![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
এখনও বলার মত তেমন কিছু অর্জন করতে পারিনি । কোন দিন যে অর্জন করতে পারব সে সম্ভবনাও নাই ।
গতকাল গতবছর সামারে আমি একটা পিকনিকে গিয়েছিলাম। সামারে এ দেশে বাঙ্গালি কমুনিউটিতে পিকনিক একটা বিরাট উৎসবের মত। খুব আয়োজন করে পিকনিক করা হয় । এখানে এলাকা ভিত্তিক পিকনিক হয় । প্রত্যেকে যার যার এলাকার পিকনিকে যায় । প্রত্যেকটা এলাকার একটা organaization আছে । তারা এই পিকনিকের আয়োজন করে থাকে। আমি যে পিকনিকে গিয়েছিলাম সেটা আমার এলাকার পিকনিক ছিল না,আমি গিয়েছিলাম একজনের মেহমান হয়ে। সেটা ছিল যশোহর জেলা কতৃক আয়োজিত ।
এই পিকনিকে আমার একজন মুক্তিযোদ্ধার সাথে দেখা হয় । যিনি হলেন আমার দেখা প্রথম মুক্তিযোদ্ধা। প্রথম বললাম এ কারনে এর আগে আমি কোন মুক্তিযোদ্ধার সাথে এরকম মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে সরাসরি কথা বলিনি।যা ছিল তা সবই বই গল্প ইতিহাস আর টেলিভিশন থেকে জানাশোনা কিংবা চোখে দেখা। ছোটবেলা থেকে মুক্তিযুদ্ধ আর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি আমার একধরনের কৌতুহল কাজ করত । কিন্তু কোনদিনই কোন সুযোগ পাইনি কোন মুক্তিযোদ্ধার সাথে ব্যক্তিগত ভাবে কথা বলার । উনার সাথে আমার তেমন কথা হয়নি,সংক্ষিপ্ত করে উনি উনার কিছু কথা আমাকে বলেছেন আর কিছু ছবি দেখিয়েছেন। আমি উনার কথাগুলি আপনাদের সাথে শেয়ার করলাম।
উনার নাম খুরশিদ আনোয়ার বাবলু। উনি ছিলেন সেক্টর ৮ এর সর্ব কনিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা। মাত্র ১৪ বছর বয়েসে উনি যুদ্ধ করেছেন। উনার মা বোন উনাকে যুদ্ধ থেকে ফিরিয়ে নিয়ে এসেছিলেন । কিন্তু উনি আবার মা বোনদের ফাঁকি দিয়ে যুদ্ধে চলে যান। ৭১ এর এপ্রিল মাসে উনাদের ক্যাম্প পাকিস্তানিরা ঘেরাও করে সবাইকে ধরে নিয়ে যায়। উনি ক্যাম্প থেকে পালিয়ে ক্যাম্পের পাশে একটা দু-তলা বাড়িতে আশ্রয় নেন। কিন্তু পাকিস্তানিরা উনাকে ঐখান থেকে ধরে ফেলে । তারপর উনাকে দু-তলা থেকে লাথি দিয়ে ফেলে দেয়। তখন উনার হাত পায়ে প্রচন্ড ব্যাথা পান আর উনার সামনের কয়েকটা দাঁত ভেঙ্গে যায়। তারপর উনিসহ ক্যাম্পের সবাইকে ধরে নিয়ে গিয়ে লাইন ধরিয়ে ব্রাশফায়ার করে সবাইকে মেরে ফেলে। ভাগ্যক্রমে উনি বেচেঁ যান। কারন ব্রাশফায়ারের আগে উনি অজ্ঞান হয়ে গিয়েছিলেন । আর ওরা ভেবেছিল সবাই মারা গেছে ।
