![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
যে কোনো দেশের ইতিহাসে এমন এক সময় আসে যখনকার ঘটনাবলী অন্যান্য ঘটনাকে ম্লান করে দেয়। এমন ব্যক্তিত্বের আবির্ভাব ঘটে যিনি প্রকৃতির চলমান গতির পরিবর্তন ঘটান, জাতির গতি সঞ্চার করেন, নতুন দিক-নির্দেশনা দেন, উদ্বুদ্ধ করেন আত্ম-অনুসন্ধানে। ১৯৪৫ সালের ১৫ আগষ্ট বাংলাদেশের আকাশে উদিত হয়েছিল একটি নক্ষত্র। সেটিকে ধ্রুবতারা বলা যেতে পারে। আর সে ধ্রুবতারাটি হলেন এদেশের ১৬ কোটি জনতার আপোসহীন নেত্রী, দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের ধারক বেগম খালেদা জিয়া। যিনি দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের প্রতিক তিনিইতো মা। শুভ জন্মদিনে প্রিয় মাকে জানাই প্রাণ অফুরান শুভে”ছা।
প্রিয় মা, টানা আটাশ বছর ধরে জনপ্রিয়তার তুঙ্গে থেকে তিনবারের নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী, সবচেয়ে বেশিসংখ্যক সংসদীয় আসনে বিজয়, আপোসহীন সংগ্রামে দুটি স্বৈরশাসনকে (’৮২-’৯০, ২০০৭-’০৮) বিদায় দেয়ার অসামান্য কৃতিত্ব আপনার, পাশাপাশি আপনাকে সইতে হয়েছে ও হ”েছ অচিন্তনীয় অমানবিক নির্যাতন। সশস্ত্র হুমকিতেও দেশ ছেড়ে যাননি শুধুমাত্র বাংলাদেশের মানুষের পাশে থাকার জন্যে। আপনি কর্মগুণে ও সততায় হয়ে গেছেন বাংলাদেশের ইতিহাসের অবি”েছদ্য অংশ। সময়ের পরিক্রমায় সাধারণ গৃহবধূ থেকে আপোসহীন নেত্রী এবং অবশেষে সফল সরকারপ্রধান হিসেবে বাংলাদেশের মানুষের হৃদয়ে ¯’ান করে নিয়েছেন।
১৯৮২ সালে ৩ জানুয়ারী একজন সাধারন গৃহবধূ থেকে রাজনীতিতে এসেছিলেন আপনি। ১৯৮২ সালের ৮ জানুয়ারী সংবাদপত্রে এক বিবৃতিতে আপনি বলেছিলেন, ‘প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদের ভিত্তিতে সমগ্র জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করে একটি শোসনহীন, দুর্নীতিমুক্ত, আতœনির্ভশীল দেশ গঠনের উদ্দেশ্যে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল গঠন করেছিলেন। বিগত কিছু কাল যাবৎ আমি বিএনপি কার্যক্রম গভীরভাবে লক্ষ্য করেছি। দলের ঐক্য ও সংহতি বিপন্ন হতে পারে, এমন মনে করে আমাকে দলের দায়িত্ব নেবার অনুরোধ করা হয়েছে। তাই দলের বৃহত্তর স্বার্থে বিএনপিতে যোগ দিয়েছি ও দলের চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী হয়েছি। দেশ ও জাতির স্বার্থে এবং শহীদ জিয়ার গড়া দলে ঐক্য ও সংহতির স্বার্থে নিঃস্বার্থভাবে কাজ করে যাওয়া আমার লক্ষ্য।’
১৯৮২ সালের ২৪ মার্চ জেনারেল এরশাদ ক্ষমতার জোড়ে রাষ্ট্রক্ষমতা গ্রহণ করে। জোরপূর্বক রাষ্ট্রক্ষমতা দখলের বিরুদ্ধে ও গনতন্ত্রের জন্য আন্দোলনে নামেন আপনি। রাজপথের নেত্রী হিসেবে আপনি ১৯৮৪ সালের আগষ্ট মাসে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিএনপির চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। এরপর আপনার ওপর নানাবিধ হুমকি আসতে থাকে, চক্রান্ত চলতে থাকে আপনাকে ব্যর্থ করে দেবার। কিš‘ অকুতোভয়, সাহসী, দৃঢ়প্রতিজ্ঞ আপনি গনতন্ত্রের পথে পথ চলতে আপোসহীন ভূমিকা নিয়েছিলেন।
