নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মোঃ গালিব মেহেদী খাঁন।

মোঃ গালিব মেহেদী খাঁন

আমি মানুষের কথা বলি। মানবতার কথা বলি। স্বপ্ন দেখি সমৃদ্ধ বাংলাদেশের। নিরাপদ একটি ভূখন্ডের।

মোঃ গালিব মেহেদী খাঁন › বিস্তারিত পোস্টঃ

অনতিবিলম্বে কম্পিউটারাইজড চিকিৎসা ব্যবস্থাপত্র প্রদান বাধ্যতামূলক করুন।

১৫ ই নভেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৩:৪৩


চিকিৎসকরা রোগীদের জিম্মি করে ফায়দা লুটছেন বিষয়টা নতুন নয়। নতুন হল তাদের নিত্য নতুন ফন্দি আঁটা। যা রোগীদের নাভিশ্বাস উঠিয়ে ছেড়েছে। রোগীদের জিম্মি দশায় ফেলার সবথেকে নতুন অস্ত্রটা হচ্ছে সাঙ্কেতিক ভাষা ব্যবহার। পূর্বে যেটা ছিল নির্দোষ গাফেলতি মাত্র সেটাই এখন আরেকটি অস্ত্র হয়ে দেখা দিয়েছে।
পূর্বে রোগী বা তাদের আত্মীয়স্বজন না পড়তে পারলেও যে কোন ফার্মাসিস্টরা ব্যবস্থাপত্র পড়তে পারতেন এবং নির্দেশিত ঔষধ সরবরাহ করতে পারতেন। যে কোন রোগী যে কোন স্থান থেকে ঔষধটি সংগ্রহ করতে সক্ষম হত। ইদানীং কিছু চিকিৎসক অদ্ভুত সেই লেখার সাথে যোগ করেছেন বিভিন্ন সাঙ্কেতিক চিহ্ন যাতে তার চেম্বারের আশেপাশের ফার্মেসী ছাড়া ঐ ব্যবস্থাপত্রের পাঠোদ্ধার করা অসম্ভব। আপনি যখনই অন্য কোন এলাকার ফার্মেসী থেকে ঔষধ কিনতে যাবেন বিড়ম্বনার স্বীকার হতে বাধ্য। প্রথমত ঐ সাঙ্কেতিক লেখা তাঁরা পরতে পারবেন না দ্বিতীয়ত ব্যবস্থাপত্রে ঔষধের জেনেরিক নাম ব্যবহার না করে ব্র্যান্ডের নাম ব্যবহার করায় আপনি বেশির ভাগ সময়ই কাঙ্ক্ষিত ব্র্যান্ডটি পাবেন না যদি পেয়েও যান দেখবেন একই জেনে টিক নামের অন্য ব্র্যান্ডের ঔষধের থেকে ব্যবস্থাপত্রে লেখা ব্র্যান্ডটির দাম বেশী।
কদিন আগে ঠিক এমনই এক বিড়ম্বনার স্বীকার হয়েছিলাম। মায়ের চোখের ছানি অপারেশনের পরে বছর খানেক ভালোই ছিলেন। হঠাতই চোখে এ্যালার্জির সমস্যা দেখা দিল। মিরপুরে বোনের বাসায় থাকতে ডাক্তার দেখালেন। আমি তাড়াহুড়ো করে নিয়ে আসাতে ঔষধটা আর কেনা হয়নি। ভাবলাম উত্তরা থেকে কিনে নেব। তাজ্জব ব্যাপার! একটা ফার্মেসিতেও ফার্মাসিস্টরা প্রেসক্রিপশনের লেখা পড়তে পারলেন না। ছোট বড় মিলিয়ে কম করে হলেও পনেরটা ফার্মেসি ঘুরে অবশেষে সিদ্ধান্ত নিলাম ঐ ডাক্তারের চেম্বারের আশেপাশের কোন ফার্মেসী অর্থাৎ মিরপুর থেকেই ঔষধ কিনে আনব।
ফার্মাসিস্টদের কাছে এমন লেখার ব্যাখ্যা জানতে চাইলে তাঁদেরই একজন এই চমকপ্রদ তথ্যটি জানাল। এখানেও ডাক্তারের ব্যবসা, মানে কমিশন জড়িত! এই লেখাও ওনার চেম্বারের আশেপাশের ফার্মেসির ফার্মাসিস্টরাই পরতে পারবেন। এবং যথারীতি তিনি তার কমিশনটিও পেয়ে যাবেন।
চিকিৎসকদের দিন দিন এমন অর্থলিপ্সু হয়ে যাওয়ার পেছনের কারণ একটিই আর তা হল তাদের অবৈধ অর্থ গ্রহণের সুযোগ করে দেয়া। একদিকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় তথা সরকারের উদাসীনতা অন্যদিকে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান কর্তৃক লোভনীয় সব অফার দেয়া। যা তাদের প্রতিনিয়ত আরও বেশী লোভী আরও বেশী অমানবিক করে তুলছে।
বাংলাদেশের মহান(!) চিকিৎসকদের আয়ের কিছু খাত দেখলে সহজেই বুঝা তাঁরা কতটা সেবার মন নিয়ে এই মহান পেশায় বিচরণ করছেন। নিম্নে তাদের নিয়মিত আয়ের খাতগুলো দেয়া হল-
বৈধ আয়:
নির্ধারিত মাসিক বেতন। গাড়ী, বাড়ী ভাতা।
অবৈধ আয়:
*কর্মস্থলে অনুপস্থিত থেকে বিভিন্ন হসপিটালের কল এটেন্ড।
*ঔষধের ব্র্যান্ডের দালালি বা ঔষধ কোম্পানির দালালি।
*বিভিন্ন হাসপাতালে ও ডায়াগনোসিস কনসালন্টেন্সি।
*বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে পদায়ন ভাতা।
*মেডিকেল ইকুইপমেন্ট এর দালালি।
*পরীক্ষা নিরীক্ষা বাবদ ডায়াগনোসিস সেন্টার থেকে ৪০ থেকে ৬০ ভাগ কমিশন আদায়।
*বিভিন্ন সার্টিফিকেট ও প্রত্যায়ন পত্র দেয়া বাবদ সম্মানী।
*কেবিন বাণিজ্য।
*হাসপাতালে খাবার ঔষধ ও বিভিন্ন সরবরাহ থেকে কমিশন আদায়।
*ফিজাশিয়ান স্যাম্পল বাণিজ্য।
*অপারেশন, ফিজিওথেরাপি ও রেফার্ড সুবিধা।
*ঔষধ কোম্পানির উপঢৌকন।
*আন্তর্জাতিক দাতাদের মাধ্যমে ডাক্তারি ও ঔষধ খাতে হাজার হাজার কোটি ডলারের লোণ,গ্রান্ট,এইড।

