| নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
অমিত এল মাহিমা চৌধুরীর বাসায়।
ম্যাম আমি যেন সবকিছু পেয়ে গেছি। আমি ছবি করব ভাবতেই ভালো লাগছে। তারা আমাকে ছবি করার সুযোগ দিয়েছে। এতদিন আমার ভাগ্যকে নিয়ে নিজেই উপহাস করতাম। আর করব না। ম্যাম, এই খুশির দিনে আপনার জন্য কী করতে পারি? কিছু একটা বলেন? আজ সব পারব।
এখন এসব না ভেবে কীভাবে ছবিটা ভালো করা যায়? এটা নিয়ে ভাবো। সুযোগ পেয়েছ, কাজে লাগাও।
মেকিং অবশ্যই খুব ভালো করার চেষ্টা করব। এরকম সুযোগ আসে না। আমি ভাগ্যবান। সত্যিই ভাগ্যবান।
তুমি ঘুরতে যাবে?
আজ কোনো বাধা নেই। সারাদিন ঘুরব। আকাশ-বাতাস পাতাল সব জায়গায় ঘুরব।
তাহলে চলো।
মাহিমা চৌধুরী গাড়ি চালাচ্ছেন। অমিত বসে কথা বলছে। ম্যাম আমার ছবির প্রথম সিনটা তো আপনি পড়েছন ঐ যে হিরোইন একটা গহীন বনের মধ্যে ভাবছে। আর চারিদিকে প্রচন্ড বাতাস বইছে।
হ্যাঁ। নাইস সিন।
ওই সিনটাকে মোট চারটি শটে ভাগ করব। প্রথম শটটা হবে লো এ্যাঙ্গেল শট। মিড শট। তারপর প্যান লেফ্ট টু রাইট করে চলে যাব গহীন বনে। লং শট হবে। জায়গাটাকে ইস্ট্যাবলিস করতে হবে।
ছবির আলোচনা হচ্ছে। অমিত তার ছবিটা কীভাবে করবে তার শুটিং স্ক্রিপ্টটা সম্পর্কে বলছে। গাড়ি চলছে। বিভিন্ন জায়গায় ঘুরছে তারা।
অবশেষে তারা বাড়ি ফিরে এল।
অমিত আজ রাতে থেকে যাও।
না। হলে ফিরব। ছবিটা নিয়ে ভাবতে হবে।
এখানে ভাববে। ঐ যে লাইব্রেরি আছে। বই আছে। পড়বে। লিখবে। ভাববে। কোনো সমস্যা নেই।
না। ম্যাম। অন্য একদিন। আজ নয়।
চলেই যাবে?
হ্যাঁ। ম্যাম। একটু ভাবি গিয়ে। এখানে ভাবনা ঠিক সেভাবে হবে না।
আচ্ছা। যাও।
অমিত চলে গেলে মাহিমা চৌধুরী কেমন জানি নিস্পৃহ হয়ে গেলেন। বিছানায় শুয়ে গেলেন। পাশের ড্রয়ার থেকে ছবির এ্যালবাম নিয়ে উনার স্বামীর ছবিগুলো দেখতে লাগলেন।
অমিত এসেছে প্রোডাকশান হাউজে।
আতিয়ার রহমান বললেন, তোমার ছবির মেইন চরিত্র হচ্ছে একটা আধ্যাত্মিক মেয়ে। বয়স আঠারো। বনে থাকবে। এখন কাকে নিয়ে তুমি কাজ করতে চাও? কে পারবে তোমার এই কাহিনীতে অভিনয় করতে? চিন্তাভাবনা করো। চিন্তাভাবনা করে সব ঠিক করে নিয়ে আসবে। কালকে আমরা ছবির চূড়ান্ত বাজেটটা করে ফেলবো। প্রি-প্রোডাক্শানে আর কাজ বলতে কাহিনী লেখা শেষ। চিত্রনাট্য কে করবে? তুমি করবে। কাউকে সাথে নিও। কাকে নিবে? এটা তুমি ভাববে। চিত্রনাট্য করার পর এটাকে শুটিং স্ক্রিপ্টে নিয়ে আসতে হবে। ক্যামেরা পজিশন, কোথায় কীভাবে শট নেওয়া হবে, আর্ট ডিরেক্শান কী হবে? অভিনয়টা কী রকম হবে। সবকিছু। তারপর স্ক্রিপ্ট ইডিট করতে হবে। তুমি কাকে ক্যামেরাম্যান, কাকে আর্ট ডিরেক্টর, ইডিটর নিবে এসব আগেই চিন্তা করবে। সবার কাছেই একটা করে চিত্রনাট্য পাঠিয়ে দিতে হবে। যাতে তারা প্রস্তুতি নেওয়ার সময় পায়। ভালো একটা টিম গঠন করতে হবে। ভালো টিম ছাড়া ভালো ছবির আশাই করা যায় না।
আচ্ছা দাদা। সব ঠিক করে আপনার কাছে কাল আসব।
আচ্ছা এসো।
দীর্ঘ একমাস ধরে অমিত তার টিম তৈরি করল। প্রত্যেকটা সেক্টর ঠিক করে দেওয়া হল। সবার মধ্যে ছবিটার কাহিনীকে চাউর করা হল। অমিত চেষ্টা করছে টিমের মধ্যে একটা স্পিরিট দিতে। ক্যামেরাম্যান রাকিবুল হাসান। আর্ট ডিরেক্টর উত্তম গুহ। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক শান্তানু চৌধুরী। এদের সাথে দারুন একটা সম্পর্ক তৈরি করে ফেলল। এবার ছবির শুটিং পর্বে চলে যেতে বাকী। হিরোইন জয়া আহসান। বিপরীতে আছে নিরব। ছবিতে চরিত্র খুব বেশি না। ঘটনা একটা গহীন বনে। ক্যামেরার মাধ্যমে সামান্য একটা বাগানকে গহীন বন হিসেবে তৈরি করা হবে। ফিল্মে যেসব কারসাজি চলে সব আসবে। ছবিতে স্পেশাল ইফেক্টের কাজ অনেক বেশি। প্রযুক্তির আশ্রয় নিতে হবে। যা হোক আমাদের প্রি-প্রোডাক্শনের কাজ প্রায় শেষ। এখন চলে যেতে হবে শুটিং পর্বে।
©somewhere in net ltd.