![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
“অর্থনৈতিক শুদ্ধতার পথে”—এই পথচলায় আমি খুঁজি এমন এক অর্থনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি, যেখানে ন্যায়, ভারসাম্য ও মানবিক মূল্যবোধ অটুট থাকে। ব্যক্তি, সমাজ ও রাষ্ট্রের অর্থনীতিকে এক স্বচ্ছ, নীতিনিষ্ঠ ও ন্যায়ের ভিত্তিতে দাঁড় করানোর চিন্তাই আমার লেখার মূল প্রেরণা। এই ব্লগে আপনি পাবেন সমসাময়িক অর্থনৈতিক বিষয়গুলোর একটি শুদ্ধ ও দায়বদ্ধ বিশ্লেষণ—যার মূল উৎস শাশ্বত জ্ঞান ও নৈতিকতা।”
Boeing (USA) ও Airbus (EU - ইউরোপ)। মাত্র দুটি বিমান তৈরিকারী কোম্পানি। বিশ্বের প্রায় ৯৮% যাত্রীবাহী কমার্শিয়াল জেট বিমানের বাজার দখল করে রেখেছে। ৪০% Boeing এর দখলে। বাকিটা Airbus এর। অল্প কিছু যাত্রীবাহী বিমান রাশিয়া ও চীনের আছে। বহু বছর যাবৎ তৃতীয় কোনও দেশ এই ব্যবসায় আসতে পারছে না
ব্যবসা করার প্রায় সবকিছু তাদের নিয়ন্ত্রনে। বিমানের আন্তর্জাতিক উড্ডয়ন সংস্থা (ICAO, FAA, EASA) সমূহ যারা সার্টিফিকেট ইস্যূ করে-সেগুলোও মনোপুলেট বাই ইউএস। ফলে যারা Boeing বা Airbus নয় — তাদের সার্টিফিকেশন পাওয়া অত্যন্ত কঠিন। যেমন:Russia ও China নিজস্ব যাত্রীবাহী বিমান বানালেও (Sukhoi, COMAC), পশ্চিমা বিশ্ব তা গ্রহণ করে না। এটা এক ধরনের "টেকনিক্যাল জিও-পলিটিক্যাল অবরোধ"।
অর্থনীতিতে এটিকে বলে “Duopoly” বা দুই কোম্পানির বাজার নিয়ন্ত্রণ। এসব পূঁজিবাদী রাষ্ট্রগুলোই দেখবেন মুক্ত বাজারের কথা বলে মুখে ফেনা তুলে নেয়। কিন্তু দিন শেষে নিজেদের সুবিধাজনক একচেটিয়া আধিপত্য (convenient monopoly) বজায় রাখতে তারা সিদ্ধহস্ত।
Boeing পায় মার্কিন সরকারের সামরিক ও বেসামরিক বড় বড় চুক্তি। Airbus পায় ইউরোপীয় ইউনিয়নের সরকারী সাপোর্ট। এটি জিও-পলিটিকস ও সরকারী সাবসিডি-এর উদাহরণ।
Boeing মূলত আমেরিকার সরকারের সবচেয়ে বড় সামরিক সরবরাহকারী (F-15, Apache ইত্যাদি)। কিন্তু আমেরিকা নিজের রাজনৈতিক প্রভাব কাজে লাগিয়ে অনেক দেশকে বাণিজ্যিক বিমানও Boeing থেকে কিনতে "পরোক্ষভাবে বাধ্য" করে। সৌদি আরব, কাতার, তুরস্ক — সবাই Boeing-এর বিশাল ক্রেতা। যুক্তরাষ্ট্র থেকে সামরিক সহযোগিতা পেতে হলে বাণিজ্যিক চুক্তিও "প্যাকেজ ডিল"-এর অংশ হয়।
সম্প্রতি আহমেদাবাদের দূর্ঘটনায় Boeing এর বিমান ছিল। এই জায়ান্ট সব সময় যাত্রীর নিরাপত্তার চেয় মুনাফাকে গুরুত্ব দিয়ে আসে। বহু আগেই Boeing এ উৎপাদন দ্রুততার চাপ, ক্ষমতা বৃদ্ধি ও লাভকে প্রাধান্য থেকে safety culture ধ্বংস করা শুরু করেছে। বিভিন্ন সময় ইঞ্জিনিয়ারগণ FAA তে অভিযোগ করেছেন-কিন্তু উল্লেখযোগ্য কিছুই হয়নি।
আমাদের কেউ কেউ তিন শূন্যের পৃথিবী গড়ার দিবা স্বপ্ন নিয়ে পড়ে আছেন। এসব তথাকথিত সুশীলদেরকে কখনই আপনি আধিপত্যমূলক একচেটিয়া পুঁজিবাদের বিরুদ্ধে কথা বলতে দেখবেন না। সুদ ও প্রফিট মেক্সিমাইজেশন এর বিরুদ্ধে কথা বলবে না-ওরা চুয়ে পড়া বিষয় নিয় কথা বলবে-যেমন, জলবায়ূ পরিবর্তন, সুদী ক্ষুদ্র ঋণ, সামাজিক ব্যবসা।
