নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আড্ডা

বাংলাদেশ নিয়ে ভাবনা, প্রত্যাশা ও সম্ভাবনার সংগ্রহমালা

আড্ডাবাজ

আড্ডাবাজ › বিস্তারিত পোস্টঃ

ঠোলা বন্দনা:

১৮ ই এপ্রিল, ২০০৬ রাত ১১:১৯

সুহূদ ব্লগার হিমুর ডাক উপেক্ষা করি কিভাবে? কিন্তু বাংলা ব্লগে গালাগালির যে বহর ও নকশা তাতে ঠোলাদের গালাগালি করলে বরং তাদের প্রতি অবিচার করা হবে। কারণ, তাদের চেয়েও আরও বড়ো বড়ো মুমিন-মুনাফিক এখানে ধর্মের নাম কপচে ঘৃণ্য অপকর্ম করে যাচ্ছে। রাতের বেলা 71'এর চেতনার মা'কে গালি দিয়ে সকাল বেলা নবীজির সুমহান আদর্শ কপচানোর যে ভড়ং-ভাড়ং চলছে তা মনে করিয়ে দেয় সফেদ সাদা পাঞ্জাবী পড়ে মসজিদে আসা মহল্ল্লার এসপি সাহেবের কথা। মাগরিবের নামায পড়ে মসজিদ থেকে বেরিয়ে রাতের বেলা হরেক রকমের গাড়ী নিয়ে লোকজনের আনাগোণা বাড়ত এসপি সাহেবের বাসায়। রাতের এসব অতিথিরা হয়তো শুধু আইন-শৃংখলা নিয়েই কথা বলতে আসতেন? হঠাৎ করে, সেই চিএটা এতোদিন পরে খুব মনে পড়ল কাকতালীয়ভাবে।



তাই বেচারী পুলিশদের গালাগালি না করে তাদের বন্দনা করাটা অনেক সমীচীন মনে করলাম। এমন এক দেশে বাস করি যেখানে দেশের ক্ষমতার মালিককে সবসময় বলতে হয়, "রাজনৈতিক ভিক্ষে লাগবে না, কুওা (পুলিশী) সামলান"। বেচারী পুলিশের দোষ কি? এরা নিতান্তই গৃহপালিত প্রাণী যারা রাজনৈতিক শক্তির দয়া-দাক্ষিণ্যে চলে। তাই, মনিবের কথাই সই। কলের পুতুলের মতো এরা চলে যখন যে ক্ষমতায় থাকে। এই ধারা বদল করার কথা আমার আগের একটি পোস্টে বলা হয়েছে এবং এধরণের সিরিয়াস কথা এখানে আর বলতে চাই না।



দেশের আইন-শৃংখলা রক্ষা করার গুরু দায়িত্ব এই পুলিশ বাহিনীর উপর। অবশ্যই তারা করিৎকর্মা। কানসাটে আর চট্রগ্রাম স্টেডিয়ামে এই করিৎকর্মারা তাদের কর্তব্যপরায়ণতার প্রমাণ আরেকবার দিল। আমাদের প্রতিমন্ত্রী পুলিশের এই ভাবমূর্তি নিয়ে অত্যন্ত পেরেশান। কিন্তু তারপরেও তিনি অত্যন্ত আস্থাবান এই পুলিশের উপর।



গেল মাসে হয়ে গেল ঢাকার মধুপুরে পুলিশ, র্যাব ও এনএসআই-এর যৌথ মহড়া। সাতদিনের এই মহড়াতে দেশের গুরুত্বপূর্ণ এই তিন বাহিনী তাদের সাফল্যের উজ্জ্বল স্বাক্ষর রাখল। মহড়ার প্রথম দিনে মধুপুরের এই জঙ্গলে স্বরাস্ট্র পাতিমন্ত্রী নিজ হাতে ছেড়ে দিলেন একটি খরগোশ।



প্রথমে এনএসআইকে বলা হলো খরগোশটি খুঁজে বের করার। তিনদিন ধরে তারা তিন কোণায় তাব্বু খাটিয়ে সিগ্রেট ফুঁকে লুঙ্গিতে কাছি মেরে বনে-বাঁদারে-খাদা-খন্দকে গুতাগুতি করে তিন রিম কাগজের এক বিস্তারিত গোপন রিপোর্ট তৈরী করে উপসংহারে বলল, "শুভ্র খরগোশটি বোধ হয় প্রতিবেশী দেশে পালিয়ে গেছে, পদচিহ্ন দেখে তাই প্রতীয়মান হয়"। কিছুটা নাক কুঁচকে স্বরাস্ট্র পাতিমন্ত্রী রিপোর্টটি গেস্ট হাউসের খাটের নীচে টস্ করে গভীর মনোযোগ সহ আবার তাস পিটাতে লাগলেন।



