![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি একটি মিসকল, যেখানে আমি আমার নিজঃস্ব স্বত্তাকে পুরোপুরি নিজের ভাষায় প্রকাশ করার চেষ্টা করেছি, তবে সবার দৃষ্টিকোণ এক নয়। মানুষের চিন্তা/ধারনা পরিবেশ, সময়, স্থান, কাল, পাত্র ভেদে ভিন্ন রকম হতেই পারে! সবাইকে আমন্ত্রন, বিশেষত যারা আমাকে পছন্দ করেন না তাদেরকে।
আজ ১৯/১০/২০১৫ সকাল ৮.২৪। অফিসে বসে আছি। সারা রাত ঘুম হয়নি, একটা চিন্তা মাথায় খুব বেশি ধরে বসেছিল। বুঝতে পারছি না। চোখ বন্ধ করলেই একটা হাস্যোজ্জল ৭/৮ বছরের মুখ ভেসে উঠছে। যে গতকাল সন্ধায় আমার সহযাত্রী ছিল। রাস্তাটা পার হওয়ার জন্য হাতে চিপসের প্যাকেট নিয়ে হাঁটছিল। আমি ডাক দেবার আগেই মুহূর্তেই একটা সি.এন.জি ধাক্কা দিল তাকে। আর কিছুই বুঝল না সেই মুখটা। চোখবুজে পরে রইল রাস্তায়। আমি দৌড়ে গিয়ে তার কাছে গেলাম। শ্যামলা মায়াবী মুখটা লাল রঙে ভরে গেছে কি করব বুঝতে পারছিলাম না। সবাই তাকিয়ে দেখছিল। আমি বাচ্চাটাকে নিজের কলে তুলে নিলাম। বাচ্চার মা আমার পাশে দাঁড়িয়ে কান্না করছে। কি করবে বুঝতে পারছিল না। সবাই বাচ্চার দিকে তাকিয়ে। আমি চিৎকার করে গাড়ি থামানোর চেষ্টা করছি। ২/১ টা গাড়ি আমাদের পাশ ঘেঁসে চলে গেল। কিন্তু থামল না। একটা প্রাইভেট গাড়ি থামল। সাথে সাথে সেই গাড়িতে বসে পরলাম বাচ্চাটাকে কোলে নিয়ে। এখনো চোখ খোলে নি সে। গাড়িটা পাগলের মত ছুটতে লাগলো, হাসপাতালের উদ্দেশে। প্রায় ১০মিনিট পর চোখ খুলে সেই শ্যামলা মুখখানা। চোখ খুলেই বলে উথল "আমি কোথায়?"। আমি কিছু বলতে পারলাম না, মুখে কোন কথা আসছিল না। মাথা পুরোপুরি ব্লাঙ্ক হয়ে গেছে। আমি বলে উঠলাম, "মা আমরা গাড়িতে।" মুখটা আবারও বলে উঠল,"আমার বেথা লাগছে কেন? আমার এমন লাগছে কেন?" "মা তমার কিচ্ছু হয় নাই। এক্তু বেথা পেয়েছো। আর কিছুই হয়নি।" বাচ্চাটা আবারও চোখ বুজে ফেললো। আমি দেখলাম তার কান দিয়ে রক্ত পড়ছে। আমার শেওলা কালারের শার্ট অর্ধেকটা রক্তে ভরে গেছে। আমার চোখ দিয়ে কখন পানি পরতে লাগলো তের পাইনি। এরই মাঝে আমরা হাসপাতালে পৌছে গেছি। কোলে করেই বাচ্চাটাকে ইমারজেন্সিতে ঢুকলাম। বাচ্চাটাকে একটা বেডে শুইয়ে ডাক্তারের খোজে চিৎকার করলাম। এমতাবস্থায়, একজন এশে বলল, "আগে এন্ট্রি করতে হবে।" সেইখানে লাইনে দাঁড়িয়ে, ২০টাকা ফি দিয়ে এন্ট্রি করালাম বাচ্চাটার। একটু পরেই একজন এসে তুলো দিয়ে তার ড্রেসিং করা শুরু করল। কিন্তু উন্নি ডাক্তার না, উনি হেলপার। কিছুই বললাম না আমি... চেয়ে চেয়ে দেখলাম শুধু। অনেক সময় পরেই ডাক্তার আসলেন... উনি এখন বললেন,"রোগী কে?" মেজাজ খারাপ হয়ে গেল। কিন্তু কিছু বললাম না, ডাক্তারকে বললাম, "কান দিয়ে রক্ত আসেছে।" এতো সময় পরে আমাদের ডাক্তার (!?!) সাহেবের খবর হল, বাচ্চাটার মাথায় মারাত্মক আঘাত পেয়েছে। কিছু না বলে একটা বেথার ইনজেকশন দিয়ে বলল সিলেট পাঠাতে হবে... আমি কিছু না বলে মেয়েটার বাবাকে বললাম, ডাক্তার সিলেট পাঠাচ্ছেন সুমাইয়াকে(শ্যামলা মুখটা), তার বাব কেদে উঠল... রাত তখন প্রায় ৯.