![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ব্যবসার মূল চালিকা শক্তি হচ্ছে- “ক্রেতার সাথে সুসম্পর্ক” , “ক্রেতার চাহিদা অনুযায়ী দক্ষতার সাথে দ্রুত পন্যের যোগান দেয়া” ,বিক্রেতার প্রধানতম কাজ , আর বর্তমান এই প্রতিযোগিতা মূলক বাজারে, এই প্রধান কর্ম টি টিকে থাকে সুষ্ঠ ব্যবস্থাপনার ওপর , আর সুষ্ঠ ব্যবস্থাপনা সম্পুর্ন রূপে তথ্য প্রযুক্তি বা কম্পিউটার সফটওয়ারের ওপর নির্ভরশীল ।
“সুষ্ঠ ব্যবস্থাপনা কেন তথ্য প্রযুক্তি বা কম্পিউটার সফটওয়ারের ওপর নির্ভরশীল?” বিষয়টি এখানে পরিষ্কার করি-
বুদ্ধিমত্তার কারনে মানুষ অন্যসব প্রানীর ওপর নিয়ন্ত্রন প্রতিষ্ঠা করে এবং নিজের জীবনকে নিরাপদ রাখে। বর্তমান এই আধুনিক যুগে কম্পিউটার প্রযুক্তির উত্তানের পর থেকে মানুষের কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তারও বিকাশ ঘটেছে , সমগ্র বিশ্ব এসে পরেছে মানুষের হাতের মুঠোয় । তাকে এখন মানোসিক চাপ নিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতে হয় না , পরম বন্ধুর মত কম্পিউটার প্রযুক্তি তার জীবনকে করে দিয়েছে সহজ সুন্দর আর প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নকে করেছে আরো ব্যাপক , বেগবান এবং শক্তিসালী । বিশ্বের বড় বড় প্রতিষ্ঠান গুলো এই তথ্য প্রযুক্তি বা কম্পিউটার সফটওয়ারের ওপর নির্ভর করেই ছোট্র প্রতিষ্ঠান থেকে বৃহৎ প্রতিষ্ঠানে পরিনত হয়েছে এবং সমগ্র প্রতিষ্ঠানকে নিখুত ভাবে পরিচালনা করছে । যে যত উন্নত প্রযুক্তি বা কম্পিউটার সফটওয়া্র ব্যবহার করছে তার উন্নতিও তত দ্রুত গতিতে হচ্ছে , উন্নয়ন এবং কম্পিউটার সফটওয়া্র একে ওপরের পরিপূরক হয়ে এগিয়ে চলছে । উন্নত মানব সভ্যতার ভিত্তি যদি হয় মানুষের প্রখর বুদ্ধিমত্তা তাহলে সেই বুদ্ধিমত্তার মূল চাবিকাঠি এখন কম্পিউটার সফটওয়ার । এটি ছাড়া ব্যবসার পরিচালনা থেকে শুরু করে উন্নয়ন অব্দি কোন কিছুই সুচারু রূপে করা সম্ভব না । এ বিষয়ে সবাই অবগত আছেন যে , একটি দেশের “উন্নত অর্থনীতি” নির্ভর করে মূলত “উন্নত ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের” ওপর । অথচ দুঃখজনক হলেও সত্যি যে বাংলাদেশ বিশ্বের অন্যতম দরিদ্র জনগোষ্ঠির দেশ , এখানে দেশ কিন্তু দরিদ্র নয় , এ দেশ যথেষ্ট প্রাকৃতিক সম্পদে ভরপুর একটি দেশ , এ দেশ দরিদ্র কারন এ দেশের বাজার অর্থনীতির নেতৃত্বে যারা আছেন, তাদের ব্যবসা পরিচালনা পদ্ধতি প্রাচীন এবং ত্রুটিপুর্ন ।