নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

অাল- হেলাল ৭৩

ড.েমাহাম্মদ অাতীকু রহমান

মোহাম্মদ আতীকুর রহমান

ড.েমাহাম্মদ অাতীকু রহমান › বিস্তারিত পোস্টঃ

শবে বরাত : একটি ফযিলতপূর্ণ রাত

০১ লা মে, ২০১৮ রাত ১১:০৫



শবে বরাত বা মধ্য-শাবানের রাতের ফযিলত প্রাপ্তির প্রত্যাশায় অধিকাংশ মুসলিম দৈনন্দিন ইবাদতের বাইরে অতিরিক্ত ইবাদতে মগ্ন হয়ে থাকেন। একজন মুসলিম হিসেবে এ রাতের ফযিলত, করণীয় ও বর্জনীয় সম্পর্কে অবগত হওয়া আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। মূলত রমযান মাসের পূর্ব প্রস্তুতিমূলক শাবান মাসটি রমযানুল মুবারকের আগমনী বার্তা বহন করে মুসলিম উম্মাহর প্রাণে এক মহিমাপূর্ণ আনন্দের সঞ্চার করে। শাবান মাস †থকেই রমযান মাসের ফযিলত ও বরকত লাভের জন্য মহানবী (সা:)-এর সাথে সাহাবাগণও (রা:) নফল †রাযা, কুরআন তিলাওয়াত ও নানা ইবাদতের মাধ্যমে প্রস্তুতি গ্রহণ করতেন।
‘শবে বরাত’-এর পরিচয়
‘শব’ ফারসী শব্দ। এর অর্থ রাত বা রজনী। ‘বরাত’ শব্দটির অর্থ ভাগ্য বা †সŠভাগ্য। আরবীতে ‘বারাআত’ শব্দটির অর্থ নিস্কৃতি বা মুক্তি। সুতরাং ফার্সী ‘শবে বরাত’ অর্থ ভাগ্য রজনী আর আরবী ‘লাইলাতুল বারাআত’ অর্থ হচ্ছে নিস্কৃতি বা মুক্তির রাত। মহানবী (সা:) এ রাতটিকে ‘লাইলাতুন নিছফি মিন শাবান’ বা মধ্য শাবানের রজনী হিসেবে অভিহিত করেছেন। বাংলাভাষী মুসলিমগণের নিকট রাতটি ভাগ্য রজনী হিসেবে সুপরিচিত।
আল-কুরআনে ‘শবে বরাত’
‘শবে বরাত’ বা ‘লাইলাতুল বারাআত’ পরিভাষা পবিত্র কুরআনের †কাথাও ব্যবহৃত হয়নি। তবে কুরআনের একটি আয়াতের ব্যাখ্যায় মুফাসসিরগণ ‘শবে বরাত’ প্রসঙ্গ আলোচনা করেছেন। মহান আল্লাহ বলেন, "আমি †তা এ কিতাব নাযিল করেছি এক মুবারক (বরকতময়) রজনীতে; আমি †তা সতর্ককারী। এ রজনীতে প্রত্যেক প্রজ্ঞাপূর্ণ বিষয় স্থিরীকৃত হয়” (সূরা ৪৪ দুখান : ৩-৪)।
‘মুবারক রজনী’-র ব্যাখ্যায় কতিপয় সাহাবী ও তাবেয়ী বলেছেন †য, এ রাতটি হলো ‘লাইলাতুল কদর’ বা মহিমান্বিত রাত। সাহাবীগণের মধ্যে ইবন আব্বাস ও ইবন ওমর (রা:) এবং তাবেয়ীগণের মধ্যে আবূ আব্দুর রহমান আস-সুলামী, মুজাহিদ বিন জাব্র, হাসান বসরী প্রমুখ এ মত প্রকাশ করেছেন। শুধুমাত্র তাবেয়ী ইকরিমাহ (রা:) ‘মুবারক রজনী’ বলতে ‘মধ্য শাবান’-এর রাতকে বুঝিয়েছেন।
উল্লেখ্য, মুফাসসিরগণ ইকরিমাহ (রা:)-এর মতটি গ্রহণ করেননি। তাদের ভাষ্যমতে ‘লাইলাতুম মুবারাকাহ’ দ্বারা ‘লাইলাতুল কদর’ অর্থ †নয়াটাই অধিক যুক্তিসঙ্গত। †কননা কুরআন মাজীদের দু’ জায়গায় স্পষ্ট ও পরিষ্কার ভাষায় মহান আল্লাহ বলেছেন ঃ
১. “রমযান মাস, এতে মানুষের দিশারী এবং সৎপথের স্পষ্ট নিদর্শন ও সত্যাসত্যের পার্থক্যকারীরূপে কুরআন অবতীর্ণ হয়েছে” (সূরা ২ বাকারা : ১৮৫)।
২. “নিশ্চয় আমি কুরআন অবতীর্ণ করেছি মহিমান্বিত রজনীতে” (সূরা ৯৭ কদর : ১)।
তাই বলা যায়, আলোচ্য আয়াতে ‘মুবারক রজনী’ বলতে ‘লাইলাতুল কদর’ বা কদরের রজনীই উদ্দেশ্য। শবে বরাত উদ্দেশ্য নয়।
হাদীস শরীফে ‘শবে বরাত’
১. হযরত আয়েশা (রা:) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা:) বলেছেন, মহিমান্বিত পরাক্রান্ত আল্লাহ মধ্য শাবানের রাতে দুনিয়ার আকাশে অবতরণ করেন। অতঃপর তিনি কালব †গাত্রের †মষপালের পশমসমূহের †চয়ে †বশী সংখ্যক †লাককে ক্ষমা করেন” (ইবনে মাজা, তিরমিযী)।

