নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সব সময়ই আশায় থাকি এমন বৃষ্টির যা ধুয়ে মুছে দিবে জীবনের সব গ্লানি জীবনটা হয়ে উঠবে ফুলের মত সুন্দর।
সত্য বলার সাহস সবার থাকে না। সত্য গ্রহণ করার মানসিকতাও সবার থাকে না। ফলে মিথ্যা কখনো কখনো সত্যের ওপরে রাজত্ব করে যায় হাজার বছর ধরে। তাই বলে ওই মিথ্যাটা মহান হয়ে যায়না এবং সত্যটাও বাতিল হয়ে যায় না। যে বিষয়ের অবতারণায় কথাগুলো বলা তা নিয়ে আলাপ ঝুঁকিপূর্ণ তো বটেই। ব্লগ কর্তৃপক্ষের কাছে কতটা গ্রহণযোগ্য সেটাও অজানা। তবু অকপটে কিছু কথা বলে যেতে চাই। কারণ, আমি এমনটাই বিশ্বাস করি এবং এ নিয়ে আমার ভেতরে কোন আত্মপ্রতারণা নেই।
২০১৩ সালের যে দিনগুলোতে উত্তাল হয়ে উঠেছিল শাহবাগ। সে দিনগুলোতে নিকটেই ছিল আমার বসবাস। ঘরে বসেই শুনতে পেয়েছি মুহুর্মুহু স্লোগান এবং মাইকের আওয়াজ। চোখের সামনেই দেখেছি তারুণ্যের জেগে ওঠা এবং এ নিয়ে মিডিয়া ও সুশীল সমাজের ধন্য ধন্য রব। আরব বসন্তকে ছাপিয়ে, বাঙালির হাজার বছরের ইতিহাস ছাড়িয়ে, মানব সভ্যতার ইতিহাসে এ যেন এক অভূতপূর্ব ঘটনা! যার গুণকীর্তন ইহজনমে শেষ হওয়ার নয়। তবে মিডিয়া যতই মহিমান্বিত করে প্রচার করুক, বাস্তবে এ ঘটনা শুরুতেই আপামর জনতার মাঝে টেনে দিয়েছিল এক বিভাজন রেখা। যার চূড়ান্ত বহিঃপ্রকাশ ঘটেছিলো হেফাজতের উত্থানের মাধ্যমে। যাহোক বক্ষ্যমান প্রবন্ধে শাহবাগ/ শাহবাগীদের প্রশংসা বা কুৎসা কোনটাই আমার উদ্দেশ্য নয়। আমার আলোচনা এখানে একটা বিষয়েই সীমাবদ্ধ। তা হচ্ছে, আমার দৃষ্টিতে শাহবাগের সেই ঐতিহাসিক গণজাগরণ কোন সতস্ফুর্ত ঘটনা ছিল না। বরং সেটা ছিল একটা পরিকল্পিত নাটকের সফল মঞ্চায়ন।
ফিরে দেখা: যেভাবে শুরু
প্রথমে বলে নেই, জামায়াত দল হিসেবে এবং এর নেতৃবৃন্দ ব্যক্তি হিসেবে যুদ্ধাপরাধী- এ নিয়ে দ্বিমত করার দুঃসাহস আমি এই মুহূর্তে দেখাচ্ছি না। কারণ, বিষয়টা আদালতের রায়ের মাধ্যমে মীমাংসিত। এর চেয়ে বড় আদালত যে দিন বসবে। সেদিন না হয় নতুন করে প্রশ্ন তোলা যাবে।
কথা হচ্ছে এই জামায়াত যে স্বাধীনতাবিরোধী দল এবং এর নেতৃবৃন্দ যে যুদ্ধাপরাধী একদা এ কথাটা আওয়ামীলীগ ভুলেই গিয়েছিল। যে কারণে নব্বইয়ের দশকে বিএনপি বিরোধী আন্দোলনে একজোট হতে এবং এ প্রয়োজনে এক টেবিলে বসতে তাদের কোন সমস্যা হয়নি। কিন্তু ২০০৬ সালে এসে তারা নতুন করে জামায়াতের গাঁ থেকে যুদ্ধাপরাধের গন্ধ পেতে শুরু করলো। ফলে কোথাও জামায়াত থাকলে সেখানে যাওয়া তারা বয়কট করলো। এ পর্যায়ে দীর্ঘদিন অন্তরালে থাকা যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবি নতুন করে দৃশ্যপটে আসলো। আনা হলো অনেক হিসেব নিকেশ করেই। পথ প্রদর্শন করলো আওয়ামী লীগ এবং তাদের শরিক বামেরা। তখনো পর্যন্ত এ দাবিকে সর্বস্তরের জনগণের দাবি হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা যায়নি।
একটি ঐতিহাসিক সুষ্ঠু নির্বাচন ও বিচারের দাবি জনদাবিতে রূপান্তর:
২০০৮ সালের ২৯শে ডিসেম্বর মঈনউদ্দিন-ফখরুদ্দিনের ব্যবস্থাপনায় যে নির্বাচন হয়েছিল সে নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নিজেদের ইশতেহারে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করেছিল। অতঃপর যখন নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা হল। দেখা গেল আওয়ামীলীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট এক ভূমিধস বিজয়ের অধিকারী হয়েছে। সুশীল সমাজ এবং বুদ্ধিজীবীরা বলতে লাগলেন, যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের অঙ্গীকার করার কারণেই মানুষ বিশেষ করে তরুণ সমাজ দলে দলে আওয়ামী লীগকে ভোট দিয়েছে। অতএব সাব্যস্ত হয়ে গেল যে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবি এখন দল মত নির্বিশেষে সর্বস্তরের মানুষের দাবি।