একারনে তারা বিশ্ববাজারে নেতৃত্ব দেয়া তো দূরে থাক , টিকে থাকতে পারেনা নিজেদের অব্যবস্থাপনা এবং অদক্ষতার কারনে । আর এটা এখন ধ্রুব সত্য যে , বিশ্বায়নের এ যুগে দক্ষতার সাথে বিশ্ববাজার নিয়ন্ত্রন করতে না পারলে আপনার প্রতিষ্ঠান বেশী দূর এগোতে পারবে না । ব্যবস্থাপনা জনিত অদক্ষতাই বর্তমানে বাংলাদেশী প্রতিষ্ঠানগুলোর অন্যতম সমস্যা আর এ সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে কম্পিউটার সফটওয়ার প্রযুক্তি প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের জন্যেই আশীর্বাদ স্বরূপ। আপনি জেনে খুশী হবেন যে ERP এমন একটি আন্তর্জাতিক মানের কম্পিউটার সফটওয়ার যেটি ব্যবহারের মাধ্যমে অব্যবস্থাপনা জনিত দুর্বলতা দূর তো হবেই , প্রতিষ্ঠানের প্রতিটি বিভাগের উন্নয়নও তরান্বিত হবে।
ERP কম্পিউটার সফটওয়ারের মাধ্যমে ব্যবস্থাপনা চিত্রটি অনেকটা এরকমঃ-
ব্যবসায়িক পরিকল্পনা->বিনিয়োগকৃত অর্থ->কোম্পানি গঠন -> বিক্রয় পরিকল্পনা->ক্রয় পরিকল্পনা->উৎপাদন পরিকল্পনা->সরবারহ পরিকল্পনা->কস্টিং->ক্রেতার সাথে সম্পর্ক ব্যবস্থাপনা(CRM)-> মার্কেটিং->বিক্রয় চুক্তি/ওয়ার্ক ওর্ডার->পেমেন্ট সংক্রান্ত কমার্শিয়াল ডকুমেন্ট প্রস্তুত করন->LC/TT এর মাধ্যমে ক্রেতা কর্তৃক বিল পরিশোধের নিশ্চয়তা->ব্যাংকিং , কাস্টমস , সার্টিফিকেশন সংক্রান্ত কার্যক্রম->ক্রয় সংক্রান্ত উৎপাদন পূর্ব কার্য পরিচালনা->ক্রয়কৃত পন্যের স্টোর ব্যবস্থাপনা->উৎপাদন কার্যক্রম পরিচালনা->উৎপাদিত পন্যের স্টোর ব্যবস্থাপনা->পন্য সরবারহ->কাস্টমস/অফিসিয়াল কার্যক্রম->ক্রেতা অব্দি পন্য পৌছানো->ব্যাংকিং/অফিসিয়াল কার্যক্রম->সম্পুর্ন বিল পরিশোধ->লাভ ক্ষতির হিসাব->ব্যালেন্স পুজির ব্যবস্থাপনা ।
প্রতিষ্ঠানের নৈতিকতা ও স্থায়িত্বঃ- ক্রেতা বান্ধব প্রতিষ্ঠান কখনোই ক্রেতার ক্ষতি হবে এমন কিছু করে না বলে সে জনপ্রিয় হয় এবং তার প্রতিষ্ঠানের স্থায়িত্বকাল আরো বেড়ে যায়। অতএব নৈতিকতা জনপ্রিয়তার অন্যতম ভিত্তি।এ বিষয়ে আপনার প্রতিষ্ঠানের পরম বন্ধুর মত ERP Software আপনাকে দিচ্ছে সহজ সমাধান।
চাহিদাঃ- বাজারে চাহিদা একটি স্বাভাবিক বিষয় । ভোক্তার রুচি , পরিবেশ , পরিস্থিতি অনুযায়ী এই চাহিদার মাত্রা কম বেশী হতে পারে । একজন দূরদর্শী ব্যবসায়ী এই মাত্রাটা সহজেই ধরতে পারে এবং সে অনুযায়ী সরবারহ করে । ব্যবসা শুরু করার আগে “বাজার গবেষনা” একটি গুরুত্বপুর্ন বিষয় । অভিজ্ঞ ব্যবসায়ী থেকে এ বিষয়ে বাস্তব জ্ঞান নিয়ে নিতে হবে ।চাহিদার মাত্রা বাড়ানোটাই হবে ব্যবসার অন্যতম লক্ষ্য । এজন্যে ব্যবসায়ীকে পন্যের মান উন্নত করে মুনাফা কমিয়ে-সৃষ্টিশীলতায়-মিডিয়ার মাধ্যমে বাজারে ব্রান্ডিং বা জনপ্রিয় হবার জন্যে চেষ্টা করতে হবে । আর ফিনিশড প্রডাক্ট খুচড়া ক্রেতার কাছে জনপ্রিয় না হলে , সেটি নিশ্চিত রূপে ব্যবসার ক্ষতি বয়ে আনবে।
