নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

লেখালেখি

আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম

আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম › বিস্তারিত পোস্টঃ

স্মৃতিচারণঃ বন্ধুর বাড়ি

২৬ শে এপ্রিল, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:২৫

ছোট বেলায় আমি একবার হারিয়ে যাই। তখন আমার বয়স সাত আটের মতো হবে। এক অন্ধ ভিক্ষুক প্রতি রবিবার আমাদের বাড়িতে ভিক্ষা করতে আসতো। আমার বয়সী একটি ছেলে ছিল তার। ছেলেটি তার বাবার লাঠি ধরে পথ দেখিয়ে নিয়ে আসতো। ছেলেটির নাম জয়নাল। পঞ্চাশ বাহান্ন বছর আগের মফঃস্বল শহর। শান্ত নিরিবিলি এই শহরে তখন লোকসংখ্যা যেমন কম ছিল, তেমনি ভিক্ষুকের সংখ্যাও ছিল কম।

তো এই জয়নালের সাথে কীভাবে যে আমার বন্ধুত্ব হয়েছিল, আজ আর মনে পড়ে না। ভিক্ষুকের ছেলের সাথে উকিলের ছেলের বন্ধুত্ব! আজকের দিনে এমনটা ভাবাই অসম্ভব। কিন্তু তখনকার দিনে অস্বাভাবিক হলেও অসম্ভব ছিল না। এমন সম্পর্ক তখন কোন গুরুত্বও বহন করতো না। প্রতি রবিবার স্কুল ছুটির দিনে আমি জয়নালের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করতাম। সে তার অন্ধ বাবাকে নিয়ে বেলা দশটার মধ্যে চলে আসতো। আমার মা নগদ দু’চার আনা পয়সার সাথে দু’মুষ্টি চাল দিয়ে দিতেন। এছাড়া ওদের খেতেও দিতেন তিনি। কখনো রুটি, কখনো বাসি ভাত-তরকারি। ওরা বাপ-বেটা খুব তৃপ্তি করে খেত। আর আমি ওদের সামনে বসে বসে দেখতাম। কেন জানিনা, অসহায় ক্ষুধার্ত মানুষ পেট ভরে খাচ্ছে, এই দৃশ্য আজও আমার সবচে’ প্রিয় দৃশ্য। অভুক্ত মানুষ একমুঠো খেয়ে যখন তৃপ্তির ঢেকুর তোলে, তখন তার ঢেকুরের আওয়াজ আমার কাছে পৃথিবীর সবচে’ শ্রুতিমধুর আওয়াজ বলে মনে হয়।

এক রবিবার জয়নাল তার বাবাকে ছাড়া একাই ভিক্ষা করতে এলো। ওর বাবার জ্বর হওয়ায় আসতে পারেনি। রাতে বেঁচে যাওয়া বাসি ভাত-তরকারি খেতে দেওয়া হলো জয়নালকে। খাওয়া শেষ হলে মায়ের দেওয়া একখানা সিকি সে তার ছেঁড়া হাফ প্যান্টের পকেটে চালান করে দিয়ে আমাকে হাত ইশারায় বাইরে ডাকলো। আমাদের বাড়ির সামনে পাঁচিল ঘেরা লেবু, বাতাবি লেবু ও নারকেলের বাগান ছিল। আমি আর জয়নাল সেখানে মার্বেল খেলায় মেতে উঠলাম। খেলা শেষ হলে জয়নাল বললো, ‘আমাদের বাড়ি যাবি?’
আমি সাথে সাথে বললাম, ‘যাবো।’

মা বাড়ির ভেতর কাজে ব্যস্ত ছিলেন। আব্বা তাঁর চেম্বারে মক্কেল নিয়ে ব্যস্ত। আমার অন্যান্য ভাই বোনেরা কেউ আশেপাশে ছিল না। সবার অগোচরে বাড়ি থেকে বেরিয়ে আমরা দু’জন রওনা হলাম ওর বাড়ির দিকে। কোন্ পথে কোথায় গিয়েছিলাম, আজ আর মনে পড়ে না। শুধু এটুকু মনে পড়ে যে, রেল স্টেশন পার হয়ে হাঁটছিলাম আমরা। কখনো রেল লাইনের গা ঘেঁষে, কখনো লাইনের ওপর দিয়ে হেঁটে অনেকটা পথ পাড়ি দিতে হলো। মাঝে মাঝে বসে কিছুক্ষণ বিশ্রাম, তারপর আবার হাঁটা। জয়নালের হাঁটাহাঁটির অভ্যাস থাকায় সে তেমন ক্লান্ত হলো না। কিন্তু আমি অনভ্যাসের কারণে অতটা পথ হেঁটে একেবারে নেতিয়ে পড়লাম। ওদের বাড়িতে পৌঁছার পর আমি প্রায় কেঁদে ফেললাম। জয়নালের মা আমার অবস্থা দেখে তাড়াতাড়ি এক দলা গুড়ের সাথে টিনের গ্লাস ভর্তি ঠাণ্ডা পানি খাইয়ে আমাকে কিছুটা সুস্থ করে তুললেন।

