![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
১৯৫৪ সালের নির্বাচনে যুক্তফ্রন্ট প্রার্থী ওয়াজেদ চৌধুরীর পক্ষে নির্বাচনী প্রচারণা চালাতে রাজবাড়ীতে আসেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। ওই সময় একটি সাইকেল ব্যবহার করে তিনি গ্রামের পর গ্রাম চষে বেড়িয়েছেন। সেই সাইকেলের ভাঙা অংশ আজও সংরক্ষণ করে রেখেছেন আবদুল ওয়াজেদ মণ্ডল (৭৯)। তিনি রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলার মধুপুর গ্রামের বাসিন্দা।
স্মৃতিচারণা করে আবদুল ওয়াজেদ মণ্ডল বলেন, ‘মোনাক্কা চেয়ারম্যান ছিলেন আমার চাচাতো ভাই। আমি তখন অষ্টম শ্রেণিতে পড়ি। বয়স ১৪ বছর। নতুন বাইসাইকেল কিনেছি। ইংল্যান্ডের ডানলপ কম্পানির বিএসএ মডেলের সাইকেলটি ২২০ টাকায় ফরিদপুর শহরের সাইনোফোন নামের একটি দোকান থেকে কিনি। সেই সাইকেলে করে বাড়ি থেকে আমি মোনাক্কার বাড়িতে বেড়াতে গিয়েছিলাম। ঘটনাক্রমে সেদিন বঙ্গবন্ধু মোনাক্কার বাড়িতে এলেন। হঠাৎ করে তাঁর চোখ পড়ে উঠানে লিচুগাছের সঙ্গে হেলান দিয়ে রাখা আমার সাইকেলের ওপর।’
বঙ্গবন্ধু মোনাক্কার কাছে জানতে চাইলেন, ‘সাইকেলটি কার?’ সাইকেলের মালিককে পেয়ে বঙ্গবন্ধু সেদিন ওয়াজেদকে বুকে জড়িয়ে ধরে বলেন, ‘তোর সাইকেলটি কয়েক দিনের জন্য আমাকে দে। রাজবাড়ীর ওয়াজেদ চৌধুরীর বাড়িতে গিয়ে আমি ফিরে না আসা পর্যন্ত থাকবি। সেখানে তোর সাইকেল আমি ফেরত দেব।’ এই সাইকেলে চড়ে বঙ্গবন্ধু এলাকায় প্রচারণা চালাতে থাকেন।
এদিকে আবদুল ওয়াজেদ রাজবাড়ীতে গিয়ে ওয়াজেদ চৌধুরীর বাড়িতে থাকতে শুরু করলেন। পনের দিন পর বঙ্গবন্ধু সাইকেল ফিরিয়ে দিয়ে কাছে টেনে বলেন, ‘ভালো থাকিস। মনোযোগ দিয়ে লেখাপড়া করিস। আর মানুষকে ভালোবাসতে শিখিস। পারলে রাজনীতি করিস।’
এরপর থেকে তিনি সেই সাইকেল আগলে রাখতেন। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৭২ সালে ধানমণ্ডির বাড়িতে একবার গিয়েছিলেন আবদুল ওয়াজেদ। ওয়াজেদকে দেখে প্রথমেই বঙ্গবন্ধু সাইকেলটি কোথায় আছে জানতে চেয়েছিলেন। সেটাই ছিল শেষ দেখা।
বঙ্গবন্ধুর ব্যবহার করা সেই সাইকেল দেখতে তাঁর বাড়িতে প্রায়ই লোকজন আসে। কেউ কেউ আবদুল ওয়াজেদের কাছে বঙ্গবন্ধুর গল্পও শুনতে চায়। সেই গল্প বলে ওয়াজেদের বুক গর্বে ভরে ওঠে। মুহূর্তে ৫৮ বছর আগের বঙ্গবন্ধুর সেই চেহারা চোখের সামনে জ্বলজ্বল করে ভেসে ওঠে। তিনি আজ ১৫ আগস্ট শুক্রবার তাঁর বাড়িতে বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুবার্ষিকী পালন করবেন। এ উপলক্ষে এলাকার দরিদ্র মানুষের মধ্যে খাবার বিতরণ করবেন।
এখন আবদুল ওয়াজেদের বয়স হয়ে গেছে। যেকোনো সময় তিনি মারা যেতে পারেন। মৃত্যুর আগে সাইকেলটি কোনো জাদুঘরে সংরক্ষণের জন্য দিতে চান। তাঁর কথা, ‘আমার জীবনের শেষ চাওয়া সাইকেলটি যেন জাদুঘরে স্থান
©somewhere in net ltd.