পন্যঃ- বাজারে বর্তমান যে পন্যটির শুন্যতা আছে কিংবা যোগানে ঘাটতি আছে । সেই পন্যটি নিয়েই ব্যবসা শুরু করতে হবে। নিত্য নতুন সৃষ্টিশীলতায় বৈচিত্রপুর্ন পন্য সরবারহ করতে হবে। ১০ রঙের ১০ টি রঙ পেন্সিল সহজেই বিক্রয় হবে কিন্তু ১ রঙের ১০ টি রঙ পেন্সিল বিক্রয় হবে না ।
সরবারহঃ- দ্রুত বিরতিহীন সরবারহ ব্যবসার অন্যতম বিষয় । আবার চাহিদার আগেই বাজারে পন্যের সরবারহ চালু রাখলে পন্যের চাহিদা পরে যাবে ।
সরবারহ খরচের সাথে পন্যটির মূল্য নির্ধারন গুরুত্বপুর্ন বিষয়। ১০০০ গ্রাম ঘী এর মুল্য ১০০০ টাকা , অথচ চাউল ৫০ টাকা কেজী । অতএব চাউলের চেয়ে ঘী এর পরিবহন বেশী লাভ জনক ও কম ঝামেলাপুর্ন ।
যোগানঃ- বাজারে যদি ১০০ টি পন্যের দরকার হয় , সেক্ষেত্রে ৯৫% পন্যের যোগান বাজারে থাকতে হবে। আর বাকী ৫% পন্যের কৃত্তিম সংকট বহাল রাখতে হবে। ১০০ কেজি পন্য একজনের কাছে বিক্রির চেয়ে ১০ জনের কাছে বিক্রি করা নিরাপদ এবং লাভজনক , এতে বাজারের বিকাশ ঘটে এবং প্রতিষ্ঠানের আয় বৃদ্ধি পায়।
দক্ষতাঃ- যে ব্যবসাটি শুরু করতে চাচ্ছেন , প্রথমে সে বিষয়ে যথাযথ শিক্ষা ও প্রশিক্ষন নিন । অন্তত ৩টি মাস ঐ ব্যবসাটির ওপর চাকরী করে বাস্তব জ্ঞান অর্জন করুন । অবসর সময়ে অভিজ্ঞ ব্যবসায়ীদের সাথে সময় দিন।
ব্যবস্থাপনাঃ- সুষ্ঠ ব্যবস্থাপনা একটি কোম্পানীর অন্যতম গুরুত্বপুর্ন বিষয়।অভ্যন্তরীন ও বর্হিবিভাগ দু ভাগে বিভক্ত থাকে একটি প্রতিষ্ঠান। অভ্যন্তরীন বিভাগ যেমন- একাউন্টস , অডিট বা দুর্নীতি দমন বিভাগ , স্টোর ইনভেন্টোরী , এডমিনিস্ট্রেশন, তথ্য-প্রযুক্তি , মার্কেটিং , কমার্শীয়াল , প্রোক্রিউমেন্ট , নিরাপত্তা সহ প্রতিটি বিভাগকে একে ওপরের সাথে সমন্বয় সাধনে এবং বর্হিমুখী প্রতিষ্ঠান গুলোর সাথে কর্ম সম্পাদনে দক্ষতার পরিচয় দিতে হবে। এজন্যে আলাদা “সমন্বয়কারী বিভাগ” বা “ন্যায়পাল বিভাগ” গঠন করা যেতে পারে । একটি বিভাগ দুর্বল হয়ে পড়লে সেটিকে একাধিক ভাগে বিভক্ত করে ফেলা উচিত , এতে একসময় সেই বিভাগ আবারো তার শক্তি ফিরে পাবে ।
বর্হিবিভাগ বলতে প্রতিষ্ঠানের ক্রেতা বিক্রেতা , সরকারী প্রতিষ্ঠানসহ বাহিরের যাবতীয় বিষয়কে বোঝানো হচ্ছে । বর্হিবিভাগের নেটওয়ার্ক যত শক্তিসালী ও ব্যাপক হবে প্রতিষ্ঠানও তত শক্তিসালী হবে। এই বিভাগের যাবতীয় বিষয়ে ঐ “সমন্বয়কারী বিভাগ” এখানেও গুরুত্বপুর্ন ভূমিকা পালন করতে পারে ।
টপ ম্যানেজমেন্ট বা পুজি বিনিয়োগকারী শুধুমাত্র সমন্বয়কারী বা ন্যায়পাল বিভাগ থেকে যাবতীয় রিপোর্ট নিবেন এবং সে অনুযায়ী পলিসি নির্ধারন করে সমন্বয়কারী বা ন্যায়পাল বিভাগ কে যাবতীয় নির্দেশনা প্রদান করবেন।
