নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি একটি পথ, আপনি চাইলে হেঁটে দেখতে পারেন....

জীয়ন আমাঞ্জা

পৃথিবীর সবচেয়ে বড় দর্শন হল হিসাব বিজ্ঞানের ডেবিট এবং ক্রেডিট । সবসময় যতখানি ডেবিট, ঠিক ততখানিই ক্রেডিট হয় । পরকালের হিসেব যা-ই হোক, এই ইহকালে আমরা ঠিক যেভাবে শূন্য হাতে পৃথিবীতে এসেছি, সেভাবে শূন্য হাতেই পৃথিবী ছেড়ে যাব । এটাই পৃথিবীর আবর্তনিক নিয়ম । অনেকে আমরা এটা বুঝতে ব্যর্থ হই ।আপনি কারো ক্ষতি করবেন তো আজ অথবা কাল আপনার ক্ষতি হবেই হবে । ভালো করলেও তার ফল আপনি জীবদ্দশাতেই পাবেন ।অনেকে দেখবেন রাস্তাঘাটে অযথা হোঁচট খায়, অসুখে ভোগে- এসব এমনি এমনি নয়, হয় এর অতীত, নয়তো ভবিষ্যৎ প্রসারী কোন কারণ আছে । যদি আপনি কারো ক্ষতি না করেন, তবে আমি নিশ্চয়তা দিচ্ছি, আপনার কোন ক্ষতি হবে না । কেউ চেষ্টা করলেও আপনার ক্ষতি করতে পারবে না ।শুদ্ধ থাকুন, শুদ্ধতার শুভ্রতাকে উপভোগ করুন । জীবন সুন্দর হবে ।আমি সবার মতের প্রতিই শ্রদ্ধাশীল।আশা করি আপনিও তাই।সৌজন্যবোধ ও মানবতার জয় হোক !

জীয়ন আমাঞ্জা › বিস্তারিত পোস্টঃ

¤¤ গ্যাস সমাচার ¤¤

০৬ ই নভেম্বর, ২০১৩ রাত ১০:৩০



কোরবানিতে পেট খারাপ হওয়াটা বেশ হাস্যকর ব্যাপার । এখানে বরকতেরও ব্যাপার আছে । পেট পুরে গলা পর্যন্ত গিললেও কী এক বরকতে যেন ভালোয় ভালোয়ই হজম হয়ে যায় । তারপরেও দুয়েকজন বিপদে পড়ে, ফারাটা কাটিয়ে উঠতে পারে না ।



আমাদের রোওজার পড়েছে সেই বিপদে পড়া দলের । লিকলিকে শরীর, আটাশ ইঞ্চি কোমরের ছোট্ট চিমসে পেট, কিন্তু টয়লেটে গেলেই ইয়া ইয়া কামান গোলার দীর্ঘ মাত্রার ভুম ভুম শব্দ । কোন কোনটা পুমমমমম করে যে শুরু হয়, শেষ আর হতে চায় না সে পুমমম । একেবারে মিনিটখানেক দীর্ঘ ।

আমরা ভাবি, ঐটুকু পেটে এত গ্যাস আসে কোত্থেকে !



দুষ্টু নাতি চিত্রক তো মুখ ফসকে বলেই ফেলল, রোওজার মামা, তোমার পেটের সাথে গ্যাসের লাইন লাগানো নাকি বলো তো ?



রজার হেসে বলল, আমি সম্ভবতঃ রাষ্ট্রীয় সম্পত্তিতে পরিণত হতে যাচ্ছি রে । সরকার খবর পেলে আর রক্ষা নেই, আমাকে নির্ঘাৎ গ্যাস ফিল্ড ঘোষণা করে গ্যাস উত্তোলনের ব্যবস্থা করবে দেখবি !!



এই পুম পুম ঠুশ ঠাস রাত পর্যন্ত চলল । নাতিরা খেতে যাওয়ার আগ মুহূর্ত পর্যন্ত আমাকে ঘিরে ছিল । সে কত গল্প, কত জিজ্ঞাসা ওদের ! ভাবলাম, এই পাতলা পায়খানা নিয়ে ওদেরকে একটা গল্প বলি । কিন্তু আশপাশে চোখ লুকিয়ে খুঁজেও, গলা চড়িয়ে কথা শুনিয়েও গিন্নির খোঁপাটিরও দেখা পেলাম না । হয়তো গেরস্থালীতে লেগে আছে ।

সব শ্রোতার বড় শ্রোতা, সবচে বড় ভক্ত, আর আমার সমস্তের উপলক্ষ যে সে !



কিছুটা অখুশি নিয়েই অনেকটা হাঁকিয়ে হাঁকিয়ে গল্প বলতে শুরু করলাম আমি । পাছে যেন গিন্নি শুনতে পায় ।

মুখে একটা অবেলার পান পুরে বলতে শুরু করলাম, বুঝলে দাদুরা, এক লোক তো খালি বিছানায় পেশাব করে । বিয়ে করে ফেলেছে সে, অথচ বিছানায় পেশাব করার অভ্যাস তার যায়নি । আর বৌকে প্রত্যেক সকালে ঘাটে গিয়ে সেই ভেজা বিছানা কাথা ধুতে হয় । মানুষে দেখে, ঠাট্টা উপহাস করে, বেচারী কষ্ট পায়, চোখ ফেটে কান্না আসে লজ্জায়, দুঃখে ।



একদিন আর সহ্য করতে না পেরে সে চড়াও হল স্বামীর ওপর ।



পেত্ত্যেক রাইতে তুমি বিছানে মোতো পাইছ কী হাঁ ? তোমার লজ্জা শরম নাই ?



