নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
১৯৮৭ সালে আইনজীবী হিসাবে ময়মনসিংহ বারে এবং পরে ঢাকা বারে যোগদান করি। ১৯৯২ সালে সুপ্রিম কোর্ট বারে যোগ দেই।
"ব্যাপক কৌশলগত সহযোগিতামূলক অংশীদারিত্ব" প্রতিষ্ঠার বিষয়ে ১১ জুলাই ২০২৪ চীন এবং বাংলাদেশ একটি যৌথ বিবৃতি প্রকাশ করেছে।
এই বিবৃতির কোন কোন অংশ শুধুমাত্র অবাস্তব না একেবারে পরাবাস্তব। কোন কোন বাস্তবতাকে একেবারে নতুনভাবে দেখার চেষ্টা করা হয়েছে। বাস্তবতা বর্জিত নেতৃবৃন্দের অবচেতন মন, স্বপ্ন, এবং কল্পনার জগতকে গুরুত্ব দিয়ে নতুন পররাষ্ট্রনীতির ধারা সৃষ্ট করার চেষ্টা করা হয়েছে। এই বিবৃতির কোন কোন কথা অদ্ভুত, অযৌক্তিক, এবং রহস্যময়, যা সাধারণ বাস্তবতার ধারণাকে চ্যালেঞ্জ করে এবং নতুন অর্থ ও অভিজ্ঞতার দিগন্ত উন্মোচিত করেছে।
এই বিবৃতির তৃতীয় দফায় বলা হয়েছে, "দুই পক্ষ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ভবিষ্যৎ উন্নয়নের জন্য একসঙ্গে পরিকল্পনা করতে এবং চীন-বাংলাদেশ সম্পর্ককে আরো নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার জন্য ২০২৫ সালে চীন-বাংলাদেশ কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার ৫০তম বার্ষিকী উদযাপনের সুযোগ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।" (The two sides decided to take the opportunity of celebrating the 50th anniversary of the establishment of China-Bangladesh diplomatic relations in 2025 to plan together for the future development of bilateral ties and take the China-Bangladesh relationship to another new height.)
চীন-বাংলাদেশ কূটনৈতিক সম্পর্ক কবে স্থাপিত হয়েছে?
বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর জাতিসংঘের সদস্য হওয়ার জন্য আবেদন করলে চীন ভেটো প্রদান করে বাংলাদেশকে সদস্য হতে বাধা দেয়। এটা ছিল চীনের প্রথম ভেটো। ১৯৭৪ সাল পর্যন্ত চীন বার বার ভেটো দিয়ে বাংলাদেশকে জাতিসংঘের সদস্য হওয়া থেকে বিরত রাখে। ফলে যুদ্ধ বিধ্বস্ত বাংলাদেশের পক্ষে জাতিসংঘের সাহায্য সহায়তা লাভ অনেক অসুবিধার সম্মুখীন হয়। চীনের স্বীকৃতি আদায়ের জন্য শেখ মুজিবুর রহমান আপ্রাণ চেষ্টা করেন, কিন্তু তিনি ব্যর্থ হন। তিনি চিনে নিযুক্ত পাকিস্তানী রাষ্ট্রদূত খাজা মোহাম্মদ কায়সার, কবি ফয়েজ আহমেদ প্রমুখের মাধ্যমেও চীনের স্বীকৃতি জন্য চেষ্টা করেন। শেষ পর্যন্ত আমেরিকা অনেক বুঝিয়ে শুনিয়ে চীনকে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ভেটো দেয়া থেকে বিরত রাখে। ফলে ১৯৭৪ সালে বাংলাদেশ জাতিসংঘের সদস্য পদ লাভ করে।
শেখ মুজিবুর রহমানেই শত চেষ্টা সত্ত্বেও এমন কি জাতিসংঘের সদস্য পদ লাভ করার পরেও চীন বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয় নাই। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট শেখ মুজিবুর রহমান নিহত হওয়ার পর চীন ৩১ আগস্ট বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয়। কেন চীন ১৫ আগস্টের ঘটনার পর বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দিল তা সবার কাছে পরিষ্কার।
১৯৭৫ সালের ৩১ আগস্ট স্বীকৃতি দিলেও চীন বাংলাদেশের সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করে ১৯৭৬ সালের জানুয়ারী মাসে। অর্থাৎ বাংলাদেশের সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের ব্যাপারেও চীনের অনীহা ছিল। তৎকালীন বাংলাদেশ সরকার অনেক দেন দরবার করে চীনের সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করতে সক্ষম হন।
আগামী বছর এই মূল্যবান কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার ৫০তম বার্ষিকী উদযাপন করার সিদ্ধান্ত যৌথ ঘোষণার মাধ্যমে জানান দেয়া হয়েছে। এটা নাকি বাংলাদেশের বাস্তববাদী কূটনীতি। এটাকে বাস্তববাদী কূটনীতি বলে না, এটা একটি পরাবাস্তব কূটনীতি।
সূত্র:
১. Ministry of Foreign Affairs of the Peoples' Republic of Chian
https://www.fmprc.gov.cn/eng/wjdt_665385/wshd_665389/202407/t20240711_11451960.html
২.China's First U. N. Veto Bars Bangladesh
The New York Times; August 26, 1972
https://www.nytimes.com/1972/08/26/archives/chinas-first-un-veto-bars-bangladesh-soviet-union-and-india-are.html
৩. UNITED NATIONS: China’s First Veto
Time, September 4, 1972
https://time.com/archive/6844248/united-nations-chinas-first-veto/
৪. International Affairs Review
https://internationalaffairsreview.com/2020/08/21/should-china-apologize-to-bangladesh/
©somewhere in net ltd.