এরপর ও উনি যুদ্ধ থেকে ফিরে আসেননি। উনি এরপর ভারতে চলে যান ট্রেনিংয়ে,দুই মাস ট্রেনিং শেষে আবার যুদ্ধে যোগ দেন। দেশ মুক্ত করে ফিরেন। স্বাধীনতার পর উনি কলেজে ভর্তি হন। ডিগ্রি পাস করে বাংলাদেশ বিমানে চাকরি করেন। ১৯৮৪ এ উনি জাপানে চলে যান। ১৯৯১ এ উনি আবার দেশে ফিরে যান। দৈনিক রানা নামক একটি পুত্রিকায় কাজ শুরু করেন। এটা একটা যশোহরের লোকাল একটা পত্রিকা। ১৯৯৭ এ দৈনিক রানার সম্পাদক সর্বহারা দলের বিপক্ষে লেখার কারনে ওদের হাতে খুন হন । তথন উনি ও ওদের আক্রমনের শিকার হয়েছিলেন। ওরা উনার বাড়িতেও আক্রমন চালিয়েছিল। এরপর ১৯৯৮ পলিটিকাল সেল্টারে স্বপরিবারে আমেরিকায় চলে আসেন। এরপর থেকে উনি এখানে আছেন।
উনাকে আমি একটা প্রশ্ন করেছিলাম, আপনি কি মূল্যয়িত হয়েছেন, কিংবা একজন মুক্তিযুদ্ধা হিসাবে কি কেউ কখনও মূল্যায়ন করেছে। উত্তরে উনি সরাসরি বললেন কখনও কোথাও কেউ মুক্তিযুদ্ধা হিসাবে মূল্যায়ন করেনি। মূল্যায়ন দূরে থাক, একটা সময়তো মুক্তিযুদ্ধা হিসাবে পরিচয় ও দিতে পারতাম না। কিছুটা দুঃখের সাথে আমাকে বললেন, আমরা যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছিলাম বলেই আজ তুমি এখানে আসতে পেরেছ। তারপর উনি কিছু উদহারন দিয়ে বোঝালেন দেশ স্বাধীন হওয়ায় কি লাভ হয়েছে। কিন্তু দেশের বর্তমান অবস্হায় উনি খুব অখুশি খুব অসন্তুষ্ট।উনি খুব আপসোসের সাথে বলেন এর জন্যে উনারা যুদ্ধ করেননি। উনারা যুদ্ধ করেছিলেন একটা সুখী সুন্দর শান্তিময় দেশ গড়ার সপ্নে,যে সপ্ন আজও সত্যি হয়নি। উনি সব শেষে বলেন- খুব খারাপ লাগে যখন দেখি রাজাকারের গাড়িতে বাংলাদেশের পতাকা লাগানো,যখন দেখি রাজাকাররা বাংলাদেশের মন্ত্রী।
১৪ ই জুন, ২০১৩ ভোর ৪:১২
মাসুম আহমদ ১৪ বলেছেন: ছবিগুলা গেল কই সেটাই আমি ভাবতাছি ---- আমার পুরা মনে আছে পোস্টের ছবি দিছিলাম
২| ২১ শে জুলাই, ২০১৪ সকাল ১১:৫৮
লিরিকস বলেছেন: তাহলে ছবি গুলো কই গেল?
২১ শে জুলাই, ২০১৪ দুপুর ১২:০৮
মাসুম আহমদ ১৪ বলেছেন: সে সময় ব্লগে একদম নতুন ছিলাম! কিভাবে ছবি আপলোড করে সেটা ভালো করে জানতাম না। তারপরেও ২ টা আপলোড করতে পেরেছিলাম! কিন্তু পরে দেখি সেই ২ টা ছবিও নাই!
ছবিগুলা আবার খুজে বের করে পো্স্টে এড করে নেয়ার চেস্টা করবো!
অনেক ধন্যবাদ আপনাকে পুরানা পোস্টে কমেন্ট করার জন্য!
©somewhere in net ltd.
১|
১৪ ই আগস্ট, ২০০৯ দুপুর ১২:০২
এইতো আমি বলেছেন: আপনার ছবিগুলো কই? লেখা ভাল লাগলো।