![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর পৃথিবীতে আবির্ভাবের পরে (৫৭০-৬৩২ খ্রীঃ) মানব জীবনে দেখা দেয় বৈপ্লবিক পরিবর্তন। আজ থেকে সোয়া চৌদ্দশত বছর আগে এই রবিউল আউয়াল মাসের ১২ তারিখে রাসূল (সাঃ) এর জন্ম হয়েছিল আরবের মক্কা নগরীতে। যে সমাজে তিনি জন্ম লাভ করেছিলেন সেই সমাজের মানুষ অত্যাচারে-অনাচারে লিপ্ত হয়ে আল্লাহর দেয়া বিধান ভুলে গিয়ে নিজেদের মনগড়া আইনে চলছিল। সামাজিক অনাচার, ব্যভিচার, মারামারি, কাটাকাটি, হানাহানি ইত্যাদি ছিল নিত্য নৈমিত্তিক ব্যাপার। আল্লাহ পাকের বিশেষ অনুগ্রহে সবচেয়ে ভদ্র, নম্র ও চরিত্রবান ব্যক্তি হিসেবে তিনি গড়ে উঠেছিলেন এবং আরবদের সবাই তাকে ‘আল-আমীন’ বলে ডাকতো। ৪০ বছর বয়সে তিনি নবুয়ত লাভ করেন এবং তার ২৩ বছরের নবুয়তী জীবনে নাযিল হয় মহাগ্রন্থ আল-কুরআন। সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠা হলো। বিশ্ববাসীকে বাস্তব প্রমাণ উপস্থাপন করে হুজুর (সাঃ) বলে গেলেন “তোমরা যতদিন আল্লাহর দেয়া জীবন বিধান আল কোরআন ও আমার উপস্থাপিত জীবনাদর্শ আঁকড়ে ধরবে ততদিন পথভ্রষ্ট হবে না”।
হযরত রাসূল-ই-আকরাম (সাঃ) এ দুনিয়ার মানুষকে একই আল্লাহর অস্তিত্বে প্রত্যয়শীল করে তুলে তাদের মধ্যে ঐক্য ও সাম্য প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করেছিলেন। ভাষা, বর্ণ, রক্ত ভৌগোলিক অবস্থান প্রভৃতি কারণের ওপর কোন স্বজাতিকতার ভিত্তি স্থাপন করেননি। এর পরিবর্তে আল্লাহর অস্তিত্বের স্বীকৃতির ভিত্তির উপর তিনি একত্ববাদ প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছিলেন। এজন্য অত্যন্ত দুঃখের সাথে শেখ আলতাফ হোসেন হালী বলেছেন যে, দ্বীন এসেছিল বিভিন্ন কওমের হৃদয়ে ঐক্য প্রতিষ্ঠার জন্য। এই দ্বীনের মধ্যে এখন ভাই থেকে ভাই পৃথক হয়ে যাচ্ছে। কারণ, এদের মধ্যে কোন আদর্শিক ঐক্য নেই। তারা নানা পার্থক্য সৃষ্টিকারী মতবাদে দীক্ষা গ্রহণ করেছে।মুসলিম জাতি যখনই ব্যক্তিগত পর্যায় হতে শুরু করে, পারিবারিক, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় জীবনের সর্বত্র ঈমান ও নেক আমলের শর্তগুলো পূরণ করবে, জীবনের প্রতি পদক্ষেপে রাসূল (সাঃ) এর জীবনাদর্শ অনুসরণ করবে, আল্লাহ পাকের এবাদত বন্দেগী করবে, তার সাথে কোন কিছুকে অংশী স্থাপন করবেনা, জীবন চলার পথে আল্লাহর নেয়ামতসমূহের শোকর আদায় করবে, যখন ত্যাগী হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠা করবে, তখন পরম কৌশলী আল্লাহ পাক মুসলিম জাতিকে দুনিয়ার বুকে দান করবেন, ক্ষমতা, অধিকার, আধিপত্য, সম্পদ, প্রাচুর্য, সাফল্য, ভয়-ভীতিহীন নিরাপত্তা এবং ইসলামের সার্বিক প্রতিষ্ঠা। এর ফলে শুধু কেবল আখেরাতের জীবনেই নয়, বরং দুনিয়ার জীবনের সকল অঙ্গনে আল্লাহ পাকের প্রতিশ্রতি মোতাবেক তাদের উপর বর্ষিত হবে অজস্র রহমতের বারিধারা।
