নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

প্রজন্মের কবি

প্রজন্মের কবি › বিস্তারিত পোস্টঃ

তিতলীর পছন্দের ছেলে(সকল পর্ব )

৩১ শে মে, ২০১৪ বিকাল ৪:২৬

(পর্ব-১)





-তুমি কোথায়?

-টয়লেটে

-টয়লেটে মানে?টয়লেটে কি কর?

-ভাত খাই

-ভাত খাও মানে?টয়লেটে মানুষ ভাত খায়?

- টয়লেটে মানুষ কি করে এটা যখন জানই তাইলে জিজ্ঞাসা কর ক্যান?হাগা মুতা করি

-ছি।বস্তির ছেলেদের মত কথা বল ক্যান?

-মনের ভাব প্রকাশ করা নিয়ে কথা।কার মত বলতেছি এটা গুরুত্বপূর্ণ না।

-বেশি কথা বল তুমি।তোমার না আজকে আমাদের বাসায় আসার কথা?কখন আসবা?

-হাগা মোতা শেষ হলেই আসবো

-আবার এই ভাষা?খবরদার তুমি আসবা না।তোমার মত ছেলের থাকা উচিত পাগলা গারদে।তোমার সুচিকিৎসা প্রয়োজন।তুমি যদি আজকে আমাদের বাসায় আস তাইলে আমি সুইসাইড করবো

-আচ্ছা দড়ি নিয়ে যাব।নাইলনের দড়ি।ঘরের রেলিং ভাঙবে তবু দড়ি ছিড়বে না।ইহা এমন ই শক্ত জিনিস।



তিতলী কল কেটে দিয়েছে।নাবিল এখন টয়লেট থেকে বের হবে,শেভ করবে।তারপর সেলুনে গিয়ে চুল ছোট করবে।ভদ্র সাজার চেষ্টা।তারপর নাইলনের একটা দড়ি কিনবে।প্রেমিকা মরতে চায়।তাকে সে সাহায্য করবে না তো কে করবে?



রাবেয়া বেগম চোখ সরু করে তার সামনে বসে থাকা ছেলেটার দিকে তাকিয়ে আছেন।ছেলেটার মাথা ন্যাড়া করা।গাল ভর্তি দাড়ি।পাবনা ফেরত পাগলের মত চেহারা।পাগলেরা মাথা ন্যাড়া করতে ভালবাসে।মাথায় হাওয়া বাতাস বেশি লাগে।এই জন্য।



-বাবা তোমার নাম যেন কি?

-চাচী নাবিল।

- ভাল নাম কি?

-চাচী এটাই আমার ভাল নাম।আর একটা খারাপ নাম আছে।বল্টু।হাইট কম তো তাই বল্টু।হাইট আর একটু কম হলে বিপদে পরতাম।মানুষ আলপিন বলে ডাকতো।

-হাতে কি তোমার?দড়ি?

-জ্বী চাচীজান।তিতলীর জন্য এনেছি।খুব ই শক্তি দড়ি।বিরানব্বই টাকা দিয়ে খরিদ করেছি।তিতলী আত্মহত্যা করতে চায় এই জন্য আনলাম।ভাল করেছি না?



রাবেয়া বেগম দীর্ঘস্বাস ছাড়লেন।তার মেয়ের পছন্দের ছেলে এ কিভাবে হয়?কোথাও কোন ভুল হচ্ছে।মারাত্মক ভুল।যে ছেলে প্রেমিকার সুইসাইডের জন্য দড়ি নিয়ে আসে সে তো বদ্ধ উন্মাদ।



ফ্যানের বাতাস মাথায় ভালই লাগছে নাবিলের।একদম ডাইরেক্ট মগজে হিট করছে।মাথা ন্যাড়া করা খুব ই বুদ্ধিমানের কাজ হয়েছে।আচ্ছা তিতলী আসছে না কেনো?সুইসাইড কি করে ফেলেছে?সুইসাইড করলে এই দড়ি দিয়ে কি হবে?দড়ি তো আর ফেরত নিবে না।বিরানব্বই টাকা পুরাই জলে যাবে।



******************



(পর্ব-২)



-তুমি মাথা ন্যাড়া করে আমাদের বাসায় এসেছিলে কেনো?

