নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

হয়তো বা অনেক কিছুই আমার মাঝে নেই , তবুও যা আছে তাতেই আমি খুশী , তাই আমাকে আমার মত থাকতে দেন । আমি কোন দিনও অন্য কারো মত হতে চাই না

শৌভিক শুদ্ধচারক

হয়তো বা অনেক কিছুই আমার মাঝে নেই তবুও যা আছে তাতেই আমি খুশী

শৌভিক শুদ্ধচারক › বিস্তারিত পোস্টঃ

কি করে প্রথম সোভিয়েত পারমানবিক বোমা তৈরী হয়েছিল

১৬ ই জুন, ২০১৫ রাত ৯:৩৫

যারা তা কাছের
থেকে দেখেছেন তাদের বিবরণ, গুপ্তচর সংস্থার খবর, যন্ত্রপাতি,
পারমানবিক অস্ত্রের সৃষ্টিকারী বিশ্ব
বিখ্যাত সোভিয়েত দেশের আণবিক বিজ্ঞানী – গবেষক ইগর কুরচাতভ,ইউলি হারিতোন, পিওতর কাপিত্সার হাতে লেখা কাগজপত্র, এমন কি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি হ্যারি ট্রুম্যানের নিজের হাতে লেখা জাপানী শহর হিরোশিমা ও
নাগাসাকিতে অ্যাটম বোমা ফেলা
নির্দেশ এই সব নিজের চোখে দেখতে পাওয়া যাচ্ছে এক অনন্য প্রদর্শনীতে. নাম "সোভিয়েত রাষ্ট্রসংঘের পারমানবিক প্রকল্প. রাশিয়ার পারমানবিক প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার ষাট বছরের জয়ন্তীর উদ্দেশ্যে". এই প্রদর্শনীর দ্রষ্টব্য বিষয় গুলি কম করে হলেও গত ৫০ বছর ধরে অতি গোপন ভান্ডারে জমিয়ে রাখা হয়েছিল.
সোভিয়েত দেশে এই দ্রষ্টব্য গুলির
মাত্র পাঁচ শতাংশ সাধারণের নজরে আনা হয়েছিল, বাকী জিনিস গুলির উপর থেকে গোপনীয়তার তালা খুলে নেওয়া
হয়েছে গত শতকের নব্বই এর দশকের মধ্য ভাগে. সুতরাং এই প্রদর্শনীতে সবচেয়ে বেশী সংখ্যক দ্রষ্টব্য জমা করা হয়েছে আর প্রদর্শনীটি যেমন বিশেষজ্ঞ ও ঐতিহাসিক দের তেমনই
জনসাধারণের জন্য খুবই চিত্তাকর্ষক
হয়েছে.
প্রথম সোভিয়েত পারমানবিক
বোমার পরীক্ষা করা হয়েছিল ২৯ শে
আগষ্ট ১৯৪৯ সালে. কাজাখস্থানের
সেমিপালাতিনস্ক পরীক্ষা ক্ষেত্রে
ভোর সাতটায় আকাশ ঝলসে উঠেছিল
এক অপূর্ব আলোর বিস্ফোরণে. এর
একটাই অর্থ ছিল, সোভিয়েত দেশ
সাফল্যের সঙ্গে প্রথম পারমানবিক
বোমা বানাতে পেরেছে ও তার পরীক্ষা
সফল হয়েছে. মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের
পারমানবিক বোমা তৈরীর প্রযুক্তিতে
একচেটিয়া অধিকারের দিন শেষ. সারা
বিশ্ব দাঁড়িয়ে ছিল বাস্তবিক ভাবেই
তৃতীয় বিশ্ব যুদ্ধের দোরগোড়ায়. ঠিক
১৯৪৯ সালেই মার্কিন বোমারু বিমান
বাহিনী পরিকল্পনা করেছিল ড্রপশট
(ছোট্ট নিঃখূত আঘাত)এর, যে
পরিকল্পনার বাস্তব রূপ হত ৩০০ টি
সোভিয়েত শহরে পারমানবিক বোমা
ফেলে আঘাত করা সমাজতন্ত্রের বুকে.
রাশিয়ার সরকারি রস অ্যাটম সংস্থার
প্রধান সের্গেই কিরিয়েঙ্কো বলেছেনঃ
"যারা এই বোমা তৈরী
করছিলেন, তারা সকলেই জানতেন যে,
হয় আমরা এই বোমা বানাবো সবচেয়ে
কম সময়ে অথবা অল্প সময়ের মধ্যেই
আমাদের দেশের আর কোন চিহ্ন এই
পৃথিবীর বুকে থাকবে না. এটা কোন
সুন্দর গল্প নয়, বাস্তব ছিল এই
রকম".
বাইশ হাজার টন ডিনামাইটের
মতো বিস্ফোরকে শক্তিশালী
প্লুটোনিয়াম বোমা বানানো হয়েছিল
"স্পেশাল রিঅ্যাক্টিভ মোটর – ১"
নাম দিয়ে. আর. দে. এস. এই ছোট্ট
নামের ব্যাখ্যা করেছিলেন বিজ্ঞানীরা
নিজেরাই – রাশিয়া দিচ্ছে স্বয়ং,
