নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

পৃথিবীর বুকে এক টুকরো গোলাপ অবশিষ্ট থাকা অব্দি ভালবাসা রয়ে যাবে কি? নাকি তারও আগে বিলুপ্ত হবে প্রেম!

আহসানের ব্লগ

পৃথিবীর বুকে এক টুকরো গোলাপ অবশিষ্ট থাকা অব্দি ভালবাসা রয়ে যাবে কি? নাকি তারও আগে বিলুপ্ত হবে প্রেম!

আহসানের ব্লগ › বিস্তারিত পোস্টঃ

আমার কলিগ ও সিগারেট বিড়ি সাথে অর্থনৈতিক বাস্তবতা

০৫ ই জুলাই, ২০২১ রাত ৮:৪১

অফিসের কাজের ফাঁকে কিছু সময় নিয়ে বাইরে না গেলে টিকে থাকা অনেক কষ্টকর হয়ে পড়ে, একটা সিগারেটের জন্য বুক টা খা খা করে। পানির তৃষ্ণা পেলেও মনে হয় না এতো খারাপ লাগে। যদিও পানির তৃষ্ণা পাওয়ার মত অবস্থা কখনোই হয়নি, তাই হয়তো ভুল বকছি । ১০ টার দিকে বাইরে গিয়ে এক কাপ চা আর তাজা হাওয়া গায়ে না লাগালে নিজেকে খুবই অবসাদ গ্রস্থ মনে হয়। আর সেই সাথে একটা সিগারেট না হলে তো হৃদয় জ্বলে পুড়ে ছাই হয়ে যায়। এই বদ অভ্যাস গুলো ঠিক কখন থেকে হয়েছে ঠিক মনে করতে পারছি হয়তো। আচ্ছা ইতিহাস রচনাটা একটু পরেই না হয় করি । আগে আমার কলিগের ব্যপারে বলে নেই।

আমার কলিগ আমার পাশের ডেস্কেই বসে। যেখানে আমি দিনে ৩ বার না বের হলে কলিজায় কামড়ে ধরে সেখানে আমার কলিগ বছরে একবার বের হয় কিনা সন্দেহ আছে। সে সিগারেট সেবন করে না, বাইরের চা খায় না, আমাদের মত পুরি সিংগারা খায় না। আমি মাঝে মাঝে ভাবি এভাবেও বেঁচে থাকা যায় কিনা!
কিন্তু আমার বাস্তবিক অবস্থা আমাকেও তার মতন হতে শেখায়, কিন্তু বাস্তবে প্রয়োগ করতে পারিনা। একটা সিগারেট ১১ টাকা, চা ৬ টাকা, সব মিলিয়ে দিনে এক দেড়শ টাকা তো এখানেই চলে যায়। কিন্তু নিজেকে মাঝে মাঝে অনেক কন্ট্রোল করার চেষ্টা করি, পারিনা । আসলে সম্ভব না। আসুন এবার আমার সিগারেটে আসক্তির ইতিহাস টা বলি।

আমি তখন ২য় শ্রেণীতে পড়ি, খুবই ইচ্ছে হলো মানুষ এসব কি খায়, কেন খায়! কেনই বা ছোটোরা খেতে পারবেনা? আচ্ছা একটু চেষ্টা করে দেখি। যেই ভাবা সেই কাজ- নানার সিগারেটের প্যাকেট আর নানীর রান্না ঘর থেকে দেয়াশলাই বক্স টা নিয়ে নির্জনের বিলের ধারে গিয়ে ধরালাম একটা সিগারেট।

কিন্তু দেখে ফেলে বিলের পাশের বাড়ির শামিম আর তার বোন। শামিম পরে আমার বন্ধু হয় সেই গল্পে পরে অন্য সময়। শামিমের বোন সম্ভবত পরে আমার আব্বুকে বলেছে আর নয়তো আমার মুখ থেকে আব্বু গন্ধ পেয়েছে। আব্বু সাবধান বাণী দিলেন "আর কোনোদিন যদি এমন করি তাহলে আমাকে গলা টিপে মেরে ফেলবেন"। এরপরে আর সাহস করিনি কয়েক বছর। ক্লাস নাইনের আমি আর একটা ছেলে রাতের ৮ টা বাজে নির্জন ঝিলের ধারে বসে সানমুন নামের একটা সিগারেট ধরাতাম । তখনো সিগারেট বুকে টেনে নেয়া শিখিনি। এরও আরও ২ থেকে ৩ বছর পরে আমি আমার বন্ধু শুভ এবং তার বন্ধু রাব্বী, তিন জনে মিলে একটা পরিত্যক্ত ঘরে সিগারেট সেবন শিখেছিলাম। তখনো নেভী সিগারেট ই প্রাধান্য পেত।

