![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ঢাকা মহানগর বিএনপির সদ্য কমিটির দ্বন্দ্ব নিয়ে বেশ ক্ষুব্ধ দলটির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। দলের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এ শাখার দ্বন্দ্ব নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তিনি। বিশেষ করে সদস্য সচিবের রুমে তালা দেওয়া এবং তা ভাঙা, উভয় কারণেই খেপেছেন দলীয় প্রধান। এ নিয়ে সংশ্লিষ্টদের কারণ দর্শানোর নোটিশও দেওয়া হয়েছে। বাকিদের শিগগিরই দেওয়া হবে। এ ছাড়া দুই/একদিনের মধ্যেই মহানগর কমিটির শীর্ষ নেতাদের হুঁশিয়ারি করে খালেদা জিয়া সুস্পষ্ট দিক নির্দেশনা দেবেন বলে দলীয় সূত্র জানিয়েছে।
গত ১৭ জুলাই, শুক্রবার বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসকে আহ্বায়ক এবং হাবিব উন নবী খান সোহেলকে সদস্যসচিব করে ঢাকা মহানগর বিএনপির ৫২ সদস্য বিশিষ্ট নতুন আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়।
দলটি একাধিক সূূত্র জানায়, নিজের মনের মতো কমিটি না হওয়ায় নাখোশ হন মির্জা আব্বাস। সেজন্য সদস্যসচিব সোহেলের সঙ্গে দূরত্ব রেখে চলেন তিনি। ঘোষণার পরের দিন সোহেল সাক্ষাৎ করতে গেলে অনেকক্ষণ বসিয়ে রেখে পরে দেখা দেন আব্বাস। পরের দিন সদস্যসচিবকে ছাড়াই নিজের অনুসারীদের নিয়ে শাহজাহানপুরের বাসায় বৈঠক করেন তিনি। ওই সময় মহানগর বিএনপির নতুন কমিটি নিয়ে বিভেদের অভিযোগ ওঠে।
কিন্তু বিভাজনের এসব খবর উড়িয়ে দেন মির্জা আব্বাস। গত বুধবার দুপুরে নতুন কমিটির প্রথম বৈঠকের পর তিনি বলেন, ‘ঢাকা মহানগর বিএনপির কোনো গ্রুপ নেই। গ্রুপিংয়ের বিষয়টি কিছু মানুষ ছড়িয়ে দিচ্ছে। এই দলের একটাই গ্রুপ, তা হচ্ছে বেগম খালেদা জিয়ার গ্রুপ।’
তবে ‘বিভাজন’ নেই বলে মহানগর আহ্বায়কের এই বক্তব্যের ১২ ঘণ্টার মধ্যে বিভেদ প্রকাশ্য রূপ নেয়, যা বিশেষ করে সদস্যসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেলকে মেনে না নেওয়ার বিষয়টি আরো প্রতিষ্ঠিত করে। ওইদিন রাতেই মহানগর বিএনপির অফিস ভাসানী ভবনের দোতালায় সদস্য সচিবের জন্য নির্ধারিত কক্ষটিতে ব্যাপক ভাংচুর চালান আব্বাস-সমর্থকরা। এ সময় সদস্যসচিবের নামফলকটি ফেলে দিয়ে সেখানে পল্টন থানা বিএনপির ফলক লাগিয়ে দরজায় তালা লাগিয়ে দেন তারা।
খবর পেয়ে সোহেল-সমর্থকরা এসে তালা ভেঙে পল্টন থানা বিএনপির ফলকটি নামিয়ে দেন। ভোর রাতের দিকে আব্বাস-সমর্থকরা আবারো একই কাজ করেন। পল্টন থানার নাম টাঙিয়ে দিয়ে নতুন করে দরজা তালাবদ্ধ করে রাখেন।
বিষয়টি সোহেল-সমর্থকরা জানার পরে সেখানে যেতে চাইলে হাবিব উন নবী খান সোহেল তাদের নিষেধ করেন। এ অবস্থায় দুটি পক্ষের মধ্যে অস্থিরতা চলছে। বিশেষ করে স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতাকর্মীরা বিষয়টি ভালোভাবে মেনে নিতে পারেননি।
সূত্র জানায়, সোহেলের প্রতি আব্বাসের এমন ‘বিমাতাসুলভ’ আচরণের খবর পৌঁছে যায় বিএনপির চেয়ারপারসন সৌদি সফররত বেগম খালেদা জিয়া এবং তারেক রহমানের কাছে। খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান দুজনই দক্ষ সংগঠক হিসেবে ভীষণ পছন্দ করেন হাবিব উন নবী খান সোহেলকে। দল সদস্যসচিব হিসেবে সোহেলকে দায়িত্ব দিয়েছে। তাই মহানগরের এই বিভাজনে বেশ ক্ষুব্ধ তারেক রহমান ও খালেদা জিয়া।
এ অবস্থায় শনিবার পুনরায় মহানগর বিএনপির সদস্য সচিবের রুমে দেওয়া তালা ভেঙে ফেলেন সোহেল সমর্থকরা। এ নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষও হয়।
সূত্র জানায়, নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ের সামনে মির্জা আব্বাস-গয়েশ্বর সমর্থকদের উস্কানিমূলক বক্তব্যই তালা ভাঙার পেছনে উৎসাহ যুগিয়েছে। তারা সদস্যসচিবকে নিয়ে নেতিবাচক বক্তব্য দেওয়ার পরেই সোহেল-সমর্থকরা তালা ভাঙতে যান। তবে পাল্টাপাল্টি তালা ভাঙা নিয়ে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ক্ষোভ প্রকাশ করে সংশ্লিষ্টদের কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়ার নির্দেশ দেন।
দলীয় সূত্র জানায়, শনিবার রাতে ফিরেই এ বিষয়টি নিয়ে শীর্ষনেতাদের সঙ্গে কথা বলেন বিএনপি প্রধান। সেখানে মহানগর বিএনপি নিয়ে তার ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটে। আন্দোলনের আগে এ ধরনের বিভেদ দলের ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে বলে মনে করেন তিনি। এ সময় তিনি সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে কারণ দর্শানোর নির্দেশ দেন। এ ছাড়া কারা, কেন সদস্যসচিবের রুমে প্রথমে তালা দিয়েছে তা জানতে চান।
খালেদা জিয়ার ওই নির্দেশ অনুযায়ী ইতিমধ্যে স্বেচ্ছাসেবক দলের সহ-পরিবার পরিকল্পনা বিষয়ক সম্পাদক তালুকদার অমিত হাসান হাফিজ এবং সদস্য আশরাফ উদ্দিন জনিকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে স্বেচ্ছাসেবক দল। বাকিদেরও কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে। এ ছাড়া গত বুধবার যারা প্রথমে সদস্য সচিবের রুমে তালা দিয়ে প্রবেশ বন্ধ করেছেন তাদেরকেও বিচারের মুখোমুখি করানোর নির্দেশ দিয়েছেন খালেদা জিয়া।
©somewhere in net ltd.