- কেনো মাথা ন্যাড়া করে তোমাদের বাসায় যাওয়া নিষেধ নাকি?গেটে লেখা ছিল কুত্তা প্রবেশ নিষেধ।ন্যাড়া প্রবেশ নিষেধ এটা তো ছিল না

-কুত্তা প্রবেশ নিষেধ লেখা ছিল না।লেখা ছিল কুকুর প্রবেশ নিষেধ।শুদ্ধ ভাষায় কথা বলা ভুলে গেছ তুমি?

- ভাষায় শুদ্ধ অশুদ্ধ বলে কোন কথা নাই।সব কিছুই শুদ্ধ।কুত্তা কুকুর সব ই এক

- বেশি কথা বল তুমি।কথা কম করে বলবা

-আচ্ছা কুত্তা প্রবেশ নিষেধ ক্যানো?

-আবার কুত্তা?

-কুকুর প্রবেশ নিষেধ কেনো গো?

- ছোটবেলায় আমাকে একটা কুকুর কামড় দিয়েছিল এই জন্য বাসায় কুকুর ঢোকা নিষেধ

-কুত্তার কাম ই তো হইল কামড় দেয়া।সে তো ঠিক কাজ ই করছে।অসুবিধা কি?

-আবার ও কুত্তা?তুমি কি ইচ্ছা করে আমার সাথে ফাজলামো কর?

-জ্বী।ইচ্ছা করেই করি।প্রেমিকার সাথে ফাজলামি করবো না তো কার সাথে করবো?কাজের বেটি রহিমার সাথে? যে ব্লাউজের বোতাম ঠিক মত লাগাতে পারে না তার সাথে?

-আপনি দশ মিনিটের ভিতর রেডি হয়ে বাইরে আসতে পারবেন?

-কেনো গো?

-তোমাকে খুন করবো আমি।

-কি দিয়ে খুন করবা কিছু ঠিক করেছো?



টুট টুট টুট…



তিতলী কল কেটে দিয়েছে।অবাক হ ওয়ার কিছু নেই।প্রেমিকের ফোনকল হুট হাট করে কাটায় প্রেমিকাদের অধিকার আছে।অলিখিত অধিকার।



নাবিলের ঘুম পাচ্ছে।কঠিন ঘুম।এই ঘুমকে এড়িয়ে যাওয়া শুধু মাত্র মহাপুরুষদের কাছেই সম্ভব।সে মহাপুরুষ না।সে নিকৃষ্ট পুরুষ।তাই সে এখন কাথা মুড়ি দিয়ে ঘুমাবে।তিতলী এসে যদি মাছ কাটা বটি দিয়ে তার গলা কাটে কিচ্ছু করার নাই।ঘুমের মধ্যে মৃত্যু হবে।ঘুমের ভেতরের মৃত্যু আরামের মৃত্যু।না।না।আরামের মৃত্যু বলে কোন মৃত্যু নাই।সব মৃত্যু ই কষ্টের মৃত্যু।নাহ।লজিক উল্টা পাল্টা হয়ে যাচ্ছে।ঘুম দরকার।কঠিন ঘুম।ঘুমের আগে আরো একটা গুরুত্বপূর্ন কাজ করা লাগবে।তিতলী সহজ চীজ না।সে গলা কাটতেই পারে।

নাবিল কাগজে একটা সাইনবোর্ড লিখে রুমের দরজায় আটকায় দেয়।সাইনবোর্ডে লেখা-'তিতলীর প্রবেশ নিষেধ'

লেখার সাইডে একটা প্রানির ছবি আর্ট করে।খুব সম্ভবত প্রানিটির নাম-কুত্তা।



******************



(পর্ব-৩)



তিতলী মাছ কাটা বটি হাতে নাবিলের সামনে দাড়িয়ে আছে।চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে আছে।সাপের মত ফোসফোস করছে।ভয়ানক অবস্থা।যেই না সেই বটি মানবী কোপ দিয়ে অমনি নাবিলের ঘুম ভেঙ্গে গেল

সে তাকিয়ে দেখে তার বিছানার পাশে বসে কে যেন কাদছে।কে এটা?তিতলী?



