![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
৩৫ জেলায়ই সশস্র সহিংস সন্ত্রাসের তা-বলীলা চালিয়েছে জামায়াত-শিবির। প্রায় ১৫টি জেলায় হামলার শিকারে পরিণত হয়েছে সংখ্যালঘু সম্প্রদায় (হিন্দু সম্প্রদায়) বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর টানা সহিংস সন্ত্রাসের ঘটনায় ৭ পুলিশকে হত্যা ও ৪ শতাধিক পুলিশ সদস্য আহত হওয়ার ঘটনা আর কখনও ঘটেনি। আওয়ামী লীগের সরকার ক্ষমতায় থাকাকালীন সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের (হিন্দু সম্প্রদায়) বাড়িঘরে ও মন্দিরে হামলা করে ভাংচুর, লুটপাট ও আগুন দেয়ার ঘটনাও নজিরবিহীন। জামায়াত-শিবির এসব ঘটনার জন্য পূর্বপরিকল্পিতভাবে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গী সংগঠনের জঙ্গীদের মাঠে নামায়। সাঈদীর ফাঁসির রায় হওয়ার পর সহিংস সন্ত্রাসের তা-বলীলা চালানোর ঘটনা ঘটেছে বলে গোয়েন্দা সংস্থার রিপোর্টে এ ধরনের তথ্যের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। সরকারের উচ্চপর্যায়ে গোয়েন্দা প্রতিবেদন দেয়া হয়েছে। গোয়েন্দা সংস্থা সূত্রে এ খবর জানা গেছে।
গোয়েন্দা সংস্থার রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে, সারাদেশে সশস্র সন্ত্রাসের তা-বলীলা চালানোর জন্য জেএমবি, হুজি, হিযবুত তাহ্রীরসহ নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গী সংগঠনের সদস্যদের মাঠে নামিয়েছে জামায়াত-শিবির। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের খুন, আহত, গাড়িতে আগুন, ভাংচুর এবং সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের (হিন্দু সম্প্রদায়) ওপর হামলা, বাড়িঘরে আগুন, ভাংচুর, লুটপাট করে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা বাধানোর চেষ্টাসহ নাশকতা ও নৈরাজ্য সৃষ্টির কাজে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গীদের মাঠে নামিয়েছে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে। জামায়াত-শিবিরকে যেভাবে মাঠপর্যায়ে মোকাবেলা করার কথা সেভাবে তাদের প্রতিহত করতে ব্যর্থ হয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।
গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, বিগত ৪২ বছরে টানা সন্ত্রাসের তা-বলীলার ঘটনায় ৭ পুলিশকে হত্যা ও ৩ শতাধিক পুলিশ আহত হওয়ার ঘটনা আর ঘটেনি। জামায়াত-শিবিরের পুলিশ বাহিনীর সদস্যদের ওপর আক্রমণ, হতাহত ছাড়াও গাড়িতে আগুন, ভাংচুর, নাশকতা ও নৈরাজ্য সৃষ্টির ঘটনায় পুলিশ সদস্য হত্যা, ক্ষমতাসীন দলের প্রায় এক ডজন স্থানীয় নেতাকর্মীদেরও হত্যা করা হয়েছে। যুদ্ধাপরাধী জামায়াতের নায়েবে আমির দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর ফাঁসির রায় হওয়ার পর থেকে পুলিশ ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীসহ ৬৭ জনকে হত্যা করা হয়েছে। আহত করা হয়েছে কয়েক হাজার মানুষকে। সারাদেশের ৬৪ জেলার মধ্যে প্রায় ৪০ জেলায় সশস্র সহিংস সন্ত্রাস চালিয়েছে জামায়াত-শিবির। দেশের প্রায় ১৫ জেলায় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর হামলার ঘটনা ঘটিয়ে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা বাধানোর চেষ্টা করেছে জামায়াত-শিবির।