পুজি ব্যবস্থাপনাঃ- বিনিয়োগকারীকে পুজি সংগ্রহ করে বাজারে তা বিনিয়োগ করতে হয় মুনাফার স্বার্থে । ধরুন একজন বিনিয়োগকারী ১০০ দিনের ঋনে ১০০ টাকা বাজারে বিনিয়োগ করলো , সে কিন্তু দৈনিক লাভের আশায় এই বিনিয়োগ করবে । ১০০ ধরনের ১০০ টি পন্য উৎপাদন করে প্রতিদিন সে ১ টাকা করে ১০০ জন ভোক্তার কাছে বিক্রি করবে , তার প্রতিদিন আয় হবে ১০০ টাকা , যার মধ্যে সর্বমোট ব্যয় আমরা আনুমানিক ধরতে পারি ৯৮ টাকা । তাহলে তার নেট মুনাফা দাড়াচ্ছে ২ টাকা দৈনিক হারে । ১০০ দিন পরে এই মুনাফা দাঁড়াবে ২০০ টাকা । এতে সে ঋনকৃত ১০০ টাকা শোধ করে , দ্বিগুন বেশী ঋন পাবে এবং এখানে তার নিজস্ব পুজি বিনিয়োগের মাধ্যমে ব্যবসা সম্প্রসারন করতেও পারবে। তবে নেট মুনাফার পুরোটাই সে পুনরায় বিনিয়োগ করবে না , এর একটি অংশ সে সামাজিক সম্পর্ক উন্নয়ন খাত , দুর্ঘটনা জনিত ক্ষয়ক্ষতি মোকাবিলা খাত এবং সম্পদ বৃদ্ধিখাতেও বিনিয়োগ করবে। একটি পন্যে জনপ্রিয় হলে তা শুধু তার চাহিদা বাড়ায় না বরং তার মার্কেট শেয়ারের মূল্যও বহুলাংশে বেড়ে যায়, এতে করে তার ব্যবসায়িক পুজির ব্যাপারে চিন্তা করতে হয় না, ব্র্যান্ড কোম্পানির শেয়ার হোল্ডার হবার জন্যে সবাই উন্মুখ হয়ে থাকে।
মালিকানাঃ পার্টনারশীপ মালিকানায় ব্যবসার মূল চালক পুজি শুন্যও থাকতে পারে আর অন্যান্য অংশীদারেরা শুধু পূজির যোগান দিতে পারে । আবার সমাজ উন্নয়ন মুলক ব্যবসায় সরকারের আউটসোর্সিং প্রতিষ্ঠান হিসেবে সরকার থেকে পুজি নিয়েও ব্যবসা করা যেতে পারে।
ঝুকি ব্যবস্থাপনাঃ- ব্যবসার একটি স্বাভাবিক বিষয় এই ঝুকি । যেমন বর্তমানে বিকাশ মোবাইল ব্যাংকিং একটি জনপ্রিয় অর্থ লেনদেনের মাধ্যম। বাজারের ৮০% তার দখলে , এখন কেউ যদি তার প্রতিদ্বন্দি হতে চায় তাহলে নতুন সৃষ্টিশীলতার পরিচয় দিতে হবে এবং ঝুকি নিয়ে মুনাফা কমিয়ে দিয়ে বাজার দখলের যুদ্ধে নামতে হবে । প্রথম ধাপ হবে ভোক্তার খরচ কমানো , যেখানে বিকাশ হাজারে ১৬ টাকা নেয় এবং দোকানি নেয় ৪ টাকা সেখানে নতুন মোবাইল ব্যাংকিং নিবে ১০ টাকা এবং দোকানি ৫ টাকা , নতুন মোবাইল ব্যাংকিং ইন্টারনেট ভিত্তিক ব্যাংকিং এরও সুযোগ দিবে , মার্চেন্ট ব্যাংকিং এ সমস্ত প্রতিষ্ঠানকে তাদের নেটওয়ার্কের আওতায় আনবে অর্থাৎ ধরুন পরিবহন খাতে টিকেট কাটতে ক্যাশ লেনদেন একটি ঝামেলাপুর্ন বিষয় সেক্ষেত্রে পেমেন্ট নতুন মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে হলে সেটি সবার জন্যেই সুবিধাজনক । এভাবে নিত্য নতুন সেবা দিয়ে ভোক্তার জীবনকে সহজ করার মাধ্যমে নতুন মোবাইল ব্যাংকিং সেবা নিজেদের জায়গা সুদৃড় করে নিতে পারবে।