অর্থাত্ দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধের পর
ধ্বংস স্তুপের উপর বসে সারা
সোভিয়েত দেশের লোক তাদের
বিজ্ঞানীদের সাথে হাতে হাত মিলিয়ে
মাত্র ২ বছর ৮ মাস সময়ের মধ্যে
বানিয়েছিল প্রথম পারমানবিক বোমা.
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইউরোপের এই
মহাযুদ্ধে ধনী হয়েও সময় নিয়েছিল ২
বছর ৭ মাস সময়.
পরীক্ষার ক্ষেত্র বানানো
হয়েছিল সেই সময়ের জন্য রেকর্ড
সময়ে, মাত্র ২ বছরে. কাজাখস্থানের
রোদে জ্বলে যাওয়া খোলা স্তেপে
বানানো হয়েছিল, বাড়িঘর, সামরিক
ছাউনি, পাতাল রেল এমনকি বিমান
বন্দর পর্যন্ত. বোমা ফাটানোর
বিশেষজ্ঞ সৈন্য বাহিনীর অবসর
প্রাপ্ত ৯২ বছর বয়সের কর্নেল
সের্গেই দাভিদভ এই স্মরণীয় দিনটিকে
আজও মনে রেখেছেন খুব ভাল করেই.
বিস্ফোরণ সরাসরি উনি দেখতে পারেন
নি, কারণ ছিলেন মাটির নীচের বিশেষ
ভাবে সুরক্ষিত কংক্রীটের খুপরির
মধ্যে. পারমানবিক বোমা হিরোশিমা বা
নাগাসাকির মতো কোন বোমারু বিমান
থেকে ফেলা হয় নি, এর জন্য আলাদা
করে বিশাল উঁচু টাওয়ার বানানো
হয়েছিল. পরীক্ষার প্রস্তুতি ছিল খুব
নিঃখূত, সমস্ত সিস্টেম অনেকবার করে
আগে পরীক্ষা করা হয়েছিল. আর
বিস্ফোরণের ছবি তুলেছিল এক সাথে
তিরিশটি সিনেমার ক্যামেরা দিয়ে. পরে
অবশ্য এই "দুই নম্বর পরীক্ষা
ক্ষেত্রে বিস্ফোরণ" নামের চলচ্চিত্র
বহু দশক ধরে অতি গোপনীয় করে রাখা
হয়েছিল.
কর্নেল সের্গেই দাভিদভ
বলেছেনঃ
"ওখানে অনেক সিনেমার
ক্যামেরা রাখা হয়েছিল, বিস্ফোরণ
ভীষণ শক্তি সম্পন্ন বলে আগেই লোক
জনদের পরীক্ষার ক্ষেত্র থেকে ২০
-৩০ কিলোমিটার দূরে পাঠিয়ে দেওয়া
হয়েছিল. সমস্ত যন্ত্রপাতি কাজ
করেছিল স্বয়ংক্রিয় ভাবে, মানুষের
উপস্থিতি ছাড়াই. সব যাতে ঠিকঠাক
সময়ে চালানো ও বন্ধ করা যায় এই
রকম প্রোগ্রাম করা যন্ত্র তৈরী করা
ছিল আমার কাজ আর সেই যন্ত্র যাতে
এই পরীক্ষার প্রতিটি ধাপের
নিয়ন্ত্রণ করতে পারে তার দায়িত্ব
ছিল আমার উপর".
তারপর থেকে অবশ্য
সেমিপালাতিনস্কে আরও অনেক বোমার
পরীক্ষা করা হয়েছে. তবে সবচেয়ে মনে
রাখার মতো এর পরের ইতিহাস বিশ্বে
সর্ব প্রথম হাইড্রোজেন বোমার
পরীক্ষা. নোবেল বিজয়ী বিজ্ঞানী ও
বিশ্বের ঐতিহাসিক পরমাণু পদার্থবিদ্
পিওতর কাপিত্সার ছেলে প্রফেসর
সের্গেই কাপিত্সা বলেছেন, এই বোমার
বিস্ফোরণের পর একাডেমিক কুরচাতভ
এসেছিলেন ও ৪০০ কিলো টনের এই
বিস্ফোরণের ফল দেখে ধৈর্য্য হারিয়ে
ফেলেছিলেন, বলেছিলেন যে, "এটা হতেই
পারে না এত ভয়াবহ ব্যাপার".
"এটা ছিল একেবারে নতুন
ধরনের বোমা, যদি অ্যাটম বোমা
সাধারন বোমার চেয়ে হাজার গুণ
শক্তিশালী হয়, তবে হাইড্রোজেন বোমা
তার থেকেও কয়েক হাজার গুণ বেশী
শক্তিশালী, আর পৃথিবী এখনও এই
শক্তিকে কি করে থামানো যায় তা জানে
না".
আর পৃথিবীর ইতিহাসে সবচেয়ে
বড় যে বোমা পরীক্ষা করা হয়েছে, তা
সোভিয়েত দেশে ১৯৬০ এর দশকে
বিস্ফোরিত ৫০ মেগা টনের
হাইড্রোজেন বোমা "জার বম্ব". এর
বিস্ফোরণের পর তার ধাক্কা সারা
পৃথিবীকে তিন পাক দিয়েছিল, বাস্তব
অর্থেই এই বিস্ফোরণে সারা দুনিয়া
কেঁপে উঠেছিল.

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.