নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

এই ব্লগে সকলকে শুভেচ্ছা

দেশকে ভালবাসি

ত্বহির

দেশকে ভালবাসি

ত্বহির › বিস্তারিত পোস্টঃ

সরকারি চিনিকলগুলোকে সক্রিয় করলে দেশের চাহিদা মিটিয়েও সম পরিমাণ রফতানি করা সম্ভব

১৮ ই মে, ২০১৩ রাত ১০:১৪

মিষ্টিজাতীয় খাবার ছাড়া বাঙালির চলেই না। আর সে খাবারের অপরিহার্য উপাদান হলো চিনি। তাই চিনি বাঙালির একটি অপরিহার্য ভোগ্যপণ্য। অথচ দেশে মানসম্পন্ন চিনিকল, কাঁচামাল হিসেবে আখের পর্যাপ্ত উৎপাদন থাকা সত্ত্বেও প্রতিনিয়তই বেড়ে চলেছে চিনির দাম এবং বিপুল পরিমাণ চিনি আমদানি করতে হচ্ছে। আমদানি করার কারণে চিনির মূল্য খোলাবাজারে যে যেভাবে পারছে, বাড়িয়ে দিচ্ছে।



জানা গেছে, প্রায় ২০০ কোটি টাকার রাজস্ব গচ্চা দিয়ে বেসরকারি পাঁচ চিনি রিফাইনারি মালিককে সুবিধা দেয়ার বিষয়টি পাকাপোক্ত করা হয়েছে। ওই সুবিধা দিতে প্রতিটন চিনির উপর থেকে নির্ধারিত ১৫০০ টাকা শুল্ক তুলে নিতে এনবিআরকে সুপারিশ করেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। অথচ এই শুল্ক আরোপের কারণে চলতি বছরে সরকারের প্রায় ২০০ কোটি টাকা রাজস্ব আয় হয়েছে। শেষ পর্যন্ত সরকার এ সিদ্ধান্ত নিলে বিপুল অংকের এই আর্থিক সুবিধা পুরোটাই চলে যাবে পাঁচ উদ্যোক্তার পকেটে। এতে রাষ্ট্র বড় ধরনের রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হবে।



বিদেশ থেকে অপরিশোধিত চিনি আমদানি করছে দেশের ৫টি বেসরকারি চিনি উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান।



বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাবে বছরে প্রায় ১৫ লাখ মেট্রিক টন চিনির চাহিদা রয়েছে। সরকারের ১৫টি চিনি কলে উৎপাদন হচ্ছে ৬০ থেকে ৮০ হাজার মেট্রিক টন। বিদেশ থেকে ফিনিশড চিনি আমদানি এখন হচ্ছে না। ফলে ১২ থেকে ১৩ লাখ মেট্রিক টন চিনির চাহিদা পূরণ করছে বেসরকারি পাঁচটি চিনি উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান। এ প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে রয়েছে সিটি গ্রুপ ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড, ইউনাইটেড সুগার মিলস লিমিটেড, দেশবন্ধু সুগার মিলস লিমিটেড, এস আলম রিফাইন্ড সুগার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড ও আবদুল মোনেম সুগার রিফাইনারি লিমিটেড। সরকার শুল্ক তুলে নিলে এই পাঁচটি কোম্পানিই বেনিফেসিয়ারী হবে। জনগণের ভোগান্তি বাড়বে।



উল্লেখ্য, গত বছরও সরকার চিনির উপর আমদানি শুল্ক কমিয়েছিল। ব্যবসায়ীরা সে সুবিধা গ্রহণ করেছেন বটে, কিন্তু সাধারণ গ্রাহকদের বেড়ে যাওয়া দামেই চিনি কিনতে হয়েছে।



