নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সবার কথা

আহমেদ রশীদ

আহমেদ রশীদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

ড. ইউনূস ও মাহফুজ আনাম এক-এগারোর সহযোগী

০১ লা মার্চ, ২০১৬ সকাল ৮:২১

এক-এগারোর সময়কার ঘটনা তদন্তে একজন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতিকে দিয়ে কমিশন গঠনের দাবি সংসদে তুলেছেন দুজন মন্ত্রী। ওই সময় যাচাই ছাড়া ডিজিএফআইয়ের ‘সরবরাহ’ করা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ‘দুর্নীতির’ খবর প্রকাশের কথা স্বীকারকারী ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহফুজ আনামের বিচারও দাবি করেছেন তারা। ড. ইউনূস, মাহফুজ আনাম ও মইনুলগংরা ওয়ান ইলেভেনে গণতন্ত্রকে ধ্বংস করে অসাংবিধানিক শাসন আনতে চেয়েছিলেন বলে সংসদে দাবি করা হয়েছে।
রোববার সংসদে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর ধন্যবাদ প্রস্তাবের আলোচনায় অংশ নিয়ে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমের সঙ্গে এসব দাবি তোলেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিমও।
রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে সরকার ও বিরোধী দলের সিনিয়র মন্ত্রী-সংসদ সদস্যরাও ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহফুজ আনামসহ এক-এগারোর কুশিলবদের বিচারের আওতায় আনার দাবিতে ছিলেন উচ্চকণ্ঠ। তারা সুপ্রিম কোর্টের একজন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতিকে প্রধান করে একটি তদন্ত কমিশন করে ওয়ান ইলেভেনের কুশিলবদের বিচারের আওতায় আনার দাবি জানিয়ে বলেছেন, দেশে আগামীতে এ ধরনের ঘটনার যাতে পুনরাবৃত্তি না ঘটে সেজন্য গণতন্ত্র-সংবিধান ধ্বংস ও বি-রাজনীতিকরণের সঙ্গে জড়িত ষড়যন্ত্রকারীদের বিচার হতেই হবে।
প্রথমে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী এবং পরে ডেপুটি স্পিকার অ্যাডভোকেট ফজলে রাব্বি মিয়ার সভাপতিত্বে রোববার আলোচনায় অংশ নেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম, শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ, সরকারি দলের আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, হুইপ আতিউর রহমান আতিক, মোর্শেদ আলম, জাহিদ আহসান রাসেল, ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি ও বিমানমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন, জাসদ সভাপতি ও তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু প্রমুখ। আলোচনায় অংশ নিয়ে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম ওয়ান ইলেভেনের কুশিলবদের কড়া সমালোচনার পাশাপাশি ওই সময় কারা কী করেছে তা তদন্ত করে জাতির সামনে তাদের মুখোশ তুলে ধরতে একটি কমিশন গঠনের দাবি জানিয়ে বলেন, ভবিষ্যতে যাতে আর এক-এগারোর সৃষ্টি না হয় সেজন্য তাদের বিচার করতেই হবে। তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, এখন সরি বলেন, কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে কে ফিরিয়ে দেবে কারাভোগের সেই ১১টি মাস? সরি বললেই কি আমি সুস্থ হয়ে যাব? কী ষড়যন্ত্রই না করা হয়েছে। এক-এগারোর কুশিলবরা দশ বছর ক্ষমতায় থাকতে চেয়েছিল। ওই সময় খালেদা জিয়া বাক্স-পেটরা গুছিয়েছিলেন ছেলেকে নিয়ে দুবাইয়ে পালিয়ে যেতে। একমাত্র শেখ হাসিনার দৃঢ় সাহসী উচ্চারণের কারণেই সকল ষড়যন্ত্র ভেদ করে দেশে গণতন্ত্র এসেছে। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধু, চার জাতীয় নেতা ও যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করছেন এবং দ- কার্যকর করছেন।