![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
১৯৮৩ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি রচিত হয়েছিল স্বাধীনতা উত্তরকালে উত্তাল তারুণ্যের এক অগ্নিঝরা দিন। সেদিন এদেশের ছাত্র সমাজ কুখ্যাত মজিদ খানের অগণতান্ত্রিক শিক্ষানীতি বাতিলের দাবিতে প্রাণ দিয়েছিলো জাফর, জয়নাল, কাঞ্চন, দ্বীপালি সাহা, মোজাম্মেল, সেলিম সহ আরো অনেক তাজা প্রাণ। বাংলাদেশের ইতিহাসে এই গৌরবময় দিনটি যেখানে হতে পারত গণতান্ত্রিক সংগ্রামকে সমুন্নত করা, বৈষম্যের শিক্ষানীতিকে রুখে দেবার প্রেরণা। ১৯৮২ সালের ২৪ মার্চ জেনারেল এরশাদ এক সামরিক অভুথানের মাধ্যমে ক্ষমতাগ্রহণ করে। স্বৈরাচারি ব্যবস্থার শাসকের বর্বর চেহারা প্রকট হয়ে উঠে। সংগ্রামের মধ্য দিয়ে অর্জিত সকল গনতান্ত্রিক অধিকার হরণ করে। সব চেয়ে বেশি আক্রমণ নেমে আসে শিক্ষার উপর। কারণ মাসক শ্রেণি জানে শিক্ষা মানুষের স্বাধীন চিন্তাশক্তির বিকাশ ঘটায়, বিচার বিশ্লেষনের সক্ষমতা অর্জন করে। ন্যায়, অন্যায়ের প্রভেদ বুঝতে শেখায় সর্বোপুরি অন্যায়ের বিরুদ্ধে সংগ্রামের মানসিকতা জাগিয়ে তুলতে আত্মমর্যাদা সম্পন্য মানুষ হিসেবে বিকাশের রাস্তা প্রশস্ত করে। তাই যুগে যুগে শাসক শ্রেণি বর্বরতাকে আড়াল করতে শিক্ষার অধিকার থেকে মানুষকে বঞ্চিত করতে চেয়েছে। সামরিক শাসক এরশাদ ও সেই পদ ধরে সাধারণ ও উচ্চশিক্ষা সংকোচনের ও ব্যয় বহুল করার পরিকল্পনার কথা বলা হয়েছিল। শিক্ষার অধিকার থেকে বঞ্চিত করতে কর্মমূখী, উৎপাদনমুখী শিক্ষার উপর বিশেষভাবে গুরুত্বের কতা ছিলো। প্রথম শ্রেণি থেকে আরবি শিক্ষা বাধ্যতামূলক করা হলো। মাদ্রাসা শিক্ষার প্রসারের প্রস্তাবনা হাজির করা হলো। উদ্দেশ্যে ছিলো শিক্ষার সাম্প্রদায়িকীকরণ ঘটানো। শিক্ষার বানিজ্যিকীরন ত্বরান্বিত করতে সুপারিশ করা হলো। শিক্ষার বেতনের ৫০ ভাগ ছাত্রদের থেকে আদায় করা হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বায়ত্ত্বশাসনের অধিকারকে চেপে ধরতে বলা হলো। বিশ্ববিদ্যালয় গুলোকে ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে প্রকৃত পক্ষে রাষ্ট্রের অভ্যন্তরে রাষ্ট্রের মতই স্বায়ত্ত্বশাসন প্রদান করা হয়েছে। ফলে গবেষণা, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি গত কেন্দ্র হিবেবে সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় গুলো প্রকৃত ভুমিকা থেকে সরে গেছে। অর্থ্যাৎ, বিশ্ববিদ্যালয় গুলোকে এখন রাষ্ট্রের অধীনে চলতে হবে। স্বাভাবিকভাবেই গনবিরোধী এই শিক্ষানীতি এদেশের সংগ্রামী ছাত্রসমাজ মেনে নেয় নি। প্রতিবাদে ছড়িয়ে পড়ে। গঠিত হয় ছাত্রদের সম্মিলিত সংগঠন ছাত্রসংগ্রাম পরিষদ। ১৯৮২ সালের ২৬ মার্চ এরশাদ সরকার গঠনের দুদিনের সময় ছাত্ররা