খ্রীষ্টান হয়েও হযরত ঈসা (আঃ)-কে শ্রেষ্ঠ বলতে অপারগ হয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রখ্যাত সাংবাদিক ও গবেষক মাইকেল হার্ট তার বিশ্ববিখ্যাত “দি মোস্ট ইনফ্লুয়েন্সিয়াল পারসনস ইন হিস্টরী” গ্রন্থে রাসূল (সাঃ) কে সর্বশ্রেষ্ঠ ব্যক্তিত্ব হিসেবে উল্লেখ করে লিখেছেন: "A Striking example of this is my ranking Muhammad higher than Jesus, in large part, because of my belief that Muhammad had a much greater personal influence on the formulation of the Muslim religion than Jesus had on the formulation of the Christianity" আমেরিকান সাংবাদিক প্রমাণ করলেন হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) আল্লাহর সর্বশেষ নবী এবং আল কুরআন এক বিশেষ ধর্মগ্রন্থ। যে ধর্ম মানুষে মানুষে ঘৃণা বিদ্বেষ সৃষ্টি করে, সে ধর্ম, ধর্ম বলারই অধিকার রাখে না। ধর্মীয় নেতাদের কর্তব্য তারা যেন বিভিন্ন ধর্মের মধ্যে ঐক্য, ভ্রাতৃত্ব ও সৌহার্দ্র সৃষ্টি করার লক্ষ্যে মিলেমিশে কাজ করেন। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও জাতীয় ঐক্য রক্ষার জন্য মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) বিদায় হজ্বের ভাষণে বলেন-‘হে লোকসকল, তোমরা শোন- কোন আরবের উপর অনারবের শ্রেষ্ঠত্ব নেই, আবার কোন অনারবের উপরও আরবের শ্রেষ্ঠত্ব নেই, কোন কালোর উপর সাদার এবং সাদার উপর কালোর শ্রেষ্ঠত্ব নেই। কেননা, সবাই আদম থেকে এবং আদম মাটি থেকে সৃষ্ট। শ্রেষ্ঠত্ব যাচাইয়ের মাপকাঠি হচ্ছে তাকওয়া । এপ্রসঙ্গে জর্জ বার্নাড শ বলেন—“If all the world was united under one leader Muhammad would have been the best fitted man to lead the peoples of various creeds, dogmas and ideas to peace and happiness” অর্থাৎ তিনি ইতিহাসে একমাত্র ব্যক্তি যিনি ধর্মীয় ও পার্থিব উভয়ক্ষেত্রেই সর্বোচ্চ সফলতা দেখাতে সক্ষম হয়েছেন। তার ব্যক্তিগত পারিবারিক, সামাজিক, রাজনৈতিক, নবুওতী তথা সামগ্রিক জীবনের পুংখানুপুংখভাবে বিবরণ অসংখ্য বিশ্বস্ত সূত্রের উদ্ধৃতিসহ লিপিবদ্ধ আছে।তৎকালীন আরবের গৌরব ও ধর্মীয় মূল্যবোধের প্রতীক ঐতিহ্যবাহী পবিত্র কাবার রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব ছিল কুরাইশ বংশের নেতৃস্থানীয় ব্যক্তির উপর। ঐ বংশেরই সর্বজনমান্য নেতা আবদুল মুত্তালিবের পুত্র আবদুল্লাহর ঔরসে মা আমিনার গর্ভে জন্মগ্রহণ করেন মহানবী (সাঃ)। অসাধারণ দৈহিক সৌন্দর্য, সদাচার, সত্যবাদিতা, মধুর ভাষণ, ন্যায়পরায়ণতা অনন্য চরিত্র-মাধুর্য্য প্রভৃতি সদগুণাবলীর কারণে তিনি সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।