নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি ময়মনসিংহ জেলা স্কুল থেকে ১৯৭৭ সালে এস.এস.সি এবং আনন্দ মোহন কলেজ থেকে ১৯৭৯ সালে এইচ.এস.সি পাশ করেছি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৮৪ সালে এলএল.বি (সম্মান) এবং ১৯৮৫ সালে একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এলএল.এম পাশ করি।

মোহাম্মদ আলী আকন্দ

১৯৮৭ সালে আইনজীবী হিসাবে ময়মনসিংহ বারে এবং পরে ঢাকা বারে যোগদান করি। ১৯৯২ সালে সুপ্রিম কোর্ট বারে যোগ দেই।

মোহাম্মদ আলী আকন্দ › বিস্তারিত পোস্টঃ

১৮১২ সালের যুদ্ধ - ৪থ পর্ব

১৬ ই মার্চ, ২০১৭ রাত ১১:১৯

ব্রিটিশ বাহিনী কর্তৃক হোয়াইট হাউজে অগ্নিসংযোগ

ব্লাডেন্সবার্গ যুদ্ধে আমেরিকানদের পরাজয়ের পর, মেজর জেনারেল রবার্ট রসের নেতৃত্বাধীন ব্রিটিশ বাহিনী ১৮১৪ সালের ২৪ অগাস্ট মার্কিন যুক্তরাষ্টের রাজধানী ওয়াশিংটন ডি. সি. দখল করে নেয়। তারা মার্কিন প্রেসিডেন্টের বাস ভবন হোয়াইট হাউস, ক্যাপিটাল ভবন (যেখানে কংগ্রেসের অধিবেশন বসে) সহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ সরকারি ভবনে অগ্নিসংযোক করে।

ব্লাডেন্সবার্গ যুদ্ধে পরাজয়ের পর পরই প্রেসিডেন্ট জেমস ম্যাডিসন ও সরকারের সামরিক-বেসামরিক কর্মকর্তাগণ রাজধানী ওয়াসিংটন ডিসি ত্যাগ করে চলে যান। মেরিল্যান্ড রাজ্যের মোন্টগোমেরি কাউন্টির ব্রুকভিল নামক একটা ছোট্ট শহরে তারা রাত্র যাপন করেন। বর্তমানে যা, "মার্কিন যুক্তরাষ্টের একদিনের রাজধানী" নামে খ্যাত। প্রেসিডেন্ট ম্যাডিসন, ক্যালেব বেন্টলি নামক এক ব্যক্তির বাসায় রাত্র যাপন করেন। ক্যালেব বেন্টলি পেশায় ছিলেন রৌপ্যশিল্পী, দোকানদার এবং ব্রুকভিলের প্রথম পোস্টমাস্টার। বেন্টলির ঐ বাড়িকে এখন বলা হয় ম্যাডিসন হাউস। বাড়িটি এখনো আছে।

ব্রিটিশ সৈন্যরা হোয়াইট হাউজে প্রবেশ করে দেখে প্রেসিডেন্ট, ফার্স্ট লেডি কেউই ভবনে নেই। হোয়াইট হাউজের রান্নাঘরে যে পরিত্যক্ত খাবার ছিল, তা ব্রিটিশ সৈন্যরা খায়। খাওয়া দাওয়ার পর ব্রিটিশ সৈন্যরা পুরা হোয়াইট হাউজ তছনছ করে আগুন ধরিয়ে দেয়।

