'মানুষ'

১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ ভোর ৪:০৩

ছোট্ট একটা রুম।সেই ছোট্ট রুমে ছোট্ট তিথি দিনের পর দিন কাটিয়ে দেয় নি:সঙ্গ।দরজার কপাট খোলে না,জানালার কাচ সরিয়ে দেখে না চাদ উঠেছে কিনা,গলির মোড়ের বখাটে ছেলেটা এখনো তার অপেক্ষায় দাড়িয়ে থাকে কি না......

কি দরকার?সব প্রয়োজন কি শেষ হয়ে যায় নি?এক চিলতে রোদ তার রুমে ঢুকবে না,এক মুঠো জোছনা তার কোলে পরবে না।এটাই তিথির একমাত্র চাওয়া।তার অন্ধ জিবন আলোকিত করার মত ক্ষমতা এদের নেই।যার ছিল যে যেহেতু নেই তাই বাকি সব আজ মিথ্যে।

তিথি এখন ভুত পেত্নিদের ছবি আকে।রক্ত মাংস খাওয়া ভূত পেত্নীদের ভয়ানক ভয়ানক সব ছবি।এই ছবি গুলো ই যেন তার অতীত,তার জীবন তার বেচে থাকার একমাত্র অবলম্বন।

মানুষটা আর ফিরবে না।অতীত আকরে ধরে পরে থাকবে তিথি।অন্য কোন যুবকের কাধে মাথা রেখে আর স্বপ্ন দেখবে না।অন্য কোন যুবকের বুকে মাথা গুজে আর নিবেন আশ্রয়।

তিথি আর মানুষের সাথে কথা বলে না।কুকুরের সাথে কথা বলে,শিয়ালের সাথে কথা বলে,কাকদের সাথে কথা বলে।রুটি ছিড়ে ছিড়ে খাওয়ায়।

-'কি রে?সে ফিরবে?ফিরবে?কোনদিন ফিরবে?কেমন আছে সে?'

তিথির মনে হয় মানুষের বদলে এই কুকুরদের ই ভালবাসা উচিত ছিল।অন্তত তার পাশে আজীবন থাকতো।বিশ্বাস করতো।নাকি এরাও ভালবাসা পেয়ে চলে যেত?ভালবাসার মানুষগুলো হারায় যায় কেনো?কেনো?কেনো?

সবাই স্বার্থপর!সবাই…তিথি নিজেও স্বার্থপর।নিজেরকষ্ট অন্য কাউকে দিবে না।কখনো দিবে না।

তিথির চোখ দিয়ে পানি গড়িয়ে পরে।তিথি কাদে।প্রতিটা দিন কাদে।প্রতিটা রাত কাদে।তার চোখের পানি কেউ মুছে দেয় না।কেউ না।যেন তা নিরবে নিরবে গড়িয়ে পরার জন্যই।আলতো স্পর্শে মুছে দেয়ার জন্য নয়।

তিথি একটা ছবি আকছে।ভূতের ছবি।ভুতটা মানুষের হৃদ্পিন্ড চিবিয়ে চিবিয়ে খায়।মন চিবিয়ে চিবিয়ে খায়।তিথি ভুতটার নাম দিয়েছে-'মানুষ'

পুনশ্চ-যে ছবিটা দেখতে পাচ্ছেন সেটা আসলেই তিথির হাতে আর্ট করা।তাকে বলেছি ছবিটা ছিড়ে ফেলতে।কারন আমি চাই না তাকে সবাই চিনে ফেলুক।চিনে ফেললে তাকে সবাই কষ্ট দিবে।তিথিরা আজিবন কষ্টে থাকে।খুব কষ্টে থাকে।

আপনারা তিথিদের সন্ধান পাবেন না।তিথিদের সন্ধান শুধুমাত্র কাক মানবরা পায়।কা -কা- কা

০ টি +০/-০