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ এখন সবদিক থেকে এগিয়ে যাচ্ছে। এই উন্নয়ন-অগ্রগতি রুদ্ধ করতে নানা ষড়যন্ত্র এখনও চলছে। ২০১৯ সালে নির্বাচন হবে, সে নির্বাচনেও দেশের জনগণ পুনরায় শেখ হাসিনার সরকারকে নির্বাচিত করবে। নৌকা হচ্ছে স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রের প্রতীক। তাই আগামী নির্বাচনেও প্রত্যাখ্যাত হবেন খালেদা জিয়ার নেতৃত্বাধীন আগুনসন্ত্রাসীরা। তিনি বলেন, মাহফুজ আনাম ভুল করে স্বীকার করেছেন। কিন্তু রাজনীতিবিদ, প্রশাসন, পুলিশ, ব্যবসায়ীরা ভুল করলে তাদের অবধারিত জেলে যেতে হয়। কিন্তু মাহফুজ আনামরা ভুল করলে শুধুমাত্র ‘সরি’ বললেই সব শেষ। কোনোদিন শান্তির জন্য কাজ করেননি, অথচ ড. ইউনূস শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পান! ওয়ান-ইলেভেনের পটভূমি তৈরি করার জন্যই এ ষড়যন্ত্র করা হয়েছিল। যে গণতন্ত্র বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে, মানুষকে জ্বালিয়ে হত্যা করে- সেই গণতন্ত্রে আমরা বিশ্বাস করি না।
মোহাম্মদ নাসিম বলেন, বর্তমান সরকার নাকি অবৈধ এই বলে খালেদা জিয়া শত শত মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা করলেন। শেখ হাসিনার রাজনীতির কাছে পরাজিত হয়ে বর্তমান সরকারকে বৈধ মেনে নিয়েই সব নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন খালেদা জিয়া। এখন সংসদ, রাস্তা কোথাও নেই উনি। নির্বাচনে না এসে সব হারিয়েছেন বিএনপি নেত্রী। ২০১৯ সালে শেখ হাসিনার অধীনেই নির্বাচন হবে, ওই নির্বাচনে খালেদা জিয়ার অংশগ্রহণের কোনো বিকল্প নেই। ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত ও সন্ত্রাসের পদ ছেড়ে দিয়ে গণতন্ত্রের পথে আসুন। খালেদা জিয়াকে ভোট দেওয়া মানেই হাওয়া ভবন, জঙ্গিবাদ-সন্ত্রাস ও দুর্নীতি। দেশের জনগণ আর কোনোদিন খালেদা জিয়াকে সেই সুযোগ দেবে না।
ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি ও বিমানমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন বলেন, বিএনপি-জামায়াত জোটের আমলে জঙ্গিবাদের উত্থান হয়েছিল। সেই জঙ্গি-উগ্রবাদীরা নতুন অবয়বে হাজির হয়ে মসজিদ, মন্দির, তাজিয়া মিছিলে আক্রমণের মাধ্যমে সাম্প্রদায়িক বিভাজনের চেষ্টা করছে। দেশে আইএস না থাকলে তাদের মতাদর্শীরা আজ সংগঠিত হচ্ছে। তারা বাংলাদেশকে মৌলবাদী-সাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র বানাতে চায়। এদের সঙ্গে সামান্যতম আপস মানে সাপের মুখে চুমু খাওয়া। এদের কঠোরহস্তে দমনের পাশাপাশি আদর্শগতভাবে রূখে দাঁড়াতে হবে।
তিনি বলেন, আগুন সন্ত্রাসে ব্যর্থ হয়ে বিএনপিরা এখন নির্বাচনের পথে ফিরে এসেছে। জামায়াত যে অপরাধ করেছে, এখনও করে যাচ্ছে- তাদের রাজনীতি করার কোনো অধিকার থাকতে পারে না। সুশীল সমাজ দেশের উন্নয়ন চোখে দেখে না। এরা উন্নয়ন ও গণতন্ত্রকে মুখোমুখি দাঁড় করাতে চায়। ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহফুজ আনামের স্বীকারোক্তিতে উঠে এসেছে, ওয়ান-ইলেভেনে কীভাবে বি-রাজনীতিকরণ করতে ষড়যন্ত্র করা হয়েছিল। নবম সংসদে শিক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘটনা তদন্তে তৎকালীন প্রধান উপদেষ্টা ফখরুদ্দীন আহমদ এবং তৎকালীন সেনাপ্রধান মইন উ আহমেদকে তলবের উদ্যোগ নেওয়া মেনন বলেন, ‘এই সংসদে ওয়ান-ইলেভেনের ঘটনার বিচারের দাবি উঠেছিল। কিন্তু তা হয়নি। ’
এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি না ঘটে সেই ব্যবস্থা নিতে হবে। ওয়ান-ইলেভেনের কুশিলবদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংসদীয় কমিটি থেকে সুপারিশ করা হলেও তা এখনও হিমঘরে পরে রয়েছে। তিনি সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতির নেতৃত্বে একটি তদন্ত কমিশন গঠনের মাধ্যমে কুশিলবদের মুখোশ জাতির সামনে প্রকাশের দাবি জানান।