ওষুধ কোম্পানির প্ররোচনায় বাংলাদেশের চিকিৎসকরা অধিকাংশ ক্ষেত্রে অনৈতিক সুবিধা নিয়ে রোগীদের চিকিৎসা ব্যবস্থাপত্রে অপ্রয়োজনীয় ওষুধ লিখেন। দেশের চিকিৎসায় ৫০ ভাগ ওষুধই অপ্রয়োজনে প্রয়োগ করা হয়। যা রোগীকে বিভিন্নভাবে আরও অসুস্থ করে তুলছে।
ডক্টরস ফর হেলথ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট, ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ (ডাব্লিউ বিবি) ও আন্তর্জাতিক সংগঠন দি ইউনিয়নের যৌথ উদ্যোগে বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্র মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এক সেমিনারের আলোচক ডাক্তার এইচ এম লেলিন চৌধুরী নিজেই কিছুদিন আগে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার উদ্ধৃতি দিয়ে এ মন্তব্য করেন।
এর বাইরেও রয়েছে চিকিৎসকদের নিয়ন্ত্রন হীন পারিশ্রমিক নেয়ার প্রবণতা যা ৫০০ হতে ১৫০০ টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে।
এরপরেও তাদের চিকিৎসক বলবেন নাকি সেবকের নামে দুর্বৃত্ত বলবেন সেটা আপনার বিবেচ্য।

