![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
কোনো ক্ষমতাসীন দল যখন জনগণকে অবহেলা করতে শুরু করে তখন এর চেয়ে বড় অটোক্রেসি আর হতে পারে না। বিষয়টা এমন হয়ে গেছে যে এদেশের রাজনীতি যারা করবে তাদের বাধ্যতামূলকভাবে জনগণকে অবহেলা করতে জানতে হবে। এভাবে শুরু না হলে কোনোমতেই এখানে লিড দেওয়া যাবে না। লিডার হওয়া যাবে না।
তুমি লিডার, জনগণকে চালাচ্ছো। তার মানে এই নয় যে তোমার অন্যায় মেনে নেবে জনগণ? তোমাকে সম্মান দিয়েছি। তুমি যদি নিজের সম্মান রাখতে না পারো আমরা জনগণের আর কী করার আছে? জনগণ মনে মনে গালি দিবে। একসময় বিপ্লব করতে চাইবে। দেশের জন্য মরতে পারে। যেটা হয় আর কি?
আসলে এদেশে ভালো নেতৃত্বের আশা করাটা কঠিন। যে দেশে নির্বাচনের আগে নেতারা জনসেবাকে বিজনেস খাত হিসেবে বিবেচনা করে টাকা ইনভেস্টের চিন্তা করে, সে দেশে আর সব হতে পারে জনদরদী নেতা তৈরি হতে পারে না।
আমরা জনগণ শাহবাগে দিনের পর দিন আন্দোলন করে চলেছি। আমরা কাদের মোল্লার ফাঁসি চাই। সকল যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসি চাই। প্রশ্ন হলো, আমাদের চাওয়া কি সরকারের চাওয়া? আমার তা মনে হয় না। সরকার যদি বলে জনগণকে নিয়ে আমরা ফাঁসির রায় কার্যকর করতে চায়। তার প্রয়োজন কি?
দেশের সীমাহীন শক্তির জায়গাটুকু জাতিকে ভুলিয়ে রাখা হচ্ছে। একটা কথা বলি যদি এদেশকে সত্যের পথে নিয়ে আসতে চায়, যদি দুর্নীতিমুক্ত সুস্থ বাংলাদেশ গড়তে চায় জনগণ তবে অবশ্যই তাদেরকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এই ছাত্ররাজনীতির কাছে হাত পাততে হবে। এখানে আর কোনো বিকল্প ব্যবস্থা নেই। এই জায়গাটা এভাবেই তৈরি হয়েছে। এটা বাংলাদেশের জন্য যতটা আশাবাদ বয়ে আনতে পারবে ঠিক ততটায় হতাশার দিকে দেশকে ঠেলতে পারবে। এই পয়েন্ট থেকে এগিয়ে গেলে আমার মনে হয় দেশের জনগণ একটা সুন্দর বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখতে পারে।
যদি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রনেতারা চায় বাংলাদেশের জনগণের দাবি পূরণ করতে অবশ্যই পারে। এখানে পুরো বাংলাদেশ থাকে। পুরো বাংলাদেশকে রিপ্রেজেন্ট করে।
এই দেশের রাজনীতিটাকে আমার কাছে একটা সার্কাস খেলা মনে হয়। একদল ধর্মের দোহাই দিয়ে, আরেক দল মুক্তিযুদ্ধের চেতনার দোহাই দিয়ে আর আরেক দল গোলআলু হয়ে সার্কাস খেলা দেখাচ্ছে জনগণকে।
এখন সত্য মনে করে মিথ্যে বলতে হয়। আমাদের মতো তরুন প্রজন্মের কাছে এটা কত কষ্টকর যারা অনুভব তারাই শুধু বোঝে।