ভিক্ষুকের বাড়িঘর। কেমন আর হবে? যতদূর মনে পড়ে, রেল লাইনের পাশে ঝুরঝুরে খড়ের চালা দেওয়া পড়ো পড়ো একখানা মাটির ঘর। ট্রেন চলার সময় পুরো ঘর থর থর করে কাঁপে। জয়নালের মা আমার পরিচয় জানার পর জয়নালের পিঠে দুম দুম করে দুটো কিল বসিয়ে দিলেন। ওর বাবা ঘরের বারান্দায় একখানা ভাঙ্গা দড়ির খাটিয়ায় শুয়ে ছিলেন। খাটিয়া থেকে নেমে লাঠি ঠুকে ঠুকে তিনি আমাদের কাছে এসে বললেন, ‘সর্বনাশ! এইডা কী করছস জয়নাল? বড়লোকের পোলারে আমগো বাড়িত্ লইয়া আইছস? উকিল সাহেব জানবার পারলে.......’
জয়নালের মা বললেন, ‘আপনের পোলার সাহস কত, দ্যাখছেন?’

আমি তাদের কারো কথাই কিছু বুঝিনা। ঐ বয়সে বোঝার কোথাও না। দীর্ঘ পথ হাঁটার কষ্ট ছাড়া আমার আর কোন কষ্ট নাই। মায়ের হাতে আর এক দফা মার খেয়েও জয়নালের লজ্জা নাই। ওদের ঘরের সামনে এক চিলতে খোলা জায়গায় আমি আর জয়নাল খেলায় মেতে উঠলাম। সাথে এসে জুটলো আশপাশ থেকে জড়ো হওয়া সমবয়সী আরও কিছু বস্তির ছেলেমেয়ে। দু’একজনের পরনে জীর্ণ শীর্ণ ফ্রক প্যান্ট ছাড়া প্রায় সবাই উদাম। শুরু হলো এক্কা দোক্কা আর কানামাছি খেলা। মাঝে মাঝে ট্রেন যাওয়ার আওয়াজ পেলে সবাই মিলে একযোগে ছুটে গিয়ে লাইনের ধারে উবু হয়ে বসে যন্ত্রদানবের সর্পিল যাত্রা দেখে আনন্দে হাততালি দেওয়া। খেলা শেষে কাছাকাছি একটা ডোবায় নেমে সবার সাথে ন্যাংটো হয়ে গোসল করা। বাঁধ ভাঙ্গা শৈশব। সেই উদ্দাম শৈশবের কথা মনে হলে আজও আমার দেহে শিহরণ জাগে।

এরপর দুপুরে মাটির বারান্দায় বসে ভাত খাওয়া। বারোমিশালি মোটা চালের সাথে খুদ কুঁড়ো মেশানো গরম ভাত, ডাল আর সজনের পাতা ভাজি। ভিক্ষুকের পক্ষে মেহমানদারি করার জন্য এই খাবারটুকু জোগান দেয়াই ছিল কষ্টকর। ঐ বয়সে না বুঝলেও আজ সেটা বুঝি। আর মনে পড়ে, ওই খাবারই আমি খুব তৃপ্তি করে খেয়েছিলাম। ক্ষুধার জ্বালায় শুধু এক মুঠো ভাতও বেহেশতী মেওয়ার মতো লাগে।