যে মানুষটি ৫০০ থেকে ১৫০০ টাকা খরচ করে একজন চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন তিনি কেন লেখাপড়া জানা স্বত্বেও চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র পড়তে পারবেন না? কেন তাকে চিকিৎসকের পছন্দের ব্র্যান্ডের ঔষধ সেবন করতে হবে? কেন তাকে চিকিৎসকের ইচ্ছে অনুযায়ী নির্দিষ্ট ল্যাব থেকে যাবতীয় টেস্ট করাতে হবে?
কেন হাজার টাকা খরচ করে একটি টেস্ট করে আবার ডাক্তারের শরণাপন্ন হতে হবে রিপোর্ট সম্পর্কে জানতে। জটিল বিষয়গুলোর কথা আলাদা। সাধারণ রিপোর্ট গুলির ফলাফল কেন ডায়গনষ্টিক সেন্টার থেকেই রোগীকে বলে দেয়া হবে না?
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় তথা সরকারের কাছে কি এর সদুত্তর আছে?

উদাহরণ স্বরূপ কিছুদিন আগে হার্টের অবস্থা জানতে ইসিজি করালাম রিপোর্টে কোন কমেন্ট না দেখে জানতে চাইলাম হার্টের কি অবস্থা?
টেকনিশিয়ান বলছে আমি বলতে পারব না ডাক্তার দেখাতে হবে?
অদ্ভুত তো আমার তো কোন সমস্যা নেই, ডাক্তার দেখাব কেন? আপনি বুঝতে পারছেন না?
পারছি, তবে বলার নিয়ম নেই।
ডাক্তারের ভিজিট কত?
বেশী না পাঁচশ।
আচ্ছা চলুন আপনার ডাক্তারের কাছে যাই।
ডাক্তার রিপোর্ট দেখে বললেন এমনি তো কোন সমস্যা দেখছি না তবে আরও ভাল করে জানতে হলে ইকো-কার্ডিওগ্রাফ করতে হবে। মানে আবার আরেক টেস্ট তাও আবার পাঁচ সাতশ নয় একেবারে পাঁচ হাজার টাকার ধাক্কা! এবার বুঝুন আমরা কি অবস্থায় আছি।

সরকার যত চেষ্টাই করুক না কেন কিছু নির্দিষ্ট বিষয়ে আলোকপাত না করলে তার কোন সুফলই সাধারন রোগীদের কাছে পৌঁছুবে না। সাধারন রোগীদের উন্নত চিকিৎসা সেবা প্রদানের স্বার্থে অনতিবিলম্বে-
* চিকিৎসকদের ব্যবস্থাপত্র সকলের পড়ার উপযোগী করে কম্পিউটারাইজড করা বাধ্যতামূলক করুন।
* প্রতিটি টেস্ট রিপোর্টে ফলাফল লিখে দেয়া বাধ্যতামূলক করুন।
* ব্যবস্থাপত্রে ঔষধের ব্র্যান্ড নাম না লিখে জেনেরিক নাম ব্যবহার বাধ্যতামূলক করুন।
এ ছাড়াও চিকিৎসকদের নানা অনিয়ম এবং অহেতুক টেস্ট করানো থেকে বিরত রাখতে কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করুন।

[email protected]
সহযোগিতায়ঃ লস্কর নাজমুস সাকিব

মন্তব্য ১৬ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১৬) মন্তব্য লিখুন

১| ১৫ ই নভেম্বর, ২০১৬ রাত ৮:০৩

করুণাধারা বলেছেন: খুব ভাল বিষয় আলোচনা করেছেন।

এই তিক্ত অভিজ্ঞতা আমারো হয়েছে। বহু চেষ্টা করেও আমি প্রেসক্রিপশন পড়তে পারিনি। যে ফার্মেসী থেকে ঔষধ কিনেছিলাম তারাই যে পড়তে পেরেছিল তার গ্যারান্টি কই!