জাসদ সভাপতি ও তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেন, ৭ বছরে শেখ হাসিনা প্রমাণ করেছেন আমরাও পারি। শত্রুরাও স্বীকার করছেন যাদুকরি উন্নয়ন করেছে বর্তমান সরকার। আমাদের লাফিয়ে আরেক ধাপ উঠতে হবে, সেজন্য শক্ত মাটি দরকার। ৭ বছরে শেখ হাসিনা সেই শক্ত মাটি তৈরি করেছেন। তিনি বলেন, খালেদা জিয়া পরাজিত হলেও এখনও ষড়যন্ত্র বন্ধ করেননি। উনি গণতান্ত্রিক নয়, আগুন ও জঙ্গি নেত্রী। উনি গণতন্ত্রের জন্য অনুপযুক্ত তা দেশবাসী বুঝে গেছে। কিছু বর্ণচোরা ব্যক্তি-মহল নিরপেক্ষতার ভড়ং নিয়ে খালেদা জিয়াকে বাঁচানো ও প্রাণ দেওয়ার চেষ্টা করছেন। রাজনৈতিক জায়গার কথা বলছেন। কার জন্য পলিটিক্যাল স্পেস- যুদ্ধাপরাধী, আগুন সন্ত্রাসী, তেঁতুল হুজুর, জেএমবি, ধর্মবিরোধী উগ্র সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠীর জন্য? চিহ্নিত অপরাধীদের জন্য রাজনৈতিক স্পেস হতে পারে না।
তিনি বলেন, বিএনপি কখনো গণতান্ত্রিক দল নয়, জš§গতভাবে বিএনপি পাকিস্তানপন্থি, অগণতান্ত্রিক, সামরিকপন্থি দল। জামায়াতের সঙ্গ ত্যাগ করলেই বিএনপি ভদ্র পার্টি হবে না, কারণ বিএনপি একটি জঙ্গি-সন্ত্রাসী উৎপাদনের কারখানা। খালেদা জিয়া বিএনপিকে ইতিহাসের ভাগাড় ও পরিত্যক্ত দলে পরিণত করেছেন। মাহফুজ আনাম প্রসঙ্গে অ্যামনেস্টিসহ অনেকে কথা বলছেন। কিন্তু একাত্তরের গণহত্যা, ’৭৫-এর শিশু হত্যা, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা, কর্নেল তাহেরকে গোপন ট্রায়ালে হত্যা, আগুনযুদ্ধ, পুড়িয়ে শত শত মানুষকে হত্যার সময় এরা একটি কথা বলেনি, কোনো বিবৃতি দেয়নি। মাহফুজ আনামের স্বীকারোক্তি নিয়ে সমালোচনা চলছে, তখন তারা হঠাৎ করেই হস্তক্ষেপ হচ্ছে বলে হৈ চৈ করছেন। এরা একচোখা সংস্থা। দেশের কোথাও গণমাধ্যমের ওপর হস্তক্ষেপ করা হচ্ছে না। খালেদা জিয়া ও বিএনপিকে আর ছাড় নয়, এদের বিচারের আওতায় আনতেই হবে।
শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ শিক্ষা খাতে গত ৭ বছরের সাফল্য তুলে ধরে বলেন, জ্ঞান ও প্রযুক্তি নির্ভর শিক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তোলাই আমাদের প্রধান লক্ষ্য। আধুনিক বাংলাদেশের নির্মাতা হিসেবে নতুন প্রজš§কে আমরা গড়ে তুলতে চাই। উপযুক্ত শিক্ষায় শিক্ষিত জাতি গড়তে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। তবে প্রচলিত ও গতানুগতিক শিক্ষা ব্যবস্থা দিয়ে নতুন প্রজš§কে আধুনিক বাংলাদেশের নির্মাতা হিসেবে গড়ে তোলা সম্ভব হবে না। তাই আমরা শিক্ষা ব্যবস্থার গুণগত আমূল পরিবর্তন এনেছি। বিনামূল্যে আমরা এবার ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে ৩ কোটি ৭৭ লাখ বই বিতরণ করেছি, যা বিশ্বের অনেকে বিশ্বাসই করতে পারেন না।
আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, মাহফুজ আনাম একজন আত্মস্বীকৃত দোষী সাংবাদিক। ড. ইউনূস, মাহফুজ আনাম ও মইনুলগংরা ওয়ান-ইলেভেনে গণতন্ত্রকে ধ্বংস করে অসাংবিধানিক শাসন আনতে চেয়েছিল। সাংবাদিকরা কী আইনের উর্ধ্বে? এক-এগারোর কুশীলবরা যে চরিত্রেরই বা পেশার হোক না কেন, এই দুষ্ট চক্রকে বিচারের আওতায় আনতে হবে। এজন্য তিনি একটি বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিশন গঠনের দাবি জানান।
হুইপ আতিউর রহমান আতিক বলেন, দেশের মানুষ সুখে-শান্তিতে আছে। শুধু অশান্তিতে আছে আগুন-সন্ত্রাসী খালেদা জিয়া ও তার কুপুত্র তারেক রহমানগংরা। এদের সকল ষড়যন্ত্রের দাঁতভাঙা জবাব দিতে দেশের জনগণ প্রস্তুত।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.