হোয়াইট হাউজ হিস্টরিক্যাল সোসাইটি এবং ফার্স্ট লেডি ডলির ব্যক্তিগত চিঠি থেকে জানা যায়। ব্রিটিশ বাহিনী কর্তৃক রাজধানীতে প্রবেশের হুমকি দেয়ার পর, প্রেসিডেন্ট জেমস ম্যাডিসন যুদ্ধক্ষত্রে অবস্থিত জেনেরালদের সাথে কথা বলার জন্য ২২ অগাস্ট হোয়াইট হাউজ ত্যাগ করেন। যাওয়ার আগে তার স্ত্রী ডলির কাছে জানতে চান, আগামী দিন ফিরে আসার আগে পর্যন্ত একাএকা থাকে ভয় পাবে কিনা। তিনি তার স্ত্রীকে বলে যান, তিনি যেন রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ দলিলপত্র একত্র করে রাখেন এবং প্রস্তুত হয়ে থাকেন যাতে যে কোনো সময় হোয়াইট হাউজ ত্যাগ করতে হতে পারে।

পরদিন ডলি এবং কয়েক জন কর্মচারী দূরবীন দিয়ে লক্ষ্য রাখছিলো, ম্যাডিসন অথবা ব্রিটিশ সৈন্য কাউকে দেখা যায় কিনা। ব্রিটিশ সৈন্যরা দূরে সমবেত হচ্ছে দেখে ডলি সিদ্ধান্ত নেন হোয়াইট হাউজ ত্যাগ করার। তিনি যাওয়ার সময় সাথে নেন তার ব্যক্তিগত ব্যবহারের জন্য কিছু কাপড়জামা আর সাথে নেন প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট জর্জ ওয়াশিংটনের পূর্ণ দৈর্ঘ তৈলচিত্রটি। তার ধারণা ছিল ব্রিটিশ সৈন্যরা ওয়াসিংটনের প্রতিকৃতিটাকে অসম্মান করবে। ডলি ২৩ অগাস্ট রাতে তার বোনকে চিঠি লেখে জানায়, ছবিটা রক্ষা করার অসুবিধার কথা। কারণ ছবিটা স্ক্রো দিয়ে দেয়ালের সাথে শক্তকরে লাগানো ছিল। তিনি কর্মচারীদের নির্দেশ দেন ছবির ফ্রেমটা ভেঙে শুধুমাত্র ক্যানভাসটা গুটিয়ে নেয়ার জন্য।

যদিও প্রেসিডেন্ট ম্যাডিসন ও তার স্ত্রী তিন দিন পরই ওয়াশিংটনে ফিরে আসতে সক্ষম হয়ে ছিলেন, কিন্তু তারা আর কখনো হোয়াইট হাউজে বসবাস করেননি। প্রেসিডেন্ট ম্যাডিসন তার শাসন কালের বাকি সময়টুকু অক্টাগণ হাউসে ছিলেন। হোয়াইট হাউজ পুনঃনির্মান করার পর, প্রেসিডেন্ট জেমস মনরো ১৮১৭ সালে আবার হোয়াইট হাউজে উঠেন।

ব্রিটিশ সৈন্যরা হোয়াইট হাউজে আগুন লাগিয়ে চলে যাওয়ার কয়েক ঘন্টা পরে হঠাৎ করে বজ্র সহ ঝড়-বৃষ্টি শুরু হয়। সম্ভবত হ্যারিকেন ঝড়। ফলে হোয়াইট হাউজের আগুন নিভে যায়। এর পর শুরু হয় প্রবল টর্নেডো। কনস্টিটিউশন এভেন্যুইতে স্থাপন করা ব্রিটিশ বাহিনীর কামানগুলিকে শূন্যে উঠিয়ে কয়েক শত গজ দূরে নিয়ে নিক্ষেপ করে। বহু ব্রিটিশ সৈন্য এই টর্নেডোতে মারা যায়, অবশ্য কিছু মার্কিন সাধারণ নাগরিকও এতে নিহত হয়। ঝড় থামার পর ব্রিটিশ সৈন্যরা তাদের জাহাজে ফিরে যায়। অবশ্য ইতোমধ্যে তাদের অনেক জাহাজ ঝড়ে বিনষ্ট হয়ে যায়। ব্রিটিশ সৈন্যরা মাত্র ২৬ ঘন্টা যুক্তরাষ্টের রাজধানী ওয়াসিংটন ডি সি দখল করে ছিল।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.