এটা এক ট্রাজেডি যে বাংলাদেশে অনেক ডাহা মিথ্যাও প্রতিষ্ঠিত সত্যে রূপান্তর হয়। তেমনই একটা বিষয় হচ্ছে ২০০৮ সালের সংসদ নির্বাচন। আজকে দেশে নির্বাচন ব্যবস্থার চরম বিপর্যয় নিয়ে হা হুতাশ করা বুদ্ধিজীবীরাও দাবি করেন যে ২০০৮ সালের নির্বাচন ছিল স্মরণকালের সবচেয়ে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ। তারা পুনরায় এরকম নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার আশা করেন। বর্তমানে নির্বাচন কমিশনারদের ব্যর্থতা নিয়ে টকশোতে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচুর সমালোচনা ও ব্যঙ্গ বিদ্রুপ হয়। এতে জাতির বিবেক সেজে ওই সময়ের সিইসি শামসুল হুদা, নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার সাখাওয়াত হোসেনরাও যোগ দেন। (অন্যজন অবশ্য গত নির্বাচনে নৌকার নমিনেশন চেয়েছেন)। অথচ বাস্তবতা হচ্ছে আজকের নুরুল হুদা এবং রাকিব উদ্দিনদের কাজের ধারা উনারাই শুরু করে গিয়েছিলেন। আর ২০০৮ সালের বহুল প্রশংসিত সেই নির্বাচন ছিল বিশ্ব মোড়লের মৌন সমর্থনে, প্রতিবেশী স্বামী রাষ্ট্রের পৃষ্ঠপোষকতায় এবং সেনাবাহিনীর ব্যবস্থাপনায় আওয়ামীলীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোটকে ক্ষমতায় বসিয়ে দেয়ার এক বৈশ্বিক প্রহসন। জানিনা, নির্বাচন সুষ্ঠু হলেও হয়তো তারাই জিততো। কিন্তু ভবিষ্যতের জন্য যে পরিকল্পনা রাখা হয়েছিল তা বাস্তবায়নের প্রয়োজনে আওয়ামীলীগকে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা দেয়া জরুরী ছিল। এবং ফলাফলে সেটাই করা হয়েছিল। উক্ত নির্বাচন যে সুষ্ঠু হয়নি এর স্বপক্ষে অনেক প্রমাণ দেয়া যাবে। তবে আমি মনে করি তৎকালীন আওয়ামীলীগ সেক্রেটারি আব্দুল জলিলের লন্ডনে বসে দেয়া স্বীকারোক্তির পরে আর কোন প্রমাণের প্রয়োজন পড়েনা। হাসিনার সঙ্গে বিরোধে না যাওয়া ভুল ছিল: জলিল
বিচার শুরু হলো:
ক্ষমতায় আরোহন করে আওয়ামীলীগ মোটামুটি ধীর প্রক্রিয়ায় যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করল। বলাবাহুল্য, ঘাতক দালাল নির্মুল কমিটি, সেক্টর কমান্ডার্স ফোরাম ইত্যাদি বেশ কিছু সংগঠন প্রতিষ্ঠিতই হয়েছিলো এ উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে। তারা সর্বদাই প্রেসার গ্রুপ হিসেবে বিচারের দাবিতে উচ্চকিত ছিলো। কিন্তু লক্ষণীয় যে সেই সময়ে আওয়ামীলীগের যে কোনো উপলক্ষের দলীয় প্রোগ্রামের বক্তব্যে, ব্যানার-ফেস্টুনে, তোরণে সর্বাধিক গুরুত্বের সাথে উল্লেখ থাকতো যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবি। যেমনটা ইতিপূর্বে দেখা যায়নি। মনে হওয়া স্বাভাবিক সুদূরপ্রসারী কোন পরিকল্পনার ভিত্তিতেই এসব করা হচ্ছিলো। অতঃপর বিচার শুরু হলো। ২০১৩ সালের ২১শে জানুয়ারি ট্রাইবুনাল থেকে প্রথম রায় ঘোষিত হল। যেটি ছিল মৃত্যুদণ্ডের রায়।
ফিরে আসি শাহবাগ প্রসঙ্গে:
২০১৩ সালের ফেব্রুয়ারি মাস। শাহবাগ এখন আর কোন ট্রাফিক সিগন্যালের নাম নয়। শাহবাগের খ্যাতি এখন বিশ্বজোড়া। এখান থেকে কর্মসূচি দিলে সারাদেশে লক্ষ লক্ষ মানুষ এক হাতে মোমবাতি অন্য হাতে দিয়াশলাই নিয়ে দাঁড়িয়ে যায়। এখান থেকে জারি করা হুকুমে দেশের পতাকা ওঠে নামে। এ আন্দোলনে অংশ নিতে গেলেও পুলিশের চেকিং পার হয়ে যেতে হয়। এত নিরাপদ আন্দোলন পৃথিবীর ইতিহাসে কখনো কোথাও হয়েছে কিনা জানা নেই। আমরা আগেই বলেছি শাহবাগ আন্দোলন নিজেই এদেশের জনগণকে দুই ভাগে বিভক্ত করে দিয়েছিলো। তবে শাহবাগীরা একথা মানতে নারাজ তাদের দাবি, শাহবাগ ছিল দেশের সর্বস্তরের মানুষের অংশগ্রহণে ঘটে যাওয়া সতস্ফুর্ত এক জাগরণ। আর এ জাগরণ এত বিশাল আকারে দানা বাঁধার পিছনে অনুঘটক হিসেবে কাজ করেছিলো যুদ্ধাপরাধীদের লঘুদণ্ড। বিশেষত যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালের রায়ে অপরাধ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত বলার পরেও আব্দুল কাদের মোল্লাকে মৃত্যুদণ্ড না দিয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রদান। সর্বশেষ আব্দুল কাদের মোল্লার ভি চিহ্ন প্রদর্শন জনমানুষকে এতটাই বিক্ষুব্ধ করে যে তারা ব্লগারদের আহবানে দল, মত, ধর্ম, বর্ণ ভুলে গিয়ে ২০১৩ সালের ৫ই ফেব্রুয়ারি শাহবাগে জমায়েত হয় এবং আব্দুল কাদের মোল্লাসহ সকল যুদ্ধাপরাধীর ফাঁসির দাবিতে লাগাতার অবস্থান গ্রহণ করে। জীবনের অভিজ্ঞতা থেকে বুঝি, পৃথিবী এত সরল রেখায় চলে না। তথাপি আমি এ ঘটনার একজন প্রত্যক্ষদর্শী। ফলে এমন কিছু বিষয় মাথায় ঘুরপাক খায় যেগুলোর উত্তর খুঁজতে গেলে এটাই নিশ্চিত হওয়া যায় যে এ আন্দোলনের শেকড় অন্য কোথাও। অতএব আমি আমার মত করে সেটা বলার চেষ্টা করি।
ফাইনালের আগে খেলা জমিয়ে তোলা: “শিবির পুলিশ ভাই ভাই”
