নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

জীবন ও সমাজ নিয়ে আমার ভাবনার ভিত্তি মূলত দর্শনশাস্ত্র, বিশেষত স্টোয়িক দর্শনের ওপর গঠিত। আমি বিশ্বাস করি আত্মনিয়ন্ত্রণ, প্রজ্ঞা, এবং চারিত্রিক দৃঢ়তা একজন মানুষের প্রকৃত শক্তির উৎস। আমি একজন সেকুলার মানুষ—যে যুক্তি, মানবিকতা ও বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গিকে

প্রগতি বিশ্বাস

মুক্ত পথিক

প্রগতি বিশ্বাস › বিস্তারিত পোস্টঃ

দক্ষিণপন্থী রাজনৈতিক মতাদর্শ: নৃবৈজ্ঞানিক ও সমাজতাত্ত্বিক বিশ্লেষণ

২৫ শে জুলাই, ২০২৫ বিকাল ৩:৫২

“দক্ষিণপন্থী” (Right-wing) শব্দটির উৎপত্তি ১৭৮৯ সালের ফরাসি বিপ্লবের সময়কার সংসদীয় বিন্যাসে। তৎকালীন ফরাসি সংসদে রাজতন্ত্র ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের সমর্থকরা সভার ডান পাশে এবং বিপ্লবপন্থীরা বাম পাশে বসতেন। এই ভৌগোলিক বিন্যাস থেকেই “ডান-বাম” রাজনৈতিক দ্বৈততার প্রাতিষ্ঠানিক ভিত্তি গড়ে ওঠে, যা আজও রাজনৈতিক আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু।


দক্ষিণপন্থী মতাদর্শ কয়েকটি মূল নীতির ওপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছে। ধর্মকে সামাজিক শৃঙ্খলা ও নৈতিকতার ভিত্তি হিসেবে বিবেচনা করা হয়। উদাহরণস্বরূপ, ইসলামী রাষ্ট্রব্যবস্থা, হিন্দুত্ববাদ বা খ্রিস্টীয় মূল্যবোধভিত্তিক নীতি এই ধারার প্রকাশ। জাতিগত পরিচয়, সীমান্ত নিরাপত্তা এবং স্থানীয় সংস্কৃতির শ্রেষ্ঠত্বে গভীর বিশ্বাস।মুক্তবাজার অর্থনীতি, কম কর নীতি রাষ্ট্রীয় হস্তক্ষেপের বিরোধিতা। উদাহরণ হিসেবে রিগ্যানমিক্স বা থ্যাচারবাদ উল্লেখযোগ্য। ঐতিহ্যবাহী পারিবারিক ও লিঙ্গভিত্তিক কাঠামোর প্রতি সমর্থন; সমকামিতা, নারীবাদ বা লিঙ্গ-উভয়ত্বের মতো বিষয়ের বিরোধিতা।

দক্ষিণপন্থী মতাদর্শ বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন রূপে প্রকাশ পায়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রিপাবলিকান পার্টি ও ব্রিটেনের কনজারভেটিভ পার্টি কর হ্রাস, অস্ত্র মালিকানার অধিকার এবং গর্ভপাত-বিরোধী নীতির মাধ্যমে দক্ষিণপন্থী আদর্শেরপ্রতিনিধিত্ব করে। ভারতের বিজেপি হিন্দুত্ববাদ ও জাতীয়তাবাদে উৎসাহী, আর তুরস্কের একে পার্টি ইসলামী রক্ষণশীলতার পক্ষে কাজ করে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে দক্ষিণপন্থা স্থানীয় সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের সাথে মিশে নিজস্ব বৈশিষ্ট্য গড়ে তুলেছে।


বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে দক্ষিণপন্থার কয়েকটি উল্লেখযোগ্য ধারা লক্ষণীয়। জামায়াতে ইসলামী শরিয়াভিত্তিক রাষ্ট্রব্যবস্থার পক্ষে এবং ধর্মীয় শিক্ষাকে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে। বিএনপির কিছু উপধারা “বাংলাদেশী জাতিসত্তা”র ধারণাকে প্রাধান্য দেয় এবং পশ্চিমা অর্থনৈতিক উদারনীতির প্রতি ঝোঁক দেখায়। ১৯৭১-এর মুক্তিযুদ্ধে ধর্মভিত্তিক দলগুলোর ভূমিকা নিয়ে বাংলাদেশে দক্ষিণপন্থা নিয়ে তীব্র আবেগঘন ও বিতর্কিত আলোচনা চলে।

এদেশে দক্ষিণপন্থী মতাদদের্শ সমালোচনার কারণ রয়েছে; যেমন সমলিঙ্গের বিবাহ, নারী অধিকার এবং জেন্ডার সমতার মতো ইস্যুতে রক্ষণশীল দৃষ্টিভঙ্গির কারণে এই মতাদর্শ প্রায়ই সমালোচনার মুখে পড়ে। মুক্তবাজার নীতির ফলে ধনী-দরিদ্রের ব্যবধান বৃদ্ধির অভিযোগ উঠে। বাংলাদেশের সংবিধানে ধর্মনিরপেক্ষতার নীতির সাথে ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক মতাদর্শের সংঘাত একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।


দক্ষিণপন্থী মতাদর্শ বিশ্বব্যাপী ও বাংলাদেশে তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এটি ঐতিহ্য, জাতীয়তাবাদ ও অর্থনৈতিক উদারনীতির মাধ্যমে সামাজিক শৃঙ্খলা ও স্থিতিশীলতার প্রতিশ্রুতি দেয়। তবে, আধুনিক বিশ্বের মানবাধিকার, সমতা ও বৈষম্যের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় এর পরিবর্তনশীলতা ও অভিযোজন ক্ষমতা গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে, এই মতাদর্শের ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে ঐতিহাসিক বিতর্ক ও সমসাময়িক চাহিদার মধ্যে ভারসাম্য স্থাপনের ওপর।

মন্তব্য ৫ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৫) মন্তব্য লিখুন

১| ২৫ শে জুলাই, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:৩২

কাঁউটাল বলেছেন: বামচিকাদের নিয়া লেখেন। বাংলাদেশের অধঃপতনের মূল কারণ বামচিকারা।

২৫ শে জুলাই, ২০২৫ রাত ৮:০৮

প্রগতি বিশ্বাস বলেছেন: মাথায় রাখলাম

২| ২৫ শে জুলাই, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:৪৪

কামাল১৮ বলেছেন: যারা পুঁজিবাদি অর্থনীতি সমর্থন করে তারা ডান পন্থি আর যারা সমাজতান্ত্রিক অর্থনীতি সমর্থন করে তারা বাম পন্থি।মোদ্দা কথা প্রগতিশীলরা বামপন্থী মৌলবাদিরা ডান পন্থি।

২৫ শে জুলাই, ২০২৫ রাত ৮:০৮

প্রগতি বিশ্বাস বলেছেন: সহজে বলতে গেলে তাই

৩| ২৬ শে জুলাই, ২০২৫ দুপুর ২:২০

রাজীব নুর বলেছেন: কোনো পন্থীই ভালো না।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.