- কাদো কেন?

নাবিলের দিকে সে একটা কাগজ এগিয়ে দিয়ে বলল-এইটা কি?

- সাইনবোর্ড।

- কি লেখা এখানে?

- কেনো সোনা পড়তে পারো নাই?এই জন্য কাদতেছো?

-চুপ।তুমি আমার নাম লিখে পাশে কুত্তার ছবি আর্ট করেছো?তুমি কি মানুষ?

- দেখেছো তুমিও এখন কুকুরকে কুত্তা বলছো।আর আমি বললেই দোষ।আর কুত্তা তো খারাপ কোন প্রাণি না।খারাপ হল মানুষ যারা কুত্তার গায়ে গরম মাড় ঢেলে দিয়ে বেপক আনন্দ পায়।

-চুপ।একটা কথা বললে ছুড়ি দিয়ে গলা কেটে দিব

- স্বপ্নে তো বটি দিয়ে কাটতেছিলা।বাস্তবে ছুরি?বাহ! রান্না ঘরে ছুরি পাবা।উন্নতমানের ছুরি

-তোমাকে খুন তো করবই।তার আগে তুমি বল কুকুরের ছবি কেনো কেনো আর্ট করেছো?এটা তোমাকে বলতেই হবে।

- চিন্তা করে দেখলাম কুত্তার সাথে তোমার খুব মিল।কুত্তাও মানুষকে অন্ধ ভাবে বিশ্বাস করে তুমিও অন্ধ ভাবে বিশ্বাস কর।কাজেই তুমি কুত্তার মতন

-আমি কুত্তার মতন?

-জ্বী।নেড়ী কুত্তার মতন।যার কাজ ই হল রাস্তা ঘাটে ঘুরে বেড়ানো।



তিতলী উঠে দাড়িয়ে হনহন করে বের হয়ে গেল।খুব সম্ভবত রান্নাঘরে যাবে।ধার দেয়া ছুরি নিয়ে আসবে।তারপর গলা কাটবে।প্রেমিকার হাতে মৃত্যু।খারাপ কি?



তিতলী আর নাবিল রিকশায় করে ঘুরছে।তিতলী মাথা অন্য দিকে ঘুরিয়ে কাদছে।নাবিলের হাতে একটি বিয়ের নিমন্ত্রন পত্র।তিতলীর বিয়ে।ছেলে ইজ্ঞিনিয়ার।নাবিল ইজ্ঞিনিয়ার নয়।কাজেই ছেলেটে সে নয় এটা নিশ্চিত।তিতল্লির মা তাকে পছন্দ করেন নি।যে ছেলে প্রেমিকার আত্মহত্যার জন্য বিরানব্বই টাকা খরচ করে দড়ি কিনে নিয়ে যায় সে ছেলেকে পছন্দ না করাটাই স্বাভাবিক হোক না সে তিতলীর পছন্দের ছেলে।



এখন শুধু তিতলী না।নাবিল ও কাদছে।এক রিকশায় বসে দুই জন মানুষ দুই দিকে তাকিয়ে ঠিক এক ই কারনে কাদছে।বাহ কি অপূর্ব দৃশ্য।



************************



(পর্ব-৪)



নাবিলের প্লেটে পোলাও ছাড়া কিছু নেই।অনেকক্ষন ধরে বসে আসে সে।সব টেবিলে খাবার ঠিক মত দেয়া হচ্ছে শুধু তার টেবলটা বাদে।সময়ের