সরবারহকারী পার্টি ও কাচামালঃ- বাজারের চাহিদা ও যোগানের সাথে সামঞ্জস্য রেখে সরবারহকৃত পার্টির সাথে ডিলিং করতে হবে । বাজারে পন্যের চাহিদা পরে গেলে , কাচামালের দামও পরে যায় , তাই সে সময় কাচামাল মজুদের আদর্শ সময় । বর্তমানে উৎপাদনের জন্যে মজুদকৃত কাচামাল যদি পর্যাপ্ত পরিমানে থাকে তাহলে অযথা কাচামাল ক্রয়ের কোন মানে নেই । আপনার উৎপাদন প্রকৃয়াকে অব্যহত রাখার জন্যে আপনার কাচামাল সরবারহকারীর সাথে সুসম্পর্ক রাখতে হবে।
উৎপাদন ও গোডাউনজাত করনঃ- বাজারে যে সময় পন্যের চাহিদা কম থাকে সে সময় পন্যের মূল্য পরে যায়, সে সময় গোডাউনজাত করনের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়ার আসল সময় , আবার প্রতিটি পন্যের মেয়াদ থাকে সেই মেয়াদের মধ্যেই পন্যটি বিক্রয় নিশ্চিত করতে হবে। গুনগত মান বজায় রেখে পন্যটির উৎপাদন খরচ কমিয়ে আনা ব্যবসায়ীর মূল লক্ষ্য হওয়া উচিত । বর্তমান ও ভবিষ্যত বাজার পরিস্থিতি পর্যালোচনা , বর্তমান বিক্রয় আদেশ , সম্ভাব্য বিক্রয় আদেশ , ডেলিভারীর সময় ইত্যাদি বিষয়ের সাথে উৎপাদন ও গোডাউনজাত করনের নিপুন পরিকল্পনা থাকতে হবে।
বর্জ্য ব্যবস্থাপনাঃ- উৎপাদনের পর কিছু বর্জ্য জমা হয় , সেই বর্জ্য পুনারায় উৎপাদনের কাচামাল হিসেবে ব্যবহারকল্পে উদ্যেগ নেয়া জরূরী । অকেজো বর্জ্যেরও বাজার মূল্য আছে , সেটির বাজার সৃষ্টি করাও একটি প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব ।
কষ্টিং (মুল্য নির্ধারন)ঃ- লাভ লোকশান ব্যবসার স্বাভাবিক বিষয় । লোকাল ব্যবসা থেকে আন্তর্জাতিক ব্যবসা বেশী লাভজনক , বিষয়টি পরিষ্কার করি- একটি লাউ সবজি বাংলাদেশের বাজারে ২০ টাকা , অথচ সেই একই লাউ সৌদির বাজারে ২০ রিয়াল অর্থাৎ ৪০০ টাকা , অতএব এই মুদ্রার মান কম বেশীর সুযোগ নিয়েই ব্যবসায় ভালো মুনাফা করা যায় ।
একচেটিয়া মনোপলি ব্যবসায় যে পন্যটি বাজারে জনপ্রিয় হবে সেটির মূল্য প্রথমেই বেশী রেখে বাজার থেকে দ্রুত মুনাফা তুলে নিতে হবে , এরপর অন্যরা একই ব্যবসায় এসে পরলে সেটি হয়ে পরবে প্রতিযোগিতামুলক বাজার , তখন আর মুনাফা করা সম্ভব নাও হতে পারে ।
একটি প্রতিষ্ঠান প্লাসটিক বোতলে পানি বিক্রি করে আর দশটা প্রতিষ্ঠানের মত ।কিন্তু তারা মার্কেটে এমন একটি নতুন সৃষ্টিশীলতা আনলো যার কারনে লোক জন খেয়ে বেশী স্বাচ্ছন্দ বোধ করতে লাগলো । কারন সে ঘোষনা করেছিল ক্রেতা যদি তার খালি বোতলটি দোকানদার কে ফেরত দেয় তাহলে ক্রেতাকে ৫ টাকা ফেরত দেয়া হবে। আর প্রতিষ্ঠানটি এই খালি বোতলটি পুনঃপ্রক্রিয়ার মাধ্যমে ব্যবহার উপযোগিতা করে বাজারে ছাড়তে পারবে।এভাবে প্রতিষ্ঠানটির যেমন উৎপাদন খরচ কমে যাবে তেমনি ক্রেতাও সাশ্রয়ী মূল্যে পানি পান করতে পারবে।