মুসলিম বিশ্ব নিজস্বভাবে বাণিজ্যিক বা সামরিক বিমান উৎপাদনে প্রায় অনুপস্থিত—এটি একটি দুঃখজনক বাস্তবতা। যদিও কিছু দেশ সীমিত পরিসরে চেষ্টা করেছে (যেমন: তুরস্ক, ইরান, পাকিস্তান), তবুও Boeing বা Airbus-এর মতো বিশ্বস্তরের কোম্পানি মুসলিম দেশগুলো গড়ে তুলতে পারেনি।
আধুনিক বিমান নির্মাণে প্রায় ৬ মিলিয়ন পর্যন্ত পার্টস লাগে। এর প্রায় ৯০%-এর প্রযুক্তি ও পার্টস পশ্চিমা জোটভুক্ত দেশগুলোর দখলে (যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ, জাপান)। এতো দিন পর্যন্ত মুসলিম দেশগুলো এ প্রযুক্তি নিজে তৈরি করার যোগ্যতা অর্জন করতে পারেনি।
অতি সত্ত্বর এই একচেটিয়া পূঁজিবাদ ভেঙ্গে দিতে মুসলিম বিশ্বকে সম্মিলিতভাবে "Aviation Consortium" গঠন করার প্রতি মনোযোগ দেয়া উচিত। একক দেশ তা করতে পারবে না। সম্মিলিত উদ্যোগ দরকার।
যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপে বসবাসকারী মুসলিম বিমান প্রকৌশলী, ডিজাইনার ও সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারদের নিয়ে Muslim Aerospace Expert Network (MAEN) গঠন করা যেতে পারে। এসব নিয়ে কথা বলা দরকার।
আর না হয়-ওদের দৌরাত্ম থামানো যাবে না। Boeing-এর দুর্ঘটনা নতুন নয়, বরং এটি বহু বছরের নিরাপত্তা ত্রুটি ও ব্যবসায়িক লোভের ফলাফল।
বিশেষ করে Boeing 737 MAX মডেল কোম্পানির ইতিহাসে সবচেয়ে বড় সঙ্কট তৈরি করেছে। বর্তমানে অনেক এয়ারলাইন্স বিকল্প খুঁজছে এবং Airbus-এর প্রতি আস্থা বাড়ছে। সময় এখন মুসলিম বিশ্বের নিজস্ব এয়ার ভেহিকল তৈরি করা।
১৫ ই জুন, ২০২৫ সকাল ১০:০১
আবু আমাতুল্লাহ বলেছেন: ধন্যবাদ। আমার কাছে মনে হয়-দুটি জায়গায় সমস্যা-এক। পার্টস তৈরি। দুই। সার্টিফিকেট। এই দুটিই আমেরিকা নিয়ণ্ত্রন করে। এর চেয়েও মনে হয় বড় সমস্যা-সাহসী উদ্যোগ। বিশেষত মুসলিম দেশসমূহ যৌথভাবে উদ্যোগ নিতে পারতো। একক দেশ মুশকিল মনে হয়। ধন্যবাদ।
২| ১৪ ই জুন, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:৫৩
পারস্যের রাজপুত্র বলেছেন: চিন মার্কেটে আসবে সম্ভবত। বোইং এর তো বেহাল দশা। কোয়ালিটি খারাপ হয়ে যাচ্ছে।
৩| ১৪ ই জুন, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:৫৫
পারস্যের রাজপুত্র বলেছেন: + এফিসিয়েন্সি এবং রিলায়েবিলিটি @কলিমুদ্দি দফাদার
৪| ১৪ ই জুন, ২০২৫ রাত ১০:৪৬
আধুনিক চিন্তাবিদ বলেছেন: বাস্তবায়ন করা অনেক কঠিন।
৫| ১৬ ই জুন, ২০২৫ দুপুর ১২:১৪
রাজীব নুর বলেছেন: রাইট।
©somewhere in net ltd.
১|
১৪ ই জুন, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:৪৬
কলিমুদ্দি দফাদার বলেছেন: আংশিকভাবে সহমত!
পেসেঞ্জার বিমান, জেট ইঞ্জিন সংবেদনশীল ও কমপ্লেক্স প্রযুক্তি।
এরজন্য দরকার বিপুল বিনিয়োগে, হাইটেক ইনোভেশন, দীর্ঘমেয়াদি রিচার্স।
যে কেউ চাইলে এই রেস নামতে পারে না।
যেমন ভারত ১৯৮৬ সালে নিজস্ব প্রযুক্তিতে কাভেরি ইঞ্জিন উৎপাদনের প্রজেক্ট
নেওয়ার পর আজ পর্যন্ত সফল হয়নি।
চায়না প্যাসেঞ্জার বিমান তৈরির রেস নামলে ও এখনো অনেক লেক বিহাইন্ড।
বেশিরভাগই এয়ার লাইন্স কোম্পানিগুলো যেহেতু প্রাইভেট,
তাই বিমানের সাইজ, মাইলেজ, স্পিড ক্যাপাসিটি তাঁদের কাছে মুখ্য বিষয়।