নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মায়াবী বাঁধন

আশিক - ই - মুস্তফা

কিছু আলো কিছু বাতাস আর কিছু ছবির সমন্বয়ে এই পৃথিবীর জীবন কেটে যায় । জীবন কখনোই থমকে দাড়ায় না একমাত্র মৃত্যু ছাড়া বরং আশার বাণী শুনিয়ে যায় ।

আশিক - ই - মুস্তফা › বিস্তারিত পোস্টঃ

হক সাহেবের জুতা

০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১:০২

রোদের তেজ অনেক বেড়ে গেছে । জানালা দিয়ে ঘরের ভিতর এসে পরছে । রোদ সরাসরি চোখে এসে লাগছে হক সাহেবের । তা সত্ত্বেও হক সাহেব বিছানা এখনো ছাড়েননি । একবার উঠে গিয়ে জানালার পর্দাটা টেনে দিলেন । পর্দা দেয়ায় রোদ এখন বলতে গেলে লাগছেই না । যে টুকু আসছে তা সয়ে নেয়ার মতো । সরাসরি রোদ না লাগলেও রোদের গরম তেজটা ঠিকই অনভুত হচ্ছে । আরো কিছুক্ষণ বিছানায় থাকার ইচ্ছা ছিল হক সাহেবের । কিন্তু গত দশ মিনিট ধরে যা হচ্ছে , তাতে তিনি ঠিক মতো শুয়ে থাকতে পারছেন না । বারবার একই শব্দ হলে শুয়ে থাকা কষ্টকর । এপাশ ওপাশ করে অবশেষে তিনি বিছানা থেকে উঠে বসলেন । শব্দটা আসছে বাড়ির সদর দরজা থেকে । কেউ থেকে থেকে সদর দরজায় ধুমধাম করে শব্দ করছেন । কিন্তু দরজা কেউ খুলছে না । হক সাহেব আর দাঁড়িয়ে না থেকে সদর দরজার দিকে হাঁটা দিলেন । এখনই না গেলে দরজার ওপাশে যিনি আছেন তিনি বোধয় দরজাটা ভেঙেই ফেলবেন । মেজাজটা তীক্ষ্ণ হতে লাগল হক সাহেবের । বাড়ির অকর্মা লোক গুলো গেছে কই । একটাও কাজের না । খালি খায় আর ঘুমায় । ঘুমাতে ঘুমাতেই তাঁদের দিন পার হয়ে যাচ্ছে । এতো বেলা হয়ে গেল কেউ উঠে নাই ভেবে মেজাজ আরো খারাপ হয়ে গেল হক সাহেবের । তিনি না হয় একটু দেরি করে উঠতেই পারেন কিন্তু বাড়ির তাগড়া পোলাপান গুলার কোন সাড়াশব্দ নাই দেখেই মেজাজ খারাপ হয়েছে হক সাহেবের । মুখে প্রচণ্ড বিরক্তি ভাব নিয়ে হক সাহেব দরজা খুললেন । দরজা খুলে তিনি দেখলেন পিয়ন এসেছে । পিয়নকে ধমক দিতে যাবেন তিনি এই ভেবে মাত্র মুখটা খোলার চেষ্টা করলেন তার আগেই পিয়ন বলে উঠল , ‘ বাড়ির লোক গুলা মরছে নাহি । দরজা বাইরাতে বাইরাতে আমার হাত ব্যথা হইয়া গেল গা । জান গিয়া কোন হক সাহেবের টেলিগ্রাম আইছে ডাহা থেইক্কা ।’

হক সাহেব মেজাজটা ঠিক রাখতে পারলেন না , চেঁচিয়ে বলে উঠলেন ‘ হারামজাদা এতো জোরে শব্দ করস কেন দরজায় । দরজা ভাইঙ্গা ফালাইবি নাকি । দে আমারে টেলিগ্রাম । ’

পিয়ন আরো এক কাঠি সরেস , ‘ গালি দেন ক্যা । মুই কিন্তু গালি দিবার পারি । জান গিয়া বড় কর্তারে ডাহেন । হের হাতেই দিমু , আপনের মতো গাইল পারা হারামজাদার মালীর কাছে দিমু না । ’

হক সাহেব এবার পিয়নকে আর কি বলবেন ! এও তো গালি মারা শুরু করসে । এখনই পরিচয় দিয়ে দেয়া উচিত । তা না হলে আরো খারাপ গালি দিয়া বসতে পারে । তাই হক সাহেব নিজের পরিচয় পিয়নের কাছে বলার উদ্যোগ নিলেন ।

