| নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
খুব বেশি দিন না, মাত্র আশি কিংবা একশ বছরেই একটা দেশের জনসংখ্যা ২১ কোটি থেকে ১ লাখে নেমে এসেছে। দশ পনরো বছর পর আর একজনও পাওয়া যাবে না। নির্দিষ্ট ভূখণ্ড ও সার্বভৌমত্ব অটুট থাকলেও জনসংখ্যা এবং পরিণামে সরকার না থাকার কারণে দেড়শ বছর আগে এক রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মধ্য দিয়ে স্বাধীনতাপ্রাপ্ত রাষ্ট্রটি নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে। এককালে পৃথিবীর অন্যতম জনবহুল দেশটির এমন করুণ পরিণতি কোনোভাবেই কাম্য হতে পারে না। বৃদ্ধরা সেই উদ্বেগ থেকেই আজ সমবেত হয়েছে। ভুলটা ওদের পূর্বপুরুষের। কিছু ভুল ওরাও করেছে। তবে শুরুটা করেছিল ওদের বাবারা, তারও আগে দাদারা। প্রথমত, ওরা নিজেদের মধ্যে হানাহানি, বিবাদে জড়িয়ে পড়েছিল। একদিকে মতাদর্শের হানাহানি, অন্যদিকে লুটপাটের। অতি সামান্য কিছুতেও দশজনের দশটা মত। অসুবিধা অবশ্য তাতে না দশজনে দশ রকম চিন্তা করতেই পারে, সমস্যা হলো তারা কেউ কারও মত সহ্য করেনি। কেউ কারও বিশ্বাসের প্রতি ন্যূনতম সহনশীলতা দেখায়নি। চেষ্টা করেছে নিজেরটা অন্যের ওপর চাপিয়ে দিতে। পরিণামে প্রত্যেকে বিভক্ত হয়েছে তার মতের লোকজন নিয়ে। কেউ আলাদা হয়েছে পাঁচ হাজার সমর্থক নিয়ে, কেউ পাঁচজন নিয়ে। বিদ্বেষ ও বিভাজনের ভাইরাস দেশটির অক্সিজেনকে দূষিত করে পুরো জাতিকে এমনভাবে আক্রান্ত করে ফেলেছিল যে, দুপুরে সাদা ভাত খাবে নাকি খিচুড়ি, এই তর্ক থেকেও একবার এক বাড়ির পাঁচজন মানুষ তিন ভাগে ভাগ হয়ে গিয়েছিল। শুধু ভাগ হলেও না হয় কথা ছিল, এর মধ্যে দুজনের একটা দল শহরের ব্যস্ততম চার রাস্তার মোড়ে দাঁড়িয়ে একুশ দিন অকার্যকর করে দিয়েছিল শহর। আরেকবার, রোজার আরবি প্রতিশব্দের উচ্চারণ ‘সিয়াম’ হবে না ‘সায়েম’ এই বিতর্কে জড়িয়ে জাতীয় মসজিদের পঁচানব্বই জন জ্যেষ্ঠ ইমাম সাতাশি ভাগে ভাগ হয়ে গিয়েছিল। ভাগ মানে বিভাজন, বিভাজন মানে বিদ্বেষ। বিদ্বেষ থেকে অবরোধ, মারামারি, খুনোখুনি। শেষ পর্যন্ত সাতজন মুসল্লি নিহত হন মসজিদের ভেতরেই। অবশ্য নিহতদের কোন পক্ষের কয় জন তা নিয়েও দ্বিতীয় ও তৃতীয় দফায় সংঘর্ষ বাধে। দ্বিতীয় পর্যায়ে তিনজন এবং তৃতীয় পর্যায়ে পাঁচজন নিহত হন।