এটা একটা স্বতঃসিদ্ধ বিষয় যে ক্ষমতার সংস্পর্শে থেকে মিঠাই মণ্ডা খেয়ে আন্দোলন করা যায় না। বড়জোর শোভাযাত্রা, র্যালি, মিলনমেলা ইত্যাদি করা যায়। আন্দোলনের জন্য সর্বপ্রথম প্রয়োজন হয় সংক্ষুব্ধতা ও নিপীড়িতের অনুভূতির। সেটাও ব্যক্তিবিশেষের নয়। একটা বিরাট জনগোষ্ঠীর। তো যারা যুদ্ধাপরাধীদের বিচার দাবি করছে, সামান্য কিছু ব্যতিক্রম বাদে তারাই দেশে ক্ষমতাসীন। তারাই আদালত গঠন করেছে। যুদ্ধাপরাধের মামলা প্রস্তুত হওয়ার অপেক্ষা না করে অন্য মামলায় আসামীদের গ্রেফতার করে জেলে ঢুকিয়েছে। অভিযুক্তদের পক্ষে কেউ রাস্তায় নামলে তাকে র্যাব-পুলিশ দিয়েই যতভাবে সম্ভব নিপীড়ন করছে। তো এরকম Cool এবং সুখানুভূতি নিয়ে আর যাই হোক আন্দোলন জমানো যায় না এটা নিশ্চিত।
এবার ধরে নেই অভিযুক্তরা নিশ্চিত রূপে অপরাধী। এরপর তাদের পক্ষের দিকে তাকাই। দেখতে পাবো, আন্দোলন করার মত যথেষ্ট সংক্ষুব্ধতা, নিপীড়িতের অনুভূতি এবং স্পৃহা তাদের মধ্যে ছিলো। আদালতে তারা আসামিপক্ষ, রাজপথেও তারা বিরোধী দল, নিষিদ্ধ না হয়েও পুলিশ কর্তৃক নিষিদ্ধ দলের মত ব্যবহার পাওয়া, ঘরোয়া বৈঠক থেকেও অহরহ নাশকতার অভিযোগে গ্রেফতার হওয়া সব মিলিয়ে তাদের পিঠ একেবারে দেয়ালে ঠেকে গিয়েছিল। সর্বোপরি এটা ছিল তাদের নেতৃবৃন্দের জীবন-মরণ এবং তাদের দলের অস্তিত্ব রক্ষার প্রশ্ন। ফলে এখানে ন্যায়ের পক্ষে কে, এই প্রশ্নে না গিয়ে রাজপথের লড়াইয়ের পরিস্থিতি বোঝার চেষ্টা করলে দেখতে পাবো বিচারের বিরোধী শক্তি অর্থাৎ জামায়াত-শিবিরই তখন আন্দোলনের জন্য সুবিধাজনক অবস্থানে ছিল। একটি দল যত ছোটই হোক, আন্দোলনের প্রশ্নে তাদের সুবিধাজনক অবস্থান সরকারের জন্য দুশ্চিন্তার কারণ। ফলে সরকারের প্রয়োজন ছিলো খেলাটাকে ঘুরিয়ে দেয়ার।
৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৩, আব্দুল কাদের মোল্লার রায় ঘোষণার আগের দিন। হঠাৎ করেই পরিস্থিতি পাল্টে গেল। যে পুলিশ জামাত-শিবিরের তিনজন লোককে একত্রে দাঁড়াতে দেয় না তারাই বিশাল জনসমাবেশের অনুমতি দিয়ে দিলো। অতঃপর পাহারা দিয়ে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে জামায়াত নেতাদের সরকারের প্রতি কঠিন হুশিয়ারিপূর্ণ বক্তব্যগুলো শুনলো। খুশিতে বাগবাগ শিবিরের ছেলেরা পুলিশের হাতে ফুল তুলে দিল। ‘শিবির-পুলিশ ভাই ভাই’ স্লোগানে রাজপথ কাঁপলো। ওই দিনের বিবিসির প্রতিবেদন ছিল এ রকম:
“সংবাদদাতা শায়লা রুকসানা জানান এই সমাবেশ ছিল শান্তিপূর্ণ এবং ঢাকায় পুলিশের উপস্থিতিও ছিল চোখে পড়ার মতো। সম্প্রতি পুলিশের কাছে থেকে সভা সমাবেশ করার অনুপতি না পেলেও সোমবার জামায়াতের সমাবেশে পুলিশ বাধা দেয়নি। দলের কর্মীদেরকেও 'শিবির-পুলিশ ভাই ভাই' বলে শ্লোগান দিতে দেখা গেছে।”
ওই দিন ঢাকার বাইরে অন্যান্য জায়গায়ও এ ধরণের ঘটনা ঘটেছিলো।
পরের দিন। প্রথম রায়ে মৃত্যুদণ্ড দেয়া ট্রাইবুনাল তার দ্বিতীয় রায়ে আব্দুল কাদের মোল্লাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিলো। আবার দিলো যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ঠিকই কিন্তু রায়ের মধ্যে লিখে দিলো অপরাধ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত!
আমার বিবেচনায় উপরোক্ত ঘটনা দুটোর যোগ বিয়োগের হিসাব ছিল এরকম-
১. আন্দোলনের খেলা ঘুরিয়ে, বিচারের পক্ষের লোকদেরকে মাঠে নামাতে একটা পাল্টা ন্যারেটিভ ও জনমানুষের সংক্ষুব্ধতা দৃশ্যমান করার প্রয়োজন ছিল। সরকার চেয়েছিলো আব্দুল কাদের মোল্লাকে যাবজ্জীবন দেয়ার মাধ্যমে সেটা হাসিল করতে।
২. কোন খেলা ভালো করে জমাতে হলে প্রতিপক্ষকেও সুযোগ দিতে হয়। কেননা বিপক্ষের লোকেরা মাঠে না থাকলে পক্ষের লোকেরাও মাঠে নামতে আগ্রহী হয় না। এ কারণে সরকার একদিনের জন্য দয়াপরবশ হয়ে জামাত-শিবিরকে মাঠে নামতে দিয়েছিল। অনেকটা ফাঁসির আসামির শেষ ইচ্ছা পূরণের মত। এ ঘটনার আরেকটা মজেজা হলো, “জামাত-শিবিরের সাথে সরকারের গোপন সমঝোতা হয়েছে” শাহবাগ আন্দোলনের শুরুতে প্রচারিত এ ন্যারেটিভকে বিশ্বাসযোগ্যতা দেয়া।
আমি চিন্তা করি সেই মুহূর্তের কথা যখন জামায়াত নেতা শফিকুল ইসলাম মাসুদ ঘোষণা করছিলেন যে আব্দুল কাদের মোল্লার বেকসুর খালাস ব্যতীত অন্য কোনো রায়ই তারা মানবেন না। অর্থাৎ এক দিনের কারাদণ্ড হলেও প্রতিবাদে টানা হরতাল করবেন। তখন শাহবাগের নেপথ্য কারিগররা হয়তো ক্রুর হাসি হেসে বলছিলেন, “আজই শেষ। যত পারো খেলে নাও। আগামীকাল থেকে ফাইনাল খেলা আমরাই খেলবো। তখন গ্যালারিতে বসে চেয়ে চেয়ে দেখা ছাড়া আর কিছু করতে পারবে না।”
আপোষটা কে করলেন?
