নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আউলিয়া সঙ্গী হয়ে আলোর ভুবনে

ভাবসাধক

বর্তমানে নৃতাত্ত্বিকদের গবেষনায় প্রেমের আয়ু নির্ধারিত হয়েছে মাত্র চার বছর। প্রত্যেক মানুষের মস্তিষ্কে থাকে প্রেম-মানচিত্র। সেই মানচিত্রে আঁকা মুখটার সঙ্গেই হয় প্রেম। একই সময়ে দু'জনের সঙ্গে প্রেম হওয়ার বিষয়টা তর্ক-সাপেক্ষ। দেখা গেছে, মোট স্তন্যপায়ীর প্রায় পাঁচ শতাংশের কম অংশ বিশ্বস্ত জোড় বাধে। স্তন্যপায়ী প্রাণীশ্রেষ্ঠ মানুষের প্রেমের প্রকৃতি একগামী; তবে অতি গোপন ব্যাভিচার সহ। যেহেতু পুরুষ প্রথম থেকেই নারী পরিবর্তনে অভ্যস্ত, তাই তাদের বিবর্তিত জিন এখনো বহুগামীতার বার্তা বহন করে। অন্যদিকে সেই প্রাগৈতিহাসিক নারী, যিনি তার দলের নজর এড়িয়ে ঘন সবুজ বনের আড়ালে প্রেমমত্ত থাকতেন অবৈধ প্রেমিককে নিয়ে, তার জিন এর প্রভাবেই আজকের নারীর মানসে বহুগামীতা-প্রবনতা।

ভাবসাধক › বিস্তারিত পোস্টঃ

প্রাচীন বাঙলার শ্রীজ্ঞান অতীশ দীপঙ্কর

১৫ ই নভেম্বর, ২০০৯ দুপুর ১২:০০

হাজার বছরের ইতিহাস সমৃদ্ধ আমাদের এ বাংলাদেশ। কত জ্ঞানী, গুণী, পন্ডিত জন্ম নিয়েছেন এ দেশে। তাদেরই একজন শ্রীজ্ঞান অতীশ দীপঙ্কর। সেই প্রাচীনকালে তিনি বাংলাদেশকে এশিয়ার বিভিন্ন দেশে পরিচিত করিয়েছেন। অতীশ দীপঙ্কর বার্মা, নেপাল ও চীনের তিব্বত গিয়ে বৌদ্ধধর্ম প্রচার করেন। আর অতীশ দীপঙ্করের সমাধী সৌধও চীনের তিব্বতে।



অতীশ দীপঙ্করের জন্ম বাংলার অন্যতম প্রাচীন রাজধানী বিক্রমপুরে। বিক্রমপুর আজ মুন্সীগঞ্জ জেলা নামে পরিচিত। মুন্সীগঞ্জের সদর উপজেলার বজ্রযোগিনী গ্রামে বৌদ্ধধর্মের পরম পন্ডিত শ্রীজ্ঞান দীপঙ্কর ৯৮০ সালে জন্মগ্রহণ করেন। বাংলাদেশে ও চীনে অতীশ দীপঙ্করের জন্ম সাল নিয়ে ঐতিহাসিকরা দু’ভাগে বিভক্ত। একদল ঐতিহাসিকের মতে, অতীশ দীপঙ্কর ৯৮০ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারী। অন্য দলের মতামত হলো ৯৮২ সালে। তারা জন্ম তারিখ নির্ধারণ করতে পারেনি। ২৪ ফেব্রুয়ারিও নির্ভরযোগ্য বা প্রমাণিত তারিখ নয়। বিক্রমপুরের ইতিহাস হতে জানা যায়-বিক্রমপুরস্থ বজ্রযোগিনী গ্রামে বৌদ্ধ মহাতান্ত্রিক দীপঙ্কর শ্রীজ্ঞান অতীশ জন্মগ্রহণ করেন। বিক্রমপুরের ইতিহাসে লেখাটি হুবহু এভাবেই মুদ্রিত হয়েছে। পাগ-সাম-জন- জাঙ্গ-এর মতে অতীশ দীপঙ্করের জন্মভূমি বিক্রমপুর বজ্রাসনের পূর্ব দিকে অবস্থিত। মূল ইংরেজিতে এভাবে লেখা রয়েছে Dipankar was born AD 980 in the Royal family of Gour at vikrampur in Bangla, a country lying to the East of Vajrasana.