সাভারের মুক্তিযুদ্ধের শহীদের স্মৃতিস্তম্বে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পন করতে গিয়ে সামরিক স্বৈরতন্ত্র বিরোধী শ্লোগান দেয়। এর প্রেক্ষিতে সেনানিবাস থেকে সৈন্যবাহিনী ছুটে এসে ছাত্রদের উপর নির্মম নির্যাতন চালায়। ৮ নভেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে স্বৈরাচারি সরকারের বিরুদ্ধে ছাত্রদের মিছিলে পুলিশ লাঠিচার্জ করে। এর প্রতিবাদে ১৪টি ছাত্র সংগঠন মিলে গড়ে তোলে আন্দোলনের দৃঢ় শপদ নেয়। ১৪ তারিখ মুজিব খানের শিক্ষানীতি বাতিলের দাবিতে কলাভবনের সামনে বিশাল ছাত্র সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশ শেষে স্বারকলিপি প্রদানের উদ্দেশ্যে সচিবালয়ের দিকে মিছিল শুরু হয়। মিছিলটি কার্জন হল ও শিক্ষাভবনের কাছে গেলেই মাত্র পুলিশ গুলি করা শুরু করে, সাথে সাথে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে জাফর, জয়নাল, দিপালি সাহা সহ আরো ১৯ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়। গ্রেপ্তার নির্যাতনের সীমা ছাড়িয়ে যায়। ১৩৩১ জনকে গ্রেপ্তার করেছিল। ১৪ ফেব্রুয়ারি ছাত্রদের মরদেহ জানাজার জন্য অপরাজয় বাংলার পাদদেশে রাখা হলে সেখানেও পুলিশ হামলা চালায়। প্রাণহীন শহীদদের লাশ সূর্যসেন হল পর্যন্ত নিয়ে গেলে হলের গেইট ভেঙ্গে যৌথবাহিনী লাশ ছিনিয়ে নেয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-ছাত্র, কর্মচারিদের রুমে ঢুকে তাদের উপর নিপীড়ন চালায়। এখবর ছেিড়য় পড়লে পরদিন বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ এ আন্দোলনে যোগ দেয়। তীব্র আন্দোলনের মখে ১৮ ফেব্রুয়ারি প্রস্তাবিত শিক্ষানীতি বাতিল করতে বাধ্য হয় স্বৈরাচারি সামরিক সরকার। স্বৈরাচারি শিক্ষানীতি বাতিল হলেও বদলায়নি শিক্ষা সর্ম্পকিত শাসক শ্রেণির দৃষ্টিভঙ্গি। দেশ স্বাধীন হয়েছে ৪৫ বছর হলেও দেশের শিক্ষার ব্যয় ভার এখনো ছাত্র অভিভাবকদের কাঁধের উপর ভর করছে।
ভালবাসা মানে কি? ভালবাসা শুধু একদিন আনন্দ করে ফুল ও উপহার দেওয়ার নাম? ভালবাসা হচ্ছে মানুষের দুঃখ, কষ্ট ও প্রতি মহুর্ত্বের সময় পাশে থেকে সাহায্য সহযোগিতা করার নাম ভালবাসা। শুধু নির্দিষ্ট একজনকে ভালবাসা ও ভালোলাগাকে বা তাকে পাওয়ার জন্য কিছু করা ভালবাসা হতে পারে না। ১৯৫২ সালের পর ভ্যালেনটাইনস ডে বাংলাদেশে আসার পর সঙগ্রামী ইতিহাস ভুলে যাবার অবস্থা।
©somewhere in net ltd.
১|
১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৪:৪২
সালমা শারমিন বলেছেন: কেন ভাই................আমরা'তো স্বৈরাচারকেই কঠোর প্রেমিক মনে করি। আর স্বৈরাচারিকে ভাবি প্রেমিকের পাগলামি। তাই'তো বাংলার অলিগলিতে আজ শুধু স্বৈরাচারি ভালবাসা খুঁজে পাই।