নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ছায়া ও আমাদের অন্ধকারে রেখে চলে যায় ।

In The End Everything Is A Gag.

আকরাম হোসেন(ইলুসিব ইলুশান)

অবস্থান মৌনতায়,.....

আকরাম হোসেন(ইলুসিব ইলুশান) › বিস্তারিত পোস্টঃ

শেষ পর্যন্ত পরে মতামত জানাবেন।

০৪ ঠা মার্চ, ২০১৫ বিকাল ৩:০৯

অন্তর-জাল

আজ সকাল থেকেই মনে মনে একটু উত্তেজনা বোধ করছিলো অনুশা।রণদীপের সাথে আজ বিকালে ডেট আছে।সাউথ সিটি মলে,বিকাল চারটেয়। মাস তিনেকের ফেসবুক বন্ধুত্ব রিকোয়েস্ট অ্যাকসেপশন, ক্যাজুয়াল হাই, হ্যালো, লাইক, কমেন্ট, চ্যাটের ধাপ পেরিয়ে এখন ভালোলাগায় এসে ঠেকেছে। রণদীপ সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার, বড় এম.এন.সি তে আছে, সেক্টর ফাইভে চাকরি করে। অনুশা ক্লাস টুয়েলভ,সায়েন্স।ইঞ্জিনিয়ার ছেলের উপর ওর ঝোঁক বেশি, কারণ এরা সহজে বিদেশে যায় আর মাইনেটাও মন্দ পায়না। রণদীপের প্রোফাইলের এই স্ট্যাটাসটাই অনুশাকে যেচে কথা বলতে বাধ্য করেছিলো।তার উপর দেখতেও খারাপ নয়। টল,ফেয়ার, হ্যান্ডসাম।বাসে করে সাউথ সিটি মলের দিকে যেতে যেতে অনুশা ভাবছিল, রণদীপের প্রপোজালটা আজকেই অ্যাকসেপট করে নেবে।ইনবক্সে পরশুদিনই ফর্মালই প্রপোজ করেছে রণদীপ।অনুশাই দেখা করতে চেয়েছে। হ্যাঁ তো বলবেই, একটু দাম বাড়ানো আর কি! বাড়ি ফিরেই রিলেশনশিপ স্ট্যাটাসটা চেঞ্জ করতে হবে।‘ইন আ রিলেশন উইথ রণদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়’!!! সৃজা, প্রতীক্ষা, সুকন্যাদের চোখ টেরিয়ে যাবে।

চলমান সিঁড়ি দিয়ে থার্ড ফ্লোরে উঠল অনুশা। ফুড কোর্টে থাকবে বলেছে রণ দীপ। সবুজ চেক শার্ট, ডেনিম জিনস...ঐ তো! অনুশার দিকে পিছন করে বসে আছে। চুলটা ঠিক করলো অনুশা। কেমন দেখাচ্ছে ওকে কে জানে? রণদীপের ভাললাগবে তো ? এমনিতে অনুশা বেশ সুন্দরী। ছিপছিপে চেহারা, লম্বাটে গড়ন, একমাথা কোঁকড়ানো চুল। সবথেকে সুন্দর ওর চোখ দুটো। মায়ায় ভরা। পাখির নীড়ের মতো উপমাটা ওর চোখ দেখেই কবি লিখেছিলেন বোধহয়। গায়ের রং একটু চাপা, তবে আজকাল এই রঙটাই ইন।অনুশা নিজের সৌন্দর্য সম্পর্কে সচেতন।চাপা গর্বও আছে, এই জন্য। আজ অনুশা কুর্তি পরবে ভেবেছিলো, রণদীপের কথাতেই টিশার্ট পরেছে।ওয়েস্টার্ন ড্রেস রণদীপ লাইক করে।

_ “ হাই----- ” অনুশা কাছে গিয়ে বলল। ছেলেটা ঘুরে তাকাতেই প্রচণ্ড ভাবে চমকে উঠল অনুশা। মুখ থেকে অজান্তেই বেরিয়ে এল

_ “ তুই!!”

রূপক হাসল – “ আমি। আর কে হবে? ”

রূপক ওদের ক্লাসমেট। পড়াশুনায় পিছনের দিকে। আর্টস নিয়ে পড়ে। অসংখ্যবার অনুশাকে প্রপোজ করেছে।অনুশা- ও অসংখ্যবার ভদ্র,অভদ্র দুইভাবেই রিফিউজ করেছে। রূপক খুব হ্যান্ডসাম। ক্লাসের মেয়েরা বলে ও অনুশাকে সত্যি ভালোবাসে। বাসুক---- আর্টস? ইয়াক! হোপলেস।

_ “ তুই এখানে কি করছিস? ” অনুশা রেগে আগুন!

_ “ তোর জন্য ওয়েট করছি। ” ব্যাঙ্গের হাসি হাসল রূপক।

_ “ আমি তোর সাথে দেখা করতে আসিনি। ”

_ “ জানি, রণদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাথে দেখা করতে এসেছিস। সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার। সেক্টর ফাইভে আছে। মিস রায়চৌধুরী ওটা রূপক চক্রবর্তীর ফেক প্রোফাইল। ঐ নামে কেউ নেই। ”

_ “ মানে? ইয়ার্কি করছিস নাকি? ”

রূপক উঠে দাঁড়াল- “ না তো। এই দ্যাখ না, আমি-ই তোর সাথে দিনের পর দিন চ্যাট করেছি অন্য নামে। অথচ তুই বুঝিসই নি। এই তুই সায়েন্স পড়িস? এই তোর ইন্টেলিজেন্স !! ”

অনুশার চোখে জল চলে এসেছিল। শয়তান ছেলেটা এভাবে ঠকাল ওকে? আর ও নিজে এত বড় গাধা!

-“ অনুশা, ভালোবাসায় সায়েন্স, আর্টস, ইঞ্জিনিয়ার, বেকার---- ট্যাগগুলো ম্যাটার করে না। মনটা ম্যাটার করে। রণদীপ হয়ে এই অধমই কিন্তু তোর মনটাকে ছুঁয়ে গেছে, একটু হলেও। পাবলিক প্লেস----কাঁদিস না---বস---কফি বলি?”

অনুশার বিস্ময় সীমা ছাড়াল। ছেলেটা কি? ওকে এত বড় অপমান করে হেসে কফি খেতে বলছে! চড় মারতে ইচ্ছা করছে এখন ওর----অথচ---

কফি শেষ করে বাড়ি ফিরল অনুশা। কেমিস্ট্রি টিউশনটা কামাই করেছে। মাকে বলেছে শরীর ভালো নেই। নিজের ঘরে শুয়ে অভ্যাসবশতই ফেসবুকটা খুলল। এ কি! রণদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় তো ওর ফ্রেন্ড লিস্টেই আর নেই। তার জায়গায় একটা নতুন নাম জুড়েছে। রূপক চক্রবর্তী। ইনবক্সে মেসেজ ও এসেছে একটা, “ বাড়ি ফিরলে জানাস। ”

ব্লক করবে ভাবল অনুশা। হাতটা আটকে গেল। রিপ্লাই বাটনে ক্লিক হয়ে গিয়ে উত্তর পৌঁছে গেল না চাওয়া গন্তব্যে, “ ফিরেছি।তুই? ”
#পূজা মৈত্র। :D

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.