একটু বেলা বাড়ার পর জয়নালের বাবা অসুস্থ শরীরে আমাকে ও জয়নালকে নিয়ে বেরিয়ে পড়লেন। আমাকে বাড়িতে ফিরিয়ে দিয়ে আসবেন তিনি। জয়নাল ওর বাবার লাঠি ধরে সামনে সামনে হাঁটছে আর আমি ওর পাশে পাশে হাঁটছি। কিন্তু হাঁটতে হাঁটতে আমি বার বার বসে পড়তে লাগলাম। কাঁদো কাঁদো গলায় বললাম, ‘হাঁটতে পারছিনা।’ জয়নালের বাবা তার দুর্বল শরীরেই আমাকে কাঁধে তুলে নিয়ে হাঁটতে শুরু করলেন। তার ডান কাঁধে আমি, আর তার বাম হাতের লাঠি ধরে পথ দেখিয়ে নিয়ে চলেছে জয়নাল। রেল লাইনের ধার ঘেঁষে আমাকে কাঁধে নিয়ে হাঁপাতে হাঁপাতে হেঁটে চলেছেন অন্ধ মানুষটা। মাঝে মাঝে আমাকে কাঁধ থেকে নামিয়ে ওরা বাপ বেটা দু’জনে একটু বিশ্রাম নেয়। তারপর আবার হাঁটা।

এভাবে হাঁটতে হাঁটতে ঠিক সন্ধ্যের সময় পৌঁছে গেলাম আমরা। আমি হারিয়ে গেছি বলে বাড়িতে প্রচণ্ড হৈ হট্টগোল চলছে। সকাল থেকে খোঁজাখুঁজি করা হচ্ছে আমাকে। শহরের সব আত্মীয়স্বজন ও প্রতিবেশীরা জড়ো হয়েছে বাড়িতে। আব্বা ও বড় ভাইসহ অনেকেই আমাকে খুঁজতে বেরিয়েছেন। বাড়ির ভেতর মা ও অন্যান্য ভাই বোনেরা কান্নাকাটি করছে। আমাকে পাওয়া যাবে বলে সবাই তাদের আশ্বস্ত করার চেষ্টা করছে। ইতিমধ্যে ইঁদারা ঝালাইকারি লোক এনে বাড়ির ইঁদারায় নামিয়ে তন্ন তন্ন করে খোঁজা হয়েছে। দড়ি কাছি গোছ গাছ করে তারা এখন চলে যাচ্ছে।

বাড়ির বাইরে আমাকে কাঁধ থেকে নামিয়ে দিয়ে জয়নালের বাবা ঘর্মাক্ত দেহে মাটিতে বসে হাঁপাতে লাগলেন। আমি দৌড়ে বাড়ির ভেতর ঢুকতেই হৈ চৈ পড়ে গেল। মা ছুটে এসে আমাকে কোলে তুলে নিয়ে অঝোরে কাঁদতে লাগলেন।
এক ঘণ্টা পর। আব্বা ও বড় ভাই ফিরে এসেছেন। বাড়ির সামনে আমাদের নারকেল বাগানে মাটির ওপর জড়োসড়ো হয়ে বসে আছে জয়নাল ও ওর অন্ধ বাবা। হারিকেন উঁচিয়ে সবাই দেখছে ওদের। কেউ কেউ কঠিন গলায় ওদের ধমকাচ্ছে। ছোট মামা বাপ বেটা দু’জনকে থানায় দেওয়ার জন্য আব্বার সাথে পীড়াপীড়ি করছেন। প্রতিবেশীদের কেউ কেউ অতি উৎসাহে ওদের কান মুচড়ে দিচ্ছে। এসব দেখে আমার খুব কান্না পাচ্ছে। মায়ের কোলে বসে আমি ফোঁপাচ্ছি। ভেজা চোখে আমার দিকে তাকিয়ে আছে জয়নাল।
আব্বা হাত ইশারায় সবাইকে থামতে বললেন। তারপর পকেট থেকে দুটো এক টাকার নোট বের করে জয়নালের বাবার হাতে ধরিয়ে দিয়ে শান্ত গলায় বললেন, ‘তোমরা যাও।’

আমার তখন কী যে হলো কে জানে? মায়ের কোল থেকে নেমে ছুটে গিয়ে আব্বার কোলে চড়ে বসলাম। দু’হাতে আব্বার গলা জড়িয়ে ধরে জয়নালের উদ্দেশ্যে চিৎকার করে বললাম, ‘আবার তোদের বাড়ি যাবো।’
সবাই হৈ হৈ করে উঠলো। ‘সর্বনাশ! এই ছেলে বলে কী? খবর্দার, আর কখনো যাবেনা।’ চার দিক থেকে আমার ওপর শাসন গর্জন শুরু হয়ে গেল। মা আমাকে কোলে নিয়ে বাড়ির ভেতর চলে গেলেন।