এরপরও শাহবাগীরা বলতে পারে যে- না, গোপন একটা সমঝোতা আসলেই হয়েছিল। তার ভিত্তিতেই আব্দুল কাদের মোল্লাকে ফাঁসি না দিয়ে যাবজ্জীবন দেয়া হয়েছিল। কিন্তু শাহবাগের জাগরণ এই আপোষকে ঠেকিয়ে দিয়েছিলো এবং পরবর্তীতে সকল যুদ্ধাপরাধীর ফাঁসি নিশ্চিত করেছিলো। সে ক্ষেত্রে শাহবাগীদেরকেই নির্দিষ্ট করে বলতে হবে জামাত-শিবিরের সাথে আপোষটা আসলে কে করেছিলো। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, অন্য কোন মন্ত্রী, নাকি আদালত, নাকি গোয়েন্দা সংস্থা?
যতটুকু বুঝি সরকার সত্যি আপস করতে চাইলে রায়ের একদিন আগে জামায়াতকে সুযোগ দিয়ে, সেটা মিডিয়ায় ফলাওয়ের মাধ্যমে সন্দেহ তৈরি করতো না। অতি সঙ্গোপনেই করতো। সেক্ষেত্রে শাহবাগ আন্দোলন অন্য দশটা সাধারণ আন্দোলনের মত প্রাথমিকভাবে হলেও বাধাগ্রস্ত হতো।
এ পর্যায়ে আমরা যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের ক্ষেত্রে সরকারের সার্বিক অবস্থান বোঝার চেষ্টা করি। আগেই বলেছি ২০০৯ সাল থেকে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের দলীয় ব্যানারে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু ছিল যুদ্ধাপরাধীদের বিচার। অন্যদিকে এ সময়ে সরকারের প্রধান হিসেবে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যেরও মূল একটা ইস্যু ছিল এটি। এ প্রসঙ্গে তার অসংখ্যবার পুনরাবৃত্তি হওয়া বক্তব্যের সারসংক্ষেপ করা যায় এভাবে, “যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হবেই। বিএনপি-জামায়াত, খালেদা জিয়া এই বিচার বানচালের জন্য বিভিন্ন রকম ষড়যন্ত্র করছে। কিন্তু এসব ষড়যন্ত্রের জাল ছিন্ন করে এদেশের মাটিতে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হবেই হবে এবং দেশ কলঙ্কমুক্ত হবে।”
সরকারের কোন কোন মন্ত্রী/উচ্চপদস্থ ব্যক্তি তো আরও অগ্রসর হয়ে বিচারের রায় কেমন হবে তাও বুঝিয়ে দিয়েছেন। এরকমই একটি বক্তব্য হচ্ছে আওয়ামী লীগের সংসদীয় দলের উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর। তিনি বলেন-
“রাজাকাররা আইন মেনে একাত্তরে নির্যাতন করেনি। কাজেই এত আইন দেখলে হবেনা। বসে বসে আইন কপচালে হবেনা। আগেই দুয়েকটাকে ঝুলিয়ে দিলে ওদের আইন কপচানি বন্ধ হবে।”
আরেকজন মন্ত্রী সুরঞ্জিত সেন গুপ্ত বলেন, “এখন ২০১২ সাল। আগামী বছর ২০১৩ সাল। ১৪ জন চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধীর রায় চূড়ান্ত হয়ে গেছে। ২০১৩ সালের যে কোনো সময়ে ওই চিহ্নিত ১৪ যুদ্ধাপরাধীর বিচার শেষ হবে। তাদের ফাঁসির রায়ও কার্যকর করা হবে। কেউ ঠেকাতে পারবে না। ”
এসব বক্তব্যের পর সরকারের সাথে আপসের বিষয়ে কী আর বলার থাকে?
অন্যদিকে আদালতের অবস্থান? সে তো স্কাইপি থেকে পাওয়া “আমি খাড়াইয়া যামু, আপনি বসাইয়া দিবেন” এর কাহিনী।
তো সবকিছু হিসেব-নিকেশ করে বুঝলাম, এ এক আজব ব্যাপার! কোথায় আসামিপক্ষ পক্ষ সরকারের বিরুদ্ধে বিচারকে প্রভাবিত করার অভিযোগ তুলবে। প্রসিকিউশনের সাথে আদালতের যোগসাজশ নিয়ে কথা উঠাবে। তার পাল্টা একটা যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের রায় দিয়ে এমনই এক ভেলকি লাগিয়ে দেয়া হলো যে উল্টা বিচারপ্রার্থী পক্ষই সরকারের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধীদের সাথে আপোষের অভিযোগ এনে শাহবাগে বসে পড়লো। মুহুর্মুহু স্লোগান তুললো- “আপোষ না সংগ্রাম”/ “সংগ্রাম সংগ্রাম”, “ক্ষমতা না জনতা/ জনতা জনতা”। আরো আশ্চর্য, যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তারা এ অভিযোগের জবাব না দিয়ে দলে দলে একাত্মতা ঘোষণা করতে শাহবাগে আসা শুরু করলেন। বাহ্যত আন্দোলনটা যেই সরকারের বিরুদ্ধে সেই সরকারই তাদের পূর্ণ নিরাপত্তার ব্যবস্থা করলেন। অতঃপর প্রধানমন্ত্রী সংসদে দাঁড়িয়ে বললেন তিনি এখানে থাকলেও তার মনটা পড়ে রয়েছে শাহবাগে! চলবে....