১৬ ই নভেম্বর, ২০১৬ সকাল ১১:০০

মোঃ গালিব মেহেদী খাঁন বলেছেন: @ করুণাধারা আপনাকে অশেষ ধন্যবাদ। আপনার প্রশ্নটা আমারও, যে ফার্মেসী থেকে ঔষধ কিনেছিলাম তারাই যে পড়তে পেরেছিল তার গ্যারান্টি কই!
আমরা তোঁ এও শুনেছি ভুল ঔষধ খেয়ে দেশে প্রতিবছর অনেক লোক মারা যায়।

২| ১৫ ই নভেম্বর, ২০১৬ রাত ৯:২৫

প্রিন্স অফ ব-দ্বীপ বলেছেন: ভাই একটু কারেকশান ছিল, "ঔষধের জেনে টিক নাম" নয় "জেনেরিক নাম"। লেখার বিষয়বস্তু ভাল হয়েছে, তবে বিষয়টা কি আমাদের সব পেশাতেই টাউট বাটপার লোকের অভাব নাই, সেই হিসেবেই ডাক্তারি পেশাতেও এর আছে, তাকিয়ে দেখা ছাড়া কিছুই করার নাই আমাদের

১৬ ই নভেম্বর, ২০১৬ সকাল ১১:০৪

মোঃ গালিব মেহেদী খাঁন বলেছেন: প্রিন্স অফ ব-দ্বীপ অশেষ ধন্যবাদ আপনাকে। দ্বিধাটা জেনে টিক, জেনেরিক নিয়ে আমারও ছিল শুধরে নিলাম। তাকিয়ে দেখা ছাড়া কিছুই করার নাই আমাদের এ কথাটার সাথে আমি একমত নই বলেই তো এই লেখা। ভাল থাকুন নিরন্তর।

৩| ১৫ ই নভেম্বর, ২০১৬ রাত ৯:৪৪

আহমেদ জী এস বলেছেন: মোঃ গালিব মেহেদী খাঁন ,




বিষয়টি গুরুতর সন্দেহ নেই । ভেবে দেখার মতো ।

এ ব্যাপারে চিকিৎসককে ৫০০ থেকে ১০০০ টাকা ফি দিয়ে দেখানো রোগীরাই সমঝে দিতে পারেন এই বলে যে , " ডাক্তার সাহেব এই লেখা পড়া যাবেনা । পরিষ্কার করে ব্যবস্থাপত্র লিখুন যাতে আমি বুঝতে পারি ।"
এখানে রোগী একজন ভোক্তা । এটা বলা তার ভোক্তা আইনের অধিকারে সংরক্ষিত । সব রোগীরা এভাবে সোচ্চার হলেই তবে ঐসব চিকিৎসকদের টনক নড়বে । সরকার কিছুই করতে পারবেনা । স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়ও ফেল করবে । চিকিৎসকরা একজোট হয়ে স্ট্রাইক ডেকে বসবে ।

মনে রাখতে হবে - জনগণই সকল ক্ষমতার উৎস

১৬ ই নভেম্বর, ২০১৬ সকাল ১১:১৬

মোঃ গালিব মেহেদী খাঁন বলেছেন: জনগণই সকল ক্ষমতার উৎস ঠিক আছে। তবে তার আইনগত ভিত্তি থাকাটাও জরুরী।
আর একজন মানুষ যখন অসুস্থতার কারনে চিকিৎসকের শরনাপন্ন হন তখন ঐ চিকিৎসকের কাছ থেকে দাবী আদায় করার মত মানসিক জোর কোন রোগীর থাকার কথা নয়। কাজেই এখানে রোগী নয় সোচ্চার হতে হবে তার স্বজনদের।

৪| ১৫ ই নভেম্বর, ২০১৬ রাত ১০:০৭

ভ্রমরের ডানা বলেছেন:
শিক্ষার উদ্দেশ্য যখন হয় অর্থ তখন তো এমন হবেই! এই পেশার প্রতি মানুষের বিশ্বাস উঠে গেছে!

