কবিতা- আমি একটা পাখি পুষেছিলাম

১৯ শে জুলাই, ২০২৩ রাত ১১:০৩

আমি এককালে একটা পাখি পুষেছিলাম।
প্রকৃতিপ্রেমীরা পুরোটা শুনে নিন প্রতিবাদের পূর্বে।
বলা চলে,পাখি নিজেই এসে পোষ মেনেছিলো।

একদিন ঘুম ঘুম চোখ খুলে দেখি,
জানালার পাশে বসে ডাকছে সে পাখি,
হাত বাড়িয়ে তাড়ালাম।
উড়ে গেলো, আবার এলো।
জানালা বন্ধ করলাম।
চলে গেলো, আবার এলো।
বারবার ফেরাতে মায়া হলো।
জানি না,আমি ঠিক ছিলাম,নাকি ভুল করলাম।
কিছু খুঁদকুড়ো খেতে দিলাম।
বাকবাকুম করে সুখের ডাক ডাকলো।
ধীরে ধীরে,
জানালার পাশে বসে থাকা পাখি
ঘুমাতে শুরু করলো বুকের নীড়ে।
প্রতি রাতে টের পেতাম
একগুচ্ছ পালকের উপস্থিতি,
বুকের ওমে ঠোঁট গুঁজে ঘুম নিরবধি।
মাঝে মাঝে দুঃস্বপ্নে হয়তো ঠোঁকর খেতাম,
মেনে নিতাম।।
সকালে ডেকে জাগাতো,
গালে মুখে মুখ ঘষতো,
উঠে যেতাম।
গান শোনাতো,
কবিতার মতন,
অনেক যতন
করে খাবার দিতাম।
ঘুমিয়ে গেলে পাহারায় রইতাম,
যেন অমূল্য কোনো মানিক-রতন।
গলা চুলকে,আলতো হাত বুলিয়ে,
হাতে-কাঁধে নিয়ে দুলিয়ে দুলিয়ে,
আদর নিতাম।
সকাল-সাঁঝে
যে কোনো কাজে
মাথায় বসিয়ে
ন্যস্ত হতাম।
আমাদের দেখে এমন মনে হয়,
যেন দুদিনের নয়,
আমরা আমরণ সখা-সখী।

মাঝে মাঝে
উড়ে চলে যেত।
খবর ছাড়াই উধাও।
আবার হুট করে
আমার বুকে ঢুকে ঠাঁই খুঁজে নিতো।
ভাবতাম,
স্বাধীনতার ঘ্রাণে,
সজীব সবুজের টানে,
মুক্তির মায়ায় আকাশ পানে,
বারবার যেতো উড়ে।
তাই,দিতাম না কোনো বাধাও।

এরপর,একদিন,
পুরোপুরি চলে গেলো।
যাবার আগে বলে গেলো
বুক ফুলিয়ে গর্বে,
আমি তাকে পুষিনি, সেই পুষেছিলো আমাকে।
এ শহরে তার আরো অনেক পোষা মানুষ থাকে।

জুন ২৪, ২০২৩
"আমি একটা পাখি পুষেছিলাম"
©মোহাম্মদ আখতারুজ্জামান উচ্ছ্বাস

০ টি +০/-০