ধরুন একটি সেলাই মেশিন ১০,০০০ টাকায় কেনা হল, এখন মেশিনটার স্থায়িত্বকাল ৫ বছর , অর্থাৎ মোট কার্যকালীন দিবস- ১৮০০ দিন অর্থাৎ প্রতিদিন ৫ টাকা ৫০ পয়সা হারে মেশীনের পেছনের ব্যায় ধরতে হবে।এর সাথে যোগ হবে দৈনিক মুজুরী, র মেটারিয়াল কস্ট , সাপোর্টিং ম্যাটারিয়াল কস্ট , কারখানা ভাড়া ও অন্যান্য খরচ , ব্যাংক ইন্টারেস্ট , ভ্যাট ট্যাক্স , বিদ্যুৎ পানি গ্যাস সহ অন্যান্য অফিসিয়াল খরচ প্রডাকশন খরচের সাথে যোগ করে কস্টিং বের করতে হবে।
একই ক্রেতার কাছে প্রথমে লোকশানে পন্য বিক্রয় করে , পরের চালানেই সেই লোকশান পুশিয়ে লাভ করা সম্ভব । প্রতিযোগিতামূলক বাজারে প্রথম প্রথম বাজার পাওয়ার জন্য কিছুটা ছাড় তো দিতেই হয়। প্রথমে লোকশান ১০% করে , পরের চালানে ৩০% লাভ করে নেট লাভ ২০% করা সম্ভব । লাভ কম হলেও বিক্রয়ের গতি বেগবান রাখাই ব্যবসায়ীর লক্ষ্য হওয়া উচিত । আবার ধরুন আপনি বোতলজাত ফিল্টার পানি উৎপাদন করেন , এর সাথে ৫ টাকা খরচ করে ২৫০ এম এল প্লাস্টিক বোতলও উৎপাদন করেন , যেখানে বাইরের সাপ্লাইয়ারের থেকে বোতলটি নিলে খরচ পরতো মাত্র ৩ টাকা , এক্ষেত্রে খরচ কমানোর জন্যে বাইরের থেকে বোতল নেয়াটাই বুদ্ধিমানের কাজ হবে।
বাকী বিক্রয় একটি ঝুকি মূলক বিষয় , যেই পরিমান বাকী দেয়া হচ্ছে সেটি ফেরত পাবার আশা ছেড়ে দিয়েই ব্যবসা করতে হবে , তাই বাকী বিক্রীর ক্ষেত্রে এমনভাবে বাকী দিতে হবে যাতে ১০% বাকী রাখলেও অন্তত ১০% লাভ থাকে । বাকীর মাত্রা যত বাড়তে থাকবে তার সাথে সাথে পন্যটির বিক্রয় মূল্য আনুপাতিক হারে বাড়তে থাকবে । যেমন ধরুন ১টি পন্যের চালান মূল্য ১০০ টাকা , নগদ বিক্রয় মূল্য ১২০ টাকা , কিন্তু ৫০% বাকীতে বিক্রয় করতে গেলে এটির বিক্রয় মূল্য কত হবে? ১০০x2 x 2 + ৫% = ২০০+১০= ২১০ টাকা বাকীর খুচড়া মুল্য । এখানে বাকী করেও নগদ লাভ ১০ টাকা করা সম্ভব। আবার ধরুন , আপনি আপনার সাপ্লাইয়ারের কাছে ৫০% বাকী পাচ্ছেন , যদি আপনার ক্রেতার লেনদেনের সুনাম থাকে সেক্ষেত্রে আপনিও ২৫% বাকী দিতে পারেন আপনার ক্রেতার কাছে ।
সৃষ্টিশীলতাঃ- সৃষ্টিশীলতা এমনভাবে প্রয়োগ করতে হবে, যাতে উৎপাদনের খরচ কমার পাশা পাশি গুনগত মানো বৃদ্ধি পাবে । ব্যবসার প্রতিটা ক্ষেত্রে নিত্য নতুন আইডিয়া , চিত্তাকর্ষক সৃষ্টিশীলতা প্রয়োগ করতে পারলে ব্যবসার উর্দ্ধগতি কেউ ঠেকাতে পারেনা । যুগোপযোগী একটি আইডিয়া , একটি প্রতিষ্ঠানকে রাতা রাতি পালটে দিতে পারে।পশ্চিমা বিশ্বের বড় বড় প্রতিষ্ঠান গুলো হাজার হাজার ডলার দিয়ে আইডিয়া কিনছে এবং আইডিয়ার বাস্তব প্রয়োগ করে প্রতিষ্ঠানকে আরো শক্তিসালী করছে।