০৫ ই মার্চ, ২০২২ রাত ১১:৫৫
আশাবাদী অধম বলেছেন: আপনার মন্তব্যের ধন্যবাদ।
২| ০৬ ই মার্চ, ২০২২ রাত ১:১৭
হাসান কালবৈশাখী বলেছেন:
এক কশাইয়ের পক্ষে আপনাদের এত দরদ কি কারনে?
উনি কি নিরিহ ছিলেন?
কাদের মোল্লা গোলামআজমরা কবে দেশের কোন উপকারে এসেছিলেন? অন্তত যে কোন একটা বলেন।
ওনারা থাকলে দেশের কোন উপকারটা হত? সেটাও বলেন।
০৬ ই মার্চ, ২০২২ ভোর ৪:২৭
আশাবাদী অধম বলেছেন: খালি আবেগ আর আবেগ! দয়া করে পয়েন্টে আসুন।
৩| ০৬ ই মার্চ, ২০২২ রাত ১:১৯
রাজীব নুর বলেছেন: শাহবাগের আন্দোলনটা মহৎ আন্দোলন ছিলো। যদিও সেই মহৎ আন্দোলন টা নষ্ট করে দেওয়া হয়েছিলো।
০৬ ই মার্চ, ২০২২ ভোর ৬:৪৭
আশাবাদী অধম বলেছেন: আমার এই লেখার মূল আলোচ্য বিষয়, 'আন্দোলনটি ছিলো পূর্বপরিকল্পিত' এ বিষয়ে আপনার মত কি?
৪| ০৬ ই মার্চ, ২০২২ রাত ১:৫৪
হাসান কালবৈশাখী বলেছেন:
পাকি পার্লামেন্টে শোক প্রস্তাব পাশ, অন্যান্ন এভিডেন্স বাদ দিলাম। তার অপরাধ সে নিজেই প্রমান করে গেছে।
পৃথিবীর অনেক দেশেই 'জাবৎজীবন জেল' দেশের সর্বচ্চ শাস্তি।
বাংলাদেশের দন্ডবিধিতেও মৃতুদন্ড ও জাবতজীবন কারাদন্ড সমানভাবে সবর্চ্চ শাস্তি। আসামীর বয়স লিংগ ও বিভিন্ন কারনে বিচারকের মর্জির উপর নির্ভর
এতবড় সর্বচ্চ শাস্তি পেয়ে কেউ সন্তুষ্ট হয়?
হ্যা। এতবড় শাস্তি পেয়েও কাদেরমোল্লা খুশিতে V চিহ্ন দেখিয়েছিল।
তার মানে সে নিশ্চিত ছিল তার অপরাধ ভয়াবহ ছিল। এতই ভয়াবহ যে আমৃত্যু জেলও তার অপরাধের তুলনায় মামুলি।
সেই সর্বচ্চ শাস্তি পেয়েও সে খুশিতে V দেখিয়েছিল।
তার যুদ্ধাপরাধের প্রমান আর কি লাগে?
০৬ ই মার্চ, ২০২২ সকাল ৭:১৬
আশাবাদী অধম বলেছেন: বাপরে বাপ!
৫| ০৬ ই মার্চ, ২০২২ রাত ২:২৬
হাসান কালবৈশাখী বলেছেন:
ঢাবিয়ান। কেউ বিরিয়ানি খেলে এত মেজাজ খারাপ হওয়ার কি আছে?
তাও "প্রচন্ড মেজাজ খারাপ" কি বিরানি কি আপনি কখনো খান নি?
পোলাপান আন্দলন করতে গেছে তো দুপুরে খাবে টা কি? ভাত? বিরানি সহজলভ্য, এজিলি প্যাকেট, কাছেই পাওয়াযায় দশ বন্ধু সবাই তো যাবে না, এক বন্ধু দশ জনের টা কিনে আনছে, সমস্যা কোথায়?
ছাত্রইউনিয়ন এর নেতারা তাদের কর্মিদের জন্য বিরানিপ্যাকেট কিনে দিয়েছে, রাজনীতি করবে কর্মিদের খাওয়াবে না?
পরে যোগ দেয়া ছাত্রলীগের নেতারাও তাদের কর্মিদের জন্য খাবারের ব্যবস্থা করেছে। করতেই হবে।
সামান্য খাওয়া নিয়ে "প্রচন্ড মেজাজ খারাপ" হওয়ার কিছু নেই। যদি গাজ্বালা ভিন্ন কারনে না হয়।
০৬ ই মার্চ, ২০২২ সকাল ৭:১৭
আশাবাদী অধম বলেছেন: তৃতীয় বারের মত কমেন্টে আসার জন্য ধন্যবাদ।
৬| ০৬ ই মার্চ, ২০২২ ভোর ৬:৩৪
সোবুজ বলেছেন: আন্দোলনের পুরো সময়টাতে আমি দেশের বাইরে ছিলাম। এটা ছিল একটা দাবী ভিত্তিক আন্দোলন।দাবী পুরন হয়ে গেছে,আন্দোলন শেষ।এর বেশি কিছু না।কিন্তু জনগন অনেক কিছু মনে করেছিল যেটা ছিল ভুল।
০৬ ই মার্চ, ২০২২ ভোর ৬:৪৯
আশাবাদী অধম বলেছেন: আমার এই লেখার মূল আলোচ্য বিষয়, 'আন্দোলনটি ছিলো পূর্বপরিকল্পিত' এ বিষয়ে আপনার মত কি?
