![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ব্লগে নিজেকে একজন পাঠক হিসেবে পরিচয় দিতেই স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করি। যা সঠিক মনে করি, অন্যায়ের বিরুদ্ধে, অবশ্যই দেশ ও দেশের মানুষের পক্ষে লিখতে চেষ্টা করি।
বাংলাদেশের রাজনীতিতে একটি স্থায়ী ও গভীর সমস্যার নাম পরিবারতান্ত্রিক রাজনীতি। স্বাধীনতার ৫৩ বছর পরও আমরা গণতন্ত্রের প্রকৃত রূপ দেখতে পাইনি, বরং রাজনীতি ক্রমে একটি পরিবার-কেন্দ্রিক ক্ষমতার খেলায় রূপ নিয়েছে। যেখানে দল, মত, কর্মী, এমনকি জনগণের স্বার্থের চেয়ে বড় হয়ে উঠেছে রাজনৈতিক পরিবারের স্বার্থ।
পরিবারতান্ত্রিক রাজনীতির শিকড়
পরিবারতান্ত্রিক রাজনীতি মূলত তখন জন্ম নেয় যখন রাজনীতিকে পেশাদারিত্ব বা যোগ্যতার বদলে বংশগত অধিকার হিসেবে দেখা হয়। স্বাধীনতার পর ক্ষমতায় থাকা দলগুলোতে নেতৃত্বের ধারা স্বজনদের মধ্যে ঘুরপাক খেতে থাকে। দলের সিদ্ধান্ত গ্রহণ, প্রার্থী মনোনয়ন, পদ বণ্টন—সব কিছুতেই ‘আমার লোক’ বা ‘আমার পরিবার’ অগ্রাধিকার পায়।
জনগণের প্রতি দায়বদ্ধতা হারানো
যে রাজনীতি জনগণের ভোট ও আস্থার উপর দাঁড়ানোর কথা, তা পরিণত হয় উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া সিংহাসনে। এতে জনগণ ক্রমে রাজনীতির কেন্দ্রবিন্দু থেকে সরে যায়। ভোট হয়ে ওঠে আনুষ্ঠানিকতা, আর ক্ষমতা চলে যায় কিছু অভিজাত পরিবারের হাতে।
এর ফলে যা ঘটে
1. দলের মধ্যে মেধা ও যোগ্যতার অবমূল্যায়ন – কর্মীরা যতই যোগ্য হোক, যদি পরিবারের বাইরে হয় তবে পদ পাওয়ার সম্ভাবনা কম।
2. দুর্নীতি ও লুটপাট বৃদ্ধি – ক্ষমতা যখন বংশানুক্রমে ঘোরে, তখন দায়বদ্ধতার অভাব থাকে; ফলাফল হিসেবে দুর্নীতি বাড়ে।
3. গণতান্ত্রিক সংস্কৃতির ধ্বংস – মুক্ত মত, সমালোচনা, ও জবাবদিহিতা ধীরে ধীরে বিলীন হয়।
4. প্রজন্মের রাজনীতি থেকে বিমুখতা – তরুণরা রাজনীতিকে পেশা হিসেবে নিতে নিরুৎসাহিত হয়।
উদাহরণ
বাংলাদেশের দুই প্রধান রাজনৈতিক দলই দীর্ঘদিন ধরে প্রায় একই পরিবারের হাতে নিয়ন্ত্রিত। দলের সভাপতি, মহাসচিব, শীর্ষ নেতারা প্রজন্মের পর প্রজন্ম একই বংশ থেকে আসায় রাজনৈতিক প্রতিযোগিতা কমে গেছে, আর দলীয় গণতন্ত্র প্রায় অনুপস্থিত।
সমাধান কী হতে পারে?
দলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা: প্রত্যেক দলে অভ্যন্তরীণ নির্বাচন বাধ্যতামূলক করা।
যোগ্যতা ও অবদানের ভিত্তিতে পদায়ন: রাজনীতিতে অবদানের রেকর্ড ও নেতৃত্বের দক্ষতাকে প্রাধান্য দেওয়া।
যুব নেতৃত্ব গড়ে তোলা: তরুণ প্রজন্মকে প্রকৃত রাজনৈতিক চর্চার সুযোগ দেওয়া।
গণতান্ত্রিক সংস্কৃতি পুনঃপ্রতিষ্ঠা: সমালোচনা গ্রহণ করা, মতের ভিন্নতাকে সম্মান করা, এবং জনগণের স্বার্থকে প্রথমে রাখা।
শেষ কথা
বাংলাদেশের রাজনীতিতে পরিবারতান্ত্রিক রাজনীতি একটি দুষ্ট চক্র—যেখানে একবার প্রবেশ করলে জনগণ, গণতন্ত্র, এবং মেধাবী নেতৃত্ব ধীরে ধীরে হারিয়ে যায়। এই চক্র ভাঙতে হলে প্রথমে দলগুলোকে নিজেদের সংস্কার করতে হবে, এরপর জনগণকে ভোট ও মত প্রকাশে আরও সচেতন ও দৃঢ় হতে হবে।
গণতন্ত্র তখনই টিকে থাকবে, যখন নেতৃত্ব জন্ম নেবে জনগণের আস্থা থেকে, বংশগত অধিকারের মাধ্যমে নয়।
১০ ই আগস্ট, ২০২৫ রাত ৮:১৭
গেঁয়ো ভূত বলেছেন: প্রথম মন্তব্যের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা।
আপনার মন্তব্যে একজন বয়স্ক ব্লগারের গন্ধ পাচ্ছি।