সাথে সাথে তার মেজাজ গরম হচ্ছে।খাবার দেয়ার

দায়িত্বে যারা আছে তাদের দৃষ্টি আকর্ষনের অনেকবার চেষ্টা করেও কোন লাভ হয় নাই।চেয়ার ছেড়ে উঠে যাওয়াও সম্ভব না।খুব

খিদা পেয়েছে।আর সে এমন কেউ

না যে না খেয়ে উঠে চলে গেলে তুলকালাম কান্ড ঘটে যাবে।বরং উল্টা টা ঘটার সম্ভাবনা বেশী।



একজন আবার খাবার না দিয়ে ভিডিও ক্যামেরার

সামনে তরকারী হাতে পোস দিতেছে।আরে গাধার গাধা তোর ছবি আসল ভিডিও তে থাকবে?খাবার হাতে পোজ দিতেসিস বড় হলে তো হোটেলের

মেচিয়ার হবি।খাবার দিতে আয় তখব বুঝবি মজা।কানে ধরে দাড় করায় রাখবো।আমি সহজ চীজ না।



এই দিকে আর একজন একজন খাবার নেবে না সে জোর করে দেয়ার জন্য উঠে পরে লেগেছে।শালা কালাপাহাড়।তোর চেহারা যেমন কালা তোর

স্বভাব ও হইছে কালা।মানুষকে জোর করে খাবার দিতেসিস আর এই দিকে তোর নজর নাই?মেয়ে মানুষ দেখলে মাথা ঠিক থাকে না?

আমাকে খাবার দিতে আয় তখন বুঝবি এক গ্লাস এ কত পানি। ইচ্ছা করে তোর প্যান্টে পানি ঢেলে দিবো।মানুষ ভাববে পেশাব

করছিস।উচিত শিক্ষা হবে।



নাবিল বসে আছে বিয়ে বাড়িতে।বিয়ে বাড়িতে খাবে দেখে মেসে মিল দিতে নিষেধ করেছে।কিন্তু এখানে তো অবস্থা বেগতিক।মিল দিতে না বলায় বিরাট বড় ভুল হয়ে গেছে।



নাবিল চেয়ার ছেড়ে উঠে দাড়ালো।পরের ব্যাচে খাবে।অপেক্ষা করে সময় নষ্ট করার মানেই হয় না।বিয়ে বাড়িতে বসে বসে অলস সময় কাটানোর

জায়্গা না।বিয়ে বাড়ি হচ্ছে ব্যাস্ত সময় কাটানোর জায়্গা।



নাবিল বর বউ দেখতে গেলো।বর নাকি রাজকুমারের মত সুন্দর।যদিও

তার ধারনা বরের চেহারা গরিলা টাইপ কিছু একটা হবে।



বড় বউ পাশাপাশি বসে আছে।নাবিলের ধারনা ঠিক।বর এর চেহারা গরিলার কাছাকাছি।চিড়িয়াখানায় গরিলার অভাব

পড়লে একে ধরে নিয়ে গেলেও চলবে।মানুষ টিকিট দিয়ে দেখবে। টাকা ছাড়া একে দেখা মহাপাপের কাছাকাছি। হাসিটাও গরিলার মত।খ্যাক খ্যাক করে হাসছে।জরুরী ভিত্তিতে থাপড়ায় দাত ফেলায় দেয়া উচিত।বিয়ে বাড়ি হাসি তামাসার জায়্গা না।শালা বান্দরের বান্দর।



বউ কে সুন্দর লাগছে।সব সময় ই লাগে।সুন্দর না লাগলেও কিছু মানুষকে সুন্দর বলতে হয়।প্রেমিকা তাদের মধ্যে একজন।



