নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আহমদ-মুসা

একজন সাদামাটা বাঙ্গালী

আহমদ-মুসা › বিস্তারিত পোস্টঃ

দুই লিজেন্ড আর ব্রাজিলের বিশ্বকাপ

১৮ ই মে, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:২৮



খেলাধুলায় নাকি ‘১৬-১৭’ বছরের একটা বিশেষ আলাদা শক্তি ও বৈশিষ্ট্য রয়েছে। যা কাউকে কাউকে বিশ্বসেরায় পরিণত করে, পরিণত করে লিজেন্ডে। হাতের কাছে উদাহরণ ক্রিকেটার শচীন টেন্ডুলকার। ১৬ বছর বয়সে শুরু করে যখন অবসর নিলেন তখন ভারতীয় ক্রিকেট লিজেন্ড মহীরুহ। কিন্তু তারও আগে এমনই ১৭ বছর বয়সে বিশ্ব ফুটবলের সেরা আসর বিশ্বকাপে এক তরুণের অভিষেক হয়েছিল। সেই তরুণই ক্রমে বিশ্ব ফুটবলের প্রথম মেগা তারকা, শেষে সর্বকালের সেরা। সুইডেনে ১৯৫৮ সালের বিশ্বকাপে ব্রাজিলের হয়ে খেলা সেই ‘টিনএজ’ ফুটবলারটির নাম পেলে। যার হাত ধরে বিশ্ব ফুটবলে ব্রাজিল যুগের সূচনা।

2014 FIFA World Cup Brazil

১৯৫৮ সালের বিশ্বকাপ আরও একজন ফুটবলারের জন্য বিশ্ব মনে রাখবে। ‘অপয়া ১৩’ সংখ্যাটিকে যিনি ভুল প্রমাণ করে হয়েছিলেন সুইডেন বিশ্বকাপের সর্বাধিক গোলদাতা। একটি বিশ্বকাপে সর্বাধিক যে গোলের রেকর্ড এখনও অম্লান। ভবিষ্যতেও তা ভাঙবে কি না সন্দেহ। যে রেকর্ডটি চিরকালের জন্য ‘জাদুঘরে’ তুলে রাখতেই পারে ফিফা। সুইডেন বিশ্বকাপে ছয় ম্যাচে সর্বাধিক ১৩ গোল করা সেই ফরাসি তারকার নাম জ্যঁ ফতেইন।



১৬ দল নিয়ে ১৯৫৮ সালে বিশ্বকাপ হয়েছিল সুইডেনে। সেই বিশ্বকাপে ইসরায়েলকে নিয়ে লেগেছিল গণ্ডগোল। বাছাই পর্বে কোনো দেশ ইসরায়েলের সঙ্গে খেলতে রাজি না হওয়ায়, তারা বাই পেয়ে সুযোগ পেয়ে যায় বিশ্বকাপে। শেষ পর্যন্ত ফিফা হস্তক্ষেপ করে। ঠিক হয় উয়েফা গ্রুপে রানার্সআপ হয়ে বাদ পড়া ওয়েলস প্লেঅফ খেলবে ইসরায়েলের সঙ্গে। বিজয়ী দল পাবে মূল পর্বের টিকেট। তাতে হোম অ্যান্ড অ্যাওয়ে পদ্ধতিতে ইসরায়েলকে ২-০ গোলে হারিয়ে ওয়েলস চলে যায় বিশ্বকাপে।

১৭ জুন বিশ্বকাপে ওয়েলস-হাঙ্গেরি ম্যাচে ছাপ ফেলেছিল রাজনীতি। ১৯৫৬ সালে হাঙ্গেরি দখল করে নিয়েছিল রাশিয়া। তার দুই বছর পর ১৯৫৮ সালের ১৬ জুন মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয় হাঙ্গেরির সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরে নাগির। তার প্রতিবাদ জানাতেই ১৭ জুন ওয়েলস-হাঙ্গেরি ম্যাচ বয়কট করে ফুটবলভক্তরা। সেদিন মাত্র আড়াই হাজার দর্শক মাঠে উপস্থিত ছিলেন। ম্যাচে ওয়েলস জিতেছিল ২-১ গোলে। সেই হাঙ্গেরি অবশ্য ’৫৪-এর হাঙ্গেরি ছিল না। আগের বিশ্বকাপের মাত্র তিনজন ফুটবলার ছিলেন হাঙ্গেরি দলে। অধিকাংশই ১৯৫৬ সালে রাশিয়ার আক্রমণের পর দেশ ছেড়ে পালিয়েছিলেন। সেই যে হাঙ্গেরির ফুটবল শেষ হল, আজতক আর জেগে উঠতে পারল না।