এই বিদ্বেষ হানাহানির মধ্যে যুক্ত হয়েছিল ধর্মানুভূতির মামলা। কেউ কাউকে সহ্য করতে না পারলে তার বিরুদ্ধে ধর্মানুভূমির মামলা ঠুকে দিত। একবার এক মাদক ব্যবসায়ী ধর্মানুভূতির মামলা ঠুকে দিয়েছিল জাতীয় ইমামের বিরুদ্ধে। ইমামের বিরুদ্ধে তার অভিযোগ ছিল, তিনি বলেছেন, "আল্লাহ নেই এটা আমি বিশ্বাস করি"! পরদিনই গ্রেফতার হলেন ইমাম। গণদাবির মুখে সাজাও হলো তার। তিনি কিছুতেই বোঝাতে পারেননি, তিনি আসলে বলেছিলেন, "আল্লাহ নেই এটা আমি বিশ্বাস করি না।" এভাবে মুখের কথা এদিকসেদিক করে শতশত মামলা হয়েছে। খুন ধর্ষণ ও অন্যান্য অপরাধের মামলা সব চাপা পড়ে গেছে ধর্মানুভূতির মামলার চাপে।
এই নানামুখী বিভাজনের সুযোগ নিয়ে তৈরি হয়েছিল সাত হাজার তিনশত পাঁচটা রাজনৈতিক দল। এর মধ্যে তিন হাজার চল্লিশটা ছিল ধর্মভিত্তিক, দুই হাজার দশটা ছিল সেক্যুলার, সাতশো বিশটা ছিল বামপন্থি। বাকি পনেরশো ত্রিশটা ছিল সুবিধাপন্থি। গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র বলে কথা! সাংবিধানিকভাবে প্রতিটা নির্বাচিত দল পাঁচ বছরের জন্য ক্ষমতায় থাকার কথা। কিন্তু বাস্তবে দেখা যেত, যে-দলই ক্ষমতায় যেত, সেই দল আর ক্ষমতা ছাড়তে চাইত না। দেশ ও জনগণকে সেবা করার প্রতিশ্রুতিতে দেশের মানুষকে জাহান্নামে পাঠিয়ে হলেও শাসনক্ষমতা টিকিয়ে রাখার সব ধরনের বন্দোবস্ত করত।
নিয়তির কী খেলা, একটা সময় আন্দোলনে, প্রতি-আন্দোলনে, বিপ্লবে, প্রতি-বিপ্লবে অবস্থা এমন হয়ে দাঁড়িয়েছিল যে, কোনো দলই তিন মাসের বেশি ক্ষমতায় টিকতে পারত না। দেশের সবচেয়ে গণতন্ত্রমনা দলটা জোরজবরদস্তি করে একবার টানা পাঁচ মাস ক্ষমতায় ছিল। বৃদ্ধদের স্মৃতিতে সেটাই সর্বোচ্চ। একদল ক্ষমতায় গেলে অন্যরা পুরো দেশ অকার্যকর করে সেই দলকে দেশছাড়া করে ছাড়ত। আবার যে দল ক্ষমতায় যেত সে দল নিজেও দেশকে অকার্যকর করে ক্ষমতা ধরে রাখার আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যেত। এবং যথারীতি তাদেরও পতন ঘটত। দ্বৈত পাসপোর্টধারী ক্ষমতাচ্যুত নেতারা পালিয়ে যেত বিদেশে। কর্মীদের জায়গা হতো কারাগারে।
বিরোধীপক্ষ, রাষ্ট্রপক্ষ কেউই দেশের, দেশের মানুষের কথা ভাবত না। ভাবত নিজেদের সুখ ও সমৃদ্ধির কথা। লুটপাট আর ক্ষমতার নেশায় নেতারা, প্রশাসক থেকে আমলারা সবাই একসঙ্গে উন্মাদ হয়ে গিয়েছিল। কথিত ছিল, অধ্যাপক থেকে সাংবাদিকরা তৈলমর্দনের ট্রেনিং নিয়ে আসত থাইল্যান্ডের পার্লার থেকে। রাজনীতিবিদ এবং রাজনৈতিক কর্মীদের মতো দ্বিধাবিভক্ত ছিল বুদ্ধিজীবীরাও। ব্যক্তিগত বিদ্বেষ চরিতার্থ করার জন্য পরস্পরের প্রতি বিষাক্ত আচরণ করত। দেশের জনগণ তখন দ্বিধাবিভক্তিকে সময়ের ট্রেন্ড হিসেবে ধরে নিয়েছিল। ভেবেছিল, যে যত হিংসা লালন করবে, বিদ্বেষ ছড়াবে, গুজব রটাবে সে তত স্মার্ট, আধুনিক; সে তত শিক্ষিত, দেশপ্রেমিক। এই নব্য আধুনিকতা ও দেশাত্মবোধের স্রোতে পাল্লা দিয়ে ভেসে গিয়েছিল কয়েকটি প্রজন্ম। শুরু হয়েছিল সাইলেন্ট জেনারেশন দিয়ে। বেবি বুমার্স জেনারেশনও যুক্ত হয়েছিল। জেনারেশন এক্স দিয়েছিল ঘি ঢেলে। জেনারেশন ওয়াই যুক্ত হয়েছিল লাল মশাল হাতে। জেনারেশন জেড বা জেন-জি চলে এসেছিল নেতৃত্বে। জেনারেশন আলফাকে নতুন করে আর কিছুই হয়নি, ওরা শুধু জাতীয় ট্রেন্ড অনুসরণ করে গেছে সর্বোচ্চ নৈতিকতা ও নিষ্ঠার সঙ্গে।
তবে কয়েকটি জেনারেশনের সম্মিলিত পরস্পরবিরোধী এই উন্মাদনার মধ্য থেকে একজন দুজন করে, এবং একটা পর্যায়ে, প্রায় প্রত্যেকে একটা ভালো সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছিল। দেশটির হাজার বছরের ইতিহাসে সর্বজন কর্র্তৃক গৃহীত সেটাই সর্বশেষ ভালো সিদ্ধান্ত ছিল। সবাই একে একে এবং পরে অবশ্য দলে দলে তাদের সন্তানদের বিদেশে পাঠিয়ে দিতে শুরু করল। প্রথমে গেল স্নাতক পাস করা শিক্ষার্থীরা, এরপর কলেজ শেষ করা ছেলেমেয়েরা। কিছুদিনের মধ্যে স্কুলপড়ুয়ারাও যুক্ত হলো সেই মিছিলে। শরণার্থীর মতো দেশ ছাড়ল ভবিষ্যৎ প্রজন্ম। প্রথম টার্গেট ছিল ইউরোপ-আমেরিকা অথবা অস্ট্রেলিয়া। সেটা না হলে উগান্ডা, ঘানা, নাইরেজিয়ার মতো দেশগুলোতেও সন্তানদের পাঠিয়ে দিয়ে স্বস্তির নিঃশ্বাস নিত বাবা-মায়েরা। গ্যাবনে প্রায় ত্রিশ হাজার ছাত্র পাঠানো হয়েছি এক বছরে, অথচ এর আগে দেশটির নামও জানত না কেউ।
সন্তান জন্ম হওয়ার পরপরই বাবা-মায়েরা ওদের মুখে তুলে দিত বিদেশি বুলি, ভিনদেশি ইতিহাস। কারণ সন্তানদের নিজ দেশের কোন্ ইতিহাসটা পড়াবে তা নিয়েও ছিল একেকটা রাজনৈতিক দলের একেক রকম ভাষ্য ও বিধিনিষেধ। যারা মাসে মাসে পাঠ্যপুস্তক পরিবর্তন করত, তারা অবশ্য নিজের সন্তানদের বিদেশে গিয়ে জন্ম দিত। তবু যে অল্প কিছু শিশু থেকে যেত পারিবারিক অক্ষমতা অথবা দেশ বদলের স্বপ্ন নিয়ে, তারা মারা পড়ত অবরোধে-আন্দোলনে, ঘাতে-অপঘাতে।
