অনেক ছোট গল্প

০২ রা জানুয়ারি, ২০১৪ বিকাল ৩:৪৬

আজকে সকালে (দুপুর পড়ুন) ১ টা বাজে ঘুম ভেঙ্গে যাওয়ার পর থেকেই কেমন জানি খারাপ লাগছিলো । একটা দুঃখ যুক্ত স্বপ্ন দেখলাম । স্বপ্ন সাধারনত মনে থাকেনা কিন্তু ঐটা দেখার সময়ই ঘুম টা ভাংলো তাই হয়তো মনে আছে । এখন খারাপ মন ভালো করার জন্য কিছু লিখতে হবে । এমন কিছু লিখবো যা পড়ে সবার মন ভালো হয়ে যাবে । সবার মন ভালো হয়ে গেলে আমারো মন আর খারাপ থাকবেনা । কিন্তু আমাকে খুব ছোট দশ লাইনের মধ্যেই কিছু লিখতে হবে । কারন অনেক বড় কিছু লিখলে সবাই বিরক্ত হয়ে যাবে কেউ পড়বেনা ।

কি লেখা যায় কি লেখা যায়! চিন্তা করতে করতে চায়ের কাপ নিয়ে বারান্দায় আসলাম যদি কিছু পাওয়া যায় লেখার মতো! প্রথমেই চোখে পড়লো সামনের বিল্ডীং এর বারান্দায় এক টাকলু মানুষ চুল আচড়াচ্ছে , হাতে গোনা যায় এমন কয়েকটা চুল কে খুব যত্নের সাথে এক হাতে আয়না আরেক হাতে চিড়ুনী নিয়ে আচড়াচ্ছে ! আর আমার মাথায় জঙ্গল হয়ে যাওয়ার পরেও যত্ন নিচ্ছি না। চুল থাকতে চুলের মর্যাদা না বোঝা আর কি!যাই হোক এই টাকলুকে নিয়ে লেখা যাবে না । চোখ আরেকটু উপরে তুলে দেখলাম ছাদে বসে আছে একটা বয়স্ক কাক । আমি হাত দিয়ে পাথর ছোড়ার ভঙ্গি করলাম । ফিস ফাস করলাম । তারপরও কাকটা নির্বিকার ভঙ্গিতে বসে আছে । পাত্তায় দিলোনা আমাকে একদম আমার পুরনো বন্ধুদের মতো! ওরাও আমাকে পাত্তা দেয় না । যাই হোক কাকটারো মনে হয় মন খারাপ । দেশ নিয়ে চিন্তিত হয়তোবা । কি জানি! একে নিয়েও লেখা যাবে না। আমি আরো উপরে মেঘের দিকে তাকালাম শীত লাগছিলো আমার । হঠাৎ করেই যেন মেঘের ভেলায় চড়ে আমি আমার ছোটবেলায় চলে গেলাম।জানালার পাশে এক বস্তা খেলনা পাতিল নিয়ে বসেছি আমি হঠাৎ করেই মেঘের দুনিয়ায় গেলাম ।মেঘের মাঝে হারিয়ে যাওয়া শুরু করলাম ঠিক তখন থেকেই । মেঘের নিচের পৃথিবীটা যেন আমাকে আর টানে না এই কারনেই । অনেক দুর্বল মনে হয় নিজেকে এখানে । কিন্তু ঐ মেঘের ভেলায় আমার অনেক শক্তি ।

ধুর কি নিয়ে লেখা যায় ! কিছুই মাথায় আসছেনা । দূরে ছাদের ঝাপসা ভাবে কোন এক মেয়েকে দেখলাম । ওকে নিয়ে কি কিছু লিখবো ? আমি তো চিনি না ওকে ! চেনারই বা কি দরকার! কল্পনা দিয়ে না হয় লিখি ওর সম্পর্কে ।

মেয়েটা অত সুন্দর না আবার বিশ্রীও না । তিনটা ছেলেকে পছন্দ করে মেয়েটা , কাকে কম কাকে বেশি সেটা সে জানে না তিনজনের একজন তার ক্লাশমেট , একজন প্রাইভেট টিউটর আর আরেকজন কে সেটা বলা যাবে না । আবার মেয়েটাকে পছন্দ করে অন্য দশটা ছেলে । এরা কেউই কাউকে পাবে না । শেষ মেষ মেয়েটার বিয়ে হবে কোন এক ইস্টাব্লিসড টাকলুর সাথে যার অনেক টাকা । মেয়েটা অনেক সুখী হবে শুধুমাত্র কিছু বর্ষার বিকেল ছাড়া , অনেক কিছু মনে পড়ে যাবে তখন তার যখন সে একা একা বারান্দায় বসে চা খাবে । যখন সে ..... এই যা! আমার চা টা ঠান্ডা হয়ে গেলো! ধুর মনটা আরো খারাপ হয়ে গেল! আজকে আর গল্প লেখা হবে না মনে হয় । বিষয়ের বড়ই অভাব । সব কিছুই আজ কেমন জানি ন্যাকামী । তবে লিখবো একদিন কোন ছোট গল্প । অনেক ছোট ।

৩ টা৫৫

১৯ পৌষ , ১৪২০ ।

চট্টগ্রাম ।

৪ টি +০/-০