সেই বন্ধুর বাড়ি আমার আর যাওয়া হয়নি। আর কখনো দেখা হয়নি জয়নালের সাথে। নির্মম নিষ্ঠুর বাস্তবতা ছিন্ন করে দিয়েছে আমাদের সম্পর্ক। জানিনা, সে বেঁচে আছে কী না। যেখানেই থাকো, ভালো থেকো বন্ধু।
*******************************************************************************************************************
রি-পোস্ট।

মন্তব্য ১৬ টি রেটিং +৭/-০

মন্তব্য (১৬) মন্তব্য লিখুন

১| ২৬ শে এপ্রিল, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:৩৮

রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: পড়লাম । মনটা কেঁদে উঠলো ।

২৬ শে এপ্রিল, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:৩৯

আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই রূপক বিধৌত সাধু।
শুভকামনা রইল।

২| ২৬ শে এপ্রিল, ২০১৬ রাত ৯:৩৭

সাঈদ এন কে বলেছেন: " নির্মম নিষ্ঠুর বাস্তবতা ছিন্ন করে দিয়েছে আমাদের সম্পর্ক। জানিনা সে বেঁচে আছে কী না। যেখানেই থাকো, ভাল থেকো বন্ধু"। প্রথমে একটু আনন্দ পেলেও শেষের এই বাক্য গুলি পড়ে আর নিজকে স্থির রাখতে পারলাম না, চোখ ঝাপসা হয়ে এল। আবারো সেই গানের কিছু অংশ বিশেষ বলছি, "ওদের পানে একটু খানি বাড়াও দয়ার হাত গুলো, গাছ তলাতে একটু সুখে--- কাটুক ওদের রাত গুলো''। আপনাকে প্রাণ ঢালা অভিনন্দন জানাই, আমাদেরকে প্রতি নিয়ত হাসি-আনন্দের মাঝে মানবতা,মহানুভবতা আর শ্রেণী বৈষম্য মুক্ত ভালবাসা শিক্ষা দেয়ার জন্য। প্রভু হে, আমার প্রিয় লিখক কে তুমি সুস্থ রেখো, বাঁচিয়ে রেখো অনেক দিন।

২৭ শে এপ্রিল, ২০১৬ দুপুর ২:৪২

আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: "ওদের পানে একটু খানি বাড়াও দয়ার হাত গুলো, গাছ তলাতে একটু সুখে--- কাটুক ওদের রাত গুলো''।

এই মানসিকতাই তো সত্যিকারের মানবতা। গল্প বা স্মৃতিচারণা শুধু বিনোদনের বিষয় নয়। এসব থেকে তোমার মতো কিছু শিখতে পারাটাও খুব জরুরী। খুব সুন্দর মন্তব্য করেছ সাঈদ। অভিনন্দন তোমাকে।

ভালো থেক। শুভকামনা রইল।

৩| ২৭ শে এপ্রিল, ২০১৬ ভোর ৬:৫৯

কালনী নদী বলেছেন: আসসালামু আলাইকুম ভাই,
সকালবেলা চোখটা ভিজে গেল আপনার সুন্দর রেখার মুধূর্যে জয়নালকে যেন চোখের সামনের চাক্যুস করলাম।
আপনি মন খারাপ করবেন, সেও আপনাকে এখনও সবচেয়ে কাছের বন্ধু ভাবে শুধু সমস্যা হচ্ছে তারও আজকে অনেক প্রতিবন্ধকতা! হয়ত সে আজ বারাক অবামা বা আর করও রুপ দরে আছে কিন্তু ঠিকই আপনাকে স্মৃতিতে হাতরাচ্ছে।
আপনি একজন আদর্শবান বন্ধু আপনার তরে নতশির হলাম। ব্যহারে কষ্ঠ পেরে ক্ষমা করে দেবেন নিজের ছেলে মনে করে।

অন্তরের অন্তস্থল থেকে ভালোবাসা জানবেন আর সবসময় সুখে থাকবেন অনেক বেশি সুখে!
জয়নালের নাম বদলে গেছে আপনার দুঃখে তার মন হুহু করে কেঁদে ওঠে, তাই সবসময় হাসবেন ভাইয়া। আপনাদের মত ভালমানুষরা কষ্ঠে থাকতে পারে না............. ++++