মহান আল্লাহ তায়ালা ৮ রবিউল আউয়াল সোমবার হযরত জিব্রাইল (আঃ) এর মাধ্যমে হেরা পাহাড়ের গুহায় প্রথম ঐশী বার্তা পাঠান। ৪০ বছর বয়সে নবুওত প্রাপ্তির পর তার পরিচিতি জন্মভূমির ক্ষুদ্র গণ্ডির মধ্যে নয় সমগ্র আরব তথা সভ্য জগতের সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ে। নিস্কলুষ চরিত্র মাধুর্য নিয়ে ইসলামী কালেমার বিপ্লবী দাওয়াত প্রচারের সময় পদে পদে তিনি প্রচণ্ড বিরোধীতার মোকাবেলা করেন এবং তেইশ বছরের নবুওতী জীবনে শতধা-বিভক্ত আরব জাতিকে এক ঐক্যবদ্ধ শক্তিশালী বিশ্বজয়ী জাতিতে পরিণত করলেন।প্রচলিত সমাজের ধর্ম, সভ্যতা, সংষ্কৃতি, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ব্যবস্থা, শিক্ষা, সামাজিক, নৈতিক তথা সামগ্রিক জীবন ব্যবস্থায় আমূল সংস্কার ও পরিবর্তন সাধন করে হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এক নতুন জীবন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করেন। পৃথিবীর ইতিহাসে এটা সর্বাধিক উল্লেখযোগ্য, স্থায়ী ও তাৎপর্যময় সফল বিপ্লব। ১২ই রবিউল আউয়াল সোমবার দুপুরের সময় ৬৩ বৎসর বয়সে শেষ নবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) ইহলোক ত্যাগ করেন (ইন্না লিল্লাহে ওয়া ইন্না ইলাইহে রাজেউন)।দুনিয়ার সর্বশ্রেষ্ঠ মানুষ, যিনি সর্বশেষ ও পূর্ণতম জীবন বিধান আল কোরআন নিয়ে আবির্ভূত হয়েছিলেন, তিনি কেবল ‘আনা বাশারুম মিসলুকুম’ বলে নিজেকে মানুষরূপে চিহ্নিত করে ক্ষান্ত হননি বরং উদাত্ত কণ্ঠে সারা দুনিয়ার সকল মানবমন্ডলীকে ইসলামের দিকে আহ্বান জানিয়ে সকল মানুষেল মুক্তি পথ নির্দেশ করেছেন। সকল মানুষকে এক-অদ্বিতীয় আল্লাহ্কে গ্রহণ করার কথা বলে আমাদের প্রিয় মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) জাতি ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সারা দুনিয়ার মানুষকে একই কাতারে দাঁড় করিয়ে দিয়েছেন। আজকের বিশ্বের দিকে তাকালে দেখতে পাই, ইরাক, ফিলিস্তিন, ইসরাঈল কাশ্মীর, আফগানিস্তান, বসনিয়া, পাকিস্তান, ভারত, যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যান্য রাষ্ট্রগুলিতে কোথাও সম্প্রীতি ও শান্তি নেই। ভারতে হিন্দু-মুসলিম দাঙ্গা, পশ্চিমা দেশে সাদা-কালো বিভেদ, হিন্দুদের শ্রেণী বা বংশমর্যাদার পার্থক্য সুপ্রাচীনকাল হতেই থেকে যাচ্ছে। নোবেল বিজয়ীগণ শান্তির জন্য পদক পেলেও কোথাও কিঞ্চিৎ শান্তি ফিরিয়ে আনতে পারেননি। যিনি পৃথিবীর মানুষের জন্য রহমত , বরকত ও শান্তির জন্য আবির্ভূত হয়েছেন তিনি সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ)। মহান আল্লাহ যাকে রাহমাতুল্লিল আলামীন হিসাবে প্রেরণ করেছেন। আল্লাহ তায়ালা বলেন- রাসুলের জন্য রয়েছে মানবজাতির জন্য সুন্দরতম আদর্শ। প্রায় পাঁচ লক্ষ মুমিন সাধক দীর্ঘকাল পর্যন্ত হাদীসের বর্ণনা, সংগ্রহ, সংরক্ষণ ও গ্রন্থনার কাজে ব্যাপৃত থেকে জীবনীগ্রন্থ রচনার ক্ষেত্রে পৃথিবীতে এক অদ্বিতীয় ইতিহাস সৃষ্টি করেছেন। আধুনিক যুগে ইসলামী শিক্ষা বিস্তারে গৌরবোজ্জ্বল অতীতকে নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরার জন্য প্রথিতযশা মুসলিম বুদ্ধিজীবীদের প্রয়াসী হতে হবে যাতে মানুষের মন ধর্মীয় চেতনায় সমৃদ্ধ হয়। এ বিষয়ে বাংলাপিডিয়া বলছে- "The impact of the Prophet's (saw) ideas on the European world is acknowledged by one and all. John William Draper who has unhesitatingly declared that "Renaissance owes its birth to Islam", has stated in A History of the Intellectual Development of Europe: "Four years after the death of Justinian, in AD 569, was born at Makkah, in Arabia, the man (Muhammad) who, of all men, has exercised the greatest influence upon the human race." ইসলাম যেহেতু একটি পূর্ণাঙ্গ জীবন বিধান সেহেতু এই সত্যের আলোকেই এর অনুসারীদের জন্য রয়েছে ব্যক্তি জীবন, গোষ্ঠী জীবন তথা রাষ্ট্রীয় জীবনের দায়-দায়িত্ব ও কর্তব্য পালনের সুষ্পষ্ট দিক নির্দেশনা ও উপযুক্ত নীতিমালা। ইহকালীন শান্তি ও পরকালীন মুক্তির জন্য ব্যক্তি, সমাজ ও রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাপনায় প্রতিবন্ধকতা অপসারণ করে আদর্শ ইসলামী শিক্ষার চর্চা ও মূল্যবোধ প্রসারে আমাদের সবাইকে পবিত্র কোরআন ও হাদীসের মর্মবাণী অনুযায়ী জীবনকে পরিচালিত করতে হবে।-লেখকঃ দেওয়ান রাশীদুল হাসান, ডাইরেক্টর, জনসংযোগ ও প্রকাশনা দফতর, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ময়মনসিংহ ।
২| ২১ শে নভেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৩৬
আল মাহদী ফোর্স বলেছেন: মুহম্মদ ৪০ বৎসর বয়সে নবুয়ত পান, তাহলে সেই পর্যন্ত তিনি কোন ধর্মাবলম্বী ছিলেন । অনেকে বলেন তিনি পৌত্তলিক ছিলেন । পৌত্তলিক প্রথাতেই পৌত্তলিক খাদিজা’ কে বিবাহ করেছিলেন । তাকে যখন 'আল আমিন' বলা হোত- তখনও তিনি পৌত্তলিক ধর্মানুসারী হিসেবেই সেই খেতাব পেয়েছিলেন । >>
>>রাসুল(সা ৪০ বছরে নবুওত পেলেও মানুষ পয়দা হবার আগে থেকেই তিনি ঘোষিত নবী।রাসুল(সাঃ) জন্মগত ভাবেই আল্লাহ দ্বারা ঘোষিত নবী ছিলেন,তিনি ইসলাম ধর্মের অনুসারী ছিলেন জন্মগতভাবেই।আপনাকে চ্যালেঞ্জ,বিবি খাদিজা কোন দিনই পৌত্তলিক ছিলেন না,তিনি ছিলেন একেস্বরবাদী।
৩| ২২ শে নভেম্বর, ২০১৩ ভোর ৬:২৩
ব্যতীপাত বলেছেন: তিনি যদি ঘোষিত নবীই হবেন,-তাহলে ৪০ বছরে আবার নবী হবার ঘোযণা দিলেন কেন ?
মানুয জন্মাবার আগেই নবী ?হা হা হা ! মারফতি কথা ।গ্রামের পূঁথিতে এইসব থাকে ।
মুহম্মদ কিন্তু ইতিহাসের কালের মানুষ ।পুরাণের কথা নয় তার জীবনী ।তার জীবনের সব অনুসঙ্গই লেখা আছে ।আপনি আমারে দেখান তো-কই লেখা যে তিনি ৪০ বছরের আগে থেকেই মুসলমান ছিলেন ?
মুসলমান হতে হলে আল্লাহরে মানতে হয় আর মহম্মদকে তার রসুল । তো রসুলের নব্যুয়তের আগে আল্লাহর কোন নাম পাই না কেন ? আল্ ইলা নামে এক চাঁদ দেবতা ছিল। তিনিই কি ?