দীপঙ্কর তার আত্মজীবনীতে লিখেছেন-‘আমার দেশে রাজা এবং রাজবংশীয় লোকের বাস। ভূ ইন্দ্রচন্দ্র নামে এক রাজা রাজত্ব করেন। রাজবংশীয়দের দেহে রাজ রক্ত থাকিলেও তাহারা রাজ্য বা সিংহাসনের অধিকারী নহেন। আমি রাজ বংশে জন্ম লাভ করেছিলাম। আমার পিতার নাম তিব নাম থাহি দান পগ (Tib-Namm-khahihi-dvan-phyug ) কিন্তু বাংলার ইতিহাসে অতীশ দীপঙ্করের পিতার নাম কল্যাণ শ্রী ও মায়ের নাম প্রভাবতী পাই। কল্যাণ শ্রী তিব্বতীয় নাম হলো Dge-vahi.. বাল্যকালে দীপঙ্করের নাম ছিল চন্দ্রগর্ভ। দীপঙ্কর আত্মজীবনীতে রাজা হিসেবে ভূ ইন্দ্রচন্দ্রের কথা বলেছেন। সে যুগে দীপঙ্করের বাড়ির দু’কিলোমিটার উত্তরে শ্রীচন্দ্র (৯৩০-৯৮০) লডহর চন্দ্র, পূর্ণচন্দ্ররা রাজত্ব করেন। তারা সবাই বৌদ্ধ রাজা ছিলেন।



অল্প বয়সেই দীপঙ্কর শিক্ষক জেতারির নিকট প্রাথমিক শিক্ষা লাভ করেন। তিনি অধিক জ্ঞান লাভের আশায় “কৃষ্ণগিরি” বিহারের রাহুল গুপ্তের নিকট ‘‘ বৌদ্ধদিগের ত্রিশিক্ষা নামক তত্ত্বগ্রন্থে” শিক্ষার জন্য গমন করেন। দীপঙ্কর মাত্র ১৯ বছর বয়সে ওদন্তপুরী বিহারের আচার্য পরমপণ্ডিত শীল রক্ষিতের নিকট হতে ভিক্ষুব্রতে দীক্ষা লাভ করেন। দীপঙ্কর ২৫ বছর বয়সে একজন প্রসিদ্ধ নৈয়ায়িক ব্রাহ্মণকে তর্কযুদ্ধে পরাজিত করে অসীম গৌরব লাভ করেন। এরপরই ওদন্তপুরী বিহারের বৌদ্ধাচার্য শীলরক্ষিত দীপঙ্করকে ‘‘শ্রীজ্ঞান” উপাধি দান করেন। অতীশ দীপঙ্কর ৩১ বছর বয়সে ভিক্ষু আশ্রমের শ্রেষ্ঠ সম্মান লাভ করেন। মগধের নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয়ের অতি নিকটে দীপঙ্করের নামানুসারে একটি গ্রামের নাম রাখা হয় ‘‘দীপনগর”। দীপঙ্কর ভিক্ষু হওয়ার পর বিক্রমশীলা বিহারে আশ্রয়গ্রহণ করেন। দীপঙ্কর বিক্রমশীলা বিহার হতে ব্রহ্মদেশের উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন। নৌযোগে মিয়ানমারে যেতে তাঁর ১৩ মাস সময় লেগেছিল। মিয়ানমার থেকে দেশে ফিরে দীপঙ্কর ‘‘মহাবোধী” বিহারের বজ্রাসনে বাস করতেন। দীপঙ্করের পাণ্ডিত্য ও জ্ঞানে মুগ্ধ হয়ে পালবংশীয় নরপতি মহীপাল তাঁকে বিক্রমশীলা বিহারে নিমন্ত্রণ করে নিয়ে যান। সম্রাট মহীপাল দীপঙ্করকে বিক্রমশীলা বিহারের অধ্যক্ষের আসনে বসান। পালবংশীয় সম্রাট ন্যায়পাল- এর রাজত্ব কালেও দীপঙ্কর বিক্রমশীলা বিহারের অধ্যক্ষ ছিলেন।



