নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সবার কথা

আহমেদ রশীদ

আহমেদ রশীদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

হেফাজতের উদ্দেশ্য ছিল যুদ্ধাপরাধীদের রক্ষা করা

১৫ ই মে, ২০১৪ সকাল ৭:৪৩

খুব নীরবেই চলে ‘৫ মে হেফাজত দিবস।’ এক বছরের মধ্যে হেফাজতে ইসলামের মৃতপ্রায় অবস্থান প্রমাণ করে, বাংলাদেশকে যারা তালেবানী আফগানিস্তান বানানোর অপচেষ্টা করছিল, তারা এদেশে কোনভাবেই সফল হতে পারবে না। বাংলাদেশ অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র হিসেবে তার অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখবে।

গত বছর ৫ মে হেফাজতের মহাসমাবেশ দিনে দেশ এক ভয়ঙ্কর সঙ্কটের মধ্যে পড়েছিল। সেদিন কার্যত দেশ দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েছিল। প্রশ্ন দেখা দিয়েছিল, কোন্ পক্ষে যাবে সাধারণ মানুষ? আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের অসাম্প্রদায়িক (সেক্যুলার) শক্তির পক্ষে নাকি বিএনপি-জামায়াতে ইসলামীর নেতৃত্বের সাম্প্রদায়িক শক্তির পক্ষে?

এ কথা আমরা সবাই জানি, গণজাগরণ মঞ্চের প্রতিপক্ষ হিসেবে দাঁড় করানোর চেষ্টা হয়েছিল হেফাজতে ইসলামকে। ২০১৩ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি গণজাগরণ মঞ্চের আত্মপ্রকাশ ঘটেছিল যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ও সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করার দাবিতে। সব শ্রেণী-পেশার মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে গণজাগরণ মঞ্চের এ আন্দোলনের মাধ্যমে জামায়াতে ইসলামী ও সকল সাম্প্রদায়িক শক্তির অস্তিত্ব যখন নিশ্চিহ্ন হওয়ার পথে তখনই পশ্চিমা টাকায় এগিয়ে আসে কয়েকটি ‘সুশীল’ মিডিয়া এবং কিছু ‘সুবিধাবাদী-সুশীল’ বুদ্ধিজীবী। মুখচেনা এসব ‘সুশীল বুদ্ধিজীবী’ অবশ্য পশ্চিমা টাকায় পরিচালিত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে উচ্চবেতনে চাকরিও করেন! এঁরা গণজাগরণ মঞ্চের উত্তাল দিনে শাহবাগের আশপাশেও যাননি। এঁদের মধ্যে আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন অনেকে অবশ্য ২১ ফেব্রুয়ারি ভাষা শহীদ দিবসে শহীদ মিনারে ফুল দিতেও যান না! তাঁরা জামায়াতে ইসলামী ও যুদ্ধাপরাধীদের পক্ষ নেবে, এতে আর অবাক হওয়ার কী আছে!)। এদের বশংবদ মিডিয়াগুলো গণজাগরণ মঞ্চের প্রতিপক্ষ হিসেবে দাঁড় করায় হেফাজতে ইসলামকে। প্রথম পৃষ্ঠা আর শেষ পৃষ্ঠায় একের পর এক ‘প্রেস বিজ্ঞপ্তি’ ছাপতে থাকে ওই পত্রিকাগুলো। যে সংগঠনের অস্তিত্বই নেই, তার প্রেস বিজ্ঞপ্তি কীভাবে প্রথম পৃষ্ঠায় ছাপা হয়? ওই সব প্রভাবশালী মিডিয়ার ‘টেবিল মেড’ হেফাজতে ইসলাম টেবিলেই ফুলে ফেঁপে বাড়তে থাকে। তারা গণজাগরণ মঞ্চকে বিদ্রƒপ করে তাদের পোষ্য লেখক দিয়ে গল্প-কবিতাও শুরু করে। তারা এড়িয়ে যায় জামায়াত-বিএনপির গাড়ি পোড়ানো, হত্যাযজ্ঞ আর বৃক্ষনিধন। উল্টো ‘সুশীল বুদ্ধিজীবীরা’ একের পর এক কলাম লিখতে থাকেন, আর বলতে থাকেন ‘কিভাবে নদী রক্ষা করা যাবে’ ‘কিভাবে গণতন্ত্র রক্ষা করা যাবে’ (আসলে পাঠক পড়ুন, কিভাবে যুদ্ধাপরাধীদের বাঁচানো যাবে!) সামরিক ছাউনিতে প্রতিষ্ঠিত বিএনপি ও যুদ্ধাপরাধী জামায়াতে ইসলামীকে ক্ষমতায় আনতে ‘সুশীল বুদ্ধিজীবীরা’ হেন কাজ নেই যা তারা করেনি। যুদ্ধাপরাধীদের বাঁচাতে ‘গণতন্ত্র গণতন্ত্র’ বলে চিৎকারও যে যুদ্ধাপরাধীদের বাঁচানোর ষড়যন্ত্র তা বলার অপেক্ষা রাখে না।

