![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সত্য লিখতে বাঁধা কই, বাঁধা এলে মানবো কেন?
আমা সিন্দি উ মাদি ভাঙানা শুরু উয়ে। বাক্যটি চাকমা ভাষার বাক্য। বঙ্গানুবাদ করলে সম্ভবত ‘আমাদের এইদিকেও মাটি ভাঙ্গন শুরু হয়েছে’ এমন কিছুই হয়। পাহাড় ধ্বস সাথে মৃত্যূর মিছিল। কোন বছরই এর ব্যতিক্রম হয়না। চট্টগ্রাম আর পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়ী অঞ্চলে এটা যেন প্রতি বছরের নিত্য ঘটনা। রাত-দিনের টানা বর্ষণে পার্বত্য জেলা রাঙামাটিসহ আরো নানা জায়গায় ঘটেছে পাহাড় ধ্বস এবং প্রাণহানির ঘটনা।
গতরাত ও আজকের টানা বৃষ্টিতে পার্বত্য জেলা রাঙামাটি’র বেশ কয়েকটি স্থানে পাহাড়ের ভূমি ধ্বসের মাধ্যমে শুরু হয়েছে পাহাড়সমৃদ্ধ এলাকাগুলোতে পাহাড় ধ্বসের মৌসুম। শহরের যুব উন্নয়ন, ভেদভেদী, শিমুলতলি, রাঙাপানিসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে পাহাড় ধ্বসের খবর পাওয়া যায়। অনেকগুলো প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। হতাহতের সংখ্যাও অনেক যার মধ্যে অনেকেরই অবস্থা আশঙ্কাজনক। বাড়তে পারে আরো মৃতের সংখ্যা। ইতিমধ্যে বান্দরবান, কাপ্তাই, চট্টগ্রামসহ আরো কয়েকটি স্থানে পাহাড় ধ্বসের খবর জানা গেছে। কয়েকস্থানে সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেছে। চলছে উদ্ধার তৎপরতা।
অতিবর্ষণ, টানাবর্ষণের কারণে পাহাড়ের নীচের অংশ থেকে মাটি ক্ষয় হতে হতে একসময় ঘটে পাহাড় ধ্বসের ঘটনা। পাহাড় ধ্বসের জন্য শুধূমাত্র প্রকৃতিই দায়ী নয় একা, প্রকৃতির চেয়ে বহুলাংশে বেশী দায়ী আমরা। দিন দিন বেড়ে চলা আমাদের লোভ পাহাড়ের ভূমি ধ্বসের অন্যতম প্রধান কারণ। মাটি কেটে, গাছপালা উজাড় করে প্রতিনিয়ত আমরা প্রাকৃতিক পাহাড়গুলোকে ঠেলে দিচ্ছি দারুণ বিপদসঙ্কুল অবস্থায়। আর তাই সামান্য এদিক-সেদিক হলেই প্রকৃতিও তার প্রতিশোধটা নিচ্ছে সেভাবেই।
প্রায় প্রতিবছরই এটি একটি নিয়মিত দূর্ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। অবলীলায় পাহাড় কাটা হচ্ছে। সেই পাহাড়েরর পাদদেশে বাড়ি উঠছে। বর্ষার ঢলে সেই পাহাড় ধ্বসে পড়ছে। পাহাড় ধ্বসে শিশুসহ মানুষ মরছে। কিন্তু আমাদের কর্তৃপক্ষের কোনো বিকার নেই। নেই আমাদের কোনো অনূভূতি। আমরা দেখছি, কিছুটা সহানুভূতি প্রকাশ করছি। কয়েকদিন একটু উচ্চবাচ্য হচ্ছে। তারপর আগের মতোই। আবারো বর্ষাকাল আসে, পাহাড় ধ্বস হচ্ছে, মানুষ মরছে।
আসুন সবাই মিলে প্রকৃতির এই নিষ্ঠুর প্রতিশোধের হাত হতে নিজেদের নিরাপদ রাখার স্বার্থেই প্রকৃতির বিরোধী কাজ হতে নিজেরা বিরত থাকি, অন্যদের বিরত থাকতে উৎসাহ দেই এবং যারা এজাতীয় কাজগুলো করছে তাদের প্রতিহত করি। নয়তো চরম ক্ষতিটার মাশুল প্রকৃতিকে নয়, আমদেরকেই গুণতে হবে। বিশেষ করে পাহাড় কেটে সমান করা, পাহাড়ের পাদদেশে ঘর-বাড়ী তুলে বসবাস করা এই জাতীয় কাজগুলোকে যেকোন মূল্যেই প্রতিহত করা আজ জরুরী হয়ে পড়েছে।
আহমেদ মাসুদ বিপ্লব
ঢাকা ব্যুরোচীফ, focusbanglanews.com
©somewhere in net ltd.