নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
পৃথিবীর বুকে এক টুকরো গোলাপ অবশিষ্ট থাকা অব্দি ভালবাসা রয়ে যাবে কি? নাকি তারও আগে বিলুপ্ত হবে প্রেম!
তখন আমি ক্লাস টেনে পড়ি , ঘটনা টা ২য় বার যখন আমি একাই ঢাকা থেকে চিটাগং আসছিলাম । আমি আমার কামরা খুঁজে নিলাম , সিট খুঁজে বসে পড়লাম । হাতে ছিল একটি সদ্য কেনা ওয়ার্ল্ড ম্যাপ , আর ব্যাগ ভর্তি বই আর জামা কাপড় । তো বুঝতেই পারছেন হিমশিম খাচ্ছিলাম এগুলো সামলাতে । আমার পাশের সিটে এক মধ্য বয়স্ক ভদ্রলোক বসেছিলেন ।
আলাপ আলোচনায় ওনার সাথে পরিচিত হতে থাকি । ভদ্রলোক ত্রিশ হাজার স্যালারীর একটা সরকারি চাকরী করেন । সম্ভবত প্রথম শ্রেণীর কর্মকর্তা । নাহলে সে আমলে ত্রিশ হাজার বেতন হওয়ার কথা না । প্রথম কথোপকথন ভদ্রলোকই শুরু করেন ।
ভদ্রলোকঃ তোমার হাতে লম্বা ওটা কী ?
আমিঃ ওয়াল ক্লথ ।
ভদ্রলোকঃ উহু , ওটা ওয়ার্ল্ড ম্যাপ । তুমি ভুল বলেছো । আচ্ছা চলো আমরা বগীর মাঝা মাঝি বসি । মাঝে সামনা সামনি চারটা সিট ই খালি । আর কেউ তো উঠবেনা । ওখানে জমিয়ে আড্ডা দেয়া যাবে । আর আমাদের সিট তো একদম সামনে পড়েছে এখানে দরজা খোলার আওয়াজ বিরক্তিকর । কী বলো যাবে মাঝের দিকে ।
আমিঃ হুম । কেন নয় ?
ওখানের গ্লাস টাও বড় । বাইরের দিক টা দেখতে ভালই লাগবে । চলুন যাওয়া যাক ।
ভদ্রলোকঃ তোমার হাতের ওয়ার্ল্ড ম্যাপ টা দাও তো । পুরো পৃথিবী ঘুরেছি সরকারি কাজে , আজ একটু স্মৃতিচারণ করে নিই ।
তারপর অনেক্ষণ ভদ্রলোক আমাকে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ সম্বন্ধে ধারণা দিলেন । তার বিভিন্ন দেশে যাওয়া আসার অভিজ্ঞতা শেয়ার করলেন । আমার পরিবারে কে আছেন কজন আছেন , সব ব্যপারে খোঁজ নিলেন । আমি কেন যেন ভয় পাচ্ছিলাম ।
আমি তখন ক্লাস সিক্সে পড়ি , বয়স আর আট দশটা ছেলের মতই হবে যারা সিক্সে পড়ে । আমাদের এলাকা টা ছিল শান্তিপ্রিয় । আমরা যে দোকান থেকে বাকি নিতাম সে দোকানে একটা ছেলে বসতো । আমি তখন অতকিছু বুঝতাম না । সে আমাকে খুব স্নেহ করতো । আমাকে চকলেট , চিপস , পেপসি এসবের প্রলোভনে মাতিয়ে রাখতো । একদিন সে আমাকে তার বাসায় দাওয়াত দিল । আমি সরল মনে গেলাম । যাওয়ার পর কেন যেন আমার মনে খটকা লাগলো ,
তার আচার আচরণ আমার কাছে বেখাপ্পা ঠেকছিল । আমি পুরো ব্যপার টা এখানে প্রকাশ করতে পারবোনা , কারণ আমারও লজ্জ্বা আছে । এ সমাজে মেয়েদের চেয়ে ছেলেরা কম নিপিড়িত হয়না কিন্তু তা প্রকাশ করতে গেলেই আমাদের এই সমাজ হাসি তামাসা করা শুরু করে । আমি সেই ছেলেটির কুপ্রস্তাব এবং প্রলোভন পাওয়া সত্তেও নিজ গুণে নিজ বুদ্ধিতে সেখান থেকে পালাতে সক্ষম হই । এখন আমার তৎকালীন অবস্থা জেনে আমরা হয়তো ঠাট্টা করতে পারেন , কিন্তু আপনাদের সতর্ক করছি আপনাদের সন্তান কে কখন কোথায় কেমন আচরণ করে তা খেয়াল রাখা আপনার দায়িত্ব ।
এবার আসি সেই ট্রেণ ভ্রমণের কথায় । ভদ্রলোকের কথায় মুগ্ধ হচ্ছিলাম । ভদ্রলোক আমাকে সব সময় এটা মনে করাচ্ছিলেন আমি প্রেম করি কিনা ? আমার খালতো বোনদের নিয়ে আমি কোনো কাম অনুভব করি নাকি ?
