নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সাধারণ পাঠক ও লেখক
ছবি সুত্র : Click This Link
পর্ব-১ : চামড়া শিল্পের পতনকে চামড়ার চাবুক মেরেই প্রতিকার
কোরবানির পশুর চামড়ার বাজারে ধ্বস নেমেছে। কোরবানির চামড়ার বাজারে ধ্বস নামার নেপথ্য কারণ হিসেবে ‘কারসাজি’ শব্দটি উচ্চারিত হয়েছে বাণিজ্যমন্ত্রীর বয়ানেও। চামড়ার দাম এত কম হওয়া ব্যবসায়ীদের ‘কারসাজি’ বলে অভিযোগ করেছেন বাণিজ্যমন্ত্রী স্বয়ং । তবে কথা হল ব্যবসায়ীরা মুনাফার জন্য সিন্ডিকেট গড়বেন, কারসাজি করবেনএমনটি চলে আসছে বছরের পর বছর ধরে। তাহলে সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় কী দক্ষতা প্রদর্শন করল? এ প্রশ্নটা এখন দেশের সকলের মুখে মুখে ।
বরাবরই কোরবানির ঈদের সময় চামড়ার বাজারে ধ্বস নামে, এটা নতুন কিছু নয় । কিন্তু এবার শুধু ধ্বস নয় বরং নেমেছে মহাধ্বস । মৌসুমী চামড়া ব্যবসায়ীরা এলাকায় ঘুরে ঘুরে চামড়া সংগ্রহ করেছেন। কিন্তু আড়তে এসে সেই চামড়ার ন্যায্য দাম পাননি। ৩০০-৪০০ টাকায় কেনা একেকটি চামড়ার দাম যদি আড়তদাররা ৫০ থেকে ১০০ টাকা বলেন, তাহলে কি যে উপায় হয় তা দেখা যায় দেশের বিভিন্ন স্থানে ঘটে যাওয়া কর্মকান্ডে । চট্টগ্রামে ঈদের পরদিন চামড়ার আড়ত এলাকায় প্রত্যাশিত দাম না পেয়ে রাগে-দুঃখে ও হতাশায় সড়কের ওপর চামড়া ফেলে মাথায় হাত দিয়ে অনেকেই চামড়ার গাদার উপর বসে আছেন আবার অনেকেই বাড়ি ফিরে গেছেন এসকল দৃশ্য টিভির মাধ্যমে প্রত্যক্ষ করেছেন দেশবাসী ।
২ নং ছবি : চামড়ার গদার উপরে বসে অআছেন বিমর্ষ ফরিয়া
আবার কোন কোন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী তাদের সংগৃহীত চামড়া মাটির নিচে পোঁতে (সুত্র :http://web.dailyjanakantha.com/details/article/440917/চামড়াশিল্পকে-বাঁচাতে-হবে/print/ ) ফেলতেও বাধ্য হয়েছেন ।
ছবি : চামড়া মাটিতে পোঁতে ফেলার দৃশ্য
সুত্র : Leather News | Somoy TV
কেন এমন পরিস্থিতির উদ্ভব হলো- এই প্রশ্নের সদুত্তর খুঁজতে হবে জাতীয় স্বার্থেই । সকলেই বলাবলি করছেন কুরবানির পশুর চামড়া নিয়ে দেশে একটি সিন্ডিকেট গড়ে ঊঠেছে । অন্যদিকে কোন সিন্ডিকেট যেন গড়ে উঠতে না পারে সেজন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার কথাও বলা হচ্ছে সরকার পক্ষ থেকে, অপরদিকে চামড়ার দাম নির্ধারণ করে দিলেও তাতে কোন কাজ হনি । ব্যবসায়ীরা বার বার চামড়া নিয়ে বাজার নয়ছয় করছে, আর তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে কর্তৃপক্ষ ইচ্ছে করেই কি পিছিয়ে ছিল অথবা তারা হাতে গোনা কয়েকজন চামড়া শিল্প সংস্লিষ্ট ব্যবসায়ির কাছে একান্ত নিরুপায় ছিল সেটা গবেষনার বিষয় হলেও দেশের সাধারণ জনতা যা বুঝার তা বুঝে গেছেন ভাল করেই ।