যুদ্ধাপরাধী জামায়াতের নায়েবে আমির দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী ওরফে দেইল্লা রাজাকারের ফাঁসি দেয়ার পর জামায়াত-শিবির নিয়ন্ত্রিত নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গীরা বিজিবি, র্যাব ও পুলিশের ওপর আক্রমণ করে হতাহত করেছে। পুলিশ সদস্যদের ওপর গুলি চালিয়েছে তারা। নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করেছে পুলিশ সদস্যদের। পুলিশ সদস্যদের অনেককেই লাঠিসোটা দিয়ে পেটানোর পর তারা হাত জোড় করে ক্ষমা চেয়ে প্রাণে বাঁচার চেষ্টার ঘটনা ঘটেছে। জঙ্গী সংগঠন জেএমবি, হুজি ও হিযবুত তাহ্রীরকে নিষিদ্ধ করার পর জামায়াত-শিবির তাদের ব্যানারে মাঠে নামিয়েছে।
গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গী সংগঠনগুলোর আত্মগোপনে থাকা জঙ্গীদের কাছে বিপুল পরিমাণ মজুদ অস্ত্র ও গোলাবারুদ ব্যবহৃত হয়েছে সহিংস সন্ত্রাসের ঘটনায়। জামায়াত-শিবিরের কয়েক হাজার ক্যাডারকে প্রশিক্ষণ দিয়েছে জঙ্গীরা। যুদ্ধাপরাধীর বিচার শুরু হওয়ার পর থেকে বিগত দুই বছর ধরে পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী তারা প্রশিক্ষণ, অস্ত্র ও গোলাবারুদ মজুদ করেছে। পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী তারা এসব অস্ত্র ও গোলাবারুদ দিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর একের পর এক আক্রমণ করে যাচ্ছে, যা বৃহস্পতিবার বিজিবি, র্যাব, পুলিশের ওপর আক্রমণ করে তাদের হতাহত করেছে।
গোয়েন্দা সংস্থার তথ্যানুযায়ী চট্টগ্রাম, বান্দরবান, সিলেট এলাকার দুর্গম পাহাড়ের গহীন অরুণ্যে ক্ষুদ্র আগ্নেয়াস্ত্র, গ্রেনেড-বোমা ও বিস্ফোরক দ্রব্য দিয়ে যৌথ মহড়ায় অংশ নিয়ে জামায়াত-শিবিরের ক্যাডার ও জঙ্গীরা মাঠে নেমেছে। প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত জঙ্গী ও ক্যাডার অস্ত্র ও বিস্ফোরক দ্রব্য নিয়ে আত্মগোপনে থাকা অবস্থা থেকে যুদ্ধাপরাধীর বিচার ঠেকানোর সহিংস ঘটনায় অংশ নিয়েছে। গত দুই বছর ধরে জামায়াত-শিবিরের ক্যাডারদের সঙ্গে জেএমবি, হুজি, হিযবুত তাহ্রীর ও রোহিঙ্গাদের সঙ্গে একত্রে ট্রেনিং ক্যাম্পে যৌথ মহড়ায় অংশ নিচ্ছে। শুধু তাই নয়, রাজধানীর বাইরের কোন কোন জেলায় বিএনপির নেতাকর্মীরা জামায়াত-শিবিরের ব্যানারে যুদ্ধাপরাধীর বিচার ঠেকাতে মাঠে নেমে রাজপথে সরকারবিরোধী শক্তি প্রদর্শন করছে। জামায়াত-শিবির আটক যুদ্ধাপরাধীদের মুক্তির দাবিতে ও যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের জন্য গঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল বাতিলের দাবিতে পুলিশের ওপর হামলা, পুলিশের গাড়িসহ যানবাহনে আগুন, ভাংচুর, নৈরাজ্য ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে আসছে। এসব ঘটনায় জামায়াতের প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ক্যাডাররা নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গী সংগঠনের সদস্যদের নিয়ে সহিংস ও রক্তক্ষয়ী ঘটনা ঘটিয়ে চলেছে। এই ধরনের ঘটনা ঘটাতে তারা মিথ্যাচার ও গুজবের আশ্রয় নিয়েছে।
©somewhere in net ltd.