তিনি যদি জানতেন তিনি মুসলমান ,তাহলে তিনি আগেই ঘোষণা দেন নাই কেন ? কেন ৪০ বছর নষ্ট করলেন বেহুদা? ইসলাম প্রচারে টাইম পাইলেন মাত্র ২৩ বছর । আগেই বললে পাইতেন ৬৩ বছর ।
৪| ২২ শে নভেম্বর, ২০১৩ ভোর ৬:৫৭
দিশার বলেছেন: সম্প্রীতির বিস্স নায়কের নিজের ধর্মে এখন হাজার টা ভাগ।শিয়া, সুন্নি, তাবলিগী, জামাতি, ওয়াহাবী ,খারেজি , পিরীতি , তালেবান , সুফী ,আহলে হাদিস , মাজাবি, লা মাজাবি , দেওবন্ধি, তরিকত্পন্থী ,দেয়ানবাগী , রাজার্বাগী, মগবাজারী, হাটহাজারী, তেতুল হুজুর, লেংটা হুজুর। কমতি নাই কিসুর। আট রশি, গলায় রশি। জাকের মঞ্জিল, হাতিরঝিল সব কিসু "একমাত্র" ধর্ম ইসলাম।
২৩ শে নভেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১:৩৫
আল মাহদী ফোর্স বলেছেন: ভাই দিশার,মুসলমানদের মধ্যে এত ভাগাভাগির জন্য রাসুল(সাঃ) মোটেই দায়ী নন।কষ্ট করে পড়ুন নীচের হাদিসটিঃ
রাসুল(সাঃ) বলেছেন,"আমি তোমাদের জন্য দুটো ভারী বস্তু রেখে যাচ্ছিঃকোরান ও আমার রক্তজ বঙ্গশধর(ইতরাতে আহলে বায়েত)।যদি তো যদি তোমরা এই দুটি ভারী বস্তুকে আকড়ে ধরো , তাহলে গোমরাহ/পথভ্রষ্ট/বিপথগামী হবে না।হাউজে কাউসারে মিলিত হবার আগ পর্যন্ত এই দুটি ভারী বস্তু পরস্পর থেকে বিচ্ছিন্ন হবে না"( তিরমিজী শরিফ)।একটু খেয়াল করুন
সুপ্রিয় ভাই,একটু খেয়াল করুন,যদি তোমরা এই দুটি ভারী বস্তুকে আকড়ে ধরো,তাহলে পথভ্রষ্ট হবে না।তার মানে যদি আমরা এই দুটি ভারী বস্তুকে আকড়ে না ধরি তাহলে পথভ্রষ্ট হবো,গোমরাহ হবো,বিভ্রান্ত হবো।আসলেই ভাই।মুসলমানরা দুটি ভারী বস্তুকে আকড়ে না ধরার কারনে চরমভাবে বিভ্রান্ত/গোমরাহ/পথভ্রষ্ট হয়েছে।
©somewhere in net ltd.
১|
২০ শে নভেম্বর, ২০১৩ রাত ৯:৫৫
ব্যতীপাত বলেছেন:
যে সমাজে তিনি জন্ম লাভ করেছিলেন সেই সমাজের মানুষ অত্যাচারে-অনাচারে লিপ্ত হয়ে আল্লাহর দেয়া বিধান ভুলে গিয়ে নিজেদের মনগড়া আইনে চলছিল। সামাজিক অনাচার, ব্যভিচার, মারামারি, কাটাকাটি, হানাহানি ইত্যাদি ছিল নিত্য নৈমিত্তিক ব্যাপার।
সেই সমাজ কি সবটাই এমন কালীমালিপ্ত ছিল?