আরো লক্ষনীয় যে চামড়া বাজারে ধ্বসের জন্য পরস্পরকে দোষারোপ করছে ট্যানারি মালিক ও আড়তদারদের সংগঠন। ট্যানারি মালিকরা বলছেন, আড়তদারেরা নিজেরা সিন্ডিকেট করে চামড়ার দাম কমিয়ে দিয়েছে। আর আড়তদারদের অভিযোগ, ট্যানারি মালিকরা গতবারের চামড়ার দাম পরিশোধ না করায় এবার বেশির ভাগ আড়তদার বা ব্যবসায়ী চামড়া কেনা থেকে বিরত থেকেছেন।
অনেক ট্যানারি মালিক অর্থ সঙ্কটের কথা বললেও বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে (Click This Link )
দেখা যায় সরকারি চারটি ব্যাংক এ খাতে ৬০০ কোটি এবং বেসরকারি ব্যাংকগুলো ৪০০ কোটি টাকা ঋণ দিয়ে থাকে। তা ছাড়া মওসুমি ব্যবসায়ীরা এক হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করেন। এত টাকার জোগানের পরও অর্থ সঙ্কট থাকার কোনো কারণ থাকতে পারে না। সত্যিকার অর্থে, সিন্ডিকেট ইচ্ছে করেই এ ধরনের সঙ্কট সৃষ্টি করে নিজ স্বার্থে। ইত্যাকার বিবিধ কারণেই অনেকেই বলছেন সিন্ডিকেট, কেউ বলছেন অন্তরালের খেলা।
এদিকে দেশের প্রথম সারির সকল সংবাদ পত্রের সংবাদভাষ্যে দেখা গেছে শিল্প মন্ত্রী বলেছেন চামড়া নষ্ট করার পিছনে কোন একটি রাজনৈতিক দলেরো কিছুটা কারসাজি রয়েছে। ইত্যাদি বিবিধ কারণে চামড়ার দাম কমে গেছে। তাই এ বিষয়ে সকল পক্ষের বক্তব্য খতিয়ে দেখার অবকাশ রয়েছে , দায় নিরুপনের দায়িত্ব সরকারেই বেশী। যাহোক, বাস্তবতা হলো চামড়ার উপযুক্ত দাম নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কাঁচা চামড়া রফতানির অনুমতি দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
চামড়ার দাম এতোটাই নিম্নগামী হয়েছে এবং তা এমনই বিব্রতকর অবস্থার সৃস্টি করেছে যে পরিস্থিতি সামাল দিতে সরকার বেশ তড়িঘড়ি করে ঈদের পরদিনই ঘোষণা দিয়েছে কেউ যদি কাঁচা চামড়া রপ্তানি করতে চায় তাহলে তাকে অনুমোদন দেয়া হবে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এই ঘোষণা দেবার পরদিনই ট্যানারি মালিকরা এ সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবি তুলেছেন। তারা বলছেন, সরকার কাঁচা চামড়া সংগ্রহের জন্য যে দাম নির্ধারণ করে দিয়েছে, সে দামেই তারা চামড়া কিনবেন। বাংলাদেশ ট্যানার্স এসোসিয়েশনের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট বলছেন কোটি কোটি টাকা খরচ করে তারা ফ্যাক্টরি করেছেন । কাঁচা চামড়া যদি বিদেশে চলে যায় তাহলে তিনারা চামড়া পাবেননা ।
অন্যদিকে চামড়ার পাইকারি ব্যবসায়ী এবং আড়তদাররা কাঁচা চামড়া রপ্তানির বিষয়ে সরকারের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন, চামড়া রপ্তানি করতে পারলে তারা লাভবান হবেন বলে তাদের ধারনা । কিন্তু এই সিদ্ধান্ত এখন সাধারণ মানুষের কোন উকারেই আসবেনা , কারণ তারা ইতোমধ্যেই যথেষ্ট কম দামে ব্যবসায়ীদের কাছে চামড়া বিক্রি করে দিয়েছেন। সুতরাং এখন চামড়ার দাম বাড়লেও সাধারণ মানুষের কোন লাভ নেই। বেশী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে দেশের মাদ্রাসা ও এতিমখানাসমুহ ।