‘ আমিই হক সাহেব । আমার নামেই টেলিগ্রাম আছে না ! আমারে দে টেলিগ্রামটা , আর সিগনেচার নিয়া ভাগ । ’

পিয়ন চমকে যায় । ভুল হয়ে গেছে বুঝতে পারে । তাড়াতাড়ি মাপ চেয়ে নেয়া ভালো । যদি ডাকঘরে গিয়া অভিযোগ করেন হক সাহেব তাহলে চাকরি চলে যেতে পারে । তাই পিয়ন কানে হাত দিয়ে মাফ চাওয়ার ভঙ্গিতে বলল ,

‘ আপনে হক সাহেব নি । চিনতে পারি নাইক্কা । গালি দিয়া ফালাইসি । মাফ কইরা দেন ।’

‘ হইসে হইসে । আর মাফ চাওন লাগব না । আমি তোরে গালি দিসি তুইও আমারে গালি দিসস । শোধবোধ হইয়া গেসে । ’

‘ মাফ করসেন তো আমারে ?’

‘ হ মাফ কইরা দিসি । এখন টেলিগ্রামটা দে দেহি ।’

‘ খারান । অহনি দিতাসি ।’

‘হ দে তাড়াতাড়ি ।’

‘এই লন টেলিগ্রাম । আর এই হানে সই মারেন । আর এই টাহাটা রাহেন । এইটাও টেলিগ্রামের লগে আইসে । ’

হক সাহেব সিগনেচারের জায়গায় নিজের পুরা নাম লিখলেন হায়দার হক । তারপর টাকাটা নিলেন । পুরো টাকাটা গুনে দেখলেন ঠিক আছে কিনা । তারপর পিয়নকে বিদায় দিয়ে তিনি সদর দরজা লাগিয়ে ঘরের দিকে রওনা হলেন । অর্ধেক আসতেই হক সাহেবের বড় মেয়ে বাইরে আসল ।

তাকে দেখে হক সাহেব বলল , ‘ কই ছিলি ? দরজা ধাক্কাইতে ছিল খেয়াল করস না তোরা ! ’

‘ আব্বা আমি তো গোসলখানায় ছিলাম । তাই খুলতে পারি নাই । কে আসছিল ? ’

‘ ডাকপিয়ন । টেলিগ্রাম দিয়া গেল একটা । ’

‘ কার টেলিগ্রাম আব্বা ? ’

‘ তোর ফুপুর । ঢাকা থেকে পাঠাইসে । ’

‘ কি লিখসে টেলিগ্রামে ? ’

‘ এখনো পড়ি নাই । আয় দুজনে মিললা পড়ি । ’

হক সাহেব টেলিগ্রাম পড়া শুরু করলেন , তাতে লেখা আছে

‘ ভাইজান , আশা করি ভালো আছেন । আমরা আগামী সপ্তাহে দেশের বাইরে যাচ্ছি চার বছরের জন্য । আপনাদের দেখার খুব ইচ্ছা করতেসে । তাই কিছু টাকা পাঠালাম । সবাইকে নিয়ে ঢাকা চলে আসেন । একসাথে সবার সাথে দেখা হয়ে যাবে । আমার ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও গ্রামে আসতে পারছি না । তাই সবাইকে নিয়ে ঢাকা চলে আসেন । ’

আলিয়া

‘ কি বুঝলি তুই ? ’ মেয়েকে প্রশ্ন করলেন হক সাহেব ।

‘ সবাইকে ঢাকা যেতে বলেছে । কিন্তু সবাই তো যেতে পারবে না । কাল থেকে বুবুনের পরীক্ষা । আমি তো যেতেই পারব না । সোহেলের অফিস আছে । বললে হয়ত ছুটি নিতে পারবে ! গ্রামের অফিস না ! । ’

‘ থাক আমি একলাই যাব । কাউকে যেতে হবে না । আমি দেখা দিয়ে আসি । এতো করে দেখতে চাইল । না যেয়ে কি পারি ! নে অর্ধেক টাকাটা রাখ । বাকিটুকু আমি সাথে নিয়ে যাচ্ছি । ’

‘ আব্বা কখন রওনা দিবা ? ’

‘ বিকালের ট্রেনে ।’

‘ তাহলে আমি সব কিছু গুছিয়ে রাখব নে । ’