৫| ১৫ ই নভেম্বর, ২০১৬ রাত ১০:০৭

ভ্রমরের ডানা বলেছেন:
শিক্ষার উদ্দেশ্য যখন হয় অর্থ তখন তো এমন হবেই! এই পেশার প্রতি মানুষের বিশ্বাস উঠে গেছে!

১৬ ই নভেম্বর, ২০১৬ সকাল ১১:১৭

মোঃ গালিব মেহেদী খাঁন বলেছেন: আমাদের দুর্ভাগ্য!

৬| ১৬ ই নভেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৩:৪২

হাসান মাহবুব বলেছেন: এই তাহলে দেখার বাকি ছিলো! কী চতুর ফন্দি! ছি ছি!

৭| ১৬ ই নভেম্বর, ২০১৬ রাত ১০:৫৪

ইমরুল ওয়ার্সী বলেছেন:
আপনার লেখার প্রায় সবগুলো তথ্য নিয়েই বিতর্কের অবকাশ আছে কিন্তু সময়ের অভাবে শুধুমাত্র ৩ টি বেসিক বিষয়ে আপনার ভুল সংশোধন জরুরী মনে করলাম তাই ওই ৩ টি বিষয়েই আলোকপাত করলাম।
১। প্রেসক্রিপশন জিনিশটা আসলে কি এবং কার বরাবরে দেয়া হয় সেটা জানা জরুরী। একটা ছবি দিয়েছি পড়লেই জানতে পারবেন এটা একটা নির্দেশনা ফার্মাসিস্টের বরাবরে। এটা রুগী বা জনসাধারনের জন্য লেখা হয় না। তাই ফার্মাসিস্ট সেটা বুঝলেই চলবে।
২। জেনেরিক নাম বিষয়েও জানা দরকার। বাংলাদেশের বাজারে দেশি বিদেশী কয়েক হাজার কম্পানির ওষুধ বাজারজাত হয়। তার মানে এই হাজার কম্পানির একই ওষুধের হাজারটা ট্রেড নাম আছে। এখন আপনাকে ট্রেড নাম লিখলে তো ডাক্তারেরই শুবিধা তাই না? এতো নাম মুখস্ত করার প্যারা নিতে হয় না। কিন্তু কথা আছে অন্য জায়গায়। আমি একটা প্রজেক্টের টেন্ডারে ওষুধ ক্রয়ের টেন্ডার কাছে থেকে দেখার সুযোগ হয়েছিল। যে ওষুধের মার্কেট প্রাইজ ৪০ টাকা পিস সেই ওষুধ একটা কম্পানি টেন্ডার ড্রপ করেছে ৫ টাকা পিস। আমি তাঁকে আড়ালে ডেকে জিজ্ঞেস করেছিলাম তার সন্তানকে ওই ওষুধ খাওাবেন কি না। তিনি অকপটে উত্তর দিয়েছিলেন "না"। তিনি আরো বলেছিলেন "শুধু চাকরী করি বলে এই ওষুধের কথা বলি"। একজন ডাক্তার যখন জেনেরিক নামে প্রেসক্রিপশন লিখবে তখন আপনি কোনটা কিনবেন সবচেয়ে দামিটা নাকি কম দামিটা? ফার্মাসিস্ট আপনার কাছে কোনটা বিক্রি করবে তার যেটা বিক্রি করে বেশি লাভ হবে নাকি যেটায় কম?
৩। টেস্ট রিপোর্ট জিনিশটা আসলে কি এটা জানা জরুরী। আপনার লেখা পড়ে মনে হলো যে শুধুমাত্র টেস্ট রিপোর্ট দেখেই একজন রুগীর অবস্থা জানা যায়। আসলে তা না। একেকটা রিপোর্ট একেকটা প্যারামিটার মেজার করে। সবগুলো মিলিয়ে রুগীর লক্ষনের সাথে মিলিয়ে রোগের ডায়াগনোসিস করা হয়। এক্ষেত্রে সঙ্কস্লিষ্ট ডাক্তারই পারে আপনার যথাযথ ডায়াগনোসিস করতে। অর্থাৎ একই মাত্রার কোন রেজাল্ট একজনের জন্য স্বাভাবিক আবার আরেকজনের জন্য অস্বাভাবিক হতে পারে অন্য লক্ষন গুলির উপরে ভিত্তি করে। আর ইসিজির বিষয়ে যে কথা বলেছেন। কোনো টেকনিশিয়ানই ইসিজির বিষয়ে কমেন্ট করতে পারে না(সে আপনাকে যাই বলুক)। এমন কি অনেক ডাক্তারও ইসিজিতে অনেক সমস্যা ধরতে পারে না। এটা একটা জটিল বিষয় এবং চর্চার বিষয়। বিশেষ করে কার্ডিওলোজিস্ট এবেং এনেস্থেসিয়ার ডাক্তাররাই ইসিজি ভালো বোঝে।
কোনো বিষয়ে লেখার আগে সেই বিষয়ে অন্তত ভালোভাবে জেনে নেয়া আবশ্যক। আপনার আশেপাশেই আছে ডাক্তার। একটু কথা বলুন তাদের সাথে। নাহয় একদিন আপনার অপছন্দের মানুষের কাছেই একটু বসলেন :-) পৃথিবীতে কত যুদ্ধ থেমে গেছে শত্রুর সাথে বসে সন্ধি করে
ধন্যবাদ