আমি সব কটার উত্তরে সবিনয়ে না বললাম । বিব্রত বোধ করছিলাম খানিকটা । অতঃপর ভদ্র লোক আমার বুকে হাত বোঝালেন আমার কী কখনো আমার খালতো বোনদের বুকে হাত দেয়ার ইচ্ছে হয়নি ?
আমি অতঃপর সবিনয়ে না বললাম ।
কিন্তু ভদ্রলোকের আমার বুকে হাত দেয়ার ব্যাপারে টি আমার ভাল লাগেনি । যাই হউক , আমি ভদ্রলোক কে জিগ্যেস করলাম আপনি বিয়ে করেছেন ?
উত্তরে ভদ্রলোক বললেন সারা জীবন লেখাপড়া করতে করতে আর দেশের কুটনৈতিক কাজে এ দেশ থেকে ওদেশে ঘুরতে ঘুরতে বিয়ের বয়স যে পার হয়ে গেল তা টের পাইনি ।
আর এখন আমার শরীর মধ্যবয়সী । কিন্তু মনতো তরুণ , তারপরেও এ বয়সে তো আর তরুণীও পাবোনা তো আর কী করার , একা থাকাই শ্রেয় ।
কী বললেন আপনি এটা ? আমাদের সমাজে তো চাইলে আপনি ক্লাস এইটের মেয়ে বিয়ে করতে পারেন । আর সতের আঠারো পারবেন না কেন ?
আরেহ বলোনা , কোনো DU অথবা CU এর মেয়ে কী পাবো আমি এ বয়সে ? আমার জীবন সঙ্গী এমন একজন হবে যে আমার সাথে সব বিষয়ে কথা বলার যোগ্যতা রাখবে ।
এ বয়সে আমি অল্প বয়সী শিক্ষিতা মেয়ে পাবো কোথায় বাবু ?
আমি ভাবলাম ভদ্র লোকের কথায় যুক্তি আছে ।
টিটি এসে জানান দিল আমাদের টিকিট শো করতে হবে । টিটি আমাকে কিছু বললেন না । টিকিট চেক করে চলে গেলেন , কিছুক্ষণ পর টিটির সাথে থাকা রেল পুলিশ একা আমার সামনে হাজির । আর বললেন আপনি তো শোভোন শ্রেণীর নন এসির , আপনি প্রথম শ্রেণীতে ভুলে এসেছেন মনে হয় । যাই হউক আমাকে ৫০ টা টাকা দিন আমি আর কোনো সমস্যা করবোনা ।
আমি আর কথা না বাড়িয়ে দিয়ে দিলাম টাকাটা ।
ভদ্রলোক আমাকে তার নাম্বার দিলেন । আমি যেন চিটাগং পৌঁছে ফোন দেই । ভদ্রলোক আমাকে তার ছেলের মত দেখতে চাইলেন । নিজের বাচ্চা কাচ্চা নেই তাই আমাকে কিছু সময় সংগ দেয়ার অনুরোধ করলেন ।
যথাসময় স্টেষণে ট্রেণ দাড়ালো । আমি ক্লাস সিক্সের সেই ঘটনার কথা মনে করে ভয় পেলাম । সিদ্ধান্ত নিলাম কখনো ফোন দেবনা ভদ্রোলোক কে।
একজন কুলি খুঁজে পেলাম । ত্রিশ মিটার দূরত্বে কুলি কে নিয়ে যাই সিএনজি পর্যন্ত । কুলি ২০ টাকার ন্যায্য হিসাব বাদ ৫০ টাকা চেয়ে বসে থাকলেন ।
আমি অবশ্য ২০ টাকার বেশি দেইনি । যাই হউক একটু পর আবার ভদ্রলোকের সাথে দেখা হলো । শেষ বিদায় নিয়ে চলে আসলাম ।
০৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ২:১৮
আহসানের ব্লগ বলেছেন: আমি একবারই লিখকলাম । কেন এমন হলো তা বুঝলাম না । ধন্যবাদ ভাইয়া সতর্ক করে দেয়ার জন্য ।
২| ০৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ২:১৩
কাউন্টার নিশাচর বলেছেন: এটা ভয়াবহ দিন হয় ক্যামনে? কাহিনীর আগামাথা কিছু নাই
০৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ২:২১
আহসানের ব্লগ বলেছেন: ক্লাস সিক্সের সেই দিনটা ।
৩| ০৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ২:৪১
তাহসিনুল ইসলাম বলেছেন: হুম --
০৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ২:৪২
আহসানের ব্লগ বলেছেন: পাঠে ধন্যবাদ ভাইয়া ।