মূলত দশম শ্রেণীতেই হাতেখড়ি আমার সিগারেটে। তারপরে শহর পাল্টালে আমি সিগারেট টা এবার থামিয়ে দেই। কিন্তু নতুন শহরে আমি একা হয়ে পড়ি। সন্ধ্যায় হাটতে বের হলে এটাই একমাত্র বন্ধু ছিলো। এভাবে ধীরে ধীরে আসক্তি আর আসক্তি থেকে দিনে ১ প্যাকেট আর কখনো ২ প্যাকেট।

পাঠক নিশ্চয়ই আপনার মনে প্রশ্ন জাগতে পারে কেন সিগারেট ছাড়ার চেষ্টা করছিনা?
প্রায় প্রতিদিন ই এই চেষ্টা আমার চলমান, অনেক যুদ্ধ করি ধুমপান ছাড়ার জন্য কিন্তু সম্ভব হয় না।

তার কারণ গুলো নিম্ন রুপ;

১. বাংলাদেশে মুদির দোকান থেকেও বিড়ি সিগারেটের দোকান বেশী, আপনি চাইলেও পারবেন না, কারণ প্রতি ১০০ ফুট দূরে দূরেই সিগারেটের দোকান গুলো আপনাকে হাতছানি দেবে।
২. পাবলিক প্লেসে ধুমপান রুখে দেয়ার কেউ নেই। আপনি ধুমপান ছেড়ে দেবেন, কিন্তু যেখানেই যাচ্ছেন আর দেখছেন মানুষ ধুমপান করেই চলেছে, এমন অবস্থায় ধুমপান ছেড়ে দেয়া কি সম্ভব?
সরকারের করনীয়ঃ
সরকার সিগারেটের প্রতি ততদিন নমনীয় থাকবে যতদিন না আমাদের বাজেটের একটা অংশ আর সিগারেটের থেকে প্রাপ্ত ট্যাক্সের ওপর নির্ভরশীল থাকবে না। কিন্তু মানুষের অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য সিগারেটের প্রতি কঠোর হওয়া টাও প্রয়োজন। আমি কিছু পয়েন্ট তুলে ধরলাম সরকারের করনীয় কি থাকতে পারে;
১. প্রতি ৩ কিঃমিঃ একটি মাত্র লাইসেন্স প্রাপ্ত সিগারেটের দোকান এবং স্মোকিং জোন থাকবে,
সিগারেটের দোকান যত কম থাকবে মানুষও ধীরে ধীরে আসক্তিমুক্ত হবে।
২. পাবলিক প্লেসে ধুমপানে কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।
৩. সিগারেটের প্যাকেট ভেঙ্গে বিক্রি করা যাবেনা, যে নেবে এক প্যাকেটই নিতে হবে।
৪. স্কুল, কলেজ, ভার্সিটি, কাচা বাজারের কাছা কাছি কোনো স্মোকিং জোন অথবা সিগারেটের দোকানের অনুমোদন দেয়া যাবেনা। অনুমোদন এমন স্থানে দিতে হবে যেখানে যাওয়াটা কিছুটা কষ্টকর।

আমরা জানি সরকার এসব কিছুই করবেনা। কারণ বাজেটের একটা বড় অংশ সিগারেট থেকে প্রাপ্ত ট্যাক্স। তবুও আশা রাখি একসময় অধুমপায়ী হবো।


আমার ব্যাক্তিগত ব্লগার সাইটঃ

লেখাটি বিনা অনুমতিতে কপি করবেন না প্লিজ।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ০৫ ই জুলাই, ২০২১ রাত ৯:০২

গিয়াস উদ্দিন লিটন বলেছেন: ভাল পরামর্শ দিয়েছেন।
একটা লোকের চাহিদা থাকে বা তৃপ্তি প্রাপ্ত হয় ২/৩টা সিগারেটে। বাকি ৭ থেকে ১০টা টানা হয় এমনি এমনি, খামোখা,ফাও।

২| ০৬ ই জুলাই, ২০২১ সকাল ৭:০৩

কবিতা ক্থ্য বলেছেন: আত্মপলব্ধিই সবচাইতে বড় উপলব্ধি।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.