২৬ শে নভেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৫:০৫

মোঃ গালিব মেহেদী খাঁন বলেছেন: প্রেসক্রিপশন একটা নির্দেশনা ফার্মাসিস্টের বরাবরে। এটা রুগী বা জনসাধারনের জন্য লেখা হয় না। তাই ফার্মাসিস্ট সেটা বুঝলেই চলবে। কেন রোগীদের জন্য লেখা হবে না সে প্রশ্নটা আপনার কাছেই থাকল।
নিন্মমানের ঔষধ তৈরির বিরুদ্ধে সরকার ব্যবস্থা নেবে তাই বলে বাজার উন্মুক্ত করে যথেচ্ছাচারের সুযোগ করে দেয়া যায় না।
হ্যাঁ টেষ্ট রিপোর্ট একটি জটিল বিষয় সেটা একজন অসুস্থ মানুষের বেলায় যেমন তেমনটা একজন সুস্থ মানুষের বেলায় নয়। একটি রিপোর্ট দেখে রুগীর সঠিক তথ্য না জানা গেলেও রিপর্টটি যা বলছে সেটা তো উল্লেখ করা যায়, প্রয়োজনে সেটাও রিপোর্টে উল্লেখ করে দেয়া যেতে পারে। ঠিক যে কথাটি চিকিৎসক বললেন হুবুহু সেটাও লিখে দেয়া যেতে পারে যেখানে কোন উপসংহারে পৌঁছানো যায় না।
অশেষ ধন্যবাদ জনাব ইমরুল ওয়ার্সী আপনাকে।

৮| ২৭ শে নভেম্বর, ২০১৬ রাত ১২:০৬

ইমরুল ওয়ার্সী বলেছেন: দেখুন আমি আগেই বলেছি আপনাকে বিষয়গুলি বোঝার চেষ্টা করতে হবে। প্রেস্ক্রিপশনের নিয়মের বিরুদ্ধে আমার কাছে প্রশ্ন করে কি হবে? আমি আপনাকে রেফারেন্স দিয়েছি প্রেসক্রিপশন জিনিশটা কি সেই বিষয়ে। আপনি তাদের গিয়ে জিজ্ঞেস করেন প্রেশক্রিপশন কেন ফার্মাসিস্ট এর বরাবরে লেখা হয়। তাদের কাছে আপনার যুক্তি উপস্থাপন করেন সারা বিশ্বে যেভাবে প্রেশক্রিপশন লেখা হয় তা কেন আপনার জন্য প্রযোজ্য হবে না। তারা কনভিন্স হলে অবশ্যই আপনার জন্য নতুন সংজ্ঞা লেখা হবে।