২৭ শে এপ্রিল, ২০১৬ বিকাল ৩:০১

আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: আপনি একজন আদর্শবান বন্ধু আপনার তরে নতশির হলাম। ব্যহারে কষ্ঠ পেরে ক্ষমা করে দেবেন নিজের ছেলে মনে করে।

প্রিয় কালনী নদী, আপনার আন্তরিক মন্তব্যে খুবই অনুপ্রাণিত হলাম। এই স্মৃতিচারণা পড়ে আপনার ভালো লেগেছে সেটা বুঝতে পারছি। কিন্তু উপরের বোল্ড করা বাক্যে 'আপনার তরে নতশির হলাম' কথাগুলো আমার জন্য নয় ভাই। নতশির হওয়া যায় শুধুমাত্র মহান আল্লাহ তা'য়ালার নিকট। অন্য কারো কাছে নয়। আমার এই কথাগুলো পড়ে দয়া করে মনে কষ্ট নিবেন না। আল্লাহ রাব্বুল আল আমিন পৃথিবীর সকল মানুষের মধ্যে দোষ গুন দিয়েছেন। আমার যে গুনের কারণে এই লেখা পড়ে আপনার এত ভালো লেগেছে, সেই গুন হয়তো সৃষ্টিকর্তা আপনাকে দেননি। কিন্তু তিনি নিশ্চয় আপনাকে এমন কোন গুন দিয়েছেন, যার ধারে কাছে যাওয়ার ক্ষমতা আমার নেই।
আপনার কোন কথায় বা ব্যবহারে আমি মোটেও কষ্ট পাইনি ভাই। সুতরাং, ক্ষমা করার প্রশ্নই উঠে না। আপনি সারাজীবন ভালো থাকুন। আল্লাহ আপনার মঙ্গল করুন। আর এই লেখায় যে হতদরিদ্র মানুষদের কথা বলেছি, এই শ্রেণীর মানুষদের প্রতি আপনার ভালোবাসা ও সহমর্মিতা যেন সারাজীবন বজায় থাকে আল্লাহর কাছে সেই প্রার্থনা করছি।
অসংখ্য ধন্যবাদ। শুভকামনা রইল।

৪| ২৭ শে এপ্রিল, ২০১৬ বিকাল ৩:১৮

কালনী নদী বলেছেন: আপনার কথার সাথে আমি বরাবরি সহমত ভাইয়া। এটা এক ধরনের সম্মান বলতে পারেন যেটা নিয়ে সহজে মানুষের মধ্যে একটু বিভ্রন্তির সৃষ্টি হয়। এই ব্যাপারটা আমারও অপছন্দের কিন্তু অন্যভাবে চিন্তা করলে পৃথিবীতে আল্লাহ তাআলা আমাদের পাঠিয়েছেন মানুষ হযে মানুষের তরে। আসলে এই ধরণের ব্যবহার এক ধরণের মানসিকতাকে জীবিত অস্থায় ভেঙ্গে দেওয়া। এখানে মানুষের আদলে আসলে আধ্যাত্বিকতাকে জায়গা দেওয়া হয়েছে। তবে এই ধরণের প্রবনতা বাড়াবাড়িতে গিয়ে পৌছে, আপনাকে আবারও ধন্যবাদ আসলেই আপনি আমাকে ছেলের মতন দেখেন তাই ব্যাপারটি দড়িয়ে দিয়েছেন। ভবিষ্যতে এমনটি আর হবে না ভাইয়া। দুয়া রাখবেন আর সবসময় সুন্দর ও সুস্থ্য থাকেন এই কামনা রইল।

২৭ শে এপ্রিল, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:১৪

আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: ধন্যবাদ কালনী নদী।

৫| ২৭ শে এপ্রিল, ২০১৬ বিকাল ৪:২৮

হাসান মাহবুব বলেছেন: দীপু নাম্বার টুয়ের কাহিনী দেখি পুরাই!

২৭ শে এপ্রিল, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:১৬

আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: দীপু নাম্বার টু কী ? এটা কী কোন ছোট গল্প?

