![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আন্দ্রেস ইনিয়েস্তার একান্ত সাক্ষাতকার :
প্রশ্ন : দক্ষিণ আফ্রিকা বিশ্বকাপ ফাইনালের একমাত্র গোলটি আপনিই করেছিলেন। স্মৃতির সরণি ধরে আমাদের কি সে মুহূর্তটার কথা বলবেন?
আন্দ্রেস ইনিয়েস্তা : সত্যি বলতে কি, আমার জীবনের সেরা মুহূর্ত ওটা। নিজে গোল করে দেশকে বিশ্বকাপ এনে দেওয়ার কথা স্বপ্নেও ভাবিনি। ওই গোলেই স্পেনের প্রথম বিশ্বকাপ জয় আমার আনন্দকে বহুগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে। তখন মনে হচ্ছিল ম্যাচটা টাইব্রেকারে গড়াতে চলেছে। আবার এও মনে হচ্ছিল যে এতগুলো সুযোগ যখন তৈরি করতে পেরেছি, তখন আরেকটিও তো পেতে পারি! তাই পেনাল্টি শুট আউটে যাওয়ার আগেই ম্যাচটা শেষ করতে চাচ্ছিলাম। কারণ আমাদের পেনাল্টি-ভাগ্য ভালো না। ঈশ্বরকে ধন্যবাদ, সেটি আমরা পেরেছিলাম। সর্বশক্তিমানকে আরেকবার ধন্যবাদ সেই সুযোগটি আমাকেই দেওয়ার জন্য। ওটা আমার স্বপ্নের সীমানা ছাড়িয়ে যাওয়া একটি গোল।
2014 FIFA World Cup Brazil
প্রশ্ন : গতবারের ফাইনালের প্রতিপক্ষ নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে এবার প্রথম ম্যাচেই দেখা হয়ে যাচ্ছে। কেমন লাগছে?
ইনিয়েস্তা : একটু অবাকই হয়েছি। শুনেছি বিশ্বকাপ ইতিহাসে এমনটা আগে কখনো ঘটেনি। এক আসরের দুই ফাইনালিস্ট পরের আসরের প্রথম ম্যাচেই মুখোমুখি হয়েছে। কোনো সন্দেহ নেই যে, ম্যাচটা প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হবে। ডাচরা ভালো ফলের জন্য মরণপণ ফুটবল খেলবে। আর বর্তমান চ্যাম্পিয়ন হিসেবে আমরাও চাইব জয় দিয়ে টুর্নামেন্টটা শুরু করতে। কোনো সন্দেহ নেই ওরা ভালো দল। আমরাও!
প্রশ্ন : টানা দুটি ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপের মাঝে একটি বিশ্বকাপ মিলিয়ে চারটি বছর দারুণ কেটেছে স্পেনের। সে ধারা কি ২০১৪ বিশ্বকাপেও অব্যাহত রাখা সম্ভব বলে মনে করেন?