বিক্রমশীলা বিহারের সম্মুখের বামে দীপঙ্করের ও দক্ষিণে নাগার্জুনের মুর্তি চিত্রিত ছিল। অতীশ দীপঙ্কর বেশ কিছুদিন সোমপুর বিহারেও অবস্থান করেছিলেন। বাংলাদেশ, ভারতের বাইরেও দীপঙ্করের খ্যাতি ছড়িয়ে পড়ে। আর তাই হয়তো তিব্বত রাজা লামাও দীপঙ্করের ‘‘অতীশ’’ নামে পূজা দিতেন। পূজার এ বিষয়টি তিব্বতীয় ঐতিহাসিক ও দীপঙ্করের জীবনী লেখক তেঙ্গুর আমাদের জানায়। তিব্বতরাজ চ্যাংচুবের দীপঙ্করকে তিব্বত যেতে আমন্ত্রণ জানান। সে আমন্ত্রণ গ্রহণ করে দীপঙ্কর তিব্বত যাত্রা করেন। দীপঙ্কর ১০৪২ খ্রিষ্টাব্দে ৫ জন সঙ্গী নিয়ে তিব্বত যাত্রা শুরু করেন। তখন তার বয়স ৫৯ বছর। দীপঙ্করের তিব্বত যাত্রা নিয়ে কবিতাও হয়েছে। ‘‘বাঙালি অতীশ/ লংঘিল গিরি/ তুষারে ভয়ংকর/ জালিল জ্ঞানের দীপ/ তিব্বতে বাঙালি দীপঙ্কর।” এই হলো কবির কথা। ভূমি সঙ্গ, বীর্যচন্দ্র, নাগ-ছো, গায়ৎসো, অনুচর ও ভৃত্য নিয়ে দীপঙ্কর তিব্বত রওনা হন। যাত্রাপথে নেপালে কিছুদিন দীপঙ্কর অবস্থান করেন। নেপাল থেকে দীপঙ্কর বাংলার সম্রাট ন্যায় পালকে একটি পত্র প্রেরণ করেন।



ইতিহাসে তা বিমল “রত্ম লেখ’’ নামে পরিচিত। দীপঙ্কর নেপাল হতে তিব্বত প্রবেশ করার সাথে সাথে ১০০ অশ্বারোহী তাকে স্বাগত জানায়। তাকে রাজদরবারে নিয়ে যায়। দীপঙ্কর বহু গ্রন্থের প্রণেতা। তার রচিত কয়েকটি গ্রন্থ হলো-(১) বোধীপথ প্রদীপ, (২) চর্য্যা সংগ্রহ দীপ, (৩) মধ্যো মোপদেশ, (৪) সংগ্রহ গর্ভ, (৫) মহাযান পথ সাধন বর্ণ সংগ্রহ ইত্যাদি। বাঙালি দীপঙ্কর ১১ বছরের অধিক সময় তিব্বতে অবস্থান করেন। সেখানকার লোকজনকে বৌদ্ধ শিক্ষায় দীক্ষা দান করেন। জীবনের একটি বিশাল সময় তিনি চীন দেশের তিব্বতে কাটিয়েছেন। জীবনের শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত থেকেছেন তিব্বতে। বাংলার এ মহাপবিত্র শ্রীজ্ঞান অতীশ দীপঙ্কর ১০৫৩ খ্রিষ্টাব্দে ৭২ কি ৭৩ বছর বয়সে মারা যান। তিনি যে জায়গায় মারা যান সেটির নাম ন্যাথাং Nathan । এটি তিব্বতের লাশার অতি নিকটে। আর অতীশ দীপঙ্করের সমাধী, মন্দির গ্রো-ম Sgro-ma নামে পরিচিত। দীপঙ্করের সমাধী মন্দিরটি জরাজীর্ণ অবস্থায় রয়েছে। এটি সংস্কারের প্রয়োজন। বাংলাদেশে দীপঙ্করের নামে রাজধানী ঢাকায় একটি সড়ক আছে। আর আছে একটি স্মৃতি সংসদ। তাও ঢাকা কেন্দ্রিক। দীপঙ্করের গ্রামের বাড়ি মুন্সীগঞ্জ সদরের বজ্রযোগিনীতে একটি স্মৃতিস্তম্ভ ছাড়া আর কিছুই নেই। স্থানীয় লোকজন দাবি করেন, এখানে অতীশ দীপঙ্কর বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার কথা ছিল। তা ঢাকায় হলো। এটা বজ্রযোগিনীতে হোক। বজ্রযোগিনী উচ্চ বিদ্যালয় (১৮৮৩) এর শিক্ষক মোঃ ফরহাদ হোসেন বলেন, অতীশ দীপঙ্করের নামে বজ্রযোগিনী অথবা মুন্সীগঞ্জ শহরে একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হওয়া উচিত। দীপঙ্করের স্মৃতি ধরে রাখতে মুন্সীগঞ্জে কিছু একটা করা দরকার।