পাশের দুইটা মহিলার কথা শুনে নাবিলের মেজাজ খারাপ হয়ে যাচ্ছে।বরের চেহারা নাকি রাজপুত্রের মত।এই গরিলার চেহারা রাজপুত্রের মত কিভাবে হয় নাবিলের মাথা ঢুকতেছে না।ছেলে নাকি ইজ্ঞিনিয়ার!কিভাবে সম্ভব?চেহারায় স্পষ্ট লেখা ছেলে সরকারী অফিসের কেরাণি যে কেরাণির কাজ ই হল যত্ন করে মাছি মারা।



নাবিল খাবার খাওয়ার জন্য আবার যায়।প্রেমিকার বিয়ে খাওয়ার সৌভাগ্য সবার হয় না।এটা মিস করা ঠিক হবে না



******************





পর্ব-৫(শেষ পর্ব)



তিতলী কাদছে।বিদায়ের সময় বিয়ের কনে কাদবে এটাই তো স্বাভাবিক।মা কে ছেড়ে যাওয়ার কষ্ট,আদরের পোষা বিড়াল ছেড়ে যাওয়ার কষ্ট,বারান্দার পরিচিত কোনাটাকে ছেড়ে যাওয়ার কষ্ট,পরিচিত গ্লাস,প্লেট কে ছেড়ে যাওয়ার কষ্ট।সব কিছুর প্রতি যেন কি অপার মায়া।যেটার উপর মায়া বেশী সেটাতে কষ্ট তত বেশী।একটা কুকুর সাথে থাকলেও তার প্রতি মায়া জন্মায়।আর সেখানে যদি হয় একজন জলজ্যান্ত মানুষ?এখন প্রেমিক?ভালবাসার মানুষ?যার হাত ধরে একদিন হেটে বেড়ানো ছিল অভ্যাস।সেই হাত যখন ধরে থাকে অন্য কোন হাত তখন পুরো পৃথিবী কি এক সময়ের জন্য হলেও থমকে দাড়ায় না?যার ইশারায় সব কলকাঠি নড়ে সেই মহাত্মা কি একটিবার কোমল সুরে বলে না?আহারা! আহারে!



বিয়ে বাড়ীর সবাই ব্যাস্ত কনে কে নিয়ে।তার কান্না থামানোর চেষ্টা সবার।সব মেয়ের আসল বাড়ী শ্বশুড় বাড়ী।সবাইকেই চলে যেতে হবে মা।আর কেদো না…আর ও কত সব তোতাপাখির বুলি।আরে অবুঝের দল তিতলী কেন কাদছে তোমরা জান না।জানবেও না।তোমরা বুঝবেও না।তিতলীর পৃথিবী ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে।তিলে তিলে গড়ে তোলা পৃথিবী ধংস হয়ে যাওয়ার কষ্ট তোমরা বুঝবে না।ওই যে সামিয়ানার পিছে দাড়িয়ে একটা ছেলে ডুকরে ডুকরে কাদছে।কেউ কি একবার লক্ষ্য করবে?কেউ কি একবার গিয়ে মাথায় হাত বুলিয়ে দিবে?কেউ কি একবার গিয়ে বলবে-বাবা তুমি কাদো কেনো?ছেলেটার কিন্তু কাদার কথা ছিল না।নাবিলের কিন্তু কাদার কথা ছিল না মসাই।



-----------------



-এই ওঠো।ওঠো বলছি।মরার মত ঘুমাচ্ছ ক্যান?

-মরারা ঘুমায় না তিতলী।জিবিতরা ঘুমায়।নিজেকে জিবিত প্রমান করার জন্য ঘুমাচ্ছি

-দাড়াও ঘুম বের করছি।ফ্যান বন্ধ করে দিব

-আচ্ছা দাও।আমার পূর্বপুরুষের হাপানী ছিল।ফ্যানের বাতাস সহ্য করতে পারতেন না।আমার ও শেখা উচিত।

-তাও তুমি উঠবা না?