সরকার নিম্নমানের ওষুধের বিরুদ্ধে ব্যাবস্থা নিলে তো ঝামেলা মিটেই যেত। যতদিন তা হচ্ছে না ততদিন ট্রেড নামের প্যারা ডাক্তারদের অনিচ্ছাকৃত ভাবেই নিতে হচ্ছে এতে তাদের প্রতি সহানুভুতিটা দেখাতে আপনার আপত্তি কোথায় সেটাই বোঝা গেলো না। যেখানে ৩০০ ওষুধের নাম মুখস্থ করলেই চলতো সেখানে তাদের ৪০০০ নাম মুখস্থ করতে হচ্ছে তাই না? আপনি আসলে এই বিষয়ে মূল পয়েন্টটিই হারিয়ে ফেলেছেন। আপনার যেখানে সরকারের কাছে দাবি করা উচিৎ ছিল ওষুধের গুনগত মান আর দামের বৈষম্য দূর করার। তা না করে জেনেরিক নামে ওষুধ লিখতে বলছেন ডাক্তারদের। কি আত্নঘাতি কথা এটা এখনো হয়তো আপনি বোঝেন নি। কয়েকটি কম্পানির প্যারাসিটামল সিরাপ খেয়ে অনেকগুলো শিশু মৃত্যুর ঘটনা হয়তো আপনি ভুলে গেছেন। সেই ঘটনায় তাদের কারো বিরুদ্ধে কঠোর ব্যাবস্থা নিতে পারেনি সরকার কিংবা আদালত। কারণ সরকারের কাছ থেকে লাইসেন্স নিয়ে ড্রাগ এডমিনিস্ট্রেশন থেকে ছাড়পত্র নিয়েই তারা অশুধটি বাজারযাত করেছিল। এই অবস্থায় ডাক্তাররা আপনাকে জেনেরিক নামে ওষুধ লিখলে আপনিই সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্থ হবেন।
টেস্ট এর রিপোর্ট এর ক্ষেত্রেও আমার কথাই ধরতে পারেননি। আসলে এই বিষয়ে আপনার ধারনা অত্যান্ত কম। আবারো আমার কমেন্টটি পড়ে দেখুন এবং বুঝতে চেষ্টা করুন। একজন রুগীর কয়েকটা টেস্টের রিপোর্ট এর সাথে রুগীর লক্ষন এবং শারিরিক পরিক্ষার ফলাফল মিলিয়ে রোগের ডায়াগনোসিসের ব্যাপারে একটা সিদ্ধান্ত নেবেন ডাক্তার। ডায়াগনোস্টিক সেন্টারে প্যাথলোজিতে আপনি একটি টেস্ট করালেন, রেডিওলজি আরেকটি টেস্ট করলেন যে দুইজন টেকনিশিয়ান টেস্ট গুলো করলো তারা তো অন্য বিষয় সম্পর্কে জানে না। তারা রুগীর লক্ষন ও শরীর সম্পর্কে জানে না তারা কি করে আপনার ডায়াগনোসিস বলতে পারবে??? অনেকক্ষেত্রে টেস্টের একই রিডিং কারো জন্য মারাত্নক হিসেবে বিবেচনা করা হয় আবার কারো জন্য স্বাভাবিক। ওই রিডিং দেখে টেকনিশিয়ান কিভাবে আপনার সমস্যা সম্পর্কে বলবে???
আপনার ধারনার চাইতে মেডিকেল সাইন্স অনেক বেশি জটিল। সে কারনেই সবচেয়ে মেধাবী দের মধ্যে থেকেও যাচাই বাছাই করে মেডিকেলে ভর্তির জন্য ছাত্র সিলেক্ট করা হয়। তাই শুধু চাইলেই তো হবে না; নেয়ার ক্ষমতাটাও তো থাকতে হবে। একটা ১ লিটারের বোতলে সর্বোচ্চ ১ লিটারই আটবে। তাতে ১০০ লিটার দুধ ঢালুন আর ২০০ লিটার। আপনাকে ধন্যবাদ।

৩০ শে নভেম্বর, ২০১৬ দুপুর ১:১৮

মোঃ গালিব মেহেদী খাঁন বলেছেন: আপনার সাথে যদি একমত হতে পারতাম আমিও স্বস্তি পেতাম। সমস্যা হল চিকিৎসা সেবাকে যে মহান পেশা বলে শুনে এসেছি আমাদের মহান চিকিতসকগন সেটাকে আলু পটলের আড়দ্দারীর থেকেও নিচে নামিয়ে এনেছেন। তাদেরকে বিশ্বাস করাই এখন দায়।