১৯৮৬ সালের এরশাদের পাতানো নির্বাচনে আপনি ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা ওয়াদা করেছিলেন ১৯৮৬ সালের নির্বাচনে কেউ যাবেন না। সেই সাধারন নির্বাচনে আপোসহীন ভূমিকা পালন করে আপনি অংশ নেননি। কিš‘ রাষ্ট্রপতি এরশাদের সঙ্গে আতাত করে আওয়ামী লীগ নেত্রী শেখ হাসিনা নির্বাচনে অংশ নেন। এরপর দেশবাসী আওয়ামী লীগ নেত্রী শেখ হাসিনাকে ‘জাতীয় বেঈমান’ অ্যাখ্যায়িত করে। এরপর আরো ৫ বছর স্বৈরাচারী এরশাদ সরকারের বিরুদ্ধে একলা পথ চলেছিলেন আপনি। এ সময়ে আন্দোলন করে আপনি অসহনীয় জুলুম নির্যাতন সহ্য করেন এবং ‘গণআন্দোলন’ সংগঠিত করেন। ১৯৯০ সালে আপনার নেতৃত্বে স্বৈরাচারী এরশাদ সরকারের বিরুদ্ধে সরকার পতনের একদফা আন্দোলনের ডাকে দেশের মানুষ রাজপথে নেমে আসে। ফলে এরশাদ ১৯৯০ সালের ৬ ডিসেম্বর ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য হয়। আপনার গনআন্দোলন সফল হয়। ফিরে আসে গনতন্ত্র। আপনার আপোসহীন নেতৃত্বের কারণে দেশবাসীর মাঝে ব্যাপক আপনার জনপ্রিয়তা তৈরী হয় এবং ‘দেশনেত্রী’ অ্যাখ্যায়িত হয়েছিলেন।
১৯৯১ সালে ২৭ ফেব্রুয়ারী আপনি সুষ্ঠু অবাধ নিরপেক্ষ নির্বাচনে জয়ী হয়ে দীর্ঘ ১৬ বছর পর দেশে সংসদীয় গনতন্ত্র চালু করেন এবং প্রধানমন্ত্রী দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। এসময় অভিন্ন নদীর পানির প্রাপ্তিতে আমাদের ন্যায্য পানির হিস্যা আদায়ে আপনি জাতিসংঘের অধিবেশনে বলিষ্ঠ কন্ঠে দাবি করেছিলেন পানির জন্য। এরপর ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে বিরোধী দলের নেতা হিসেবে গনতন্ত্র ও দেশের উন্নয়নে ছায়া সরকার হয়ে কাজ করেছেন। দেশের ও জাতীয় স্বার্থ বিরোধী যে কোন চক্রান্ত প্রতিরোধ করতে সংসদে ও রাজপথে জোরদার আন্দোলন সংগ্রাম করেছেন। ২০০১ সালে জনগণের ভোট বিপ্লবের মাধ্যমে আবারো রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্বভার পান আপনি। এসময় নির্বাচনের কৌশল নির্ধারনে পিতা-মাতার যোগ্য উত্তরসূরী বিএনপির তৎকালিন যুগ্ম মহাসচিব ও বিএনপির বর্তমান সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান গুরুত্বপূর্ণ ভূমকা ও অবদান রেখেছিলেন। এসময় অর্থনৈতিক উন্নয়ন, সন্ত্রাস দমন, শিক্ষা বিস্তারে ব্যাপক প্রশংসা কুড়িয়েছে বিএনপি সরকার।
দেশী-বিদেশী ষড়যন্ত্রের পথ ধরে ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর আওয়ামী লীগের লগি-বৈঠার তান্ডবে অসংখ্য আশরাফুল মাখলুকাতের হত্যা ও নৈরাজ্য সৃষ্টির মধ্যে দিয়ে সামরিক বাহিনীর সমর্থিত সরকারের আগমন ঘটে। এ ১/১১ সরকারের সময় গনতন্ত্র ধ্বংসের মুখে দাড়ায়। রাজনৈতিক দল ও গনতন্ত্র নিশ্চিত ধ্বসের মুখে দাড়ালেও সমস্ত ভয়কে জয় করতে গণতন্ত্রের ঝান্ডা হাতে দেশবাসীকে পথ দেখিয়েছিলেন আপনি। আপনার দুই পুত্র দীর্ঘদিন কুচক্রীর ষড়যন্ত্রে কারাগারে অসহনীয় নির্যাতনে ধুকেছে। আপনার জৈষ্ঠ পুত্র তারেক রহমানের মেরুদন্ডের হাড় ভেঙ্গে দেয়া হয়েছে, যেন তিনি পিতার মতো জনগনের ঘরে ঘরে যেতে না পারেন, হাটতে না পারেন। চক্রান্তের শিকার হয়ে যন্ত্রনা সয়েছেন। রাজনীতি থেকে আপনাকে ও আপনার পরিবারকে নির্বাসিত করতে চেয়েছিল দেশের স্বার্থ বিরোধী অপশক্তিরা। মিথ্যা ও ভিত্তিহীন মামলা দিয়ে আপনার ও আপনার সন্তানদের বিরুদ্ধে জনমনে বিষেদাগার করতে চেষ্টা করা হয়েছে। কিš‘ আজো একটি অভিযোগকেও সত্য প্রমান করতে পারেনি কুচক্রীরা।