এবার পেলে এবং ফতেইনের গল্প। গ্রুপ পর্বের প্রথম দুই ম্যাচে দলে সুযোগই পাননি পেলে। প্রথম নামেন প্লেঅফ ম্যাচে সোভিয়েত ইউনিয়নের বিপক্ষে। সেই ম্যাচে আরও ছিলেন ভাভা নামের আরও এক তরুণ। সামনে গ্যারিঞ্চা। যার ড্রিবলিং এখনও গল্প হয়ে আছে। যাকে তুলনা করা হয় ফুটবলের আরেক দিকপাল স্যার স্টানলি ম্যাথুসের সঙ্গে। এ তিন ‘মাস্কেটিয়ার্স’ মিলে সেই বিশ্বকাপে গড়েছিলেন ব্রাজিলের দুরন্ত আক্রমণ। সঙ্গে ছিলেন ডিডি, জালমা, জাগালো এবং নিলটন স্যান্টোসের মতো কিংবদন্তিরা। ভাভার দুই গোলে রাশিয়াকে হারিয়ে ব্রাজিল শেষ আটে। কোয়ার্টার ফাইনালে পেলের একমাত্র গোলেই ব্রাজিল হারায় ওয়েলসকে। সেমিতে ব্রাজিল-ফ্রান্স। পেলে-ফতেইন লড়াই। জিতে গেলেন পেলে। হ্যাটট্রিক করেছিলেন ১৭ বছরের তরুণ। ব্রাজিল জেতে ৫-২ গোলে।



ফাইনালে মুখোমুখি ব্রাজিল ও স্বাগতিক সুইডেন। বিশ্বকাপের ইতিহাসে সবচেয়ে কম ১৭ বছর বয়সে ফাইনাল খেলার রেকর্ড গড়েন পেলে। শুধু রেকর্ড গড়েই তো থেমে থাকার বান্দা নন তিনি। তাই ফাইনালেও করেন জোড়া গোল। সেটাও বিশ্বকাপের ফাইনালে সবচেয়ে কম বয়সে গোলের রেকর্ড। জোড়া গোল ভাভারও। আরেক গোল জাগালোর। সুইডেনকে ৫-২ গোলে হারিয়ে প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপ জেতে ব্রাজিল। সুইডেনের লিডহোম গড়েন বিশ্বকাপের ফাইনালে সবচেয়ে বেশি বয়সে গোল করার রেকর্ড। ফাইনালের দিন তার বয়স ছিল ৩৫ বছর ২৬৩ দিন। সেই বিশ্বকাপেই ব্রাজিল কোচ ভিসেন্তে ফিওলা ফুটবল বিশ্বকে ৪-২-৪ পদ্ধতি উপহার দিয়ে অমর হয়ে রয়েছেন।



সবশেষে ফতেইনের কথা। পেলের মতো তিনিও ফ্রান্সের প্রথম একাদশে ছিলেন না। কিন্তু দলের এক নম্বর স্ট্রাইকার রেনে ব্লিয়ার্ড ইনজুরিতে পড়লে কপাল খোলে তার। বাকিটুকু ইতিহাস। সতীর্থ ফুটবল লিজেন্ড রেমন্ড কোপার সঙ্গে জুটি বেঁধে অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠেছিলেন। তার ১৩ গোলের চারটিই করেছিলেন তৃতীয়-চতুর্থ স্থান নির্ধারণী ম্যাচে। যে ম্যাচে জার্মানিকে ৬-৩ গোলে হারিয়ে তৃতীয় হয়েছিল ফ্রান্স।

2014 FIFA World Cup Brazil

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.