২| ১০ ই আগস্ট, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:৪৫
মেঠোপথ২৩ বলেছেন: পরিবারতান্ত্রিক রাজনীতি এই দেশে মাফিয়া রাজনীতিতে পরিনত হয়েছে। মাফিয়া সংগঠন অপরাধ্মুলক কার্যক্রমে লিপ্ত হয় মাফিয়া ডনের নেতৃত্বে এবং সেই ডনের কোন জবাবদিহিতা থাকে না। একপ্রকার ভয়ের রাজ্য তৈরী করে এরা জবাবদিহিতার উর্ধে উঠে যায়। ক্ষমতাসীন মাফিয়াদের ছত্র ছায়ায় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানগুলোও মাফিয়ায় পরিনত হয়। আমাদের দেশের শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়ী, প্রসাষন, আইন শৃংখলা বাহিনী , মিডিয়া , বিচার বিভাগ ইত্যাদি সবাই মাফিয়াদের মত নিজ নিজ সাম্রাজ্য নিয়ন্ত্রন করে জনগনের সকল প্রকার মৌলিক অধিকার হরন করে। বর্তমানে যে সরকার ক্ষমতায় আছে তারা পরিবারতান্ত্রিক দল না হয়েও কাংখিত সফলতা অর্জন করতে পারছে না মাফিয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর কারনে। সিস্টেমের এই ভয়ঙ্কর মাফিয়া নেটওয়ার্ক ভাঙ্গতে হলে সবচেয়ে আগে ভাঙ্গতে হবে পরিবারতান্ত্রিক রাজনীতি।
৩| ১০ ই আগস্ট, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:০৩
প্রগতি বিশ্বাস বলেছেন: বাংলাদেশের রাজনীতিতে বিশেষ করে বড় দুই দলে পরিবারতন্ত্র টিকে আছে ভোটারদের জন্য। এই দুই দলে যদি পরিবারত্ন্ত্র টীকে না থাকে তাহলে প্রচন্ড রকমের দলীয় বিশৃঙ্খলা তৈরী হবে।
৪| ১০ ই আগস্ট, ২০২৫ রাত ৯:০১
কামাল১৮ বলেছেন: এই উপ মহাদেশে এই চর্চা দীর্ঘ দিনের।এখান থেকে সহজে বের হওয়া যাবে না।তাছাড়া খারাপ কিছু না।যোগ্য হলে টিকে থাকবে অযোগ্য হলে ঝড়ে পরবে।
৫| ১০ ই আগস্ট, ২০২৫ রাত ১০:৪২
লোকমানুষ বলেছেন: আপনার বিশ্লেষণ অত্যন্ত বাস্তব ও প্রাসঙ্গিক। সত্যিই, পরিবারতান্ত্রিক রাজনীতি শুধু দলীয় গণতন্ত্রকেই ধ্বংস করেনি, বরং রাষ্ট্রের প্রায় সব প্রতিষ্ঠানকে এক অদৃশ্য মাফিয়া নেটওয়ার্কের অংশে পরিণত করেছে। যখন ক্ষমতার মূল লক্ষ্য হয় নিজের বংশ ও গোষ্ঠীর আধিপত্য বজায় রাখা, তখন জনগণের স্বার্থ, ন্যায়বিচার ও জবাবদিহিতা স্বাভাবিকভাবেই হারিয়ে যায়। যদিও পরিবর্তনের শক্তি জনগণের হাতেই থাকে, তবুও কোন অদৃশ্য শেকলের কারণে সেই শক্তির বহিঃপ্রকাশ জনগণের দ্বারা হয়ে উঠছে না।
৬| ১০ ই আগস্ট, ২০২৫ রাত ১১:৪৮
ক্লোন রাফা বলেছেন: আপনি সবচাইতে গুরুত্বপুর্ণ পয়েন্ট মিস করে যাচ্ছেন । সুস্থ ছাত্র রাজনীতির পরিবেশ অপরিহার্য ।লেজুরভিত্তিক লাঠিয়াল বাহিনীর চরিত্রে নয় । সৎ ন্যায়পরায়ন নেতৃত্ব তৈরি হয় এমন রাজনীতি চাই।
পরিবারের কেউ যদি যোগ্য হয় তাহলে সমস্যা নেই। কিন্তু ছেলে,মেয়ে স্ত্রী কিংবা ভাই, বোন হওয়ার সুবাদে হোক সেটা কাম্য নয়। দশজনের সাথে প্রতিযোগিতা করে নেতৃত্বে আসলে পরিবারে সমস্যা নেই।
আমাদের দেশে জমিদার প্রথা বিলুপ্ত হোলেও সেই মানসিকতা থেকে বের হতে পারেনি। সেই জন্য পরিবারের সবচাইতে নিকৃষ্ট ব্যক্তিও নেতা হয়ে যায়।
পরিশেষে চাই আমাদের নেতা হোক সবচেয়ে ভালো মানুষ। এই ভালোর ব্যাখ্যা শুধু সৎ মানুষের মধ্যেই সীমাবদ্ধ না থাকুক।
ধন্যবাদ॥
©somewhere in net ltd.
১|
১০ ই আগস্ট, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:২৯
রাজীব নুর বলেছেন:
গণতন্ত্র নিয়ে আপনার যতটুকু জ্ঞান ( পৌরনীতিতে ১০০'এর মাঝে ১০০ নম্বর, সামুতে আপনার লেখা পোষ্ট ), ইহা জাতিকে কোনভাবে সাহায্য করবে?