নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

পৃথিবী আমার আবাস। মানুষ আমার পরিচয়।

আবীর চৌধুরী

ইলেক্ট্রিক্যাল এন্ড ইলেক্ট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ার

আবীর চৌধুরী › বিস্তারিত পোস্টঃ

মিলাদুন্নবীঃ সকল ঈদের সেরা ঈদ ও মুসলিমদের বড়দিন?!

২২ শে অক্টোবর, ২০২১ রাত ১০:৪২

চট্টগ্রামের সন্তান হয়েও চট্টগ্রামের বেশ কিছু অদ্ভুত কুসংস্কারাচ্ছন্ন ক্ষতিকর বৈশিষ্ট্য নিয়ে আজীবন লজ্জিত ও শংকিত আছি/থাকবো।

এই যে লাখ লাখ মানুষের সমাবেতে ভেসে গেলো মিলাদুন্নবীর দিনে আমার গোটা শহর/জেলা, এটা সবসময় এরকম ছিলো না। এই শো-অফের খেলা, আর তদসংলগ্ন বিভেদ/বৈষম্য আরো বাড়ছে দিনে দিনে। হয়তো এটাই কেয়ামতের অন্যতম নিদর্শন।

এই যে মিলাদুন্নবীর যে জৌলুশ দেখা যায়, তার পেছনে প্রধান কারণ হচ্ছে প্রভাব-প্রতিপত্তি আর অর্থের খেলা। কিরকম?

এখানে মূলত দুই পক্ষঃ আয়োজক ও আগত অতিথি (সাধারণ জনগণ)।

আয়োজকেরা নিজেদেরকে খুবই জনদরদী প্রমাণ করতে চান, ধর্মপরায়ণ প্রমাণ করতে চান। তারা দেখাতে চান- কোন প্রকার অর্থনৈতিক মুনাফা ছাড়াই টাকা ও লোকবল ঢেলে দিয়ে এরকম বিশাল আয়োজনগুলো করছেন। এই আয়োজকদের মধ্যেও আবার তিনটা পক্ষ থাকেঃ- একপক্ষ হচ্ছে নেতৃস্থানীয় রাজনৈতিক বা ব্যবসায়িক শীর্ষ ব্যক্তিসমূহ। দ্বিতীয় পক্ষ হচ্ছে সুবিধাভোগী ধর্মীয় পেশাজীবি মহল। তৃতীয় পক্ষ হচ্ছে- এলাকাবাসীদের মধ্য থেকে বাছাইকৃত প্রতিনিধিবৃন্দ। এই তিনপক্ষ মিলে আয়োজক দল গঠিত।

এরা মূলত সংখ্যার/প্রভাবের খেলা খেলেন। খাওয়া/জমায়েত/উতসব/উস্কানি ইত্যাদির মাধ্যমে জনগণকে চাঙ্গা করে, রক্ত গরম করে, এবং আঞ্চলিক/জাতীয় রাজনীতিতে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে প্রভাবিত করে। অন্যান্য আঞ্চলিক ও জাতীয় কতৃপক্ষও প্রত্যক্ষ-পরোক্ষভাবে এই বিশাল সংখ্যা দ্বারা প্রভাবান্বিত হন। ফলস্বরূপ, সারা বছর ধরে- আয়োজকদের প্রায় প্রত্যেকেই- বিভিন্নভাবে ব্যবসায়িক, রাজনৈতিক, সামাজিক ও পেশাগত ক্ষেত্রে কৌশলগত সুবিধা ও অগ্রাধিকার পেয়ে থাকেন। সমাবেশে সমবেত জনগণের সংখ্যার আধিক্যের কারণে তারা নিজেরা সুবিধাভুক্ত জীবনযাপন করতে থাকলেও- ঐ সমবেত জনতারা শুধুমাত্র এক/দুই দিনের তবারক (বিরিয়ানি/তেহারি) ছাড়া আর কিই ব্যবহারিক সুবিধা পান, সেটা দুর্বোধ্য।

তাহলে, ইসলাম ধর্মে বিন্দুমাত্র উল্লেখ না থাকা সত্ত্বেও- কেন আমজনতার এত বড় অংশ "ঈদে মিলাদুন্নবীর" মত ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতাকে এত সিরিয়াসলি নেয়? এর যৌক্তিক ব্যখা আছে।