৪| ০৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৪:২৮
হাসান মাহবুব বলেছেন: এসব ব্যাপারে প্রথম শিক্ষা এবং সচেতনতা বাবা-মায়ের কাছ থেকেই আসা উচিত। ছোটবেলায় যৌন নিপীড়ন একটা স্থায়ী ছাপ ফেলে শিশু মনে। বড় হবার পরেও তার রেশ কাটতে অনেক সময় লাগতে পারে।
০৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৪:৪৩
আহসানের ব্লগ বলেছেন: কিন্তু আমাদের দেশের মা বাবারা মনে করেন এসব বৈদেশিল কাহিনী আমাদের দেশে নেই ।
৫| ০৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:০৮
কল্লোল পথিক বলেছেন: পড়লাাম ভাই।
০৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ৮:৫৪
আহসানের ব্লগ বলেছেন: পাঠে ধন্যবাদ রইলো ভাইয়া ।
৬| ০৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:০৮
সুমন কর বলেছেন: মূল লেখাটির বিষয় কিন্তু এইটি, আপনাদের সন্তান কে কখন কোথায় কেমন আচরণ করে তা খেয়াল রাখা আপনার দায়িত্ব ।
লেখায় সহমত।
০৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ৮:৫৪
আহসানের ব্লগ বলেছেন: অনেক টা তাই ভাইয়া ।
৭| ১০ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ৮:৫০
প্রামানিক বলেছেন: সুন্দর লেখা। ধন্যবাদ
১০ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ৮:৫৭
আহসানের ব্লগ বলেছেন:
৮| ১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৫:৩৩
বিজন রয় বলেছেন: ভাল লাগল।
++
১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:২৯
আহসানের ব্লগ বলেছেন: ধন্যবাদ ভাইয়া
৯| ১৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সকাল ৮:১৫
রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: বিষয়টা বিব্রতকর; কিন্তু অহরহই এমন ঘটছে ।
১৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ২:৪৯
আহসানের ব্লগ বলেছেন: পাঠে এবং মন্তব্যে ধন্যবাদ ভাইয়া ।
১০| ১৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৪:৩৫
দিশেহারা রাজপুত্র বলেছেন: এই ব্যাপারে বাবা মা কেই সচেতন হতে হবে। সন্তানের প্রতিটি বিষয়েই খেয়াল রাখা উচিত। ছেলেবেলার ছোট্ট এই ঘটনাগুলোর প্রভাব ভয়ানক হতেই পারে। খুব প্রয়োজনীয় একটা বিষয়। শেয়ারের জন্য ধন্যবাদ।
১৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৫:২২
আহসানের ব্লগ বলেছেন: ধন্যবাদ দিশেহারা ভাইয়া সহমত আপনার মন্তব্যে ।
১১| ০২ রা মার্চ, ২০১৬ সকাল ৮:৫৪
সারাফাত রাজ বলেছেন: যাক আপনি সামলাতে পেরেছেন। কিন্তু ছোট ছেলে শিশুরা যারা এই অত্যাচারের শিকার হয় তারা সারাজীবন বিকৃতিতে ভোগে।
০২ রা মার্চ, ২০১৬ রাত ৯:২৯
আহসানের ব্লগ বলেছেন: তাদের কাছে এ সমাজ অর্থহীন হয়ে পড়ে ।
©somewhere in net ltd.
১| ০৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ২:১৩
তার আর পর নেই… বলেছেন: লেখাটা দুবার চলে আসছে, ঘটনা দুটো দুঃখজনক!
কিন্তু এ থেকে শেখার আছে, এমন যে কারো ক্ষেত্রে ঘটতে পারে। সচেতন থাকতে হবে অন্যদের ক্ষেত্রে।