৩ নং ছবি : ক্ষতিগ্রস্ত মাদ্রাসা ও এতিমখানার ছাত্র শিক্ষকবৃন্দ
ছবি সুত্র : প্রথম আলো
বাংলাদেশের অনেক মাদ্রাসা এবং এতিমখানা কোরবানির পশুর চামড়ার উপর নির্ভর করে। মানুষ কোরবানির পশুর চামড়া বিক্রি করে গরীব এবং অসহায়দের দিয়ে দেয়। এর মানে যত টাকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, এর পুরোটাই গরীব এবং অসহায় লোকদের হক বঞ্চিত করেই গেছে ।
কোরবানির পশুর চামড়া বিক্রি করতে না পেরে অনেকের সেগুলো মাটিতে পুঁতে ফেলার বিষয়টিকে অনাকাঙ্ক্ষিত এবং কাণ্ডজ্ঞানহীন কাজ বলে বর্ণনা করেছেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের একজন উর্ধতন কর্মকর্তা ।তার মতে লবণ দিয়ে একটা চামড়াকে তিনমাস পর্যন্ত সংরক্ষণ করা যায়, এটা পঁচে যাবেনা বা নষ্ট হবেনা , রপ্তানির সুযোগ দিলে দেশের বাজারে চামড়ার দাম বাড়বে। সেজন্যই সরকার কাঁচা চামড়া রপ্তানীর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
বিষয়টিকে তিনি অনাকাঙ্ক্ষিত এবং কাণ্ডজ্ঞানহীন কাজ বলে বর্ণনা করেছেন, বেশ ভাল কথা , তবে এটা কোন তরফ হতে কান্ডজ্ঞানহীন সে বিষয়টাও ভেবে দেখার সময় এসেছে। অতীত অভিজ্ঞতা হতে দেখা যায় যে কুরবানীর চামড়া নিয়ে ফি বছরই একটা সিন্ডিকেট কাজ করে এবং কুরবানীর চামড়ার দামে ধ্বস নামে । তাই এটা নিয়ে সময় থাকতেই তাদের হুস থাকা প্রয়োজন ছিল ।বললেই হঠাৎ করে কাঁচা চামড়া রপ্তানী করা যায়না, এ কথাটা রপ্তানী বানিজ্যের সাথে যারা যুক্ত বিশেষ করে বানিজ্য মন্ত্রনালয়ের সংস্লিষ্ট সকলেরই জানার কথা । কাঁচা চামড়া রপ্তানী করতে হলে তাকে বেশ লম্বা অনেকগুলি পথ পারি দিয়ে আসতে হবে । এর পথ পরিক্রমার স্তর গুলি নীচে তালিকা করে সংক্ষিপ্ত বর্ণনাসহ দেখানো হয়েছে । কথা হলো বিদেশী ক্রেতাদের নিকট হতে ক্রয় আদেশ না পাওয়া পর্যন্ত কোন ভরসায় একজন চামড়া ব্যবসায়ী এই পচনশীল কাঁচা চামড়া শুধুমাত্র লবনের উপর ভর করে হাতে ধরে রাখবেন।
যাহোক, কাঁচা চামড়া রপ্তানীর বিষয়ে বানিজ্য মন্ত্রনালয়ের সিন্ধান্তের ফলে প্রতিষ্ঠিত রপ্তানীকারক ব্যতিত অন্য যে কোন চামড়া ব্যবসায়িকে বিদেশে চামড়া রপ্তানী করতে হলে প্রথমেই তাকে সরকারী নিয়ম কানুন প্রতিপালন সাপেক্ষে একটি এক্সপোর্ট কোম্পানী গঠন ও রপ্তানী কারক হিসাবে প্রয়োজনীয় সরকারী অনুমোদন নিতে হবে। এটা যে কেও চাইলেই সরকার দিতে পারবেনা , এর জন্য বহুবিদ পরীক্ষা নিরিক্ষা ও দলীল দস্তাবেজের প্রয়োজন হবে । বিবিধ কারণেই এটা বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে বেশ সময়সাপেক্ষ এবং একটি জটিল ব্যপার বটে! তবে এর ফলে হয়তবা সিন্ডকেট ভুক্তরাই বেশী ফায়দা লুটে নিতে পারবেন ।