-না।

- পানি এনে গায়ে ঢেলে দিব

-আচ্ছা দাও।বাথরুমে লাল বালতিটা ভর্তি করে এনে ঢেলে দাও।গোসলটাও হয়ে যাক।বিছানায় গোসল! আহ ভাবতেই ভাল লাগছে।



তিতল্লি বাথরুম থেকে এক বালতি পানি এনে নাবিলের গায়ে ঢেলে দিল।নাবিল নির্বিকার।শুয়েই আছে।ভাবখানা এমন যে এমন ঘটনা সপ্তাহে দু চারবার ঘটে।



- দাড়াও।রান্না ঘর থেকে বটি নিয়ে এসে তোমার গলা কাটছি

- বড় বটি টা নিয়ে আসি ও।ছোটটাতে ধার কম



তিতলী রান্না ঘরের দিকে ছুটে গেল।নাবিল উঠে খাটের তলে লুকালো।মেয়ে মানুষকে বিশ্বাস নাই।তিতলীকে আর ও বিশ্বাস নাই।



তিতিলী সত্যি সত্যি বটি নিয়ে এসেছে।এসে দেখে নাবিল নাই।

নাবিল খাটের তল থেকে বলে-টুকি

-তুমি আমার সাথে ফাজলামো কর?

-জ্বি করি।তোমার সাথে ফাজলামো করবো না তো কার সাথে করবো?কাজের বেটি রহিমার সাথে?যে ব্লাউজের বোতাম ঠিক মত লাগাতে পারে না তার সাথে?

-তোমার নজর এত খারাপ ক্যান?

-আমি খারাপ মানুষ।তাই আমার নজর ও খারাপ।ভুল মানুষকে বিবাহ করেছো সুন্দরী।তোমার জিবন শেষ।

- আচ্ছা দেখা যাবে কার জিবন শেষ।যখন ঘুমাবা গলা টিপে মেরে ফেলবো

- গলা টিপে মারতে পারবে না।এক কাজ করিও খাবারের সাথে ইন্দুর মারার বিষ দিয়ে মেরে ফেলো

-ইন্দুর কেমন ভাষা?

- বাংলা ভাষা

-তোমার মুখের ভাষা কোনদিন ও ঠিক হবে না।তোমাকে আমি খুন করে ফেলবো!

- কি দিয়ে খুন করবা কিছু ঠিক করেছো?বটি না ইন্দুর মারার বিষ?



উফ! আর লিখতে পারবো না।এদের ঝগড়া আজিবনে শেষ হবে না।আমিও চাই শেষ না হোক।অনন্ত কাল ধরে চলুক।ঝগড়া শেষ হয়ে যাওয়া মানেই তো ভালবাসা শেষ হয়ে যাওয়া।



তিতলী নাবিলের কিভাবে কি হয়েছে আমি জানি না।জানতেও চাই না।আপনারাও জানতে চাইবেন না।আমি বলতে পারবো না।পৃথিবীতে অনেক মিরাকল ঘটে।এটাও হয়তো একটা মিরাকল।তারা সুখে আছে।সুখে থাক।কিছুদিন পর তাদের একটা ফুটফুটে বাচ্চা হোক।বাচ্চাটা পুরো বাড়ী হামাগুড়ি দিয়ে ঘুরে বেরাক।নাবিল ঘোড়া সেজে তার বাচ্চাকে সারাবাড়ি ঘুড়িয়ে নিয়ে বেরাক।বিশেষ দিনে তারা রিকশায় করে ঘুরে বেরাক।আর নাবিল তিতলীর সাথে সারাজিবন ঝগড়া করুক।



সত্যি বলছি আমি কিচ্ছু জানি না।সত্যি আমি কিচ্ছুই জানি না কিভাবে কি হল।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ৩১ শে মে, ২০১৪ বিকাল ৫:২৬

নিয়ামুল ইসলাম বলেছেন: ব্যাপক :)

২| ৩১ শে মে, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:০৭

স্বপ্ন কাঠি বলেছেন: অনেক বড়, পরে পড়বো

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.