প্রথমত হচ্ছে, মানুষ (বিশেষত বাংলাদেশীরা) অতিমাত্রায় সামাজিক। উদ্দেশ্য যতই খারাপ, ভুল বা ফালতু হউক না কেন, যেখানে বেশি সংখ্যায় মানুষ থাকে, সেখানে অন্যরা নিজেদেরকে সম্পৃক্ত করার মাধ্যমে শক্তিশালী অনুভব করতে চায়। এছাড়া জীবনের অনেক ক্ষেত্রে এই জনতারা নিজেদেরকে অমুক সংগঠন, অমুক আয়োজনের অংশ বলার মাধ্যমে সন্তুষ্টবোধ করে।

দ্বিতীয়ত হচ্ছে, মিলাদুন্নবীর প্রবর্তকেরা জীবনের আর কোন সেক্টরে ধর্মীয় বাধ্যবাধকতার উপর জোর দেন না; এমনকি দৈনিক ৫ ওয়াক্ত নামাজের উপরেও গুরুত্বারোপ কতটা করেন- সেটা নিয়ে সন্দেহ আছে। তার চেয়েও বেশি- কে মিলাদুন্নবীকে জোরদারভাবে সমর্থন করে, ও কারা কট্টরভাবে সমর্থন করে না- সেটার উপরেই গুরুত্ব দেওয়া হয় বেশি। ফলস্বরূপ, সমবেত জনতাদের অনেকেই সারাবছর নিয়মিতভাবে কোন ইবাদত-বন্দেগী বা ধর্মীয় বিধিনিষেধ না মানলেও- ঠিক এই দিনগুলোতে এসে সম্পৃক্ত হওয়ার মাধ্যমে নিজেদের ধর্মপালনে পরিপূর্ণতা আনতে চান।

তৃতীয়ত হচ্ছে, খাওয়াদাওয়া ও আনুষঙ্গিক উৎসব। ইবাদত-বন্দেগী ও মানতে কঠিন এরকম নিয়মাবলীর চাইতে- বরাবরই যেকোন মানুষের খানাপিনা ও উৎসব-আনুষ্ঠানিকতাই বেশি প্রিয়। এটা সব দেশ, সব জাতির ক্ষেত্রে সত্যি। সেজন্যই ঘুষ, সুদ, দুর্নীতি, গীবত, এসব বন্ধ হয় না; কিন্তু উৎসবের জন্য পোশাক, খাবার ও অন্যান্য পণ্যের বিপণন বাড়তেই থাকে- এমনকি দ্রব্যমূল্য নিয়েও ব্যবসায়ীরা ক্রেতাদের ব্ল্যাকমেইল করতে থাকে উৎসবকে কেন্দ্র করেই। এরাই কিনা আবার ধর্মপ্রাণ মুসলিম দাবী করতে চায় নিজেদেরকে!

মন্তব্য ৯ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৯) মন্তব্য লিখুন

১| ২২ শে অক্টোবর, ২০২১ রাত ১১:১৫

জিয়াউর রহমান ফয়সাল বলেছেন: ঠিক।

২| ২২ শে অক্টোবর, ২০২১ রাত ১১:১৫

নুরুলইসলা০৬০৪ বলেছেন: আমাদের আনন্দের দিন অনেক কম,আরো বাড়ানো দরকার।মহরের আনন্দ এখন আর কেউ পালনই করে না।এক সময় অনেক আনন্দের সাথে পালন করা হতো।খুঁজে খুঁজে বের করতে হবে চার ফলিফার মৃত্যু দিবস।আনন্দের সাথে পালন করতে হবে।খালেদা জিয়ার যে কয়টা জন্মদিন আয়ে সবগুলোই জাঁকজমকের সাথে পালন করা হউক।

৩| ২২ শে অক্টোবর, ২০২১ রাত ১১:৫১

শূন্য সারমর্ম বলেছেন:

চট্রগ্রামের উল্টাপাল্টা ব্যাপারগুলো নিয়া কতগুলো ভলিউমে বই বের করা যাবে?