সকাল বেলা র্যাবের ডিজি হাত কচলাতে কচলাতে বললেন, "এবার যদি একটু অনুমতি দিতেন আমার কালা মাণিকদেরকে একটু চেস্টা করার"? নাক কুঁচকে আমাদের পাতিমন্ত্রী বললেন, "যান, দেখি আপনারা কি করতে পারেন, বনে আবার ক্রস ফায়ার শুরু করেন না, জানেন তো গেস্ট হাউস কিন্তু খুব ক্লোজড রেঞ্জে"। র্যাব নিয়ে খুব চাপাচাপিতে আছেন তিনি স্বদল ও বিরোধী দলের কাছ থেকে। কালো ইঁদুরের মতো র্যাব পুরো বন চষে মধ্যাহ্ন বেলায় বনের এক কোণায় আগুন লাগিয়ে আরেক কোণায় সাংবাদিক সম্মেলন করে কৃতিত্ব নিয়ে বলছে, "দসু্য খরগোশদের পুরো বংশ নিপাত করা হয়েছে, আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে এই খরগোশদের আস্তানা। বাংলাদেশ আজ খরগোশমুক্ত"। বেজায় বিরক্ত হয়ে পাতিমন্ত্রী র্যাবের ডিজিকে বললেন, "আপনার কালা ইঁদুরদের এসব পাগলামি বন্ধ করেন, একটা খরগোশ ধরতে পারে না, তো মাস্তান আর সন্ত্রাসীদেরকে ধরবে কিভাবে? আমাদের ক্যাডাররা সাহায্য না করলে তো বাংলা আর ইংরেজী ভাইকে আপনাদের ধরতে হতো না"।



দু'পুর গড়িয়ে মধুপুর বনে সন্ধ্যা নামে। অত্যন্ত ব্যাকুল হয়ে আছেন আমাদের পাতিমন্ত্রী। আরও এক কেস হেয়ার জেলের অর্ডার দিয়ে তিনি গেস্ট হাউসের বারান্দায় এসে বসলেন। এক ধরণের জেদ আর লজ্জা তার সারা শরীরকে ঢেকে রেখেছে। এর মধ্যে হট্রগোল শুনে তার মনোযোগ নস্ট হয়ে গেল, তার মধ্যে এক ইন্সপেক্টর দৌড়ে এসে বলল, "স্যার, কাজ তো হয়েছে, আমাদের দুই এসপি সাহেব মনে হয় খরগোশ ধরে নিয়ে এদিকে আসছেন"। পশ্চিমের সূর্যের লাল আভায় তিনি দেখলেন, দুই করিৎকর্মা পুলিশ অফিসার টেনে হেঁচড়ে কিছু একটা কিছু নিয়ে আসছে তার গেস্ট হাউসের দিকে। আনন্দে-উৎফুল্ল্লে তিনি ইংরেজীতে বলতে লাগলেন, "আই নো, দে উইল পারবে এনেমী খরগোশ ধরে আনতে, দে আর অত্যন্ত এফিসিয়েন্ট অফিসার"।



গেস্ট হাউসের কাছাকাছি আসার পর দুই করিৎকর্মা অফিসারকে তিনি চিনলেন, এরা হচ্ছে বাংলাদেশ পুলিশের দুই উজ্জ্বল নক্ষএ - "আকবর ও কোহিনুর"। কিন্তু তাদের হাতে টেনে আনা শিকার দেখে তিনি আর স্থির থাকতে পারলেন না, "দুজনের হাতেই পুলিশী লাঠি, কোন কৃষকের শুভ্র-ধবল অর্ধমৃত ছাগলটিকে তারা দু'জন টেনে আনছে আর ছাগলটি মারের চোটে আর্তনাদ করে বলছে, "আর মারিছ না রে ভাই, কইছি তো আমি ছাগল না, আমি খরগোশ"। কোহিনুর ও আকবরের চোখ ঠিকরে গর্ব ঝরে পড়ছে। তাদের সাফল্য নিয়ে কারও কোন সন্দেহ নেই। কারণ, সবাই নিজের কানে তাদের সাফল্য শুনল। বিরক্ত পাতি মন্ত্রী দুই করিৎকর্মা অফিসারের ডিআইজি হিসেবে প্রমোশনের কাগজটি সাইন করে আরেক বোতল হেয়ার জেল নিয়ে গাড়ীর দিকে গেলেন। আনন্দে তার মনে বাংলা গান ইংরেজীতে গুনগুন করে উঠল। তিনি ভাবছেন , "আজ সারা রাত ধরে সারা শরীরে তিনি হেয়ার জেল লাগাবেন"। ঢাকা শহরের সোডিয়াম লাইটের আলোর বন্যায় গাড়ী তখন জয়দেবপুর চৌরাস্তা ছেড়ে ঢাকার মন্ত্রী পাড়ার দিকে ছুটছে...(ক্লোজআপহাসি)

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১৯ শে এপ্রিল, ২০০৬ সকাল ৭:০৪

অতিথি বলেছেন: আপনার লেখার মধ্যে কোন মজা পেলাম না। কেমন কাঠকাঠ হয়ে গেছে। পড়তে পড়তে বিরক্ত লাগে। যে বিষয়েই লেখেন না কেন মানুষ লেখার শৈলীর কারণে লটকে থাকে, পড়তে থাকে।

আমি একজন পাঠক হিসাবে বললাম মাত্র। মনে দোষ নেবেন না।

২| ১৯ শে এপ্রিল, ২০০৬ সকাল ৭:০৪

অতিথি বলেছেন: কৌশিক ভাই তার ব্যক্তিগত মন্তব্য দিয়েছেন। আমার ব্যক্তিগত মতে আপনার লেখাটি যথেষ্ট সরস । বিশেষত আকবর এবং কোহিনুর বিষয়ে। কাছাকাছি ধরনের একটা জোকস শুনেছিলাম বহু আগে এসি আকরাম কে নিয়ে ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.