নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

প্রজন্মের কবি

প্রজন্মের কবি › বিস্তারিত পোস্টঃ

'তিতলীর পছন্দের ছেলে'--পর্ব-৫ (শেষ পর্ব)

০৮ ই মে, ২০১৪ বিকাল ৫:৫২

তিতলী কাদছে।বিদায়ের সময় বিয়ের কনে কাদবে এটাই তো স্বাভাবিক।মা কে ছেড়ে যাওয়ার কষ্ট,আদরের পোষা বিড়াল ছেড়ে যাওয়ার কষ্ট,বারান্দার পরিচিত কোনাটাকে ছেড়ে যাওয়ার কষ্ট,পরিচিত গ্লাস,প্লেট কে ছেড়ে যাওয়ার কষ্ট।সব কিছুর প্রতি যেন কি অপার মায়া।যেটার উপর মায়া বেশী সেটাতে কষ্ট তত বেশী।একটা কুকুর সাথে থাকলেও তার প্রতি মায়া জন্মায়।আর সেখানে যদি হয় একজন জলজ্যান্ত মানুষ?এখন প্রেমিক?ভালবাসার মানুষ?যার হাত ধরে একদিন হেটে বেড়ানো ছিল অভ্যাস।সেই হাত যখন ধরে থাকে অন্য কোন হাত তখন পুরো পৃথিবী কি এক সময়ের জন্য হলেও থমকে দাড়ায় না?যার ইশারায় সব কলকাঠি নড়ে সেই মহাত্মা কি একটিবার কোমল সুরে বলে না?আহারা! আহারে!



বিয়ে বাড়ীর সবাই ব্যাস্ত কনে কে নিয়ে।তার কান্না থামানোর চেষ্টা সবার।সব মেয়ের আসল বাড়ী শ্বশুড় বাড়ী।সবাইকেই চলে যেতে হবে মা।আর কেদো না…আর ও কত সব তোতাপাখির বুলি।আরে অবুঝের দল তিতলী কেন কাদছে তোমরা জান না।জানবেও না।তোমরা বুঝবেও না।তিতলীর পৃথিবী ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে।তিলে তিলে গড়ে তোলা পৃথিবী ধংস হয়ে যাওয়ার কষ্ট তোমরা বুঝবে না।ওই যে সামিয়ানার পিছে দাড়িয়ে একটা ছেলে ডুকরে ডুকরে কাদছে।কেউ কি একবার লক্ষ্য করবে?কেউ কি একবার গিয়ে মাথায় হাত বুলিয়ে দিবে?কেউ কি একবার গিয়ে বলবে-বাবা তুমি কাদো কেনো?ছেলেটার কিন্তু কাদার কথা ছিল না।নাবিলের কিন্তু কাদার কথা ছিল না মসাই।



-----------------



-এই ওঠো।ওঠো বলছি।মরার মত ঘুমাচ্ছ ক্যান?

-মরারা ঘুমায় না তিতলী।জিবিতরা ঘুমায়।নিজেকে জিবিত প্রমান করার জন্য ঘুমাচ্ছি

-দাড়াও ঘুম বের করছি।ফ্যান বন্ধ করে দিব

-আচ্ছা দাও।আমার পূর্বপুরুষের হাপানী ছিল।ফ্যানের বাতাস সহ্য করতে পারতেন না।আমার ও শেখা উচিত।

-তাও তুমি উঠবা না?

-না।

- পানি এনে গায়ে ঢেলে দিব

-আচ্ছা দাও।বাথরুমে লাল বালতিটা ভর্তি করে এনে ঢেলে দাও।গোসলটাও হয়ে যাক।বিছানায় গোসল! আহ ভাবতেই ভাল লাগছে।



তিতল্লি বাথরুম থেকে এক বালতি পানি এনে নাবিলের গায়ে ঢেলে দিল।নাবিল নির্বিকার।শুয়েই আছে।ভাবখানা এমন যে এমন ঘটনা সপ্তাহে দু চারবার ঘটে।