৪| ২৩ শে অক্টোবর, ২০২১ দুপুর ১২:১৪

*আলবার্ট আইনস্টাইন* বলেছেন: চট্টগ্রামে দুর্নীতিবাজ ও নবী বিরোধীদের চুলকানি বেড়ে গেছে নাকি????

৫| ২৩ শে অক্টোবর, ২০২১ দুপুর ১:০৬

অক্পটে বলেছেন: ইসলামকে একা দোষ দেয়ার কোন মানে নেই। এতে করে আপনি কারো কাছে শুদ্ধতম হবার ভানই শুধু করে যেতে পারবেন। এই পৃথিবিতে ধর্মের সবচেয়ে বড় এবং ব্যয়বহুল জৌলুস পালন করা হয় ভারতে এবং খৃস্টানদের বড়দিনে। মুসলমানরা ইদানিং যা পালন করছে তা বাড়াবাড়ি রকমের, অকারণ পালন করা। কিন্তু যদি বলি অকারণ তাহলে কিছু অসত্য বলা হবে। আপনার এই লেখার ৫নং প্যারাটি খুব ভাল লিখেছেন।

ধর্মপালন এবং এর জৌলুস অতিমাত্রায় বাড়ানো এর পেছনে কোন সৎ উদ্দেশ্য নেই। শুধুই ধোকা আর ধোকা। সবই ধর্মের এজেন্টদের কারসাজি। কোন একটা দেশে ধর্মের এসব পাগলামী যখন দেখবেন তুঙ্গে তখন বুঝে নিতে হবে শাসকগোষ্ঠির মদদে এসব পানি পাচ্ছে।

ধর্ম সাধারণ মানুষের কাছে সত্য বলে বিবেচিত তাই ধর্মের যৌক্তিক অযৌক্তিক সকল বিষয় এরা বিনা বাক্যে বিশ্বাস করে। জ্ঞানীর কাছে ধর্ম মিথ্যা হিসেবে বিবেচিত আর সাশকগোষ্ঠির কাছে তা ফায়দা লুটবার হাতিয়ার।

সকল ধর্মের একই অবস্থা।

৬| ২৩ শে অক্টোবর, ২০২১ বিকাল ৩:০৪

বিটপি বলেছেন: ঈদে মিলাদুন্নবী কোন ধর্মীয় উৎসব নয়। আশেকে রাসুল নামধারী কিছু উজবুক কেবল জাগতিক স্বার্থে একে উৎসবের রূপ দিয়েছে। মাইজভাণ্ডারীর মত গান বাজনাওয়ালা আর রাজারবাগীর মত সুন্নত নিয়ে ব্যবসা করা বেকুব ছাড়া মিলাদুন্নবী নিয়ে কারো কোন মাথাব্যাথা নেই।

৭| ২৩ শে অক্টোবর, ২০২১ রাত ১০:৩১

*আলবার্ট আইনস্টাইন* বলেছেন: ধর্মীয় জ্ঞানে অগাধ পাণ্ডিত্যের অধিকারী শাইখুল হাদিস কুরানে মুফাসসির মাওলানা বিটপী ওয়াজ শুরু করে দিয়েছেন।

৮| ২৪ শে অক্টোবর, ২০২১ সকাল ১০:২৪

বিটপি বলেছেন: @আলবার্ট, তাতে আপনার বাটের (পশ্চাদ্দিকের) কোথায় জ্বালাপোড়া হচ্ছে, জানতে পারি কি?

৯| ১৬ ই নভেম্বর, ২০২১ সকাল ১০:৩৫

খায়রুল আহসান বলেছেন: কোন কিছু নিয়েই বাড়াবাড়ি ভালো নয়। ঈদে মিলাদুন্নবী নিয়ে আজকাল খুব বাড়াবাড়ি হয়। আবার, খুশির এই দিবসটিকে পালন করা তো দূরের কথা, আলাপ আলোচনায় শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করার রেওয়াজটাকেও বিদা'ত ইত্যাদি বলে ফুৎকারে উড়িয়ে দেয়ার প্রবণতাও লক্ষ্য করার মত। তবে আপনার পর্যবক্ষণগুলো মৌলিকতার কারণে অনেকাংশে ভালো লেগেছে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.