চক্রান্তকারীদের জয় এটাই যে তারেক রহমানকে আর বেশী পথ হাটতে দিল না, রাষ্ট্রক্ষমতায়ও আজ বিএনপি নেই, দেশের স্বার্বভৌমত্ব ও জাতীয় স্বার্থ আজ ধ্বংসের মুখে, বিদেশী শক্তির ইশারায় দেশ চলছে। তবে জনগণ বুঝতে পেরেছে দেশবাসীর শত্রু আর বিএনপির শত্রু একই। এ দেশের জনগন বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ, ইসলামী মূল্যবোধ নিয়ে যেমনি বেঁচে আছে তেমনি বিএনপিও জনগনের বিশ্বাসকে পালনীয় করতে সর্বত্র কাজ করতে সচেষ্ট। তাই সার্থক হয়েছে আজ আপনার দেশপ্রেমিক নেতৃত্ব। দেশের সকল সংকট সমাধানে জাতীয়তাবাদী শক্তিকে এক করতে তাই আপনার স্লোগান ‘ নানান মত, নানান পথ দেশ বাঁচাতে ঐক্যমত’ আর ‘দেশ বাঁচাও, মানুষ বাঁচাও’।
১৯৭১ সালের লাখো মানুষের রক্তের সিঁড়ি বেয়ে যে বাংলাদেশের আগমন বিশে¡ মানচিত্রে তাকে ব্যর্থ রাষ্ট্র হিসেবে প্রমাণ করার জন্য যা যা করা দরকার তার সব আয়োজন মনমোহনের দেশ করে ফেলেছে। একটি বিতর্কিত নির্বাচনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করে দেশে একদলীয় বাকশাল কায়েমের জন্য যখন মরিয়া হয়ে খুন, গুম, ক্রসফায়ার, মানবাধিকার লঙ্ঘনসহ নানাবিধ অপরাধ ও অপকর্মে লিপ্ত তখন দেশে গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠার স্বার্থে আপনি আরেকবার লড়াইয়ের দৃপ্ত ঘোষণা দিয়েছেন। অতীতেও দেশী-বিদেশী ষড়যন্ত্র ও অন্যায় দাবির মুখে কখনোই মাথা নত না করার ঐতিহাসিক সত্যতা রয়েছে আপনার। নিজের কর্তব্য থেকে এক চুল সরে না আসা, দেশপ্রেম ও ভালবাসাকে আকড়ে ধরে কান্ডারী হয়ে, মায়ের মতো অভিবাবক হয়ে, দেশের ১৬ কোটি মানুষকে স্বার্বভোমত্ব, গনতন্ত্র আর বেচে থাকার স্বপ্ন দেখার শক্তি যুগিয়েছেন আপনি। আপনার ওপর যে আঘাত করা হয়েছে, তা দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বেরই ওপর আঘাত। আপনার অশ্রুফোঁটা দেশপ্রেমিক জনগণকে সাহসী, প্রত্যয়ী করে তুলবে, লাখো শহীদের রক্তে ভেজা বাংলাদেশের মাটি কখনোই একদলীয় বাকশাল ও তাঁবেদারি মেনে নেয়নি, নেবে না। দেশী-বিদেশী চক্রান্তকে রুখে দিয়ে জাতীয়তাবাদী শক্তির উন্মেষ ঘটিয়ে কান্ডারী হয়ে আপনিই জনগণকে এনে দেবেন আলোকিত দিন এ বিশ্বাস আমাদের সকলের। সবশেষে মহান আল্লাহতালার কাছে প্রার্থনা যেন আপনি শতায়ু হোন। আজ আমাদের সকলের কামনা আপনার সুস্বা¯’্য ও আনন্দ-উজ্জল পরমায়ু। মা এ লড়াইয়ে আপনি জয়ী হবেনই।
লেখক: সাংবাদিক ও সাহিত্যিক। [email protected]
২| ২৩ শে সেপ্টেম্বর, ২০১২ রাত ১২:৪৮
লুবনা ইয়াসমিন বলেছেন: দুই দুই বার (তৃতীয় বারটা না হয় বাদই দিলাম) বিজয়ী হওয়া দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া একজন উজ্জল নক্ষত্র কোন সন্দেহ নাই।
কিন্তু তিনি কি সত্যিই ১৯৪৫ সালের ১৫ আগষ্ট বাংলাদেশের আকাশে উদিত হয়েছিলেন?
©somewhere in net ltd.
১|
২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০১২ ভোর ৪:৫২
মেহেদী হাসান মানিক বলেছেন: হায়রে চাটুকার