বিশ বছরের মধ্যে শিক্ষার্থীর অভাবে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো গেল বন্ধ হয়ে বেসরকারিগুলো আগে, তারপর সরকারিগুলো। ত্রিশ বছরের মধ্যে বন্ধ হয়ে গেল কলেজও। তার চেয়ে গুরুতর বিষয় হলো, কয়েক দশক পরে দেশে সন্তান জন্ম দেওয়ার মতো আর কোনো নারী-পুরুষ থাকল না। যারা থাকল তারা প্রত্যেকে বয়স্ক। বৃদ্ধ। তাদের ছেলেমেয়েরা কিংবা নাতি-নাতনিরা তখন অন্য দেশে বংশবৃদ্ধি করে যাচ্ছে। দেশে যখন বোমা ফাটত কোনো আন্দোলনে, প্রতি-আন্দোলনে, বিপ্লবে প্রতি-বিপ্লবে; শান্তিপ্রিয় বাবা-মায়েরা, দাদা-দাদিরা জানালা বন্ধ করে সন্তানদের সঙ্গে দাবা খেলত অনলাইনে। কথা বলত ভিনদেশি সুখ ও সমৃদ্ধি নিয়ে। তর্ক করত অন্য দেশের রাষ্ট্রপ্রধান আর মন্ত্রীদের নিয়ে। জ্ঞানগর্ভ আলাপ আদর্শিক বিশ্বরাজনীতি ও রাষ্ট্রব্যবস্থা নিয়ে।
তখনো তারা ভালোই ছিল। অবকাশে সন্তানদের দেখতে যেত বিদেশে, কেউ কেউ থেকেও যেত সেখানে। তখনো ভাবেনি, স্বদেশে আর কোনো প্রাণ জন্ম নেবে না নতুন করে, কেবল ঝরেই যাবে। পুরনো মানুষেরা বিদায় দেবে পুরাতন মানুষদের। মৃত্যুর একক কর্র্তৃত্বে জনশূন্য হবে দেশ। যে ভূমি নিয়ে এত এত ভূমিসন্ত্রাসী, সেই ভূমি পড়ে থাকবে মালিকবিহীন। যে দখলদারিত্বের জন্য এত হানাহানি, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি; রোগে-শোকে-একাকিত্বে অর্থহীন হয়ে যাবে সবই। যে দেশকে সেবা করার জন্য এত রক্তপাত, সে দেশে সেবা গ্রহণের জন্য আর কোনো মানুষই থাকবে না।
কিন্তু সেটা হতে দেওয়া যায় না। এখনো সময় আছে। এখনো কিছু মানুষ আছে, হোক বৃদ্ধ, জন্মদানে অক্ষম, কিন্তু নিশ্চয় সমবেত হলে একটা উপায় বের করা যাবে। হাজার বছরের সংগ্রামী ইতিহাস দিয়ে যে দেশের ভূমি গঠিত, কোটি কোটি মানুষের আত্মত্যাগে যে দেশের জমি উর্বর, সেই দেশ ধ্বংসপ্রাপ্ত হতে পারে না। কেয়ামতের আগেই এভাবে নিশ্চিহ্ন হয়ে যেতে পারে না একটি ধর্মপ্রাণ জাতি। এই চিন্তা ও সদিচ্ছা থেকে শহর এবং শহরের আশপাশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে হাজার পাঁচেক বৃদ্ধ জড় হয়েছে উদ্যানে। এদের অনেকেই একসময় রাজনৈতিক নেতা ছিল। জমায়েতের মধ্যে একান্নজন আছে সাবেক প্রধানমন্ত্রী, বিভিন্ন দলের হয়ে বিভিন্ন মেয়াদে তারা শাসন করেছে দেশটি। বিয়াল্লিশজন আছে রাষ্ট্রপতি, কেউ রাতের অন্ধকারে চেয়ারে বসেছিল, কেউ রাতের অন্ধকারে চেয়ার হারিয়েছিল। গত একশ বছরের ইতিহাসে এই প্রথম এতগুলো মানুষ নিজেদের শ্রেণি-ধর্ম-পেশা, মতাদর্শ ভুলে দেশ ও দশের কথা ভেবে যূথবদ্ধ হয়েছে। স্মরণকালের ইতিহাসে দেশ ও জনগণের কথা ভেবে এ দেশের নেতা ও বুদ্ধিজীবীরা এভাবে কখনো সম্মিলিত হয়নি। এদের সিদ্ধান্তের ওপরেই নির্ভর করছে দেশের ভবিষ্যৎ দেশটি টিকবে নাকি ব্যর্থ হতে হতে নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে।