দুই বা ততোধিক বিষয় একই সুতোয় গাতলে এটি নতুন বাজার সৃষ্টি করে , যেমন ধরুন ডিশ ওয়াশিং সাবান আপনার মূল প্রোডাক্ট , এটির সাথে যদি ফ্রী হিসেবে মাজুনী দেন তাওলে মার্কেটে এর চাহিদা বেড়ে যাবে এবং একই সাথে ২ টি পন্য বিক্রি হবে । ধরুন ফিল্টার পানির ব্যবসায় এখন দারুন মন্দা যাচ্ছে অথচ ছোট্র একটা আইডিয়া বা সৃষ্টিশীলতা এই মন্দা দূর করতে পারে , যেমন দামে সস্তা অথচ সহজে বহনযোগ্য “ইনস্ট্যান্ত পকেট ফিল্টার” মার্কেটে আনতে পারলে এটি লোকের কাছে জনপ্রিয় হবে , যেকোন সময় যেকোন জায়গায় সে বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা নিজেই করতে পারবে, শুধু তাই নয় পানি বাহিত রোগ থেকে যে কয়েক শ কোটি টাকার ক্ষতি হয় , সেটিও কাটানো সম্ভব হবে। এই আইডিয়াটা মার্কেট পাবে, কারন বর্তমান এই কর্মব্যস্ততার যুগে সবাই নিজের পকেটেই তার জীবনের নিরাপত্তা বহন করতে চায় ।
প্রচার ও প্রসারঃ পন্যের প্রচারের জন্যে নিত্য নতুন আইডিয়া প্রয়োগ করতে হবে । মেলা , বিভিন্ন উৎসবে অংশ নিয়ে পন্যেটি গন মানুষের কাছে তুলে ধরতে হবে।ব্র্যান্ডিং একটি ব্যবসার অক্সিজেন আর মার্কেটিং হচ্ছে ব্র্যান্ডিং এর সবচেয়ে গুরুত্বপুর্ন অংশ । মার্কেটিং যত আকর্ষনীয় , যত হৃদয়গ্রাহী হবে পন্যটি ভোক্তার কাছে তত জনপ্রিয় হবে। একটি পন্যের চালান/কষ্টীং মুল্য যদি ১০০ টাকা হয় তাহলে এর মধ্যে ৫০% এই মার্কেটিং এ ব্যয় হয় , মার্কেটিং তিন ভাগে বিভক্তঃ ১। কো-ওর্ডিনেটর বা সমন্বয় সাধক , ২।মিডিয়া , ৩।বিক্রয় প্রতিনিধি , ৪।এজেন্ট/ডিলারশীপ ।
১। কো-ওর্ডিনেটর বা সমন্বয় সাধকঃ এই বিভাগটি- ২।মিডিয়া , ৩।বিক্রয় প্রতিনিধি , ৪।এজেন্ট/ডিলারশীপ এদের সাথে সমন্বয় সাধন করবে এবং বিক্রয় এর গতি উর্দ্ধমুখী রাখবে ।
১। মিডিয়া- ইলেক্ট্রিক মিডিয়া , প্রিন্ট মিডিয়াতে পন্যটির প্রচারের মাধ্যমে, পন্যটি ভোক্তা শ্রেনীর কাছে পরিচিতি লাভ করে । ২। বিক্রয় প্রতিনিধিঃ একটি সিমেন্ট কোম্পানী তার বিক্রয় প্রতিনিধি হিসেবে কমিশন ভিত্তিক নিয়োগ দিতে পারে- রাজমিস্ত্রি বা সাইট কন্ট্রাক্টর বা সাইট সুপারভাইজারদের অর্থাৎ কন্ট্রাকশন কাজের সাথে সরাসরি জড়িত ব্যক্তিদের । কোম্পানী যদি তার বিক্রয় নেটওয়ার্কের মধ্যে তাদের নিয়ে আসতে পারে তাহলে তার পন্যটির ভালো প্রচার ও প্রসার হবে।
৩। ডিলারদের যদি অন্যান্য কোম্পানীর চেয়ে বেশী কমিশন দেয়া যায় তাহলেও পন্যটির ভালো প্রসার ও প্রচার হবে।
গুনগত মানঃ- পন্যটি জনপ্রিয় করার ক্ষেত্রে এর গুনগত মানে কোন রকম আপোষ করা যাবে না । তবে প্রতিযোগিতামূলক বাজারে টিকে থাকতে হলে দু ধরনের পন্য বাজারে ছাড়তে হয় , একটি প্রিমিয়াম কোয়ালিটি , আরেকটি সাধারন মানের । মিডিয়াতে প্রিমিয়াম কোয়ালিটির প্রচার শুরু হলে এটি ভোক্তা শ্রেনীর কাছে জনপ্রিয় তো হবেই পাশা পাশি কোম্পানিটিকেও জনপ্রিয় করবে , এতে সাধারন মানের পন্যটিও মার্কেট পাবে।
