয়েটার চোখের দিকে তাকাতে পারছে সে। পকেটের লজ্জা, জীবনের হতাশা, অতৃপ্ত ক্ষোভ আর শহরের ক্লান্তিতে...
২| ০৬ ই জুলাই, ২০২০ রাত ১১:৩২
নেওয়াজ আলি বলেছেন: ভালো একটা লেখা পড়লাম
৩| ০৬ ই জুলাই, ২০২০ রাত ১১:৩৬
রাজীব নুর বলেছেন: সহজ সরল সুন্দর লিখেছেন।
৪| ০৭ ই জুলাই, ২০২০ সকাল ১১:৪৫
আজাদ প্রোডাক্টস বলেছেন: চোখ ভেজানো লেখা
©somewhere in net ltd.
১| ০৬ ই জুলাই, ২০২০ রাত ১১:০৫
করুণাধারা বলেছেন: চমৎকার অনু গল্প! শেষে টুইস্ট দিয়েছেন, সাদমানের জন্য দুঃখিত হলাম।
আপনার লেখার হাত খুব ভালো লাগলো। লিখতে থাকুন, শুভকামনা রইল।