৬| ২৭ শে এপ্রিল, ২০১৬ রাত ১০:৩৮

হাসান মাহবুব বলেছেন: উপন্যাস। মুহম্মদ জাফর ইকবালের।

২৮ শে এপ্রিল, ২০১৬ সকাল ৯:২৫

আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: সম্ভবত কিশোর উপন্যাস। আমার পড়া নাই।
ধন্যবাদ হা মা ভাই।

৭| ২৮ শে এপ্রিল, ২০১৬ সকাল ৯:৪৩

শামছুল ইসলাম বলেছেন: //কেন জানিনা, অসহায় ক্ষুধার্ত মানুষ পেট ভরে খাচ্ছে, এই দৃশ্য আজও আমার সবচে’ প্রিয় দৃশ্য। অভুক্ত মানুষ একমুঠো খেয়ে যখন তৃপ্তির ঢেকুর তোলে, তখন তার ঢেকুরের আওয়াজ আমার কাছে পৃথিবীর সবচে’ শ্রুতিমধুর আওয়াজ বলে মনে হয়।//
-- নিখাদ হৃদয়ের অনুভূতি ছাড়া নিখাদ লেখা সম্ভব না, আপনার অনুভূতির প্রতি বিনম্র সালাম।

//শুরু হলো এক্কা দোক্কা আর কানামাছি খেলা। মাঝে মাঝে ট্রেন যাওয়ার আওয়াজ পেলে সবাই মিলে একযোগে ছুটে গিয়ে লাইনের ধারে উবু হয়ে বসে যন্ত্রদানবের সর্পিল যাত্রা দেখে আনন্দে হাততালি দেওয়া। খেলা শেষে কাছাকাছি একটা ডোবায় নেমে সবার সাথে ন্যাংটো হয়ে গোসল করা। বাঁধ ভাঙ্গা শৈশব। সেই উদ্দাম শৈশবের কথা মনে হলে আজও আমার দেহে শিহরণ জাগে।// -- প্রিয় লেখক, শুধু আপনি নন, এই অধম পাঠকেরও খুব ইচ্ছে করছে সেই সময়টায় ফিরে যেতে।

//ক্ষুধার জ্বালায় শুধু এক মুঠো ভাতও বেহেশতী মেওয়ার মতো লাগে।// -- সাচ্চা উপলব্ধি ।

//রেল লাইনের ধার ঘেঁষে আমাকে কাঁধে নিয়ে হাঁপাতে হাঁপাতে হেঁটে চলেছেন অন্ধ মানুষটা।// -- কত ভাল ছিল সেই সময়ের মানুষ গুলো !!!

//আমার তখন কী যে হলো কে জানে? মায়ের কোল থেকে নেমে ছুটে গিয়ে আব্বার কোলে চড়ে বসলাম। দু’হাতে আব্বার গলা জড়িয়ে ধরে জয়নালের উদ্দেশ্যে চিৎকার করে বললাম, ‘আবার তোদের বাড়ি যাবো।’//
-- আপনার আবেদনটা (‘আবার তোদের বাড়ি যাবো।’) হৃদয় ছুঁয়ে গেল।

যদিও আর যাওয়া হয়নি, দেখা হয়নি - অসম সেই বন্ধুর সাথে, তবুও হৃদয়ের জানালায় সে উঁকি দেয় আজো।

ভাল থাকুন, সবসময় - সুন্দর স্মৃতিদের হৃদয়ে ধারণ করে , পাঠকদের মাঝে ছড়িয়ে দিয়ে।

২৮ শে এপ্রিল, ২০১৬ সকাল ৯:৫২

আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: এই লেখার সবচেয়ে সংবেদনশীল অংশগুলো চমৎকারভাবে কোট করেছেন দেখে বুঝতে পারছি, আপনি খুব মনোযোগের সাথে পুরো লেখাটা পড়েছেন। আপনি নিজে একজন উচ্চমানের লেখকই শুধু নন, একজন উচ্চমানের পাঠকও বটে। কোট করার পাশাপাশি আপনার মন্তব্যগুলোও আন্তরিকতা ও মানবিক মূল্যবোধের পরিচয় দেয়। আপনাকে অভিনন্দন।

ধন্যবাদ ভাই শামছুল ইসলাম। ভালো থাকুন। শুভকামনা রইল।

৮| ১৩ ই জুলাই, ২০১৬ বিকাল ৫:৩২

রানা আমান বলেছেন: আপনার গল্পগুলো হৃদয়ছোয়াঁ ।

১৩ ই জুলাই, ২০১৬ রাত ৯:৪০

আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই রানা আমান।

ভালো থাকবেন। শুভকামনা রইল।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.