আরো জানতে ক্লিক করুন



Speech by Political Counsellor Ms. He Lanjing ,চায়না এ্যামবাসি, ঢাকা



সুত্র /ছবি: ইন্টারনেট / দৈনিক ইত্তেফাক- ১৫-১১-০৯

মন্তব্য ১৬ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (১৬) মন্তব্য লিখুন

১| ১৫ ই নভেম্বর, ২০০৯ দুপুর ১২:০৬

তাজা কলম বলেছেন:
সুন্দর তথ্য নিভর্র পোষ্ট। প্রিয়তে রাখলাম।

১৫ ই নভেম্বর, ২০০৯ দুপুর ২:১৯

ভাবসাধক বলেছেন: ধন্যবাদ ।

২| ১৫ ই নভেম্বর, ২০০৯ দুপুর ১২:৩২

সহীদুল হক মানিক বলেছেন: নিভর্র পোষ্ট।

১৫ ই নভেম্বর, ২০০৯ দুপুর ২:২০

ভাবসাধক বলেছেন: চেষ্টা করি নিজে কিছু জানতে
আর সবার সাথে শেয়ার করতে ।

ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য ।

৩| ১৫ ই নভেম্বর, ২০০৯ দুপুর ১২:৫৪

ইমন জুবায়ের বলেছেন: ভালো লাগল। তবে এই লেখাটিও দেখতে পারেন-
Click This Link

১৫ ই নভেম্বর, ২০০৯ দুপুর ২:২২

ভাবসাধক বলেছেন: আপনার লেখাটি দেখলাম । চমতকার ।
দারুন লিখেছেন । আসলে ইতিহাস জানতেই হবে । ঐতিয্য কে ভুলে গেলে চলবে না ।

ধন্যবাদ ।

৪| ১৫ ই নভেম্বর, ২০০৯ দুপুর ২:০৪

Nastik007 বলেছেন: ভালো লাগল।

Click This Link

১৫ ই নভেম্বর, ২০০৯ দুপুর ২:২৬

ভাবসাধক বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই !
আপনার নিক টা কিন্তু অভিনব !

৫| ১৫ ই নভেম্বর, ২০০৯ দুপুর ২:৫৫

রাজিব শাহরিয়ার বলেছেন: তথ্যবহুল পোস্ট ... ভালো লাগল....

আমার এই পোস্টে চীন সরকারের সাহায্যে গড়া বজ্রযোগিনীতে অবস্থিত স্মৃতিস্তম্ভটা দেখতে পারেন।

৬| ১৫ ই নভেম্বর, ২০০৯ বিকাল ৪:৩৫

ভাবসাধক বলেছেন: ধন্যবাদ ! আমার বাড়ী থেকে দুরে নয় ।

৭| ১৫ ই নভেম্বর, ২০০৯ বিকাল ৫:৪৮

শয়তান বলেছেন: চমতকার পোষ্ট ।


মুনশিগন্জের লিংকটা ঠিক করেন

১৬ ই নভেম্বর, ২০০৯ সকাল ৯:১৫

ভাবসাধক বলেছেন: আপনার মেহেরবানী ।

৮| ১৫ ই নভেম্বর, ২০০৯ রাত ৯:১৮

অবয়ব বলেছেন: বেশ ভাল লাগল পড়ে। স্কুলের পাঠ্যবইয়ে অনেক আগে কিছু পড়েছিলাম, কিন্তু সেটা শুধু পরীক্ষায় নাম্বার পাওয়ার খাতিরে। এখানে যেভাবে জানার জন্য পড়েছি সেভাবে না।
ধন্যবাদ আপনাকে। প্রিয়তে +

১৬ ই নভেম্বর, ২০০৯ সকাল ৯:১৬

ভাবসাধক বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে ।
সময় পেলে তার গ্রামে বেড়াতে যেতে পারেন ।

৯| ০৩ রা জানুয়ারি, ২০১০ দুপুর ১২:১৬

মির্জা ইউক্লিড বলেছেন: ভাল লাগলো।

০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০১০ দুপুর ১:১৫

ভাবসাধক বলেছেন: ধন্যবাদ ! মন্তব্যের জন্য ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.