তবে নতুন আগ্রহী ব্যবসায়ী ছাড়াও প্রতিষ্ঠিত রপ্তানী কারকদের বেলাতেও কাঁচা চামরা রফতানীর জন্য বিভিন্ন সংস্লিষ্ট পক্ষ যথা সরকার ,রপ্তানীকারক ও এতদ সংস্লিষ্টদেরকে নীচের বিষয়গুলি প্রতিপালন ও সম্পাদন করতে হবে । সেগুলি যে কত শ্রমসাধ্য ও সময়সাপেক্ষ ব্যপার তা নীচের তলিকায় উল্লেখিত করনীয় বিষয়গুলি অবলোকনেই বুঝা যাবে।
কাঁচা চামড়া বিদেশে রপ্তানীর বিষয়ে করনীয় ও পালনীয় স্তর সমুহ
১. রপ্তানী করার জন্য কাঁচা চামড়ার আইইসি (IEC) নম্বর (আমদানি রফতানির কোড নম্বর) তৈরী করা প্রয়োজন হবে যদিনা তা ইতিমধ্যে করা না হয়ে থাকে ।
২. বিদেশী ক্রেতার কাছে রফতানি যোগ্য কাঁচা চামড়ার নমুনাগুলি প্রেরণ করে তাদের অনুমোদন নিতে হবে ।
৩. বিদেশী ক্রেতার সাথে প্রয়োজনীয় যোগাযোগ করে পেমেন্ট ও ডেলিভারির শর্তাদি নির্ধারণ করতে হবে ।
৪. প্রোফর্মা চালান দেওয়ার পরে বিদেশী ক্রেতার কাছ থেকে ক্রয়ের আদেশ প্রাপ্তির পরে রফতানি আদেশ পেতে হবে ।
৫. রপ্তানী চুক্তির আওতায় হরেক পদের স্বীকৃত পেমেন্ট শর্তাদি যথা লেটার অফ ক্রেডিট, টিটি প্রভৃতি নিরোপন করতে হবে ।
৬. রপ্তানীকারক হিসাবে বিদেশী ক্রেতার বিরুদ্ধে যদি ক্রেডিট ঝুঁকি কভার করতে হয তবে বীমা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে যেতে হবে ।
৭. সরবরাহের শর্তাদি যথা এক্স-ওয়ার্কস, এফওবি, সিএফআর, সিআইএফ, ডিএপি, ডিডিপি বা অন্য কোনও ইনকো শর্তাদি মানতে হয় তবে তা চুড়ান্ত করতে হবে ।
৮. যদি রপ্তানীর জন্য কেও অর্থ সংস্থানের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করে তাহলে তাকে অর্জিত রপ্তানী আদেশের বিপরীতে প্রিশিপমেন্ট কিংবা পোস্ট শিপমেন্ট ফিনান্সের জন্য তার নীজ ব্যাংকের কাছে যেতে হবে । এক্ষেত্রে সরকার সহজ শর্তে ঋণদানের জন্য বিশেষ একটি তহবিল ঘোষনা করে ব্যাংকিং খাতের জন্য বরাদ্ধ করতে পারে । তবে বিদেশী ক্রয় আদেশের প্রেক্ষিতে ব্যাংক তার স্বাভাবিক ঋনদান নীতিমালার আওতায় ঋণ দিতে পারে ।
১১. বিদেশী ক্রেতার সাথে সম্পাদিত শর্তাবলী অনুসারে যদি আন্তর্জাতিক মানের চেকিং এজেন্সি যথা এসজিএস, বিভিকিউআই (SGS,BVQI) এর মাধ্যমে রপ্তানি প্রক্রিয়া চেকিং সম্পন্ন করার প্রশ্নটি জড়িত থাকে তাহলে তাও সম্পাদন করতে হবে ।,
১২.. প্রয়োজনীয় মানের কোয়ালিটি চেক (QC) আনুষ্ঠানিকতা শেষ করার পরে রপ্তানীযোগ্য চামড়ার মান পূরণের জন্য উপযুক্ত প্যাকিংয়ের ব্যবস্থা করতে হবে । দেশের সংস্লিষ্ট সরকারী এজেন্সিগুলির কাজ হবে রপ্তানীকারকদেরকে প্রয়োজনীয় সেবা সরবরাহ করে বিদেশী ক্রেতাদের চাহিদা অনুযায়ী আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতামুলক পন্যমান অনুযায়ী কাঁচা চামড়ার যোগান দেয়ার ব্যবস্থা করা । সরকারী সংস্থাগুলি কুরবানীর ঈদের আগে কি এগুলি করেছে আদৌ!
