নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি একটি পথ, আপনি চাইলে হেঁটে দেখতে পারেন....

জীয়ন আমাঞ্জা

পৃথিবীর সবচেয়ে বড় দর্শন হল হিসাব বিজ্ঞানের ডেবিট এবং ক্রেডিট । সবসময় যতখানি ডেবিট, ঠিক ততখানিই ক্রেডিট হয় । পরকালের হিসেব যা-ই হোক, এই ইহকালে আমরা ঠিক যেভাবে শূন্য হাতে পৃথিবীতে এসেছি, সেভাবে শূন্য হাতেই পৃথিবী ছেড়ে যাব । এটাই পৃথিবীর আবর্তনিক নিয়ম । অনেকে আমরা এটা বুঝতে ব্যর্থ হই ।আপনি কারো ক্ষতি করবেন তো আজ অথবা কাল আপনার ক্ষতি হবেই হবে । ভালো করলেও তার ফল আপনি জীবদ্দশাতেই পাবেন ।অনেকে দেখবেন রাস্তাঘাটে অযথা হোঁচট খায়, অসুখে ভোগে- এসব এমনি এমনি নয়, হয় এর অতীত, নয়তো ভবিষ্যৎ প্রসারী কোন কারণ আছে । যদি আপনি কারো ক্ষতি না করেন, তবে আমি নিশ্চয়তা দিচ্ছি, আপনার কোন ক্ষতি হবে না । কেউ চেষ্টা করলেও আপনার ক্ষতি করতে পারবে না ।শুদ্ধ থাকুন, শুদ্ধতার শুভ্রতাকে উপভোগ করুন । জীবন সুন্দর হবে ।আমি সবার মতের প্রতিই শ্রদ্ধাশীল।আশা করি আপনিও তাই।সৌজন্যবোধ ও মানবতার জয় হোক !

জীয়ন আমাঞ্জা › বিস্তারিত পোস্টঃ

বাগধারার ব্যুৎপত্তি অন্বেষণ

০৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৭ দুপুর ১২:৫৬

ফেইসবুকে বৃষ্টি ঝরছে দেখছি। আমার এখানে অবশ্য বৃষ্টি নেই। মুষলধারে বৃষ্টির কথায় হঠাত মনে পড়ল Cats and dogs! আমার এরকম বাগধারাগুলোর উৎপত্তি নিয়ে ভাবতে ভাল লাগে। যেমন, পটল তোলা, অগস্ত্য যাত্রা, দা কুমড়া ইত্যাদি!

Cats and dogs বাগধারাটি এসেছে সপ্তদশ শতাব্দীর এক বৃষ্টিকে কেন্দ্র করে। লন্ডনে ওই সময় এত বৃষ্টি হয় যে তা প্লাবনের আকৃতি লাভ করে এবং অনেক মৃত গবাদি ভাসিয়ে নিয়ে যায়। মজার বিষয় হল, গবাদি পশুর তালিকায় কেবল পোষা কুকুর আর বেড়ালকেই দেখা গেল, বৃষ্টি থামার পরে এদের মৃতদেহ রাস্তায় এলোমেলো হয়ে পড়ে ছিল! অনেকটা এমন যেন বৃষ্টিতে আকাশ থেকে কেবল বেড়াল আর কুকুরই পড়েছে! এই অদ্ভুত ব্যাপারটাই কিংবদন্তি হয়ে প্রবাদ রূপ লাভ করল! সেই থেকেই প্রবল বৃষ্টিকে বলা হয় raining cats and dogs!

বাংলাতে আছে ইলশে গুঁড়ি বাগধারা! গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টিকে ইলশে গুঁড়ি বলার কোন প্রত্যক্ষ কারণ জানা যায় না। সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত এই বাগধারাটির প্রবর্তন করেন তাঁর কবিতার মাধ্যমে। গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টির এই সময়টাতেই ইলিশ ডিম পাড়ে! মজার ব্যাপার হল, ইলিশ ডিম পাড়ে সাঁতরাতে সাঁতরাতে! একটি ইলিশ ২০ লক্ষ পর্যন্ত ডিম পাড়তে পারে! এখন একটি ইলিশ যদি সাঁতরাতে সাঁতরাতে ২০ লক্ষ ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ডিম ছড়িয়ে দেয়, তাতে হয়ত গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টির সামঞ্জস্য থাকলেও থাকতে পারে। আমি ইলিশের ডিম পাড়ার ভিডিও দেখিনি, দেখলে হয়ত বুঝতে পারতাম।

আচ্ছা, এই সুবাদে পটল তোলার ব্যাখ্যাটা বলি। পটল তোলা মানে হচ্ছে মারা যাওয়া! পটল তোলার সাথে মারা যাওয়ার কী সম্পর্ক?
ব্যাখ্যাটা হল, একটি পটল গাছের সবগুলো পটল যদি একসাথে তুলে ফেলা বা ছিঁড়ে ফেলা হয়, তবে সে গাছটির ওই দিনই মৃত্যু হয়!!

