ব্লক একটি জাতীয় সমস্যা!!

২৬ শে নভেম্বর, ২০১৪ রাত ১১:৫৬

ব্লক কী?:সাধারনভাবে ব্লক বলতে বুঝায় আটকে যাওয়া।স্থান কাল পাত্র ভেদে মাঝে মাঝে ব্লক এর মানে বদলে যায়।
প্রকারভেদ:ব্লক প্রধানত দুই প্রকার
১.হার্ট এর ব্লক
২.ফেসবুকীয় ব্লক
এছাড়াও আমাদের সমাজে বিভিন্ন ধরনের ব্লক দেখা যায় যেমন ধরুন "লালমাটিয়া A ব্লক" আবার রয়েছে "রাস্তার এক পাশ ব্লক হয়ে যাওয়া" ইত্যাদি।নানান কিসিমের ব্লকের মধ্যে হার্টের ব্লক এবং ফেসবুকীয় ব্লক ই বেশী জনপ্রিয়।

হার্ট এর ব্লক:ইহা মানুষের হার্ট নামক যায়গায় হইয়া থাকে।বিভিন্ন কারনে ইহা হইতে পারে।ইহা হইলে ডাক্তার গণ তাহাকে অপারেশন নামক টেবিলে চিত্‍ করে শুয়াইয়া ওপেন হার্ট সার্জারী নামক কিছু করিয়া থাকেন বলে শুনা যায়।

ফেসবুকীয় ব্লক:ইহা অত্যন্ত আধুনিক যুগের সৃষ্টি এবং ইহা ফেসবুক নামক জায়গায় উত্‍পত্তি হয়েছিল।ধারনা করা হয় ফেসবুক আবিস্কারের পরপরই এই ফেসবুকীয় ব্লক আবিস্কৃত হয়।

প্রাপ্তিস্থান:ইহা অতিব মূল্যবান এক বস্তু যা বেশীরভাগ সময়ই প্রেমিকা (গফ) শ্রেনীর ফেসবুক ইউজারদের দেয়ালে পাওয়া যায়।এছাড়াও হাল জামানার কিছু ফেসবুকীয় চেলিব্রেটিদের দেয়ালেও দেখা যায়।তবে ইহা কখনই কুনো ছেলের দেয়ালে দেখা যায়না।

প্রয়োগ:বেশীর ভাগ ক্ষেত্রেই প্রেমিকা কতৃক তাহার প্রেমিক কে ব্লক করা হয়।প্রেমিকারা অনেক ভালোবেসে তাহাদের বফদেরকে ব্লক করে থাকেন।এটি কয়েকটি ধাপে সম্পন্ন হয়, প্রথমে তারা ব্লক দেয়ার হুমকি দেন এরপর আর কুনো কথা বলেন্না কিন্তু এর মাঝে বফ সম্প্রদায়ের কেউ যদি মেসেজ করতেই থাকেন তাইলে তার কপালে ব্লক অবধারিত।অনেক ক্ষেত্রে ব্যাতিক্রম ঘটে,মাঝে মাঝে দেখা যায় কিছু প্রেমিকারা সারা জীবন ব্লক করার হুমকি দিলেও তাহার কখনই ব্লক করতে পারেন্না।তাহারা ধীরে ধীরে নিজের হার্টকেই ব্লক করে ফেলে।এছাড়া চেলিব্রেটিরা তাদের ইস্ট্যাটাসে কেউ কাউন্টার কমেন্ট করলে তাকে ব্লক করে থাকেন। এটিও কয়েকটি ধাপে সংঘটিত হয়,প্রথমে কমেন্ট ডিলিট এরপর আবার কমেন্ট করলে কমেন্ট ডিলিট করে মেসেজে ব্লক করার হুমকি প্রদান স্বরুপ একখানা পত্র প্রেরণ।এতে কাজ না হলে তাকে ছাগু উপাধিতে ভূষিত করন এবং ফাইনালি তাকে ব্লক মারা।

সুবিধা:অনেক আসাধু ফেসবুক ইউজার আছেন যারা বিনা কারনে প্রেমিকা শ্রেনীর ইউজারদেরকে বিরক্ত করে থাকেন তাদের হাত থেকে রক্ষা পেতে ইহা খুব কাজের।এছাড়া আপনি ইহা ভাতে দিয়া ভর্তা করে,সয়াবিন তেল আর আলু দিয়া ভাজি করে,আবার সয়াবিন তেল আর আলু দিয়া রান্না করেও খাইতে পারবেন।

অসুবিধা:প্রেমিক শ্রেনীর ইউজার ছাড়া ইহা আর কাউকেই কুনো প্রকার ক্ষতি সাধন করে বলে আজ পর্যন্ত কুনো প্রমান পাওয়া যায়নি।প্রেমিক শ্রেনীর মধ্যে ইহা এক বড় অশান্তির কারন।এই সময় তারা তাহাদের বন্ধুদের ফেসবুক আইডির মাধ্যমে তাহাদের প্রেমিকাদের খোঁজ খবর নেওয়ার চেষ্টা চালান।তাহারা খুব কষ্টে দিনরাত্রি যাপন করেন এবং গভীর রাত্রিতে নিকট বন্ধুদের মেসেজ করেন,
-তুর হবু ভাবীতো আমারে আবার ব্লক মারছে।
-
-দোস্ত একটা কিছু করনা প্লিজ।
-করুম তার আগে ক এইডা কত নাম্বার ব্লক খাইলি??
(অনেকেই প্রথম দিকে মনে রাখে ৯ম ব্লক,১০ম ব্লক পরে....)
-দোস্ত দুই একদিন পরপরইতো ব্লক মারে এত কি মনে রাখছি নাকি।
অন্যদিকে চেলেব্রেটি কতৃক ব্লক খাওয়া ছাগু শ্রেনীরা আবার নতুন একটা আইডি খুলে(ফ্রী যে,গায়ে লাগেনা) এবং সেই আইডি থেইকা আবার কাউন্টার কমেন্ট করে,
-ওই কয়বার ব্লক করবি আজ তুর একদিন আমার যতদিন লাগে।আয় আইজকে!!!!

প্রতিকার:সরকার ইতিমতধ্যে ব্লক কে দেশের পয়লা নাম্বার প্রবলেম হিসেবে চিহ্নিত করেছেন।বর্তমান সরকার আসন্ন নির্বাচনে তাদের নির্বাচনী ইশতেহারে ইহা অন্তুর্ভক্ত করেছেন।দ্বাবিংশ শাতাব্দীর চ্যালেন্জ মোকাবেলায় তাদের স্লোগান হয়েছে, "রুখে দিতে ব্লক প্রেমিকা মার্কায় মারুন ভোট" এছাড়াও যথাযথ কতৃপক্ষের মাধ্যমে ইহা থেকে নিরুপনের জন্য তদন্ত চলতাছে এবং আশা করা যায় যে নিকটতম ভবিষ্যতে আপনরা ব্লক মুক্ত ফেসবুক পাবেন।

মন্তব্য:বাংলার আকাশে বাতাসে যে পরিমান ব্লকের হুমকি দেওয়া হয় এবং বাস্তবায়ন হয় তা সারা বিশ্বের ফেসবুক ইউজারের থেকে ঢেড় বেশী।

২ টি +১/-০