গত এক বছরে চোখ ফেরালেই আমরা দেখতে পাব, যুদ্ধাপরাধের বিচার প্রক্রিয়া যতই এগোতে থাকে, এদের অপতৎপরতা ততই স্পষ্ট হতে শুরু করেছে। তবে, শেষ পর্যন্ত পশ্চিমা ষড়যন্ত্রকারী ও তাদের দেশীয় দোসরদের সব ধরনের ষড়যন্ত্র ব্যর্থ হয়েছে। হেফাজতের বর্ষপূর্তিতে তাদের কোন ধরনের কার্যক্রম না থাকায়, আরও একবার প্রমাণ হলো হেফাজতে ইসলাম আসলে ছিল ‘কাগুজে বাঘ’ এবং মানুষের সমর্থন ছাড়া শুধু বিদেশী ষড়যন্ত্র আর ‘সুশীল বুদ্ধিজীবী’দের দৌড়ঝাঁপ আসলে কোন কাজে আসে না। দেশে ‘হেফাজতশূন্য’ অবস্থানের মাধ্যমে এক বছরের মধ্যেই তা পুনর্বার প্রমাণিত হলো।

দেশী-বিদেশী নানা ষড়যন্ত্র এবং দেশের কিছু ‘সুশীল’ মিডিয়ার পক্ষপাতদুষ্ট মিথ্যাচার সত্ত্বেও বাংলাদেশ ভুল পথে যায়নি, ৫ জানুয়ারি দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণ মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তিকেই রায় দিয়েছে। আওয়ামী লীগ পর পর দ্বিতীয়বারের মতো ক্ষমতায় এসে যুদ্ধাপরাধের বিচার প্রক্রিয়া অব্যাহত রেখেছে। অতিসম্প্রতি শেষ হয়েছে জামায়াতী অর্থনীতির মূল পৃষ্ঠপোষক মীর কাশেম আলীর বিচারকাজ। মীর কাশেম আলীর সঙ্গে যে কোন দিন রায় হবে জামায়াতের আমির মতিউর রহমান নিজামীরও। বিএনপি নির্বাচন বানচাল করতে ‘সুশীল বুদ্ধিজীবী’ ও বিদেশী শক্তির ওপর নির্ভর করে নির্বাচন বর্জন করে এখন ‘হায় হায়’ করছে!

পাঠক মনে করুন, যুদ্ধাপরাধের বিচারপ্রক্রিয়া শুরুর আগে হেফাজতে ইসলামের কোন কার্যক্রম ছিল না। দেশে ‘নাস্তিক’ ‘মুরতাদ’ এসব কথাও কখনও শোনা যায়নি। তাই বুঝতে বাকি থাকে না, হেফাজতের এই আন্দোলন আসলে যুদ্ধাপরাধের বিচার বানচাল করার অপচেষ্টা ছাড়া আর কিছুই ছিল না। জামায়াতে ইসলামের বি-টিম হিসেবে কাজ করে চলেছে হেফাজতে ইসলাম। তারা জামায়াতের দাবিরই প্রতিধ্বনি করছে মাত্র। বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ঠেকাতে দেশী-বিদেশী নানা চক্রান্তে ব্যর্থ হয়ে শেষ পর্যন্ত হেফাজতে ইসলামের ঘাড়ে সাওয়ার হয়েছিল।

এক বছরের মধ্যে হেফাজতে ইসলামের মৃতপ্রায় অবস্থান প্রমাণ করে, বাংলাদেশকে যারা তালেবানী আফগানিস্তান বানানোর অপচেষ্টা করছে, তারা কোনভাবেই সফল হতে পারবে না। যুদ্ধাপরাধের বিচারপ্রক্রিয়া যেন হেফাজতে ইসলাম, সুশীল সমাজ বা অন্য কারও অপপ্রচারের বলি না হয়, সে বিষয়ে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ১৫ ই মে, ২০১৪ সকাল ১১:০২

একজন ঘূণপোকা বলেছেন:
আর গজামের উদ্দ্যেশ্য কি ছিলো???

২| ১১ ই এপ্রিল, ২০১৫ দুপুর ১:৩৯

তানভীর১১১৩ বলেছেন: বাংলাদেশকে আফগানিস্তান বানানোর স্বপ্ন তাদের ইয়ে দিয়ে দেয়া হয়েছে । :P
সরকার কঠোর ভাগে এদের দমন না করলেও, এদের উন্মাদনাতে পানি ফেলে দিয়েছে ।

যুদ্ধ অপরাধীদের বিচার না করে বাংলাদেশে আইনের প্রতি মানুষের আস্থা আসবে না, সরকারও এটা বুঝে এখন ।

৩| ১৭ ই নভেম্বর, ২০১৫ রাত ৩:০২

মো: মাসুদুর রহমান পাশা বলেছেন: I do agree. We just want a secular bangladesh and terrorist free world.

৪| ১৭ ই নভেম্বর, ২০১৫ রাত ৩:৩২

রাফা বলেছেন: ইসলামের দোহাই দিয়ে আর বাচার সম্ভাবনা নেই রাজাকারদের।এখন সরকারের উচিত মাদ্রাসা শিক্ষার দিকে নজর দেওয়া।তা না হোলে এই সমস্যা থেকেই যাবে।একটি বৃহৎ জনগোষ্ঠিকে পেছরেনানে রেখে দেশ এগিয়ে যেতে পারেনা।যেমন পারেনা মেয়েদেরকে কাজে নিয়োজিত না করে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.