২. হযরত আলী (রা:) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা:) বলেছেন, “যখন মধ্য শাবানের রাত আসে তখন †তামরা এ রাতে দাঁড়িয়ে সালাত আদায় করো এবং দিনে †রাযা রাখো। ঐ দিন সূর্য অস্তমিত হবার পর মহান আল্লাহ পৃথিবীর আকাশে অবতরণ করেন এবং বলেন, আমার নিকট †কউ ক্ষমাপ্রার্থী আছে কী? আমি তাকে ক্ষমা করে †দব। †কউ জীবিকার প্রার্থী আছে কী? আমি তাকে জীবিকা প্রদান করব। †কান †রাগাগ্রস্ত আছে কী? আমি তাকে আরোগ্য দান করব। এভাবে সুবহে সাদিক হওয়া পর্যন্ত চলতে থাকে” (ইবনে মাজা)।

৩. হযরত আবূ মূসা আশআরী (রা:) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা:) বলেছেন, “মহান আল্লাহ মধ্য শাবানের রাতে তাঁর সৃষ্টির প্রতি দৃকপাত করেন এবং মুশরিক ও হিংসুক ব্যতীত অন্য সকলকে ক্ষমা করে †দন”(ইবনে মাযা)।

আলোচ্য হাদীসত্রয় পর্যালোচনা করে এ কথা নির্দ্বিধায় বলা যায় †য, মহান আল্লাহ এ রাতে পৃথিবীর আকাশে অবতরণ করে ঐ সমস্ত পাপীদের ক্ষমা করেন যারা এ রাতে জাগ্রত †থকে ইবাদত করেন। ক্ষমা প্রত্যাশীদের মধ্য †থকে মুশরিক এবং হিংসুকদের বাদ †দয়া হলেও মাজাহেরে হক কিতাবের ভাষ্য অনুযায়ী আরও ১০ †শ্রণির †লাক আন্তরিক তওবা ব্যতীত ক্ষমার আওতায় আসবে না। তারা হলো- ১. মাতা পিতার অবাধ্যচারী ২. আত্মীয়তার সম্পর্ক কর্তনকারী ৩. মদ পানে অভ্যস্ত ব্যক্তি ৪. †যনাকারী ৫. যুলুম করে কর আদায়কারী ৬. যাদুকর ৭. গণক ৮. বাদ্যযন্ত্র বাদক ৯. ভবিষ্যত বক্তা ১০. পরিধেয় বস্ত্র টাখনুর নিচে ঝুলিয়ে পরিধানকারী।