শহরের সবচেয়ে বড় উদ্যানটি ভরে উঠেছে বৃদ্ধদের সমাবেশে। এই উদ্যান অনেক ইতিহাসের সাক্ষী। এখানে একদা দেশ গড়ে উঠেছে, এখানেই দেশ ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়েছে অনেক বার। একই উদ্যান এবার সাক্ষী হবে নতুন এক অগ্রযাত্রার, প্রেরণা হবে জাতির সম্মিলিতভাবে ঘুরে দাঁড়ানোর প্রচেষ্টার।
আলোচনা সভায় একে একে ডাকা হলো জাতির সবচেয়ে প্রাজ্ঞসর ধাতস্থ একান্ন জন নেতা ও বুদ্ধিজীবীকে। দেশ ও জাতিকে চূড়ান্তভাবে ধ্বংসপ্রাপ্ত হওয়ার হাত থেকে রক্ষা করার আলোচনাটি শুরু করবে তারা। সামনে উপবিষ্ট প্রবীণ জনতাও তাতে অংশ নিতে পারবে। দীর্ঘদিনের রীতি অনুযায়ী আলোচনার মঞ্চে একজনকে করা হবে সভাপতি। সবাই ত্যাগ ও ভালোবাসার মহিমায় উজ্জীবিত হয়ে পরস্পরের দিকে তাকাল।
কিন্তু একান্ন জনের মধ্যে কে এই ঐতিহাসিক সম্মেলনে সভাপতির চেয়ারে বসবে, তা নিয়েই সমস্যাটা বাধল।
একান্নজন তো একান্ন চিন্তার উত্তরসূরি। একদা এই বয়সী লোকদের জাতির পূর্বসূরি বলে সম্বোধন করা হতো। কিন্তু এই মুহূর্তে তারাই শেষ প্রজন্ম। মঞ্চের সবার বয়স প্রায় সমান। কোন হিসেবে কে বাড়তি গুরুত্ব পাবে, এ নিয়ে শুরু হলো হট্টগোলটা। ঐতিহাসিক পরম্পরা ও জাতীয়তাবাদী ভাবধারায় উজ্জীবিত হয়ে কেউ কাউকে ছাড় দিতে প্রস্তুত নন।
‘ছাড় তো দেওয়ায় যায়; কিন্তু কেন দেব?’ একজন মাইক্রোফোন হাতে চিৎকার করে বলল।
‘ঠিক। ঠিক। ঠিক।’ জনগণের একটা অংশ সমস্বরে চিৎকার দিয়ে প্রতিউত্তর করল।
একজন গর্বিত কণ্ঠে ঘোষণা করল, ‘আমি হব সভাপতি। আমি একদা রাষ্ট্রপতি ছিলাম। এ দেশের ভালো-মন্দ দেখার দায়িত্ব আমার।’
‘ঠিক। ঠিক। ঠিক।’ জনগণের আরেকটা অংশ হাতে লাঠি উঁচিয়ে সংহতি জানাল।
‘আমি ছিলাম সর্বশেষ গণতান্ত্রিক প্রধানমন্ত্রী। আমি হব সভাপতি কেউ মানুক আর না মানুক।’ আরেকজন হাত উঠিয়ে বলে উঠলেন।
‘ঠিক। ঠিক। ঠিক।’ জনতার মধ্য থেকে আওয়াজ উঠল।
‘আমারই হওয়া উচিত, এই মঞ্চে আমি একমাত্র নারী।’ নারীর প্রতিবাদী কণ্ঠ ধ্বনিত হলো দিগি¦দিক।
‘ঠিক। ঠিক। ঠিক।’ এবারও শোনা গেল জনসমর্থনের বজ্রধ্বনি।
কথা ছিল জনগণও জাতিগঠনের এই মহৎ আলোচনায় অংশ নেবে। নিলও যথারীতি। মঞ্চের বাহাস আরও তীব্র গতিতে, সুতীব্র স্বরে ছড়িয়ে পড়ল ময়দানে।
©somewhere in net ltd.
১|
২৭ শে নভেম্বর, ২০২৫ দুপুর ২:১৩
রাজীব নুর বলেছেন: আসলে আপনি কি বলতে চান?