৭| ০৬ ই মার্চ, ২০২২ সকাল ৯:০৬
ঢাবিয়ান বলেছেন: 'আন্দোলনটি পূর্বপরিকল্পিত ছিল না। যুদ্ধপরাধী কাদের মোল্লার যাবজ্জীবন কারাদন্ড ঘোষনার পর বাইরে এসে''ভি সাইন'' দেখানোটা উত্তেজিত করে তোলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের। উত্তেজিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা এসে জড়ো হয় শাহবাগে এবং কাদের মোল্লার ফাশি দাবী করে। দিন দিন এই আন্দোলন জোড়ালো হতে থাকে। যুদ্ধপরাধীর ফাশি দাবীর পাশাপাশি শুরু হয় দুর্নীতিবাজ সরকারের বিরুদ্ধে নানান অভিযোগ উত্থাপন। সরকারের মন্ত্রী মহাদয় মঞ্চে গেলে তাকে টেনে নামানো হয়। প্রাথমিকভাবে ছাত্রলীগের নেতা নেত্রীদের মঞ্চের ধারে কাছেও ঘেষতে দেয়া হয়নি। হঠাৎই অগ্নি স্ফুলিঙ্গের মত একটা সরকারী বিরোধী আন্দোলনের পরিস্থিতি তৈরী হয়। কিন্ত খুব দ্রুততার সেই আন্দোলন অত্যন্ত দক্ষতার সাথে ছিনতাই করে ছাত্রলীগ। এরপর সেটা পরিনত হয় একটা বিরিয়ানী খাওয়ার পার্টিতে।
০৬ ই মার্চ, ২০২২ দুপুর ২:০৬
আশাবাদী অধম বলেছেন: আপনার মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ। এত সহজে বিষয়টি বলা যাচ্ছে না। যেভাবেই বিশ্লেষণ করেন না কেন কিছু প্রশ্ন থেকে যায়। যেমন আদালত কেন ফাঁসি না দিয়ে যাবজ্জীবন দিল? তাহলে কি সরকারের সাথে কোন আপোষ হয়েছিল? আর এখানে পোস্টে উল্লেখিত সুরঞ্জিত সেনগুপ্তর মন্তব্যটি প্রণিধানযোগ্য সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত এলোমেলো কথা বলা লোক ছিলেন না। আমার ধারণা তিনি উৎস থেকেই পরিকল্পনাটি জেনেছিলেন এবং মুখ ফসকে বলে ফেলেছিলেন।
৮| ০৬ ই মার্চ, ২০২২ সকাল ৯:৩৮
ডার্ক ম্যান বলেছেন: এটা পূর্ব পরিকল্পিত ছিলো। তবে সরকার জানতো না। এ মঞ্চের ক্ষেত্র প্রস্তুত করা হচ্ছিলো ২০০৪ সালের মাঝামাঝি থেকে।
০৬ ই মার্চ, ২০২২ দুপুর ২:১১
আশাবাদী অধম বলেছেন: আপনার সাথে একমত যে এ মঞ্চের ক্ষেত্র প্রস্তুত করা হচ্ছিল অনেক আগে থেকে।
৯| ০৬ ই মার্চ, ২০২২ সকাল ৯:৫৮
বিটপি বলেছেন: পাকি পার্লামেন্টে শোক প্রস্তাবের ব্যাপারটা কিভাবে দেখেন? এটাও কি নেপথ্য কারগরদের কাজ? পাকিরা কি এই কাজ করে কাদের মোল্লার অপরাধ আরো 'সন্দেহাতীত' করে তুললো না? জামায়াত নেতারা কি পাকি পার্লামেন্টের এই আচরণ পজিটিভলি নিয়েছে?
এদেশের রাজনীতিতে সক্রিয় হবার পর বিভিন্ন ইস্যুতে জামায়াত নেতারা পাকিস্তানকে এড়িয়ে যাবার চেষ্টা করেছে। তারা নিজেরাও কখনও পাকিস্তানে যায়নি, বা পাকিস্তানের কাউকে আমন্ত্রণও করেনি। তারপরেও তাদের দুঃখে পাকিস্তানী পার্লামেন্টে শোক উঠানোর উদ্দেশ্য কি ছিল? অবশ্যই কথিত এই আন্দলনকে 'বেগবান' করা ছাড়া আর কোন উদ্দেশ্য ছিলনা
০৬ ই মার্চ, ২০২২ দুপুর ২:১৮
আশাবাদী অধম বলেছেন: @বিটপি আপনার মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ। আসলে আমি ভিতরের খবর জানি না। আমার জ্ঞানে যে বিষয়গুলো ধরা পড়েছে তার আলোকে কিছু যোগ বিয়োগের চেষ্টা করেছি।
তবে উক্ত শোক প্রস্তাব সম্পর্কে আমার ধারণা হচ্ছে এটা তারা সরল বিশ্বাসেই করেছিল। মূলত যুদ্ধাপরাধীদের বিচার এবং পরবর্তীতে গড়ে ওঠা শাহবাগ আন্দোলনের সক্রিয় খেলোয়াড় ছিল আমাদের পার্শ্ববর্তী স্বামী রাষ্ট্র। আর ওই রাষ্ট্রের বিরোধিতা থেকেই মূলত তারা কাজটি করেছিল বলে প্রতীয়মান হয়।
০৬ ই মার্চ, ২০২২ দুপুর ২:৫১
