নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি খুব সহজে প্রেমে ডুবি আবার উঠি। আমার ভাইবোন টিটকারি করে, তুই একটা গ্যাস বেলুন। আমি সেইজন্য মন খারাপ করি না, মনের উপর তো আর কারো জোরাজুরি চলে না। সেই জন্য আবার আমার কোন চারিত্রিক সমস্যা নাই। প্রায় সবগুলোই নির্দোষ একতরফা অনুভূতিহীন প্রেম কিনা! এই যেমন রাস্তায় চলতে চলতে কোন হ্যান্ডসাম পোলা দেখে মনে মনে “ইয়া মাবুদ” কমেন্ট করা, বা রেস্তোঁরায় খেতে খেতে ওয়েটারের প্রেমে পড়া এইসব আরকি। সব অলস মস্তিস্কের কাজ। আমি সেখানে আমার কোন দোষ দেখিনা ! তবে হ্যাঁ, জানি কবুল করা ভালো আমি একজনকেই বাসি, সেই প্রসংগ আমার এখনকার প্রসংগ না।
এই ভালবাসা এবং প্রেম আমার বর্তমান বাসস্থানের জন্য। যখন প্রথমদিন আমার কর্মস্থলে প্রবেশ করি, তখন এর সৌন্দর্য দেখে আমি “এই প্রেম যাবে না ছুটে” বা “তুমি আমার কত চেনা” টাইপ গান গেয়ে ফেলেছিলাম। আমার গ্যাস বেলুন স্বভাব প্রমাণ করার জন্যেই হোক আর অন্য কারনেই হোক কিছুদিনের মাঝেই এই প্রেম ছুটে গেল। সে জন্য আমাকে দোষও দেয়া যায় না অবশ্য। হোস্টেলের আজব বৈষম্য, খাওয়ার কষ্ট (জীবনে শুনছেন কোন হোটেল শুক্রবার বন্ধ থাকে) শুক্রবার রীতিমত মুড়ি খেয়ে কাটাতে হতো! এইসব কারনে আমার প্রেম ছুটে গেল। আমি জীবনের প্রথম চাকুরী ছেড়ে দিয়ে, এই অসাধারন সুন্দর জায়গাটা ফেলে চলে যেতে চাইলাম। প্রিয়জনেরা, বলা ভালো একজন যার কথা আমি গুরুত্ব দিয়ে শুনি, বলল “আর কিছুদিন দ্যাখ প্লিজ”। বুঝলাম, নিজেকে বোঝালাম যে যা করতে চাইছি সেটা ভালো কিছু হবে না, আরেকটু ট্রাই করেই দেখি না!
আবার প্রেমে পড়ার চেষ্টা চালালাম, এইবার জোরে সোরে। প্রথম টার্গেট একটা খালি বাসা ম্যানেজ করা। যেহেতু সরকারী বাসা, সেহেতু চাহিবা মাত্রই ইহার বাহককে দিতে কেউ রাজি নয়। রীতিমত কম্পিটিশন দিয়ে, আটজন সরকারি চাকুরেকে পিছনে ফেলে এই দৌড়ে জয়ী হলাম প্রায় দুই মাস পর। এখন বাসাতো পেলাম, কীভাবে বাকি সবকিছু ম্যানেজ হবে! ছোট্ট কাজিনগুলি এক্ষেত্রে আমার সহায় হলো। পিচ্চি পিচ্চি বোন দুইটা কবে যে এত কর্মা হয়েছে কে জানতো! এই ভয়ানক উত্তরঙ্গের শীতে তারা একদিনেই হোস্টেল থেকে আমার সংসার, বাসায় স্থানান্তর করে দিলো। তারপর তারা ক্লাস পরীক্ষার কারণে বিদায় নিলো।
অ্যারেঞ্জ ম্যারেজ এ পূর্বে প্রেম থাকলে বিয়ের পর মনের ভিতর কেমন দ্বন্দ্ব তৈরী হয় সেইটা এবার বোঝা শুরু করলাম। দিনে অফিস শেষে রাতে একলা বাসা, নিজেকে প্রশ্ন করি “আমি কি এই জীবন চেয়েছিলাম”। আম্মুকে বারংবার অনুরোধ করতেও পারছিলাম না, তার সদ্য প্রসূতি ছেলের বউকে ফেলে আসাটা সম্ভবও ছিলো না। এবার আমি কমিটেড হতে চাইলাম, যে করেই হোক ভালোবাসবো। লুতুপুতু প্রেম না, সিরিয়াস ভালবাসা। পূর্বতন প্রেম, হলের তিন ফিট বাই ছয় ফিটের বেড কিংবা চাচার বাসার ছোট্ট ঘর, আমার শৈশব কৈশোর কাটানো ঘর এইগুলিকে মনের কোণে একটুখানি যায়গা দিয়ে এই বারোশ স্কয়ার ফুটের অসাধারণ ফ্লাটটাকে আপন করতে চাইলাম। প্রথম প্রথম অসহ্য লাগতো, ঠিক একজনকে ভালোবেসে অন্য কাউকে বিয়ে করেছি, এই রকম বাজে ফিলিংস হত। সকাল বেলায় পাখির কিচির মিচির শুনে সতীনের বাচ্চার কান্না লাগতো; দূরে শিয়ালের ডাক শুনলে মনে হত এই বুঝি দলবল নিয়ে আমাকে আক্রমন করতে আসবে!
আর এখন, মনে হলেই হাসি পায়। খুব বেশিদিন হয়নি যদিও; ভোর বেলাতে পাখির ডাক না শুনলে ঘুম ভাঙ্গে না। আমি দোতলার বারান্দায় ওদের নিয়ম করে দুবেলা খেতে দেই। মাছের কাটা বন্য বিড়ালটার জন্য তুলে রাখি। শিয়ালের ডাক না শুনলে মনে হয় আমার পাহারাদারগুলি কোথায় গেল!! অফিস থেকে তাড়াতাড়ি ফিরে আমার ছাদে দাঁড়িয়ে সূর্যাস্ত দেখি। বিকালে ঘরে আলতা মাখানো রোদ না দেখলে মন খারাপ হয়ে যায়। হায়রে ভালবাসা, একেই বুঝি ভালবাসা বলে!!
২| ১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ২:৩৭
ইমতিয়াজ ১৩ বলেছেন: প্রথম ভাল লাগা আপনার পোস্টে। তবে এবারের ভালবাসা মনে হয় গ্যাস বেলুনে মত উড়ে যাবে না।
৩| ১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ২:৪৭
সোজা সাপটা বলেছেন: ভালো লাগলো।
৪| ১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:৪৫
কলমের কালি শেষ বলেছেন: লেখায় সুন্দর অনুভূতি ।
৫| ১৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ১২:১৩
মো. ইব্রাহীম হুসাইন বলেছেন: চালিয়ে যাও, ভালো হইছে লেখা।
৬| ১৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ১২:১৮
যুদ্ধমন্ত্রী বলেছেন: লাল বাটনে চাপ দিতে গিয়া ভুল করি স্টার বাটনে চাপ লোগি গেছে
তয় পোস্ট ভালা হইছে
©somewhere in net ltd.
১| ১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ২:০৪
প্রামানিক বলেছেন: ভাল লাগল। ধন্যবাদ