কোম্পানীর পরিবেশঃ- কোম্পানীর পরিবেশ যে বিষয়গূলোর ওপর নির্ভর করে- ডিসিপ্লিন বা শৃঙ্খলা , ধর্মীয় নিয়ম কানুন পালন , খেলাধুলার চর্চা , পিকনিক , শ্রমিক মালিক সু-সম্পর্ক , নিরাপত্তা প্রভৃতি ।
ডিসিপ্লিন বা শৃঙ্খলাঃ- ১০০% ডিসিপ্লিন বা শৃঙ্খলা একটি প্রতিষ্ঠানের টিকে থাকার অন্যতম উপায় । প্রতিষ্ঠানের প্রতিটি বিভাগে “শৃঙ্খলার চর্চা” প্রতিদিন প্রতিমুহর্তে বহাল রাখতে সর্বোচ্চ কঠোরতা অবলম্বন করতে হবে । বেধে দেয়া সময়ের আগেই কার্যক্রম শেষ করতে হবে।
শ্রমিক মালিক সু-সম্পর্কঃ- মানুষের কাছে টাকার চেয়ে বস্তুর মুল্য বেশী , তাই ঈদ বা বিভিন্ন উৎসবে টাকা না দিয়ে ঐ টাকার পরিমান উপহার বা খাদ্য সামগ্রী দিলে , বিরতীর সময় লাঞ্চের ব্যবস্থা করলে- তা শ্রমিক শ্রেনীর কাছে বেশী গ্রহনযোগ্য হবে , তারা মালিকের প্রতি আরো আন্তরিক হবে এবং কাজ কর্মে অধিক দক্ষতার পরিচয় দিবে । তথাপি শ্রমিকরাও মালিকের জন্মদিন পালন করে মালিকের আরো স্নেহভাজন হতে পারে।
নিরাপত্তাঃ- প্রাকৃতিক দুর্যোগ , আগুন , চুরি-ডাকাতি প্রভৃতি দুর্ঘটনা থেকে প্রতিষ্ঠানকে রক্ষা করতে সর্বাধুনিক প্রযুক্তি সমৃদ্ধ নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকতে হবে ।
ব্যবসায়ীক ব্যক্তিত্বঃ- প্রতিষ্ঠানের ভিত টিকে থাকে মূলত- নেতৃত্ব দেয়ার মতো বিশাল ব্যক্তিত্ব অর্জনের ওপর । ধরুন আপনি সুতার ব্যবসা করেন , এখন আপনার লক্ষ্য হবে এই ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতির পদটি নিজ যোগ্যতার বলে অর্জন করা । এছাড়া এর সাথে জড়িত অন্যান্য ব্যবসায়ী কমিটির সাথেও সর্বদা যোগাযোগ রক্ষা করে চলা , এমনকি সবার দুঃসময়েও পাশে থাকা। বিশ্বের যেকোন প্রান্তে , যে কারো সাথে সামাজিক যোগাযোগও সহজেই রক্ষা করা যায় তথ্য প্রযুক্তি বা কম্পিউটার সফটওয়ার ব্যবহারের মাধ্যমে। নিত্য নতুন সামাজিক যোগাযোগ প্রযুক্তি ব্যবহারে অব্যস্ত হউন এবং সবার সাথে সুসম্পর্ক বজায় রাখুন।
আপনার প্রতিষ্ঠানের সামগ্রিক উন্নয়নে ERP Software ব্যবহার করুন , নিশ্চিন্তে থাকুন ।
ERP Software এর ব্যাপারে যেকোন প্রশ্ন আমাকে করতে পারেনঃ-
মোঃ আব্দুল গফুর (রবিন)
মোবাইল ফোন- 01914886384
Email:- [email protected]
২| ১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ সকাল ১১:৫৮
রবিনের প্রান "বাংলাদেশ" বলেছেন: thanks
©somewhere in net ltd.
১|
১৩ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৫:০৫
বিজন রয় বলেছেন: হুম।