তারা শুধুই মারামারি কাটাকাটি করতো এমন মনে হয় না । ইসলাপূর্ব আরব নিয়ে বহু বই পুস্তক আছে যার সবটাই এমন কালিমা লিপ্ত নয় । মক্কার কাবায় যে ৩৬০ টি ভিন্ন ভিন্ন ধর্মীয় সম্প্রদায় একত্রে উপাসনা করতো-ধর্মীয় সহাবস্থানের এইটি একটি বড় উদাহরণ- কাবায় কবিদের সম্মেলন হত এবং শ্রেষ্ঠ কবিতাটি কাবার গায়ে ঝুলিয়ে রাখা হত। আমীর আলীর বইতে তাদের সংস্কৃতি র্চার কিছু বিবরণ আছে
আরবদের সাংস্কৃতিক চর্চা এবং তার বিকাশের জন্য এক বার্ষিক মেলার অনুষ্ঠান হতো ওকাজ নামক স্থানে । আরবএর ইতিহাসে প্রসিদ্ধ এই মেলার বিবরণ আছে সৈয়দ আমির আলির গ্রন্থে। তিনি লিখছেন-
প্যাগানদের পবিত্র জুলক্কদ মাসে ওকাজে এই মেলা বসতো । এ ছাড়াও মক্কার অদূরে মারুজ জুহয়ানের নিকটে মার্জাজেও মেলা বসতো । তবে ওকাজের মেলাই ছিল সেরা – এটি একটি বিশাল জাতীয় মেলা ।মেলা চলাকালে সকল প্রকার যুদ্ধ বা মানুষের রক্তপাত নিষিদ্ধ থাকতো । সমস্ত শত্রুতা ও গোত্রবিবাদ মুলতবী থাকতো বলে আরবের বিভিন্ন অঞ্চল ও দূরবর্তী দেশ থেকে বিশ্বের বানিজ্য সম্ভার এখানে জমায়েত হত। হিজাজ ও নজদ্ থেকে আরবের আশীর্বাদধন্য ব্যবসায়ীরা আসতো ।
আগমন ঘটতো মরুভূমির কবি-বীরদের,অভিনেতাদের –তারা মুখোশ বা আবরণ পরিহিত অবস্থায় তাদের কবিতা আবৃত্তি করতো ও সমবেত জাতির অকুন্ঠ প্রশংসা কুড়োত। ওকাজ ছিল যেন আরব দেশের অলিম্পিয়াড । শুধু বানিজ্যই নয় , তারা আসতো তাদের গৌরব ও গাঁথা ঘোষণা করতে- কবিত্ত্ব শক্তি ও সাহিত্যিক প্রতিভা প্রদর্শণ করতে । এইসব কবিতা পরবর্তি বংশধরদের জন্য স্মৃতিচিহ্ন হিসেবে জাতীয় ভোজনালয়, ক্বাবায় টাঙিয়ে রাখা হত।
তাদের বলা হত মুয়াল্লিকত বা ঝুলন্ত কবিতাবলী । শুধু তাই নয় –আসতো গান ও নাচের দল সমূহ । মিশরের আলমাস ও আওয়াজিনদের মত তাবু থেকে তাবুতে গান ও নৃত্যবাদনে মরুভূমির সন্তানদের আনন্দ দান করতো ।
আল্লাহ পাকের বিশেষ অনুগ্রহে সবচেয়ে ভদ্র, নম্র ও চরিত্রবান ব্যক্তি হিসেবে তিনি গড়ে উঠেছিলেন এবং আরবদের সবাই তাকে ‘আল-আমীন’ বলে ডাকতো।
মুহম্মদ ৪০ বৎসর বয়সে নবুয়ত পান, তাহলে সেই পর্যন্ত তিনি কোন ধর্মাবলম্বী ছিলেন । অনেকে বলেন তিনি পৌত্তলিক ছিলেন । পৌত্তলিক প্রথাতেই পৌত্তলিক খাদিজা’ কে বিবাহ করেছিলেন । তাকে যখন 'আল আমিন' বলা হোত- তখনও তিনি পৌত্তলিক ধর্মানুসারী হিসেবেই সেই খেতাব পেয়েছিলেন ।
তারা নানা পার্থক্য সৃষ্টিকারী মতবাদে দীক্ষা গ্রহণ করেছে।
কিন্তু শুধু পার্থক্যই নয়- আরব বেদুইন সমাজে যে ধর্মীয় সহনশীলতা ছিল-প্রায় ৩৬০ টি বিভিন্ন গোত্রের মূর্তি একই ঘরে রেখে একসাথে তাদের উপাসনা করার পদ্ধতি,যার মাধ্যমে যে ধর্মীয় সংহতি ছিল কাবায় ।
তাকে বিনষ্ট করা হয় ভিন্ন ধর্মীয় মূর্তিকে ধ্বংস করে ।