‘ আচ্ছা । আর হ্যাঁ ঐ জুতা জোড়া বের করে রাখিস । ওটা পরেই যাব । ’

‘ কোনটা ? ’

‘ তোর মার সাথে মিলে শেষবার যে জুতা জোড়া কিনেছিলাম ওইটা । ’

‘ ওটা তো পালিশ করা হয়না অনেক দিন । ধুলা জমে আছে । আর ওটা পরেই যাবে কেন ? অন্য ভালো জুতা পরে যাও । ’

‘ না ওটা পরেই যাব । এটার স্রিতি আলাদা । তুই বুঝবি না । ’

‘ বুঝব না কেন ? মা ’র দেয়া শেষ ভালোলাগার স্রিতি । তাই ওটা পরেই ঢাকা যেতে চাচ্ছ ।’

‘ বেশি বুঝা লাগবে না অতো । যা যেই কাজ করছিলি তা কর গিয়া । ’

বিকালের ট্রেনে হায়দার হক ঢাকার দিকে রওনা দিলেন । তিনি উঠেছিলেন সাধারণ কামরায় । টিকিট বেশি না । মাত্র বিশ টাকা । কিন্তু হায়দার হকের কাছে এটাই অনেক লাগছিল । এর চেয়ে কমের টিকিট নেই । তাই বাধ্য হয়েই তিনি এতে চড়লেন । এর আগে অবশ্য জুতাটা পালিশ করিয়ে নিয়েছিলেন ষ্টেশন থেকে । পালিশ করার ফলে জুতা জোড়া একেবারে নতুনের মতো চকচক করছিল । হক সাহেব সরল মনে বিশ্বাস করেই ট্রেনে উঠেছিলেন । এর মাঝেই এক ভদ্রলোকের সাথে পরিচয় হয় । ভদ্রলোকটি ঢাকায় প্রায়ই আসা যাওয়া করেন । তাই ট্রেনে কথা না বললে তার সময় কাটে না । সময় কাটানোর জন্য তিনি অপরিচিত লোকের সাথে পরিচিত হয়ে কথা বলার চেষ্টা করেন । এতে তার সময় বেশ কেটে যায় । আজ তার সঙ্গী হয়েছেন হায়দার হক । হক সাহেবের সাথে পরিচিত হতে লোকটি কথা বলা শুরু করল ।

‘ ভাইসাব কি ঢাকায় প্রায়ই আসা যাওয়া করেন ? ’

হায়দার হক বললেন , ‘ না । দুই তিন বছরে একবার । ’

‘ ও তাই নাকি ’

‘ আপনি ’

‘ সপ্তাহে অন্তত তিনবার । ব্যবসা করি তো তাই । ’

‘ ও আচ্ছা । আজও কি ঢাকায় যাচ্ছেন আপনি ? ’

‘ না । আজ আরো আগেই নামতে হবে । ’

‘ আপনার নামটা যদি বলতেন ভাইসাব ’

‘ হায়দার হক । আপনার ?’

‘ মখলেসুর রহমান ’

‘ ভাইসাব কি বিরক্ত বোধ করতেসেন আমার কথায় ? ’

এতক্ষণ পর সুযোগ পেয়ে সত্যি কথাটা হক সাহেব বলে দিলেন । ‘ জী হ্যাঁ । একটু চুপ করলে শান্তি পেতাম ।’

‘ ও । আমার অবশ্য কথা না বললে চলে না তো । তাই কথা বলতে চাচ্ছিলাম । ’

হক সাহেবের রাগ চড়তে লাগল । হালা বলদ তোরে চুপ থাকতে কইসি তারপরও কথা কস - মনে মনে গালি দিলেন । হক সাহেব বললেন , ‘ আমার ঘুম পাচ্ছে আমি একটু শুচ্ছি ।’

যদিও তার ঘুমের বিন্দু মাত্র লক্ষণ নাই । তবুও তিনি চোখ বন্ধ করে ঘুমাতে লাগলেন । একসময় ঘুমিয়েও গেলেন । তবে লোকটি ছিল চরম বেহায়া ।

নামার আগে হক সাহেবকে ডেকে বললেন , ‘ ভাইসাব আমি নেমে যাচ্ছি । আবার দেখা হবে । ’

হক সাহেবের রাগ চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছল । তবুও তিনি রাগ সামলে বললেন , ‘জী ভাই ’ ।

মনে মনে অবশ্য গালি একটার পর একটা ছাড়তে লাগলেন । লোকটি নেমে গেলে তিনি আবার শুয়ে ঘুমিয়ে পরলেন ।