১৩. কাঁচা চামড়া ডেলিভারি দেয়ার জন্য প্যালিটিাইজেশন বা ক্রেটিং কার্গো ব্যবস্থা করতে হবে , এর জন্য বিশেষ ব্যবস্থা ও সময় প্রয়োজন হবে ।
১৪.. রপ্তানীর চামড়া যদি সামুদ্রিক পরিবহণের মাধ্যমে প্রেরণ করার জন্য নির্ধারিত হয় তাহলে রপ্তানী চালানটি এলসিএল বা এফসিএল দ্বারা রয়েছে কিনা তা যাচাই করা প্রয়োজন হবে ।
১৫.. রপ্তানী চালান সম্পর্কিত প্রয়োজনীয় তথ্য জানার পরে রফতানি পণ্যের প্রকৃতির উপর ভিত্তি করে উপযুক্ত কনটেইনার ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নেওয়ার প্রয়োজন হবে, এটাতেও সময় নিবে ।
১৬. ক্রয় আদেশ বা এলসির ভিত্তিতে রপ্তানী চালান, রপ্তানী প্যাকিং তালিকা প্রস্তুত করে তা ডকুমেন্টশনের ব্যবস্থা নিতে হবে ।
১৭. জিএসপি - জেনারালাইজড সিস্টেম অফ প্রেফারেন্স এর জন্য উৎস প্রতায়নপত্রের জন্য আবেদন ( certificate of origin) এবং আমদানিকারকের জন্য প্রয়োজনীয় অন্যান্য কাগজপত্রও রপ্তানী কারককেই তৈরী করতে হবে, এর জন্য বেশ একটা লম্বা সময় লাগবে ।
১৮. রপ্তানী শুল্ক ছাড়পত্রের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র কাস্টমস ব্রোকারের কাছে প্রেরণ করতে হবে ।
১৯. কাস্টমসে রফতানি প্রক্রিয়া কাস্টমস ব্রোকার বা সরাসরি রপ্তনী কারক দ্বারা করতে হবে , সে ক্ষেত্রে কাঁচা চামড়া রপ্তনীর জন্য নতুন আনকোরা রপ্তানীকারকরা কত তারাতারী করতে পারবে তা কেবল ভুক্তভুগীই জানেন ।
২০.. রপ্তানী চালান এফসিএল বা এলসিএল (FCL or LCL) হবে কিনা তা কাঁচা চামড়া রপ্তানীকারকেই নির্ধারন করতে হবে , বিষয়টি শুধুমাত্র একজন নতুন রপ্তানী কারকের কাছেই নয় অন্যদের কাছেও একটু সময়সাপেক্ষ বিষয় কারণ এর উপরে পরিবহন ব্যয় নির্ভর করে ।
২১. কাঁচা চামড়া বিদেশে বিশেষ করে ইউএসএ এবং ই ই সি ভুক্ত দেশগুলিতে রপ্তানীর আগে ফাইটো স্যানিটারি, ফিউমিগেশন (Phyto sanitary, Fumigation) ইত্যাদি সম্পন্ন করতে হবে।দেশে এই মহুর্তে উপযুক্ত মানের Phyto sanitary Test Laboratory আছে কি? প্রশ্নটি রাখাই যায় । যদি প্রয়োজনীয মানসম্পন্ন এমন লেবরেটরী দেশে না থেকে থাকে তবে তা তৈরী করতে হবে, এর জন্য লম্বা সময়ের প্রয়োজন ।