আপন গোত্রে, পরিবারে বিভক্তি এনে তাদের মুখোমুখী যুদ্ধে ঠেলে দেয়া। আজও মুসলমানরা সেই পথ অনুসরণ করে এই দেশে বিভিন্ন মন্দিরে প্যগোডায় হিন্দুদের, বৌদ্ধদের মূর্তি ভাঙ্গছে। কেবল তাই নয় , সারা পৃথিবীতে আজও মুসলমান মুসলমান মারামারি করে মরছে । তাদের মধ্যে এমন দ্বন্দ যে আজ ১৪০০ বছর শিয়া সুন্নী মারামারি করে মরছে। গতকালই বৈরুতে বোমা মেরেছে শিয়াদের উপর।
খ্রীষ্টান হয়েও হযরত ঈসা (আঃ)-কে শ্রেষ্ঠ বলতে অপারগ হয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রখ্যাত সাংবাদিক ও গবেষক মাইকেল হার্ট তার বিশ্ববিখ্যাত “দি মোস্ট ইনফ্লুয়েন্সিয়াল পারসনস ইন হিস্টরী” গ্রন্থে রাসূল (সাঃ) কে সর্বশ্রেষ্ঠ ব্যক্তিত্ব হিসেবে উল্লেখ করে
মুহম্মদকে মাইকেল হার্ট শ্রেষ্ঠ ব্যক্তিত্ব বলেন নাই,- সবচাইতে প্রভাবশালী,মোস্ট ইনফ্লুয়েশিয়াল বলেন দুটো কিন্তু এক নয় । অনেক কুখ্যাত লোকের অনেক প্রভাব থাকতে পারে পৃথিবীতে । যার জন্য সেই একশ’ জনের লিস্টে হিটলার মত ঘৃণিত, চেঙ্গিজ খানের মত ধ্বংসকারী , স্ট্যালিন এর মত ধর্মবিরোধী লোকও আছেন । তালিকাটি যেহেতু শ্রেষ্ঠ মানুষের নয়-তাই মুসলমানরা না বুঝেই লাফান । নইলে যেই লিস্টে হিটলার,চেঙ্গিজ খাঁ’রা আছে তাদের মধ্যে ১ নন্বর হওয়া কোন সম্মানের ব্যপার না ।
তাছাড়া বুদ্ধ, কনফুসিয়াস,লাও জে,জরোস্টার প্রভৃতি মানুষও আছে –মানুষ হিসেবে যারা মুসলমানদের কাছে সম্মানিত নন- কেননা তারা ভিন্ন ধর্ম প্রচার করেছে ।
তাছাড়া এই লিস্ট নিতান্তই ব্যক্তিগত একজন মানুষে-এরকম আরও লিসট খুঁজলে মিলবে যেখানে হয়তো মুহাম্মদের নামই নেই । যেমন সেইন্ট পিটার্সবার্গ টাইমস ২০০৯ সালে প্রকাশিত এক লিস্ট এ ‘ওসামা বিন লাদেন’ কে সবচেয়ে প্রভাবশালী ব্যক্তি বলেছেন ।
তিনি বলেছেন ‘ কোন কালোর উপর সাদার এবং সাদার উপর কালোর শ্রেষ্ঠত্ব নেই।
-এই হাদিসট টি দেখুন- কোরান শরীফের একটি আয়াতের ব্যাখ্যায় যেখানে বলা হয়েছে-‘পালনকর্তা বনী-আদমের পৃষ্টদেশ থেকে বের করলেন তাদের সন্তানদের(৭:১৭২) ’ --রসুলুল্লাহকে সেই আয়াতটির মর্ম জিজ্ঞেস করায় তিনি বলেন-‘আল্লাহ সর্বপ্রথম আদম সৃষ্টি করেন । তারপর নিজের কুদরতের হাত যখন পিঠে বুলিয়ে দিলেন তখন প্রথম যারা আদমের ঔরস থেকে বেরিয়ে এসেছিল তারা ছিল সৎ এবং শ্বেত বর্ণ- যাদেরকে বলা হয়েছে জান্নাতবাসী । আর দ্বিতীয়বার যারা বেরিয়েছিল তারা ছিল পাপী তাপী এবং কৃষ্ণবর্ণ -যাদেরকে জাহান্নমবাসী বলা হয়েছে । ইমাম আহমদ এর রেওয়াতে, হযরত আবুদ্দারদার উদ্ধৃতি ।
মুহাম্মদ (সাঃ) জাতি ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সারা দুনিয়ার মানুষকে একই কাতারে দাঁড় করিয়ে দিয়েছেন।