আশাবাদী অধম বলেছেন: প্রতিউত্তর দেয়ার পরে পুনরায় সংবাদটি যাচাই করলাম। মূলত পাকিস্তান সংসদে শোক প্রস্তাব করা হয়েছিল ২০১৩ সালের ডিসেম্বর মাসে আব্দুল কাদের মোল্লার ফাঁসি কার্যকর করার পর। ততদিনে শাহবাগ আন্দোলনের প্রয়োজনীয়তা ফুরিয়েছে। সুতরাং এ ঘটনার সাথে শাহবাগ আন্দোলনের নেপথ্য কারিগরদের যুক্ত থাকার সম্ভাবনা খুবই কম।
১০| ০৬ ই মার্চ, ২০২২ সকাল ১১:১৮
রবিন.হুড বলেছেন: আমার মনে হয় শাহবাগ আন্দোলনের শুরুটা হয়েছিল স্বতস্ফুর্তভাবে এবং পরবর্তীতে পরিকল্পিতভাবে গাতপথ পরিবর্তন করা হয়েছে। কাদের মোল্লার ফাাসির দাবীতে আন্দোলন করতে সামুতেই প্রথম লেখা হয়েছিল সকলকে শাহবাগে আসতে ।
০৬ ই মার্চ, ২০২২ দুপুর ২:২১
আশাবাদী অধম বলেছেন: মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ। এ আন্দোলন সফল করার দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল ব্লগারদের। সুতরাং শাহবাগে জড়ো হওয়ার প্রথম আহবান ব্লগ থেকে আসবে এটাই স্বাভাবিক।
১১| ০৬ ই মার্চ, ২০২২ সকাল ১১:৪২
জিয়াউর রহমান ফয়সাল বলেছেন: এই আন্দোলনের জন্যে আমি ৪র্থ সেমিস্টারেই ভার্সিটি ড্রপ দিয়েই চায়না চলে যাই, খুব বাজে অবস্থা ছিল, আমি কতবার মরতে মরতে বাচছি। বনানীর কাকলি তে আমার একটু সামনে কারা যেনো বোমা মারে, আরো একবার বাসে আগুন লেগেছিল,বাসের জানালা দিয়ে লাফ দিয়েছিলাম।
০৬ ই মার্চ, ২০২২ দুপুর ২:২৫
আশাবাদী অধম বলেছেন: ধন্যবাদ।এখন যেখানে আছেন সেখানে ভালো থাকুন এই কামনা রইলো।
১২| ০৬ ই মার্চ, ২০২২ সকাল ১১:৪৫
জিয়াউর রহমান ফয়সাল বলেছেন: দেশে এই নিয়ে দু তিন টা রেবেলিয়ান আন্দোলন হল, শাহবাগ, তারপর রোড এক্সিডেন্ট। প্রতিবারই ভাবি যে হয়ত এইবার নতুন কিছু আসবে নতুন কোনো পরিবর্তন আসবে, কিন্তু প্রত্যেকবারই হতাশ হই।
০৬ ই মার্চ, ২০২২ দুপুর ২:২৮
আশাবাদী অধম বলেছেন: কোটাবিরোধী আন্দোলন, এবং নিরাপদ সড়ক চাই আন্দোলন ছিলো সতস্ফুর্ত কিন্তু শাহবাগ ছিলো পূর্বপরিকল্পিত।
১৩| ০৬ ই মার্চ, ২০২২ বিকাল ৩:৩৬
নীল আকাশ বলেছেন: সত্য বয়নাএর জন্য অভিনন্দন। সবাই সত্য বলতে সাহস পায় না। আপনি পরেছেন। মিথ্যা কথা ইতিহাসের পাতায় কখনোই চাপা থাকে না। আজ না হয় কাল প্রকাশ পাবেই।
০৬ ই মার্চ, ২০২২ বিকাল ৫:০৮
আশাবাদী অধম বলেছেন: আপনাকে আন্তরিক ধন্যবাদ পাঠ ও মন্তব্যের জন্য।
১৪| ০৬ ই মার্চ, ২০২২ বিকাল ৩:৩৮
মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন:
নতুন করে উত্তাল দিন দেখেছে বাঙালী শাহবাগে।
০৬ ই মার্চ, ২০২২ বিকাল ৫:১২
আশাবাদী অধম বলেছেন: তাতো অবশ্যই। কিন্তু সেটার ছক কবে, কোথায় কাটা হয়েছিল সেটাই প্রশ্ন।
১৫| ০৬ ই মার্চ, ২০২২ বিকাল ৫:৩৯
এল গ্যাস্ত্রিকো ডি প্রবলেমো বলেছেন: আওয়ামী লীগ কি নিশ্চিত ছিলো যে কাদের মোল্লাকে ফাঁসি না দেয়ার কারণে শাহবাগে এইরকম গণ আন্দোলন হবে?
যদি আন্দোলন না হইতো, তাহলে কি কাদের মোল্লার ফাঁসি হইতো?
কাদের মোল্লার ফাঁসি হওয়াতে আপনি কি নাখোশ?
০৬ ই মার্চ, ২০২২ সন্ধ্যা ৬:৫৭
আশাবাদী অধম বলেছেন: ধন্যবাদ। আপনি আমার সম্পূর্ণ লেখা মনযোগ দিয়ে পড়েছেন কিনা জানিনা। আমি যা বলতে চাই তা স্পষ্ট। ৪ ফেব্রুয়ারি জামাতকে রাজপথে সুযোগ দেয়া, পরের দিন আব্দুল কাদের মোল্লাকে যাবজ্জীবন দেয়া এবং এর প্রতিক্রিয়ায় শাহবাগে আন্দোলন জমানো তিনটা ঘটনা একই সূত্রে গাঁথা এবং এর নেপথ্যে কুশীলবও একই। এখন সেটা আওয়ামী লীগ নাকি অন্য কেউ সেটা জানতে আরও অপেক্ষা করতে হবে।
১৬| ০৬ ই মার্চ, ২০২২ সন্ধ্যা ৬:১৫
রাজীব নুর বলেছেন: লেখক বলেছেন: আমার এই লেখার মূল আলোচ্য বিষয়, 'আন্দোলনটি ছিলো পূর্বপরিকল্পিত' এ বিষয়ে আপনার মত কি?