২২. পণ্যবাহী জাহাজ হতে বিল অফ লেডিং বা এডাব্লুবি (Bill of Lading or AWB) জারি করা হয়। কাঁচ চামড়া রপ্তানী কারককে এটিও সংগ্রহ করতে হবে ।
২৩. ক্রেতার প্রয়োজনীয়তা অনুসারে অন বোর্ড বিল অফ ল্যাডিংয়ের (On Board Bill of Lading)জন্য কাঁচা চামড়া রপ্তানীকারককে রপ্তানী চালানটি জাহাজে যাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।
২৪. কাঁচা চামড়ার চালানটি যদি কোনও স্থল বন্দর থেকেও করা হয় তাহলেও অন বোর্ড বিল অফ ল্যাডিংয়ের জন্য রপ্তানীকারককে ট্রাক কিংবা প্ণ্যবাহী ট্রেনে উঠা অবধি অপেক্ষা করতে হবে ।
২৫. এডাব্লুবি বা বিল অফ লেডিং প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার পর রপ্তানী শুল্ক ছাড়পত্র সংগ্রহ করার জন্য ব্যাংক এবং বিদেশী ক্রেতাদের জন্য প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট তৈরী করাও প্রয়োজন হবে এর জন্যও বেশ লম্বা সময় প্রয়োজন ।
২৬. লেটার অফ ক্রেডিট ভিত্তিতে পেমেন্ট সংগ্রহের শর্ত থাকলে তা সংগ্রহের জন্য দরকষাকষি কিংবা এক্সপোর্ট বিল ডিসকাউন্টের ব্যবস্থা করা যায় , তবে এর জন্যো বেশ লম্বা সময়ের প্রয়োজন হবে ।
২৭. উল্লেখ্যযে রপ্তানীকারক ব্যাঙ্কের কাছ থেকে কোন প্রকার ক্রেডিট গ্রহণ করে থাকলে বিদেশী ক্রেতার কাছ থেকে রফতানি আয় আসার পরে তা নীজ ব্যংকের সাথে আলোচনা সাপেক্ষে রপ্তানী বিলের পরিমাণের সাথে সামঞ্জস্য সাধন করা প্রয়োজন হবে । বিষয়টা যে খুব একটা সহজ নয় তা তাকি আর বলতে । তবে সাম্প্রতিক কালে টেরা কোটা টাইলস রপ্তানীর Click This Link মত রপ্তানীকারক , আমদানীকারক ও ব্য্যাংক এর মধ্যে যদি যোগসাজসে করা করা সম্ভব হয় তাহলে তা নিমিশেই হয়ে যেতে পারে কোন রকম পন্য রপ্তানী করা ছাড়াই । সে ক্ষেত্র সরকারের শুধুমাত্র কাঁচা চামড়া রপ্তানী সংক্রান্ত একটি সরকারী নীতিমালা ও আদেশই তাদের জন্য যতেষ্ট । এর ফলে পাচার হয়ে যেতে পারে ব্যাংকের শত শত কোটি টাকা । কাঁচা চামড়া রপ্তানীকারকেরা এ কারণেও উল্লসিত কিনা তা কে জানে !!