হাদীসত্রয় সম্পর্কে কিছু কথা

উপরোক্ত হাদীসত্রয়কে †কউ †কউ যঈফ হিসেবে সাব্যস্ত করে বলেন †য, যঈফ হাদীস অনুযায়ী আমল করা যাবে না। সুতরাং এ রাতের ইবাদত ভিত্তিহীন।
যারা এ ধরনের কথা বলেন তাদেরকে অর্বাচীন বলে মনে হয়। হাদীসের প্রসিদ্ধ ইমামগণের †কউই এ ধরনের কথা বলেননি। ইমাম আবূ হানীফা (র:) বলেছেন, আমাদের ইজতিহাদভিত্তিক মতামতের বিপরীতে †তামরা যদি একটি যঈফ হাদীসও পাও তবে আমাদের মত পরিহার করে যঈফ হাদীস গ্রহণ করবে।
হাদীস শাস্ত্রের মূল নীতি অনুযায়ী দুর্বল হাদীসের সমর্থনে যদি সহীহ হাদীস থাকে তবে উক্ত দুর্বল হাদীস †মাতাবেক আমল করা যাবে। শবে বরাতের সমর্থক হাদীস সমূহের সমর্থনে নি¤েœাক্ত সহীহ হাদীস বিদ্যমান।
“মহান আল্লাহ প্রতি রাতের †শষভাগে নিকটবর্তী আকাশে এসে বান্দাদের সম্বোধন করে বলেন, †ক আছো আমার নিকট প্রার্থনাকারী, আমি তার প্রার্থনা কবুল করবো। †ক আছো আমার নিকট কিছু চাওয়ার আমি তাকে তা দান করবো। †ক আছো আমার কাছে ক্ষমা প্রার্থী? আমি তাকে ক্ষমা করবো। (বুখারী, মুসলিম, আবূ দাউদ, তিরমিযী, ইবনে মাজা)।