কীভাবে একটা আন্দোলনকে পঙ্গু করা যায়? কীভাবে একটা মুক্তির আন্দোলনকে ছকের মধ্যে ফেলে পরাধীন করা যায়? সব দেখলাম। সরকার আমাদের দেখাল। আর সরকারের বিপক্ষে কিছু বলা যাবে না। আমি সরকারকে একটা দিক থেকে ধরছি রাজনীতি যদি একে-অপরকে অপকৌশল, কূটকৌশল দিয়ে পরাজিত করার চিন্তা হয়, তাহলে গণতান্ত্রিক সংস্কৃতি কী জিনিস আমরা ভুলে যাব। ভুলে যাওয়াটাও বড় কথা নয়। বড় কথা হচ্ছে একটা সংস্কৃতি চালু হলে এটার প্রভাব অনেক দিন ধরে থাকে। ভালো সংস্কৃতি হলে ভালো প্রভাব আর খারাপ হলে খারাপ। এসব সুদূরপ্রসারী চিন্তা করার জন্য বড় বড় ডিগ্রিধারীর প্রয়োজন নাই প্রয়োজন আছে স্বশিক্ষিত মানুষের। সত্যকে ভালোবাসার মানুষের। আমাদের শিক্ষাব্যবস্থাটা যেটার বড় একটা প্রতিবন্ধক। যা হোক শিক্ষাব্যবস্থা নিয়ে লেখাটি নয়। অসুস্থ সবকিছু। অসুস্থ এদেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতি। এখন আমার মতো তরুনেরা দেশকে নিয়ে ভাবতে পারবে। দলগুলোর ভাব-সাব দেখে তাই মনে হয়। ভাবলেও দলগুলো যেভাবে ভাবে আমাদেরকে ঐভাবে ভাবতে হবে। নতুন কিছু আনা যাবে না যদিও পরিবর্তন প্রয়োজন। এমন সংস্কৃতি নতুন নেতৃত্বের জন্ম দিতে পারে না। সে তো দেখতেই পাচ্ছেন এখন জনপ্রিয় লিডার তৈরি হচ্ছে না।
দেশটা আমারও। এদেশে জন্মেছি। এদেশে বড় হয়েছি। আর যখন আমার মায়ের মতো দেশকে আমার সামনে নির্যাতন করা হয় তখন কিছুই বলা যাবে না। কেন? এই চোখবুজে চলা আর কতদিন?
শুধু সরকার নয় যে দল ক্ষমতায় আসবে সে দলের চোখেই আমরা সাধারণ জনগণ কুকুরের মতো। হাড়ের প্রত্যাশায় দাঁড়িয়ে থেকে থেকে শেষ পর্যন্ত বাঁশ খেয়ে আসতে হয়। আমাদের কোনো মূল্য নেই। আমাদের চাওয়ার কোনো মূল্য নেই। সরকার যা চায়, যেভাবে চায় আমরা জনগণ সেভাবে চলি। সরকার জনগনের দাস নয়। এখন জনগণ সরকারের দাস।
আমরা এখন সত্য ভুলে গেছি। একটা দেশের যদি শক্ত নৈতিক, সৎ অবস্থান না থাকে সে দেশ সোজা হয়ে দাঁড়াতে পারে না।
আমরা সত্য থেকে দূরে সরে আসছি। ফলে আমাদের অবস্থাও হয়ে পড়ছে প্রাণহীন, নির্জীব, অনুভূতিশূন্য। যারা আমাদের তথাকথিত লিডার এরা রাজনীতিটা শেখে, কীভাবে সত্যটাকে রিপ্লেস মিথ্যেটাকে প্রতিষ্ঠিত করা যায়?
যেখানে শুরুটা খারাপ, ফলাফল ভালো হবে কীভাবে। নিজের অবস্থানে একটা সত্য ভিউ নিয়ে দাঁড়াতে হয় যদি সে সঠিক নেতৃত্ব দিতে চায়।
যে অসত্যের পথে আমরা যাত্রা করছি এটা ভয়ংকার।
আমরা জনগণ এমন নেতৃত্ব চাই যে নেতৃত্ব আমাদের সামনে সত্যটা তুলে ধরবে। পিতৃহারা জনগণের অভিভাবক হয়ে ভালোবাসার হাত বাড়িয়ে দেবে।
©somewhere in net ltd.