না এই আন্দোলন পরিকল্পিত ছিলো না। প্রয়োজন এবং সময় এই আন্দোলন হয়েছে।
সবচেয়ে বড় কথা ছোট বড় দুঃখী গরবী সবাই এই আন্দোলনকে সাপোর্ট করেছে।
১৭| ০৬ ই মার্চ, ২০২২ সন্ধ্যা ৭:০০
জাদিদ বলেছেন: আপনার পোস্ট পড়লাম। মজার ব্যাপার হচ্ছে একটা সময় আমি প্রচন্ড ছাগু বিদ্বেষী ছিলাম এবং ছাগুদের প্রতি সহানুভূতি প্রদর্শন করে এই টাইপ কিছু দেখা মাত্রই প্রচন্ড মুখ খারাপ করতাম। মুখ খারাপের যুক্তি ছিলো - দেশের সাথে গাদ্দার এবং তাদের সমর্থক ও সাথীদের সাথে যুক্তি তর্কে নামা মানে সময় নষ্ট এবং তাদেরকে সম্মান দেয়া। ছাগু্রা তো ঘৃণার পাত্রই ছিলো তবে সবচেয়ে ঘৃন্য ছিলো ছুপা ছাগুরা। একটা সময় ব্লগে আওয়ামী এবং বিএনপি সবাই নির্বিশেষে ছাগুদের ঘাপাইত। শাহবাগ নিয়ে আমার একটাই আফসোস। শাহবাগ আন্দোলনটি রাজনীতিকরন করার কারনে ব্লগারদের এই ঐক্য নষ্ট হয়েছে এবং কিছু কিছু ছুপা ছাগু নিজেদেরকে 'বিএনপি' সাজিয়ে বিএনপি সম্পর্কে মানুষকে ভুল ধারনা দিয়েছে। পাশাপাশি, বিএনপির হাইকমান্ডের দুরদর্শীতার অভাবে শাহবাগ আন্দোলনের সুফলকে তারা ক্যাশ করতে পারেনি বিধায় - আজকে শাহবাগ বিরিয়ানীখোরদের জায়গা। তবে আমি এখনও প্রচন্ড ছাগু বিদ্বেষী থাকলেও, আগের মত আর তেমন রিএ্যাক্ট করি না।
সত্য বুঝতে হলে যিনি সত্য বলছেন বলে দাবি করছেন তার প্রেক্ষাপটি আগে বুঝতে হবে। তারপর সেই সত্যের আসল গভীরতা টের পাওয়া যাবে। যেমন ধরুন সাঈদী সাহেবকে যারা চাঁদে দেখেছেন বা কিছুটা কম সৌভাগ্যবান হিসাবে যারা তার জন্য মক্কা বা মদীনার হুজুরদের ব্যানার হাতে মানববন্ধন করতে দেখেছেন তাদের সত্যই প্রকৃত সত্য।
শাহবাগ আন্দোলন সম্পর্কে আমি একটা বাক্যই বলব - শাহবাগ আন্দোলনকে রাজনীতিকরন করার কারনে বাংলাদেশের মেরুদন্ডকে অদৃশ্যভাবে ভেঙ্গে দেয়া হয়েছে।
১৮| ০৬ ই মার্চ, ২০২২ সন্ধ্যা ৭:১৭
জাদিদ বলেছেন: আপনাকে ধন্যবাদ পোস্টের জন্য, আমার জন্য কিছু কাজ সহজ হবে।
০৬ ই মার্চ, ২০২২ রাত ৯:১৮
আশাবাদী অধম বলেছেন: আমার তো এ নিয়ে আরো কিছু লেখার সখ ছিল। আপনি যেহেতু ব্লগের মডু তাই আপনার কাছেই জানতে চাচ্ছি লেখা ঠিক হবে কিনা? নাকি ব্যান খাওয়ার সম্ভাবনা আছে?
১৯| ০৭ ই মার্চ, ২০২২ রাত ১২:২০
জাদিদ বলেছেন: দেখেন দেশের এক শ্রেনীর মানুষের কাছে বাঁশের কেল্লা একটি হালাল মিডিয়া এবং সত্যের কন্ঠেস্বর!
সেখানে আপনি আর কি বা লিখবেন? লিখুন সমস্যা নেই। আমরা পড়ি। আপনি তো বিশ্লেষন করছেন।
শুধুমাত্র ব্লগ নীতিমালা ও আদর্শের জায়গা থেকে যা সাংঘর্ষিক তার বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা নিবো।
০৭ ই মার্চ, ২০২২ সকাল ৭:০৫
আশাবাদী অধম বলেছেন: ধন্যবাদ। তাহলে আপনি যে বললেন আপনার জন্য কিছু কাজ সহজ হবে সেগুলো কি?
২০| ০৭ ই মার্চ, ২০২২ রাত ১২:৪৮
গরল বলেছেন: এখন আর কি করার আছে, যাদের হারিয়েছেন তাদের কে তো আর ফিরে পাবেন না, কান্নাকাটি করে নিজের শরীরের ক্ষতি করবেন না। দোয়া করেন যাতে তাদের পরকালে সবচেয়ে কম শাস্তি দেওয়া হয়।
০৭ ই মার্চ, ২০২২ সকাল ৭:০৯
আশাবাদী অধম বলেছেন: আমি কি করব না করব তা নিয়ে টেনশন করে আপনার নিজের ঘুম নষ্ট করা ঠিক হবে না।
২১| ০৭ ই মার্চ, ২০২২ রাত ৩:২১
হাসান কালবৈশাখী বলেছেন:
আওয়ামীলীগ শাহবাগ আন্দোলনকে নিজেদের পক্ষে নিয়েছিল। রাজনীতিকরন করেছিল, বা আপনাদের ভাষায় আন্দোলন ছিনতাই করেছিল।
তা আপনারা তখন কি করেছিলেন?
আপনারা কি কখনো আন্দোলনটিকে নিজেদের পক্ষে নেয়ার চেষ্টা করেছিলেন? না কি আপনারা ও আপনাদের পক্ষের জাতিয়তাবাদি নেতারা বোবার অভিনয় করে আন্দলনের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত আন্দোলনটি নস্যাৎ করার সর্বাত্বক চেষ্টা করে গেছেন শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত।
আওয়ামীলীগ কি আন্দোলনটি ছিনতাই করে আন্দলনের মুল দাবি, ভিত্তি মুল আদর্শ একচুল পরিবর্তন করেছিল?
না কি আন্দোলনের মুল দাবিগুলো কার্যকর করে আন্দোলনটিকে একটি সফল রূপ দিয়েছিল।
আপনারা আন্দোলন পরিকল্পিত দাবি করছেন। যদিও তার কোন ভিত্তি নেই।
আন্দোলন পরিকল্পিত হলেই বা সমস্যা কি? যদি আন্দোলনের মূল দাবি মুল ভিত্তি মুল আদর্শ সেইম থাকে।
ধন্যবাদ।
০৭ ই মার্চ, ২০২২ সকাল ৭:১০
আশাবাদী অধম বলেছেন: মেরা আওয়ামীলীগ মহান
২২| ০৭ ই মার্চ, ২০২২ ভোর ৪:৩৮
সত্যপথিক শাইয়্যান বলেছেন:
আপনি লিখেছেন যে, 'বড়৷আদালতে' যখন আবার বিচার হবে জামায়াত যুদ্ধপরাধের জন্য দায়ী কি না...সেটা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হবে...
আমার প্রশ্ন--- বড় আদালতে এই নিয়ে প্রশ্ন করা যাবে এই 'প্রত্যাদেশ' কোথা হতে পেয়েছেন?
©somewhere in net ltd.
১| ০৫ ই মার্চ, ২০২২ রাত ১০:৪৫
সোনাগাজী বলেছেন:
শাহবাগে যা হয়েছে, উহার বেশীরভাগই প্ল্যান করে করা হয়েছিলো; মানুষের জন্য কিছু ছিলো না, মানুষ মনে করেছিলো যে, কিছু একটা ঘটতে যাচ্ছে।