কাঁচা চামড়ার এমন বায়বিয় রপ্তানীর বিষয়টি মাথায় নিয়ে চামড়ার বাজারে ধ্বস নামিয়ে প্রয়োজনীয় ক্ষেত্র তৈরী করে কাঁচা চামড়া রপ্তানীর জন্য সরকারী আদেশদান প্রক্রিয়াটি জড়িত কিনা সেটাও ভেবে দেখার যথেষ্ট অবকাশ রয়েছে ।
যাহোক, সর্বনাশের একেবারে শেষপ্রান্তে এসে কাঁচা চামড়া রপ্তানীর জন্য সিন্ধান্তটি না নিয়ে, এতদসংক্রান্ত যাবতীয় রপ্তানী প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার জন্য কমপক্ষে ঈদের তিনমাস পুর্বে সিদ্ধান্তটি নেয়া দরকার ছিল । সরকারের বানিজ্য মন্ত্রনালয় যথাসময়ে কাঁচা চামড়া রপ্তনীর বিষয়ে প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত নিয়ে তা চামড়া রপ্তানীকারকদেরকে জানিয়ে দিলে তিনটি বড় ধরনের উদ্দেশ্য সাধন হতো, প্রথমত: ১) কাঁচা চামড়া রপ্তানীর জন্য বাবসায়ীগন প্রয়োজনীয় প্রস্তুতির সময় পেত ২) আড়তদার ও টেনারী মালিকগন কাঁচা চামড়া প্রাপ্তির বিষয়ে সচেতন হতো কেননা কাঁচা চামড়া রপ্তানী হয়ে গেলে তারা সমুহ বিপদের মুখে পড়বে , তাই তারা কুরবানীর পরে তরিৎবেগে চামড়া ক্রয়ের বিষয়ে আরো বেশী তৎপর হতো, ৩)বাজারে কুরবানীর চামড়ার দামে ধ্বস নামতোনা । উল্লেখ্য বাজার অর্থনীতির যুগে সরকারী দাম বেধে দেয়া কোন স্বীকৃত পন্থা হতে পারেনা, হওয়া উচিত ছিল চামড়ার আন্তর্জাতিক বাজারের হালচাল পর্যালোচনা ও তা বিবেচনায় নিয়ে সংস্লিষ্ট সরকারী সংস্থা ও মন্ত্রনালয়ের মাধ্যমে যথাসময়ে পুর্বপ্রস্তুতি ও কার্যকরী পদক্ষেপ নেয়া । কিন্ত তা করতে তারা সম্পুর্ণ ব্যর্থ হয়েছেন ।
মোদ্দা কথা হলো এই মহুর্তে কাঁচা চামড়া রপ্তানী হলো কি হলোনা তাতে দেশের ক্ষুদ্র চামড়া ব্যবসায়ী ও এর হকদার গরীবদের কোন উপকারে আসবেনা , তাদের ক্ষতি যা হওযার তাতো হয়েই গেছে , এখন বড় বড় চামড়া ব্যবসায়ী ও এর সাথে সংস্লিষ্ট সকল মহলের লাভবান হওয়ার পালা। তাদের ব্যাংক ব্যালেন্স কত স্ফীত হবে তা দুদক পরীক্ষা করে দেখতে পারবে , সেখানেও ধরা পড়তে পারে আরো অনেক তেলেসমাতি কান্ডকারখানা( যেমনটি ধরা পরেছে টেরা কোটা টাইল রপ্তানীর বিষয়ে Click This Link ), সেগুলিকে বানিজ্য মন্ত্রনালয় কি বলবেন তা তারাই ভাল জানেন ।
যাহোক, কাঁচা চামড়া রপ্তনী করলে যদি তা কুরবানীর পশুর চামড়ার দরপতন ঠেকাতে কার্যকরী ভুমিকা রাখতে পারে এবং চামড়া ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেট ভেঙ্গে দিতে পারে তবে তা সারা বছরই চালু রাখা যেতে পারে । তবে আগামী বছরে কুরবানীর ঈদের সময় তা ফলপ্রসুভাবে কার্যকরী করার লক্ষ্যে উপরের তালিকাভুক্ত বিষয়াবলি প্রতিপালনের জন্য সহায়ক সকল কর্মপন্থা সঠিক সময়ে যথাযথভাবে সম্পাদন করার ক্ষেত্র সরকারকে এখন থেকেই তৈরী করতে হবে।
