নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ঢাকা ব্যুরো প্রধান, ফোকাসবাংলানিউজ http://www.focusbanglanews.com http://www.facebook.com/biplob1972

আহমেদ মাসুদ বিপ্লব

সত্য লিখতে বাঁধা কই, বাঁধা এলে মানবো কেন?

আহমেদ মাসুদ বিপ্লব › বিস্তারিত পোস্টঃ

রাঙামাটিতে পাহাড় ধসে ক্ষতিগ্রস্থদের ত্রাণ সহায়তা প্রদান নিয়ে প্রশাসনের হাস্যকর সিদ্ধান্ত

২০ শে জুন, ২০১৭ দুপুর ১২:২৯

রাঙামাটিতে পাহাড় ধসে ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তা দিতে হবে জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে” এমন সংবাদে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সকল স্তরের মানুষরাই। এটা কেমন কথা! মানবিক বোধসম্পন্ন মানুষগুলো নিজ বিবেকের তাড়নায় একক বা দলগতভাবে বাড়ি বাড়ি খুঁজে মেগে, হাত পেতে মানুষের দ্বারে দ্বারে ত্রাণ সামগ্রী সংগ্রহ করবেন, তারপর সেটি তুলে দিতে হবে জেলা প্রশাসনের হাতে! পুরো বিষয়টাই একটি হাস্যকর কাহিনীতে রূপ নিয়েছে আজ কয়েকদিন ধরেই।

রাঙামাটিতে পাহাড় ধসে গৃহহীনদের পাশাপাশি ফের ধসের আশঙ্কায় বেশ কয়েকটি আশ্রয় কেন্দ্রে আড়াই হাজারের বেশি মানুষ ঠাঁই নিয়েছেন। এসব মানুষকে ব্যক্তিগত এবং সাংগঠনিকভাবেও ত্রাণ সহায়তা নিয়ে এগিয়ে আসছেন অনেকেই। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এখন পযর্ন্ত উল্লেখযোগ্য কোন সহায়তাই পাওয়া যায়নি। বরং তারা জানিয়েছেন সরকারী ত্রাণ এসে পৌঁছাতে আরো কয়েকদিন দেরী হবে। যার কারণে বেসরকারীভাবে ত্রাণ সংগ্রহ ও বিতরণের পরিমাণ বাড়ছে আরো বেশী।

বেসরকারি মাধ্যম থেকে আসা সহায়তা বা ত্রাণ বিচ্ছিন্নভাবে প্রদান করতে নানা সমস্যা সৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কায় জেলা প্রশাসন তা সমন্বয়ের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। এখন থেকে ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তা বা ত্রাণ দিতে চাইলে তা জেলা প্রশাসনের মাধ্যমেই দিতে হবে বলে সিদ্ধান্ত হয়েছে। জেলা প্রশাসক মানজারুল মান্নান বলেন, “রাঙামাটি বা এর বাইরের জেলা থেকে ব্যক্তিগত অথবা প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে মানবিক সহায়তা করতে চাইলে তা জেলা প্রশাসনের মাধ্যমেই করতে হবে। এখানে আলাদাভাবে দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই।” এজন্য ব্যাংক হিসাব খোলার পাশাপাশি চার সদস্যের একটি কমিটি করে দিয়েছে রাঙামাটি জেলা প্রশাসন। অর্থ সাহায্য নেওয়ার জন্য ইসলামী ব্যাংক রাঙামাটি শাখায় একটি ব্যাংক হিসাব খোলার তথ্য জানিয়ে তিনি বলেন, “বেসরকারি উদ্যোগে দেওয়া সহায়তা বিতরণের বিষয়টি সমন্বয় করবে চার সদস্যের কমিটি। কেউ নগদ অর্থ সহায়তা দিতে চাইলে ব্যাংক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে তা জমা দিতে হবে। এর বাইরে কেউ ত্রাণসামগ্রী বিশেষ করে খাদ্যদ্রব্য ও কাপড় দিতে চাইলে তা প্রশাসনের কমিটির কাছে জমা দিতে হবে।”