৯| ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:৩১

ইমরুল ওয়ার্সী বলেছেন: জী এইবার আর কোন যুক্তি খাটে না। এটা আপনার বিশ্বাসের জায়গা। আপনি স্বাধীন ভাবেই যে দিনকে রাত আর রাতকে দিন ভেবে স্বস্তি পেতেই পারেন। খিস্তী খেউর করে তৃপ্তি পেতেই পারেন। কার কি বলার আছে?
মুলত আপনার মত অনেক মানুষ আছে এই দেশে যারা সিনেমায় উত্তম কুমারের মায়াময় অভিনয় দেখেই ডাক্তার বা স্বাস্থ্য ব্যাবস্থা সম্পর্কে মনের মধ্যে একটা ধারনা এঁকে ফেলে। যেখানে একজন ডাক্তার রাস্তায় আহত একজন যুবতিকে রাস্তা থেকে তুলে নিজ হাতে তার রক্ত মুছে দিয়ে নিজের গাড়িতে করে নিজের হাসপাতালে নিয়ে যাবেন, সেখানে বিনে পয়সায় চিকিতসা করে সুস্থ করে তুলবেন, নিজের পয়সায় শাড়ি গহনা কিনে দেবেন, মন ভালো করার জন্য নিজের টাকায় দার্জিলিং বেড়াতে নিয়ে যাবেন এবং নিজের বিছানায় নিয়ে শুবেন। এভাবে ডাক্তারি সেবা মানেই বিনা পয়াসায় চিকিতসা, খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান তথা শারিরিক, মানসিক এবং যৌন সকল প্রকার ক্ষুধা মিটানো। এর ভিন্নতা হলেই সেটা আর সেবা না; ব্যাবসা হয়ে যায়।
ডাক্তার যে স্বাস্থ্য বাবস্থার মত একটা ব্যাপক বিষয়ের মধ্যে একটা অংশ মাত্র এটা জানার আগ্রহই বা কয়জনের আছে? গ্রামে গঞ্জের কথা বাদই দিলাম; ঢাকা মেডিকেল বা অন্যান্য সরকারী হসপিটালে আজ পর্যন্ত ২৪ ঘন্টা প্যাথলজী সেন্টার চালু হয়নি। বিকেলের পর থেকে প্যাথলজী সেন্টার পরদিন সকাল পর্যন্ত বন্ধ থাকে। এই অবস্থায় ২৪ ঘন্টা ইমার্জেন্সি সেবা কিভাবে সম্ভব? আপনার বাবা যদি রাতের বেলায় অসুস্থ হন। ডাক্তার কি তখন ঝাড় ফুকের চিকিতসা দেবেন?? ওই সময় সঠিক চিকিতসা দেবার দায়টা কার। স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়ের নাকি ডাক্তারদের???
আপনার সন্তান যদি অসুস্থ হয়ে ডাক্তারের প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী ওষুধ খেয়ে মারা যায় ( প্যারাসিটামলের বিষক্রিয়ার মত) কাকে দায়ী করবেন? ওষুধ কম্পানি? ওষুধ প্রসাশন? স্বাস্থ্য মন্ত্রী? নাকি ডাক্তারকে?? কে আপনার আক্রমনের সহজ শিকার হবে? কার বিরুদ্ধে লাঠি ধরা সহজ, কার বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগ করা সহজ?? কার বিরুদ্ধে কলম ধরা সহজ???
আপনি আমি সবাই জানি উত্তরটা....
আপনার পেছনের পথটুকুই বলে দেয় আপনি আগামিতে কোন সাহসীর নাকি কাপুরুষের পথে হাটবেন।
আমি স্বস্তি পেতাম যদি বিশ্বাস করতে পারতাম আপনি সাহসী পথে হাটবেন।
অনেক অনেক ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.