করণীয় কার্যাবলী
১. সাধ্য অনুযায়ী ইবাদত বন্দেগী করা
২. দান খয়রাতের হাত প্রসারিত করা
৩. অধিক পরিমাণে কুরআন তিলাওয়াত করা
৪. নফল †রাযা রাখা
৫. নিজের কৃত গুনাহ স্মরণ করে অধিক পরিমাণে তওবা করা
৬. মাতা পিতার প্রতি সর্বদা দয়ার হাত প্রসারিত থাকবে এ প্রতিশ্রুতি করে তাদের প্রতি যতœবান হওয়া
৭. আত্মীয়-স্বজনের সাথে সুসম্পর্ক বজার রাখা
৮. মদ, সুদ, ঘুষ পরিহার করার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করে হালাল উপায়ে অর্থ উপার্জনে সচেষ্ট হওয়া
৯. †যনা-ব্যভিচার পরিহার করে এর সাথে সংশ্লিষ্ট যাবতীয় কাজ পরিহার করা
১০. অন্যায়ভাবে অর্থ আদায় এবং আত্মসাৎ না করা
১১. গণকের কাছে ভাগ্যলিপি সম্পর্কে অবগত হওয়ার জন্য যাওয়াকে চিরতরে বন্ধ করা
১২. অশালীন গান, বাদ্যযন্ত্রসহ বিভিন্ন অনুষ্?ান বর্জনের মানসিকতা তৈরী করা
১৩. ভবিষ্যত সম্পর্কে মন্তব্য করা বা তা বিশ্বাস করা পরিহার করা
১৪. পুরুষের টাখনুর নিচে †পাশাক পরিধান বর্জন করা
১৫. †ময়েদের টাখনুর উপর কাপড় পরিধান চিরতরে পরিত্যাগ করা।
১৬. গীবত, †চাগলখুরি, পরনিন্দা ইত্যাদি পরিহার করা।
এক কথায়, একজন পরিপূর্ণ মানুষ হবার জন্য যা যা গুণ অর্জন প্রয়োজন শবে বরাতের ইবাদাত বন্দেগী করার সাথে সাথে †স গুণগুলো অর্জনের দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করা।
বর্জনীয় কার্যাবলী
শবে বরাত একটি ফযিলাতপূর্ণ রাত। এ রাতে শরীয়তের নির্দেশ †মাতাবেক ইবাদত করলে বিপুল †নকী অর্জন হয়। কিন্তু কিছু ভাগ্যাহত মুসলিম এ রাতে এমন কতকগুলো শরীয়ত বিরোধী কাজ করেন, যার ফলে গুনাহ মাফ হবার পরিবর্তে আরও নতুন গুনাহ †যাগ হয়। †যমন-
১. সারারাত ইবাদাত করে ফজর নামাজ না পড়ে ঘুমিয়ে পড়া
২. আতশবাজী ফুটানো
৩. হালুয়া রুটি বিতরণ
৪. সরকারী-†বসরকারী ভবনে আলোকসজ্জা করা
৫. কবরস্থানগুলোতে আগরবাতি, †মামবাতি জ্বালানো
৬. মৃত ব্যক্তিদের রুহ নিজেদের বাসস্থানে আসে এ ধারণা করা
৭. এ রাতে ঘুমানোকে অন্যায় মনে করা
৮. কমপক্ষে ১০০ রাকাআত নামায পড়তেই হবে এ ধরনের ধারণা করা
৯. দলবেঁধে কবরস্থানে যাওয়াকে আবশ্যক মনে করা ইত্যাদি।
১০. †গাসল করাকে বাধ্যতামূলক মনে করা।


†শষ কথা
শবে বরাত আসে আবার চলে যায়। অনেক মুসলিম এ রাতটিকে নাজাত পাবার উছিলা মনে করে সারা রাত ইবাদত করে থাকেন। তাদেরকে সতর্ক থাকতে হবে যাতে ফজরের নামায কাযা না হয় এবং ইসলাম বিদ্বেষী কাজ করে ছাওয়াবের পরিবর্তে গুনাহ কামাই না হয়। মনে রাখতে হবে, অনুষ্?ানসর্বস্ব প্রাণহীন ইবাদাতের †কান মূল্য ইসলামে †নই। ইসলামের রয়েছে একটি পূর্ণাঙ্গ জীবনকা?ামো।। তাই ভাগ্য উন্নয়ন এবং নাজাত লাভের জন্য দুই এক রাত †জগে ইবাদত করা বা তওবা ইস্তেগফার করাই যথেষ্ট নয়; বরং সামগ্রিক জীবনকেই কুরআন-সুন্নাহ মুতাবেক গ?িত ও পরিচালিত করতে হবে।
ফৎ.ধঃরয়ঁব৭৩@ুধযড়ড়.পড়স



মন্তব্য ৩ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ০১ লা মে, ২০১৮ রাত ১১:১০

চাঁদগাজী বলেছেন:


আপনি কি মেডিক্যাল ডাক্তার, নাকি পিএইচডি?

২| ০১ লা মে, ২০১৮ রাত ১১:১৫

মো: নিজাম উদ্দিন মন্ডল বলেছেন: আপনি কোন ফ্রন্টে টাইপ করেছেন???

৩| ০১ লা মে, ২০১৮ রাত ১১:২৭

রাজীব নুর বলেছেন: সব সময় মনে রাখবেন। এমন কিছু লিখবেন না যেন পড়ে কেউ বিরক্ত হয়।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.