ত্রাণ বিতরণে এই বাধ্যবাধকতার কারণ হিসেবে জেলা প্রশাসন একটিমাত্র কারণ দেখাতে সক্ষম হয়েছেন। তাদের মতে, “কোনো আশ্রয়কেন্দ্রে হয়ত দুইশজন আছেন, কিন্তু কেউ হয়ত সেখানে ৫০ জনের সমপরিমাণ সহায়তা নিয়ে গেলেন। তখন ত্রাণ বিতরণের সময় সেখানে বিশৃঙ্খলা দেখা দেওয়ার আশঙ্কা থাকে। সেজন্য আগ্রহীদের জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে ত্রাণ বিতরণের অনুরোধ জানাচ্ছি আমরা।” এই কারণটি একেবারেই শিশুসুলভ বক্তব্যেরই বহিঃপ্রকাশ মনে করি। কারণ ইতিপূর্বে সংঘঠিত সাজেকের খাদ্য সংকট, লংগদু'র বিপর্যয় এবং এখন পর্যন্ত রাঙামাটির ক্ষতিগ্রস্থদের মাঝে ব্যক্তিগত ও সাংগঠনিকভাবে যেটুকুই ত্রাণ সহায়তা প্রদান করা হয়েছে তার কোথাও কোন ধরণের বিশৃঙ্খলা বা অনিয়মের কোন অভিযোগ পাওয়া যায়নি, কেউ করেওনি। এমতাবস্থায় জেলা প্রশাসনের এহেন সিদ্ধান্তে অবাক না হয়ে উপায় নেই।

যেখানে জেলা প্রশাসনের উচিত ছিল পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটবার পর পরই উদ্ধার কাজের পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্থদের ত্রাণ সহায়তা প্রদান করা, সেক্ষেত্রে তারা পুরোপুরিই ব্যর্থ হয়েছেন। এখন পর্যন্ত তারা সরকারী ত্রাণের বিন্দুমাত্রও ক্ষতিগ্রস্থদের মাঝে বিতরণ করতে পারেননি, উপরন্তু যারা বাইরে থেকে নানা মাধ্যম হতে ত্রাণ সামগ্রী সংগ্রহ করে তা বিতরণে এগিয়ে আসছেন তাদের বাঁধাগ্রস্থ করছেন! মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে এটি মোটেই শোভনীয় ঠেকছে না। অনতিবিলম্বে তাদের এই উদ্ভট ও হাস্যকর সিদ্ধান্ত হতে সরে আসা সমীচিন মনে করছি।

এমনিতেই প্রশাসনের নানা কার্যক্রমে এটা প্রতীয়মান হতে চলেছে যে দেশের বিদ্যমান রীতিনীতি পার্বত্য চট্টগ্রামের ক্ষেত্রে যেন অনেকটাই অচল! সেখানে চলে সেখানকার প্রশাসনের মনগড়া আইন-কানুন। এমতাবস্থায় ত্রাণ বিতরণ নিয়ে জেলা প্রশাসনের এমন সিদ্ধান্ত সেই ধারণাকে আরো পাকাপোক্ত করতে সক্ষম হবে যা জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক উভয় ক্ষেত্রেই বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করবে একসময়। তাই বেসরকারীভাবে ত্রাণ সংগ্রহ ও বিতরণ যেভাবে চলছিল সেভাবেই চলতে দেয়া উচিত। পাশাপাশি অতিদ্রুত যেন সরকারী ত্রাণ সহায়তা ক্ষতিগ্রস্থদের নিকট এসে পৌঁছাতে পারে তার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দিকে জেলা প্রশাসনের মনোযোগী হওয়া অতি জরুরী এবং অগ্রাধিকার ভিত্তিতে জেলা প্রশাসন সেই কাজটিই করুক- এমনটাই সকলের প্রত্যাশা।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ২০ শে জুন, ২০১৭ বিকাল ৫:১৩

মিজান আর রহমান বলেছেন: সত্য লিখতে বাধাহীন

২১ শে জুন, ২০১৭ ভোর ৪:০৮

আহমেদ মাসুদ বিপ্লব বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.