৩০ বাজে। কাল সকালে ডিউটি আছে, বেসরকারি চাকুরী, কিছু করার নেই। তারপরও চিন্তা করলাম তাদের সাথে যাবো। আমি জাবার প্রস্তুতি নিতেই সুমাইয়ার বাবা বলে বস্লেন, " ভাই আপনার যাওয়া লাগবে না।আপনি আপন না হয়েও অনেক করেছেন। আমি আপনাকে ফোন করে জানাবো, কোন দরকার পড়লে আমি আপনাকে জানাবো।" চাকুরী নামের সোনার হরিণটার কথা ভেবে আর জোর করলাম না তাদের সাথে যাবার। তবুও পকেটে হাত দিয়ে মানিব্যাগ থেকে ২টা ১০০০ টাকার নোট লোকটার হাতে গুজে দিলাম। নিতে না চেয়েও আমার জোরের কারনে নিতে বাধ্য হলেন মানুষটা। মানুষটার মোবাইল নাম্বার রেখে দিলাম নিজের মুঠোফোনে। বের হয়ে আবারো আরেকটা সি.এন.জিতে চেপে বসতে হলো। নিজের অনিচ্ছা সত্তেও। নিজের সরিলে লেগে থাকা রক্ত গুল তখনো আমার গায়ে লেগে আছে, শুকিয়ে গেছে। মাথায় নেশার মত ধরেছিল, সেই মুহূর্তটা। দোয়া করছিলাম, আল্লাহ্ আমার জিবনের বদলে হলেও ওই বাচ্চাটাকে বাঁচিয়ে দাও। সুমাইয়া মেয়েটাকে এখন দেখা হয়নি আর। একটু আগেই ফোন করেছিলাম সুমাইয়ার বাবাকে, সুমাইয়া ঘুমাচ্ছে... টেস্টগুলো এখনো করা হয়নি, ডাক্তার(!?!) আসেননি। আমাদের দেশের চিকিৎসা ব্যাবস্থা এতই ভালো... আর বাবা-মায়েরাও তাদের সন্তানদের প্রতি এতই যত্নশীল...
তারপরও বলছি, ভালো থেকো সুমাইয়া। তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে ওঠো...
২| ১৯ শে অক্টোবর, ২০১৫ সকাল ১০:৫৯
বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: ইমার্জেন্সিতে তাদের নিয়মের ঢং দেখলে মনে হয় কানপটির ণীচে মারি!
আগে চিকিৎসাতো শুরু করে- ফরমালীটির জন্য কত সময়ইতো পড়ে আছে! আর একটু কঠিন কেস হলেই রেফার! আরে তারে ঐ পর্যন্ত নিতে নিতে বাঁচার মিনিমামটুকু দিয়েতো রেফার কর!
আবার কিচূ বললেই সবাই খারাপ। সাংবাদিক কি ডাক্তার নাকি? এত কথা লিখে কেন? মানুষ এত অভিযোগ করে কেন? আমরাও মানুষ .. ব্লা ব্লা ব্লা!
আল্লাহ তাদের হেদায়েত করুন!
সুমাইয়া ভাল হয়ে উঠুক।
৩| ১৯ শে অক্টোবর, ২০১৫ সকাল ১১:৩৫
একটি মিসকল বলেছেন: শারলিন, সুমাইয়া আসঙ্কা মুক্ত নয়। ওর অবস্থা আসঙ্কাজনক। দোয়া করেন যেন ও ভালো হে যায়... :'(
৪| ১৯ শে অক্টোবর, ২০১৫ সকাল ১১:৩৯
একটি মিসকল বলেছেন: বিদ্রোহী ভৃগু ভাই ওর জন্য একটু দোয়া করেন। সুমাইয়ার অবস্থা খুবই খারাপ। বাচ্চা মেয়েটার জন্য খুবই কষ্ট আর চিন্তা হচ্ছে। পারলে আমি এখনই সিলেট চলে যেতাম....:'( নিজেকে আটকাতে পারছি না।
৫| ১৯ শে অক্টোবর, ২০১৫ সকাল ১১:৪২
বিষন্ন পথিক বলেছেন: বাচ্চাটার জন্য দোয়া আর আপনার আর গাড়ীওয়ালার প্রতি শ্রদ্ধা
৬| ১৯ শে অক্টোবর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:১৯
একটি মিসকল বলেছেন: বিষন্ন পথিক বড় চিন্তায় আছি সুমাইয়াকে নিয়ে। একটু আগেই সেই রাস্তাটা দিয়েই বাড়ি ফিরলাম... সবকিছু যদি স্বপ্ন হতো, তবুও বাস্তবতার বেড়াজালে বন্দি হয়ে গেলাম।
©somewhere in net ltd.
১|
১৯ শে অক্টোবর, ২০১৫ সকাল ১০:৫৫
শারলিন বলেছেন: সুমাইয়া ভাল হয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