শুধু পবিত্র ঈদ উনার সময়ই নয়, চিনি আমদানির ক্ষেত্রে একটি স্থায়ী নিয়মের ভেতর আনা প্রয়োজন আমদানিকারকদের। কোন ব্যবসায়ী কত টন চিনি আমদানি করছে, কত মূল্যে আমদানি করছে এবং বাজারে কত মূল্যে তা সরবরাহ করছে এ ব্যাপারে সরকারের একটি জোরালো ও কার্যকরী মনিটরিং থাকা প্রয়োজন। যেসব ব্যবসায়ী অধিক মুনাফার লোভে আমদানিকৃত চিনি অন্যায্য মূল্যে বাজারে ছাড়ার কৌশল অবলম্বন করবে, তাদের বিরুদ্ধে একটি দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা গ্রহণও কিছুটা কাজে আসতে পারে। তার চেয়েও যেটা গুরুত্বপূর্ণ তা হলো, দেশের চিনিকলগুলোতে উৎপাদন বৃদ্ধি করে উৎপাদিত চিনির সঠিক সরবরাহ নিশ্চিত করা। আমাদের মনে রাখা দরকার, শুধু মিলগুলোতে স্বচ্ছতা আনা গেলে এবং দুর্নীতিমুক্ত করা গেলে আমদানিনির্ভরতা কমে যাবে।



আমরা লক্ষ্য করছি, কৃষকরা দিন দিন আখ চাষে উৎসাহ হারিয়ে ফেলছেন। এর কারণ আখের সঠিক মূল্য না পাওয়া, মিলগুলোর সঠিক সময়ে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে না দেওয়া এবং সঠিক মূল্য পরিশোধ না করা। এসব ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা আনা জরুরি। দেশে আরো চিনিকলের প্রয়োজনও রয়েছে। পর্যাপ্ত পরিমাণ চিনি উৎপাদন করে বাজারে স্বচ্ছতার মাধ্যমে সরবরাহ করা গেলে মূল্যবান বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় করা যাবে।



সরকার পরবর্তী বছরে অধিক আখ চাষে কৃষকদের উৎসাহিত করতে প্রচারণার আশ্রয় নিতে পারে। সর্বোপরি সরকারের উদ্যোগে একটি অব্যবস্থাপনা আমাদের চোখে পড়ল। চিনির চাহিদা থাকবে পবিত্র ঈদপূর্ব সময়ে কয়েকগুণ বেশি। এখন চিনি আমদানিও হবে বেশি। কিন্তু ভোক্তারা এখন তার সুযোগ পাবেন না। তাহলে সরকার শুল্কমুক্ত সুবিধা দেওয়ায় লাভ কী হলো?



প্রতি বছর বাজেট এলে বাংলাদেশ সুগার মিল অ্যাসোসিয়েশন থেকে শুল্ক প্রত্যাহারসহ বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা চেয়ে থাকে।



এ বছরও ওই অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছে। চিঠিতে বলা হয়, ৫টি চিনির মিলে উৎপাদন ক্ষমতা ৩৩ লাখ মেট্রিক টন। কিন্তু দেশের চাহিদা হচ্ছে ১৪ থেকে ১৫ লাখ টন। আর বাস্তবে সরকারি ১৫টি চিনিকলে উৎপাদন হচ্ছে ১ লাখ ৫০ হাজার মেট্রিক টন। এর জন্য একমাত্র দায়ী সরকারের পৃষ্ঠপোষকতাহীনতা, উদাসীনতা এবং আত্মঘাতী প্রক্রিয়া।



সরকার যদি দুর্নীতির রাস্তা থেকে সরে আসতো, সিন্ডিকেটের থেকে কমিশন না খেতো, দেশের চিনিকলগুলোর ৩৩ লাখ টন ক্যাপাসিটির পুরোটাই উৎপাদন মনোযোগী হতো, তাহলে দেশের চাহিদা পূরণ করেও সমপরিমাণ চিনি রফতানি করা যেতো। কিন্তু কোনো সরকারই নিজের থেকে যেহেতু করছেনা; তখন জনগণেরই জনসচেতন হয়ে সরকারকে চাপ দিয়ে সরল পথে চালানোর কোনো বিকল্প নেই।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১৮ ই মে, ২০১৩ রাত ১০:২৩

মাজহারুল হুসাইন বলেছেন: চিনিকল গুলো পাটকলের মত মেরে ফেলা হচ্ছে ।

২| ১৮ ই মে, ২০১৩ রাত ১০:৫০

আতা2010 বলেছেন: চিনিকল , গার্মেন্টস সব মেরে ফেলা হচ্ছে ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.