স্বামী মুখ বেজার করে বলল, বৌ রে মুতি কি আর সাধে ? আমারে কি বলদ পাইছত ?



আহা হা হা রে আমার বুদ্ধিমান চঁদু ! তা কোন বুদ্ধিতে তুমি বিছানে মোতো আমারেও একটু কও, তারপর আমিও একটু মুতি !



শোন, পেত্ত্যেক রাইতে আমি স্বপ্নে দেহি, ইয়া লম্বা এক সন্ন্যাসী, হাতে একটা সোনার লোটা, আমার সামনে আইসা বলে, দে, এই লোটাতে মুইত্যা দে । তাইলে তোরে এই সোনার লোটা দিয়া দেব ।



বৌ তখন বলল, তা কেমন বুদ্ধিমান তুমি ? পেত্ত্যেক রাইতে যে তোমারে সোনার লোটা দেহাইয়া যায় একবার রাইখা তো দিতে পারলা না সেই লোটা !



স্বামীও ভাবলো, আরে ঠিক তো ! এইবার তো আর লোটা ছাড়া যাবে না !



স্বামী এবার প্রস্তুত । স্বপ্নে দেখা সোনার লোটা বৃথা যেতে দেব না !!



সেই রাতেও বরাবরের মতো স্বপ্নে সন্ন্যাসী এল । স্বামী এবার ভিলেইনী হাসি দিয়ে বলল, হাহাহা, তুমি আমারে বলদা পাইছ সন্ন্যাসী বাবা ? এইবার তো তোমার ঐ ঘটি না পাওয়া পর্যন্ত আমি মোতব না ! অনেক ঘুরাইছ আমারে । আর না !



সন্ন্যাসী আহত চোখে বলল, এই সামান্য ঘটির জন্য তুই এমন করছিস বাছা ? এ আর এমন কী সোনা, আয়, আমি তোকে অঢেল ধন রত্ন দেব !



অতঃপর স্বামীটি গেল সন্ন্যাসীর সঙ্গে এক স্বর্ণপুরীতে । অজস্র মণি মুক্তা সেখানে । সন্ন্যাসী বলল, নে বাছা, কেউ এসে পড়ার আগেই যা পারিস কাছিয়ে নে ।



স্বামী তো লুঙ্গি খুলে তার এক মাথা গিঁট দিয়ে বস্তার মত বানিয়ে তাতে ধনরত্ন ভরতে শুরু করল । এমন সময় চলে এল স্বর্ণপুরীর রক্ষী । তাড়া করল বেচারাকে । বেচারা সব ফেলে দৌড়ে গিয়ে উঠতে লাগল এক গাছে । রক্ষীটাও পিছু পিছু এসে ধরল ঠ্যাং পাকড়ে ।

এখন বেচারার এক ঠ্যাং নিচে আর অন্য ঠ্যাং ওপরে । নিচের ঠ্যাং রক্ষীটা আর ছাড়ছে না । ভয়ে সে চেঁচিয়ে সন্ন্যাসীকে ডাকল, সন্ন্যাসী বাবা, আমারে বাঁচাও ।



সন্ন্যাসী দূর থেকে বলল, হেগে দে শালার মাথায় । ও ছাড়তে বাধ্য হবে ।



এই মোক্ষম বুদ্ধির চেয়ে আর কোন সমাধান তো হতেই পারে না । অতএব, দিল সে ফ্যাড়ফ্যাড়িয়ে হেগে । একেবারে রক্ষীটার মাথায় !



সকালে উঠে দেখা গেল বিছানা কাথা মারামারি । এতদিন স্বামী পেশাব করেছে, আজ করেছে পায়খানা !!



নাতিরা বিছানায় গড়াগড়ি দিয়ে হাসছে গল্প শুনে । ঘাড়ে পেছন থেকে হাতের ছোঁয়া পেলাম । আমার গিন্নী । প্রাণপণে কঠিন করে রাখা মুখের চামড়ায় হাসি বিজলীর মত করে চমকাচ্ছে তার । কপট ধমক দিয়ে আমায় বলল, তুমি দিন দিন কী হয়ে যাচ্ছ বলো তো ? এসব ন্যাক্কারজনক কথা কি বাচ্চাদের বলতে আছে ?



ছোট নাতি স্যান্ডি ফিকফিকিয়ে বলল, ন্যাক্কার হবে কেন দীদা ? আমরা তো সবাই টয়লেটে গেলে হেগে দি !!

আবার সকলের অট্টহাসি । হেসে গড়াগড়ি ।

আমি চোরের মত চুপ ।

গিন্নীর শান্ত কঠিন চোখ !

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.