অগস্ত্য যাত্রা বাগধারার অর্থ হচ্ছে চিরতরে চলে যাওয়া। যে যাওয়ার আর কোন ফেরা নেই! কাহিনী আছে এর পেছনে। অগস্ত্য মুনির নাম শুনেছেন আপনারা? তিনি থাকতেন বিন্ধ্যপর্বতে। সেখানকার বাসিন্দাদের মধ্যে দুইটি পক্ষ ছিল এবং তাদের মধ্যে আজীবন কলহ লেগেই থাকত। অতঃপর এলাকাবাসী এই কলহ সমাধানে অগস্ত্য মুনির শরণাপন্ন হল। সব শুনে অগস্ত্য মুনি এদের থামানোর উপায় ভাবতে লাগলেন। তিনি জানতেন যে, এদের ঝগড়া জন্ম জন্মান্তরের, বংশানুক্রমিক! সহজ কোন সমাধানে এরা থামবে না! অবশেষে, অগস্ত্য বললেন, তোমাদের এখনকার ঝগড়ার সমাধান আমি আনতে যাচ্ছি পাহাড়ের ওই পারে। কিন্তু তোমাদের কথা দিতে হবে যে, আমি না আসা পর্যন্ত তোমরা আবার ঝগড়া করতে পারবে না!
সবাই একবাক্যে রাজী হল। এবং সেই যে অগস্ত্য মুনি যাত্রা করলেন, আর ফিরে এলেন না!!

ভূষণ্ডী কাক বাগধারাটির অর্থ দীর্ঘায়ু ব্যক্তি। ভূষণ্ডী একটি কাকের নাম, যার উপস্থিতি আছে পুরাণে! এই কাক আবহমান কাল ধরে বেঁচে আছে এবং আদ্যিকাল হতে পৃথিবীর সব ইতিহাসই সে জানে!

মান্ধাতার আমল বাগধারাটিরও ইতিহাস আছে। এর অর্থ হল প্রাচীন সময়কার। আসলে মান্ধাতা ছিলেন প্রাচীন সময়কার একজন রাজা। তাঁর উল্লেখও মেলে পূরাণে। তিনি সূর্য বংশীয় রাজা ছিলেন, ছিলেন রামায়ণের নায়ক রামেরও পূর্ববর্তী! তাই প্রাচীনতা বোঝাতে এই উদাহরণ ব্যবহৃত হয়! মান্ধাতা নিয়ে আরও কাহিনী আছে, অন্য কোন প্রসঙ্গে বলা যাবে!

দা কুমড়া মানে তো জানেন? দা কুমড়ার বিরোধ বোঝেন তো? মানে এদের কখনও মিল হয় না। দা আর কুমড়া মিলিত হলেই কুমড়ার প্রাণ যায়!

অহি নকুলও একই রকম। অহি মানে সাপ, নকুল বা নেউলে মানে বেজি! সাপ বেজি মানেই তো শত্রুতা!

আর মনে পড়ছে না এখন। এরকম মজার বাগধারা আপনার মাথায় থাকলে আপনিও জানান, দেখি ব্যাখ্যা করা যায় কি না!

মন্তব্য ৭ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৭) মন্তব্য লিখুন

১| ০৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৭ দুপুর ১:১১

প্রামানিক বলেছেন: এরাকম একটি পোষ্টের জন্য ধন্যবাদ

২| ০৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৭ দুপুর ২:১২

নবাব চৌধুরী বলেছেন: দারুণ লেগেছে। লেখককে ধন্যবাদ ব্যতিক্রমধর্মী এই লেখা প্রদন করার জন্য। ভালো থাকুন।

৩| ০৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৭ দুপুর ২:৫৩

সামিউল ইসলাম বাবু বলেছেন: চমৎকার

পোষ্টে লাইক রইলো

৪| ০৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৭ বিকাল ৪:০৭

করুণাধারা বলেছেন: এরকম মজার বাগধারা আপনার মাথায় থাকলে আপনিও জানান, দেখি ব্যাখ্যা করা যায় কি না!

এই ব্যাখ্যাগুলো আপনার? পড়তে ভালই লাগল। যমের অরুচি কি হতে পারে বলুন তো? আপনার আদ্যিকালের কথায় মন্তব্য রেখে এসেছি, দয়া করে দেখবেন।

১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৭ বিকাল ৩:২৭

জীয়ন আমাঞ্জা বলেছেন: যমকে কল্পনা করা হয় সর্বভূক বা সর্বপাতকী রূপে! সে সবকিছুকেই নির্বিশেষে ভক্ষণ করে বা হত্যা করে। সে ক্ষেত্রে মরণ হয় না বোঝাতে চরম বিরক্তি নিয়ে বলা হয় যমেরও অরুচি বা যমেও চোখে দেখে না!

৫| ১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৭ রাত ১:৩৭

সচেতনহ্যাপী বলেছেন: বাগধারাগুলি পড়েছি এবং বাবহার করে চলছি, অহরহ।। কিন্তু পিছনের গুড়ার্থের দিকে তাকাইনি কখনো।। আজ পড়লাম।। সতিই ভাল এবং মজাই লাগলো।। ধন্যবাদ।।

১৩ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৭ রাত ৮:০৮

জীয়ন আমাঞ্জা বলেছেন: শুভেচ্ছা।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.