নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
পৃথিবীর বুকে এক টুকরো গোলাপ অবশিষ্ট থাকা অব্দি ভালবাসা রয়ে যাবে কি? নাকি তারও আগে বিলুপ্ত হবে প্রেম!
মারাত্মক একটা ভীতিরোগ ভর করেছে অনিকের ওপর ,
রাস্তা পার হতে ভয় পায় সে ।
ফুটপাত ধরে যখন হাটে তখন মনে হয় ট্রাকটা যেনো তার দিকেই তেড়ে আসছে ।
অনেকটা যেনো প্রতিশোধ নিতে চায় যান্ত্রিক প্রাণ গুলো ।
প্রত্যেকটা যান্ত্রিক প্রাণের পাশ কেটে যাওয়া আর তাই আতকে ওঠে অনিক ।
এই বুঝি ওর গায়ের ওপর দিয়ে চলে গেলো ,
অথবা ওর হৃদপিন্ড পিষে দিয়ে পালিয়ে গেলো ট্রাকটা ,
তন্বীর মতো অনেকটা ।
পোস্ট মর্টাম রিপোর্টে বলা হয়েছিল হঠাত্ অসাবধানতাবশত তন্বীর হৃদপিন্ডটা পিষে যায় কোনো এক ট্রাকের চাকায় ।
আজ থেকে দু বছর পূর্বে ,
হঠাত্ অসুস্থ হয়ে পড়ে তন্বী ,
সন্ধ্যা থেকে বমি আর খুব দুর্বল লাগছিল ওর শরীরটা,
অনিকের দাদী এসে ব্যাপারটা বুঝতে পেরে পুরো পাড়ায় খবর করে দিলেন অনিক বাবা হতে যাচ্ছে।
ঘরে ঘরে মিষ্টি পাঠিয়ে দিলেন অনিকের বাবা ,
তন্বীর শাশুরীও কম যান না,
বউ এর বাপের বাড়িতে কয়েক প্যাকেট মিষ্টি পাঠিয়ে দিয়েছেন।
তন্বীর বাবা মা খবর পাওয়ার সাথে সাথেই নতুন অতিথির জন্য সব বন্দবোস্ত করে রেখেছেন।
কিন্তু অনিক কে কোথাও পাওয়া যাচ্ছেনা ,
তন্বী এতোক্ষণ লজ্জ্বায় লাল হচ্ছিল ,
কিন্তু ওর এখন অনিককে দেখতে ইচ্ছে করছে ।
চিন্তাও হচ্ছে ।
ফোন দেয় তন্বী ,
অনিক তুলে নেয় না ফোনটা ।
কড়ই গাছটার নিচে বসে গোল্ডলীফের সাথে কথোপোকথন চলছে ওর ।
আবার ফোন আসে তন্বীর ,
অনিক তুলে নেয় ।
হ্যাঁ বলো ?
তুমি কোথায় অনিক ?
একটু বাসায় আসোনা ?
একটু তোমার সাথে ফুটপাথ ধরে হাঁটবো ।
অনিক ফোন কেটে উঠে পড়ে ,
তন্বীকে নিয়ে ফুটপাথ টা ধরে হাঁটছে অনিক ,
নিয়ন আলোয় সব কিছু কেমন ঝাপসা লাগছে ,
যান্ত্রিক প্রাণ গুলো মুহূর্তেই পাশ কেটে চলেছে সশব্দে ।
অনিক কোথাও যেনো ডুবে আছে।
কেমন যেনো মৃত মৃত মনে হচ্ছে ওকে ।
এই কী হয়েছে ?
প্রশ্ন করে তন্নী !
কিছুনা ।
নির্লিপ্ততায় জবাব দেয় অনিক !
তাহলে চুপ যে ?
আমাদের একটা বাবু হবে আর তুমি কিনা এমন চুপ ?
তোমার তো খুশি থাকার কথা ।
আর তুমি কিনা !
এমন মন মরা কেনো ?
হুম ?
অনিক কী বলবে ভেবে পায়না ।
আমাদের একটা বাবু হবে ?
না হবেনা ।
পারবোনা দেখতে আমি ওর মুখ ।
আমার বাবা হওয়ার ক্ষমতা নেই রিপোর্টে এসেছিল ।
তবে এ বাচ্চা আমার কী ?
একটা ট্রাক প্রবল বেগে ছুটছে ।
অনিক তন্বীকে ধাক্কা দেয় ।
তন্বীর হৃদপিন্ড টা পিষে যায় ।
ট্রাক ড্রাইভার আর হেল্পপার কেউ খেয়াল করেনি তন্বী কিভাবে ট্রাকের চাকায় আসলো ।
লাশকাটা ঘরে তন্বীকে নেয়া হয় ।
রিপোর্টে একটা অনকাঙ্খিত সত্য বেরিয়ে আসে আর তা হলো
"তন্বী অন্তসত্বা ছিলনা ।"
এ ঘটনার পর কেটে গিয়েছে দু বছর ,
অনিকের ঘুম নেই ,
খাওয়া নেই ,
কারো সাথে কথা নেই ,
প্রিয় ফুটপাথ টা ধরে হাঁটাও হয়না আর ।
ফুটপাথ ধরে হাটলে মনে হয় ট্রাক গুলো তেড়ে আসছে ওর দিকে ,
তন্বীর হয়ে প্রতিশোধ নিতে চাইছে।
তাই অনিক আর রাস্তায় বেরুতে পারেনা ।
মারাত্মক এই ভীতিরোগ টার কাছে হার মানে সে ।
তন্বীর কবর টার কাছেই এখন বেশীর সময় পড়ে থাকা হয় ।
যদি কখোনো তন্বী ওখান থেকে ভেসে আসে ,
আর যদি একটু মুচকি হেসে বলে
"যাও ক্ষমা করেছি তোমায়।"
http://www.facebook.com/aminasimulahsan
২৬ শে এপ্রিল, ২০১৪ বিকাল ৫:২৫
আহসানের ব্লগ বলেছেন: ধন্যবাদ রুদ্রাক্ষী
২| ২৬ শে এপ্রিল, ২০১৪ ভোর ৪:০৬
সাদা আকাশ বলেছেন: ঠান্ডা মাথায় খুন করার একটা গল্প। ভুল বললে কম হয়ে যাবে।
২৬ শে এপ্রিল, ২০১৪ বিকাল ৫:২৬
আহসানের ব্লগ বলেছেন: হুম অনেকটা তাই ,
তবে ভাইয়া সে ভুল বুঝেই ঠান্ডা মাথায় খুন টা করে ।
©somewhere in net ltd.
১| ২৬ শে এপ্রিল, ২০১৪ রাত ১:৫১
রুদ্রাক্ষী বলেছেন: ভালো লাগলো।