- দাড়াও।রান্না ঘর থেকে বটি নিয়ে এসে তোমার গলা কাটছি

- বড় বটি টা নিয়ে আসি ও।ছোটটাতে ধার কম



তিতলী রান্না ঘরের দিকে ছুটে গেল।নাবিল উঠে খাটের তলে লুকালো।মেয়ে মানুষকে বিশ্বাস নাই।তিতলীকে আর ও বিশ্বাস নাই।



তিতিলী সত্যি সত্যি বটি নিয়ে এসেছে।এসে দেখে নাবিল নাই।

নাবিল খাটের তল থেকে বলে-টুকি

-তুমি আমার সাথে ফাজলামো কর?

-জ্বি করি।তোমার সাথে ফাজলামো করবো না তো কার সাথে করবো?কাজের বেটি রহিমার সাথে?যে ব্লাউজের বোতাম ঠিক মত লাগাতে পারে না তার সাথে?

-তোমার নজর এত খারাপ ক্যান?

-আমি খারাপ মানুষ।তাই আমার নজর ও খারাপ।ভুল মানুষকে বিবাহ করেছো সুন্দরী।তোমার জিবন শেষ।

- আচ্ছা দেখা যাবে কার জিবন শেষ।যখন ঘুমাবা গলা টিপে মেরে ফেলবো

- গলা টিপে মারতে পারবে না।এক কাজ করিও খাবারের সাথে ইন্দুর মারার বিষ দিয়ে মেরে ফেলো

-ইন্দুর কেমন ভাষা?

- বাংলা ভাষা

-তোমার মুখের ভাষা কোনদিন ও ঠিক হবে না।তোমাকে আমি খুন করে ফেলবো!

- কি দিয়ে খুন করবা কিছু ঠিক করেছো?বটি না ইন্দুর মারার বিষ?



উফ! আর লিখতে পারবো না।এদের ঝগড়া আজিবনে শেষ হবে না।আমিও চাই শেষ না হোক।অনন্ত কাল ধরে চলুক।ঝগড়া শেষ হয়ে যাওয়া মানেই তো ভালবাসা শেষ হয়ে যাওয়া।



তিতলী নাবিলের কিভাবে কি হয়েছে আমি জানি না।জানতেও চাই না।আপনারাও জানতে চাইবেন না।আমি বলতে পারবো না।পৃথিবীতে অনেক মিরাকল ঘটে।এটাও হয়তো একটা মিরাকল।তারা সুখে আছে।সুখে থাক।কিছুদিন পর তাদের একটা ফুটফুটে বাচ্চা হোক।বাচ্চাটা পুরো বাড়ী হামাগুড়ি দিয়ে ঘুরে বেরাক।নাবিল ঘোড়া সেজে তার বাচ্চাকে সারাবাড়ি ঘুড়িয়ে নিয়ে বেরাক।বিশেষ দিনে তারা রিকশায় করে ঘুরে বেরাক।আর নাবিল তিতলীর সাথে সারাজিবন ঝগড়া করুক।



সত্যি বলছি আমি কিচ্ছু জানি না।সত্যি আমি কিচ্ছুই জানি না কিভাবে কি হল।

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ০৮ ই মে, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:১৫

মদন বলেছেন: বাহ

০৮ ই মে, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:১১

প্রজন্মের কবি বলেছেন: ধন্যবাদ

২| ২২ শে মে, ২০১৪ সকাল ৭:২৪

দ্বীন মুহাম্মদ সুমন বলেছেন: সবগুলো পর্ব পড়েছি। আপনি অসাধারণ লিখেন। খুব খুব খুব ভাল লাগল পড়ে।

২২ শে মে, ২০১৪ সকাল ১১:০৪

প্রজন্মের কবি বলেছেন: অসংখ্য ধন্যবাদ

৩| ২২ শে মে, ২০১৪ দুপুর ২:৫৯

অদ্ভুত_আমি বলেছেন: ভালো লেগেছে সব কটি পর্বই ।

২২ শে মে, ২০১৪ বিকাল ৩:২৭

প্রজন্মের কবি বলেছেন: ধন্যবাদ

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.