আসলে মনে হয় ,হবে -'মুখোমুখি দাঁড় করিয়েছেন ।' যেজন্য আজ পৃথিবীতে যেখানে যত গন্ডগোল ,তার একটি না একটি পক্ষ অবশ্যই মুসলিম -কোথায় উভয় পক্ষই মুসলিম ।
এর একটি প্রধান কারণ ইসলাম পৃথিবীর অন্য সব ধর্মকে অনস্তিত্বে এনেছে ।
’আজ হইতে ইসলামকেই তোমাদেরএকমাত্র ধর্ম মনোনীত করিলাম ৫:৩ ।
এমন বক্তব্য পাই যে-‘অপর সমস্ত ধর্মের উপর জয়যুক্ত করার জন্যই তাকে পাঠান হয়েছে’-৫:৩৩।
সম্প্রীতি কি হবে এইসব মানলে? দ্বন্দের এটি একটি কারণ।
তবে কিছু সহনশীল বক্তব্য আছে-যেমন ,ধর্মে জবরদস্তি নাই, তোমার ধর্ম তোমারকাছে প্রিয়-ইত্যাদি-
মক্কায় প্রাথমিক অবস্থায় ১২ বছর ইসলামের দুর্বলকালে অন্যান্য ধর্মকে নিয়ে মিলে মিশে থাকার বাণী প্রচার করেছিলেন । কিন্তু সেই পদ্ধতি অকার্য্যকর হওয়ায় মদিনা এসে জিহাদ এর পথ নিলেন এবং সেই তরোয়াল হাতেই সাফল্য পেলেন । তখন তার বাণীও পরিবর্তিত হলো । যেমন-
পারস্য সম্রাট খসরু পারভেজের কাছে দাওয়াত দেন-‘আপনি ইসলাম গ্রহন করুন, আপনার উপর আল্লাহর শান্তি বর্ষিত হবে। অন্যথায় অগ্নি উপাসকদের যাবতীয় পাপের জন্য দায়ী থাকবেন।’ পারস্য সম্রাট অবশ্য পত্রপাঠ তা টুকরো টুকরো করে ছিঁড়ে ফেলেন।
রোম সম্রাট কাইজার হিরাক্লিয়াসকে এবং মিশরের শাসনকর্তা মুকাউকিসের কাছে পাঠান বক্তব্য মুলতঃ একই –‘আমি আপনাকে ইসলামের দিকে আহ্বান করছি । ইসলাম গ্রহন করুন, শান্তিতে থাকতে পারবেন আল্লাহ আপনাকে দ্বিগুন পুরস্কৃত করবেন । পক্ষান্তরে যদি তা অমান্য করেন, তবে দেশবাসীর পাপের জন্য আপনি দায়ী থাকবেন ।’
অন্য সম্প্রদায়ের প্রতি তাঁর কোন দায়বদ্ধতা ছিল না । বরং আল্লাহর কাছে তাদের উপর দুর্ভিক্ষের আজাব সওয়ার হওয়ার দোয়া চেয়েছিলেন -
মাওলানা মুফতি ম শাফি’র ‘মারেফুল কোরানে’ বণর্না আছে - ‘একবার রসুলে করিম সমগ্র মক্কার জন্য দুর্ভিক্ষের আযাব সওয়ার হওয়ার দোয়া করেছিলেন –
-‘হে আল্লাহ্ এদের উপর ইউসুফের আমলের মত দুর্ভিক্ষ চাপিয়ে দিন। কেননা তারা তোমার পথে না এসে স্বীয় ধর্মপথেই চলতে আগ্রহী।’ -(মারেফুল কোরানে পৃ: ১২৩৫)অনুবাদ-ম মুহীউদ্দীন
এরূপ আরেকটি হাদিস : ‘হে আল্লাহ ,মুদার গোষ্ঠির উপর শাস্তি পাঠাও । ইউসুফের আমলের মত দুর্ভিক্ষ চাপিয়ে দাও, তারা দুঃখ ভোগ করুক ।’ বর্ননা আবু হুরায়রা ।
কোরানেও এর সমর্থন মেলে। সুরা আরাফের ৯৪ সংখ্যক আয়াতে বলা হয়েছে আল্লাহ নিজেই দুর্ভিক্ষ দিয়ে মানুষকে পীড়িত করেন, যাতে তারা বাধ্য হয় তার নবীর কথা শুনতে-
-‘আমি কোন জনপদে নবী পাঠালে ওর অধিবাসীদের দুঃখ ও ক্লেশ দ্বারা পীড়িত করি, যাতে তারা নতি স্বীকার করে ।‘ (৭:৯৪)
সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বিশ্বনায়ক কি তবে বলা যাবে তাঁকে ?