ঘুম থেকে যখন উঠেন হক সাহেব তখন ঢাকা প্রায় কাছাকাছি । সন্ধ্যে হয়ে গেছে । কামরার লাইট জালিয়ে দেয়া হয়েছে । আলো ভালোই বলতে হবে । কিন্তু হক সাহেব তার অতি প্রিয় জুতা জোড়া খুঁজে পাচ্ছিলেন না । অনেক আঁতিপাঁতি করে খুজেও তিনি জুতা পেলেন না । বুঝলেন চোর বাবা জুতা খান নিয়ে চলে গেছে । মনে মনে কষ্ট পেলেন অনেক । শেষ চিহ্নটা হারিয়ে গেল বলে । চোরের চোদ্দগুষ্টি উদ্ধার করতে লাগলেন । মেয়েটা বারবার না করেছিল এই জুতা না পরে আসতে । এখন তো একেবারেই গেল । কি আর করা তিনি খালি পায়েই ষ্টেশন থেকে বের হলেন । হাঁটতে একটু কষ্ট হচ্ছিল । তবু তো আলিয়ার বাসা পর্যন্ত তো যেতে হবে । পাকা রাস্তা ইট গুলো কেমন যেন পায়ে বিঁধছে । মাটির রাস্তা হলে অসুবিধা হতো না হক সাহেবের । রাত আঁটটার দিকে ঠিকানা অনুযায়ী আলিয়ার বাসায় এসে পৌঁছলেন হক সাহেব । বাসার দরজায় নক করলেন প্রথম বার । কেউ খুলল না । আবার নক করলেন । গরমে ভিজে একেবারে অবস্থা কাহিল । পায়ের তলা ছুঁলে গেছে মনে হয় । দ্বিতীয় নকের পর দরজাটা খুলল । একটা ছোট মেয়ে খুলল দরজাটা ।

বলল – ‘ মাফ করেন । ভিক্ষা নাই । যান এই খান থেকে । ’ বলেই দরজা বন্ধ করে দিল ।

হক সাহেব কিছু বলার সুযোগই পেলেন না । হক সাহেব আবার নক করলেন । এবার কেউ খুলল না । আবার নক করলেন হক সাহেব । এই বার আলিয়া দরজা খুলল , নিজের ভাইজানকে দেখে আনন্দে আত্মহারা হয়ে গেল । ভিতরে নিয়ে গেল । এইদিকে যে মেয়েটি দরজা খুলেছিল তাকে পাওয়া গেল । সেই এই অবস্থা দেখে ঘাবড়ে গেল । মেয়েটা বাসায় কাজ করে । হক সাহেব বুঝলেন ব্যপারটা । তাই আলিয়াকে কিছু বললেন না ।

শুধু মেয়েটাকে কাছে ডেকে বললেন ‘ যা করেছিস ভালো করেছিস । আর করিস না । পরেরবার আমার মতো ভালো মানুষ নাও হতে পারে । জিজ্ঞেস করে দরজা বন্ধ করিস ।’

মেয়েটা জী আচ্ছা বলে চলে গেল । মনে হল হাফ ছেড়ে বাঁচল ।

এরই মধ্যে জুতার কাহিনী প্রচার হয়েছে । আলিয়া চোরের আটাশ গুষ্টি উদ্ধার করার জন্য তৈরি ! পারলে এখনই মৃত্যুদণ্ড দেয়া হবে এমন অবস্থা । আলিয়া পরদিন দোকান থেকে ভালো মানের জুতা কিনে দিবে বলে ভাইজানকে বলে । পরদিন হাজার টাকার জুতা কিনেও দেয় আলিয়া তার ভাইজানকে । জুতা কিনে বাসায় ফিরেও আসে । এর সাথে অবশ্য অনেক কিছুই কেনাকাটা করা হয় । পাঞ্জাবী , টুপি , ভাইয়ের মেয়েদের জন্য শাড়ী , ছেলের জন্য শার্ট আরো কত কি ।