ইনিয়েস্তা : কেন নয়? ওই সোনালি সময়ের প্রায় পুরো স্কোয়াডটাই আমরা ধরে রেখেছি। নতুন যারা এসেছে তারাও দারুণ সব খেলোয়াড়। দলে গভীরতা, অভিজ্ঞতা এবং প্রতিভা- কোনোটিরই অভাব নেই। আবার সাফল্যের ক্ষুধাটাও আছে সবার। বাছাইপর্বে প্রায় নিখুঁত ফুটবল খেলে ফ্রান্সকে টপকে গ্রুপের সেরা হয়েছি। কোচ দেল বস্কের সাহায্য চাইলেই পাওয়া যায়। এতগুলো বিষয় পক্ষে থাকায় শিরোপা ধরে রাখার ব্যাপারে আমরা খুবই আত্মবিশ্বাসী।
প্রশ্ন : কিন্তু সবশেষ আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্ট, কনফেডারেশনস কাপের অভিজ্ঞতা তো ভালো নয়। ফাইনালে স্বাগতিক ব্রাজিল একরকম গুঁড়িয়েই দিয়েছিল স্পেনকে।
ইনিয়েস্তা : মানছি, কিন্তু ওটা ছিল কনফেডারেশনস কাপের ফাইনাল, বিশ্বকাপ নয়! বিশ্বকাপের সঙ্গে অন্য আর কোনো টুর্নামেন্টের তুলনা চলে না। যা-ই হোক, তার মানে এই নয় যে সেদিনের ফাইনালে ব্রাজিলের সুন্দর ফুটবলের কাছে বিপর্যস্ত হওয়ার বিষয়টি আমি অস্বীকার করতে চাচ্ছি। হ্যাঁ, সে রাতে ওরাই সেরা ছিল। ফুটবলে এটা হতেই পারে। নিজের সেরা ফুটবলটা প্রতিদিনই খেলা সম্ভব নয়, যদিও সে চেষ্টাটা সবাই করে। এবারের বিশ্বকাপে চেষ্টা করব শরীর এবং মনের সবটুকু নিংড়ে দিয়ে ফুটবলটা খেলতে।
প্রশ্ন : গ্রুপপর্বে হেরফের হলে দ্বিতীয় পর্বেই ব্রাজিলের মুখোমুখি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এটা কি মাথায় রাখছেন?
ইনিয়েস্তা : এখন অত দূর ভাবতে রাজি নই আমি। আপাতত আসন্ন ম্যাচগুলো নিয়েই ভাবছি। ম্যাচ বাই ম্যাচ ভেবেই আমরা অভ্যস্ত। আমাদের প্রাথমিক লক্ষ্য গ্রুপপর্বের বাধা পেরোনো। সেটা নিশ্চিত হওয়ার পর পরেরটা নিয়ে ভাবব।
প্রশ্ন : গ্রুপে তিন প্রতিপক্ষ নেদারল্যান্ডস, চিলি ও অস্ট্রেলিয়াকে কেমন প্রতিপক্ষ মনে করছেন?
ইনিয়েস্তা : যোগ্য দল হিসেবেই ওরা বিশ্বকাপে এসেছে। বিশ্বের সেরা ৩২টি দলের তালিকায় আছে বলেই ওরা এ টুর্নামেন্টে খেলবে। তাই যেকোনো প্রতিপক্ষকে হারাতে হলে নিজের সেরা ফুটবলটাই খেলতে হবে। ভুলে যাননি নিশ্চয় যে গত বিশ্বকাপে চিলির বিপক্ষে কী কঠিন সময় গিয়েছিল স্পেনের। ওই ম্যাচেও গোল করেছিলাম! কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধে ওরা আমাদের চেপে ধরেছিল। এবার তো ওরা নিজেদের মহাদেশে খেলার সুবিধাটাও পাবে। ডাচদের নিয়ে আমার আলাদা করে কিছু বলার দরকার নেই। আমাদের মতো ওরাও প্রায় অপরিবর্তিত স্কোয়াড নিয়েই আসছে। সব মিলিয়ে আমার তো মনে হচ্ছে, খুবই কঠিন গ্রুপ এটা।
প্রশ্ন : সমালোচকরা বলেন স্পেন দলটা বুড়িয়ে যাচ্ছে। পর পর তিনটি বড় আসর জেতায় সেই ক্ষুধাটাও নেই। এগুলো শুনতে কেমন লাগে?
ইনিয়েস্তা : ট্রফি জেতাটা যেকোনো ফুটবলার কিংবা দলের কাছে নেশার মতো। আরো বেশি সাফল্য চাই। লম্বা সময় স্পেন কোনো ট্রফি জিততে পারেনি। এখন আমরা কেবল শুরুটা করেছি, তাই এখনই শেষ বলব কেন! আমরা আগের মতোই ক্ষুধার্ত। শিরোপা ধরে রাখতে সব উজাড় করে দেব।
2014 FIFA World Cup Brazil
#2014FIFAWorldCupBrazil
©somewhere in net ltd.