সেদিন বিকেলেই অবশ্য অন্য আরেকটি ঘটনা ঘটে । হক সাহেব সেদিন নামাজ পড়তে মসজিদে গেলেন । হক সাহেব জুতা খুলে কাছাকাছি রেখে নামাজে বসলেন । এরই মধ্যে অনেক লোক এসেছে । অনেকের জুতাই একই রকম । হক সাহেবের জুতার মতো আরো অনেক জুতাই সেখানে ছিল । কিন্তু নামাজ শেষ করে বের হতে গিয়ে দেখলেন তিনি নিজের জুতাই চিনতে পারছেন না । সবই একই রকম লাগে । একসময় এক জোড়া জুতা পায়ে দিয়ে হাঁটা দিলেন আলিয়ার বাসার দিকে । কিন্তু কিছুদূর হাটার পর বুঝতে পারলেন এটা সেই জুতা না । এটা আরেক জুতা । দেখতে একই রকম মনে হলেও এটা সাইজে বড় । হাঁটতে গেলে বোঝা যায় । বাসায় এসে কথাটা কাউকে বললেন না । বললে লজ্জা পেতে হবে যে । অবশ্য আলিয়ার কাছে একটু খটকা লাগছিল ভাইয়ের হাঁটা দেখে । এ নিয়ে জিজ্ঞেস করেছিল ভাইজান কে । কিন্তু সঠিক উত্তর পায়নি ।

ঢাকা থেকে তিনদিন পর গ্রামে ফিরে যাচ্ছিলেন হক সাহেব ট্রেনে করেই । এই কয়দিন ঐ বড় সাইজের জুতা জোড়া পড়তে হয়েছিল তাকে । এবার তিনি যখন ফিরতি ট্রেনে বাড়ি যাচ্ছিলেন তখন হক সাহেবের মতই এক লোক ঘুমাচ্ছিল ট্রেনে । ঐ লোকের জুতার সাইজ হক সাহেবের পায়ের সাথে মিলে যায় । তাই ট্রেনের কামরা যখন একদম খালি তখন ঐ ঘুমন্ত লোকের জুতার সাথে নিজের জুতা পালটে নিলেন । এবং তার গ্রামের আগের ষ্টেশনে নেমে গেলেন যাতে লোকটি কিছু না বুঝে । আবার ষ্টেশনে জুতাটাকে পালিশ করালেন যাতে নতুনের মতো দেখায় । পরের ট্রেনে তিনি তার গ্রামের ষ্টেশনে পৌঁছলেন । ষ্টেশন থেকে নেমে যখন বেরিয়ে বাড়ির দিকে হাঁটা দিলেন তখনই ঘটল আরেক ঘটনা । এবার পালিশ করা জুতার নিচের তলি খুলে একেবারেই আলাদা হয়ে গেল । বেচারা হক সাহেব রাগে দুঃখে জুতা ফেলেই হাঁটা দিলেন বাড়ির দিকে । এবার হাঁটতে কষ্ট হয়নি । মাটির রাস্তায় হাঁটার অভ্যাস তার ছিলই । তবু বাড়ির আগে একটা হাঁট আছে , সেখান থেকে এক জোড়া স্যান্ডেল কিনে বাড়ি ফিরে গেলেন । আর ঘটনাটা কাউকে

কোনদিন বলেননি । পাছে লোকে যদি হাসাহাসি করে তাকে নিয়ে । আর আলিয়া জানতে পারলে দুঃখ পাবে তাই কথাটা কাউকেই বলা সমীচীন বোধ করেন নি । নিজের মনেও দুঃখ ছিল শেষ স্রিতি টা হারানোর কারণে । মেয়ে ও ছেলে বারবার জিজ্ঞেস করেছিল জুতার ব্যপারটা । হক সাহেব বলেননি তাদেরও ।



















মন্তব্য ৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১:০৫

আশিক - ই - মুস্তফা বলেছেন: এই গল্পের সাথে কেউ মিল খুজবেন না । খুঁজে পেলে আমি কোন ভাবেই দায়ী নই । শুধু একটি গল্প হিসেবেই এটিকে গণ্য করবেন । গল্পটি কল্পনা প্রসূত বাস্তবের সাথে মিল নেই ।

২| ০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১:২৯

সুহান সুহান বলেছেন: দারুন হয়েছে ভাই। পড়ে ভালো লেগেছে। :)

৩| ০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১:৩১

আশিক - ই - মুস্তফা বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে @ সুহান সুহান

৪| ০৪ ঠা আগস্ট, ২০১৪ রাত ১১:২০

আলম দীপ্র বলেছেন: লেখা ভালো । আর কেউ মন্তব্য করলে তার উপরে যে সবুজ একটা তীর চিহ্ন আছে তাতে ক্লিক করে উত্তর দিবেন । তা না হলে বোঝা যায় না ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.