তবে এ বিষয়টি মনে রাখতে হবে যে বর্তমানে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যের রফতানিতেও মন্দা যাচ্ছে। এক্ষেত্রে গতি আনার জন্য চামড়া প্রক্রিয়াকরণের কার্যক্রম অবশ্যই আন্তর্জাতিক মানদন্ডে (কমপ্লায়েন্ট) উন্নীত করতে হবে। সেজন্যও চাই সক্রিয় উদ্যোগ। যে কোন মূল্যে দেশের চামড়াশিল্পকে বাঁচাতে হবে । ট্যানারীগুলিতে চামড়ার প্রক্রিয়াকরন আরো আধুনিক করতে হবে । বাংলাদশের ট্যানারীগুলির অনেকগুলিতে এখনো সেই মান্দাতা আমলের প্রক্রিয়া অনুসরন করে কাঁচা চামড়া প্রসেস করা হয় ।
ছবি নং -৪: ট্যনারীর ছবি ১
সুত্র : গুগল অন্তর্জাল
ছবি - নং ৫ : ট্যনারীর ছবি ২
সুত্র : গুগল অন্তর্জাল
যে কারনে শুধু এবছর কেন সামনের বছরগুলিতেও চামড়ার দর পতন রোখা যাবেনা
বাংলাদেশে মোট চামড়ার চাহিদার ষাট শতাংশই কোরবানির ঈদের সময় সংগ্রহ করা হয়ে থাকে। বাংলাদেশে প্রতিবছর প্রায় ৩০ কোটি বর্গফুটের মত চামড়া সংগ্রহ করা হয়। যার মধ্যে অভ্যন্তরীণ চাহিদা মাত্র পৌনে তিনকোটি, বাকিটা রপ্তানি হয় । গত ২০১৪ সালেও প্রতি বর্গফুট লবণ দেয়া চামড়া বিক্রি হয়েছে সরকার নির্ধারিত ৭৫ টাকা দরে, যা এ বছর এসে দাঁড়িয়েছে ৪৫টাকা দরে। লবণ ছাড়া চামড়ার দর ৩০/৩৫টাকা। খুচরা ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, ট্যানারি মালিকরা সিন্ডিকেট করে কম দামে চামড়া কিনছেন। আর তাদের চাপে সরকার চামড়ার কম দাম ধরতে বাধ্য হয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশ ট্যানারি অ্যাসোসিয়েশনের বর্তমান সভাপতি দায়ী করছেন বিশ্ব অর্থনীতিকে। তার মতে কাঁচা চামড়ার দাম কমার কয়েকটি কারণ রয়েছে। চামড়ার দামের বেঞ্চ মার্ক হচ্ছে আমেরিকা। সেখানে যদি দাম কমে, তাহলে সারা বিশ্বেই দাম কমে। এ কারণে বাংলাদেশেও গত দুইবছর ধরে চামড়ার দাম কমার দিকে রয়েছে। চামড়ার দাম পতনের পিছনে আরেকটি কারণ হলো চামড়াটা আমাদের দেশ থেকে চীনের ক্রেতারা কিনে নিয়ে পণ্য বানিয়ে আবার যুক্তরাষ্ট্রে বিক্রি করে। কিন্তু চীন-যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য যুদ্ধের কারণে আমেরিকা চীনের পণ্যের ওপর যে অতিরিক্ত ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে সেটার প্রভাব বাংলাদেশের চামড়া শিল্পেরও ওপর পড়েছে এবং সেটা সামনের বছরগুলিতেও অব্যাহত থাকার সমুহ সম্ভাবনা । এছাড়া কমপ্লায়েন্স ইস্যুতে ইউরোপীয় ইউনিয়ন গত দু’বছর ধরে বাংলাদেশ থেকে চামড়া কেনা বন্ধ করে দিয়েছে। এ কারণে দেশের চামড়ার যে চাহিদা ছিল বিদেশের বাজারে, সে চাহিদা দিন দিন কমছে। সে প্রক্ষিতে কমপ্লায়েন্সের জন্য পরিবেশের দিকটিও মাথায় রাখতে হবে । পরিবেশের আলোচনাটা অবশ্য খানিকবাদেই উঠে আসবে এ পোষ্টে ।
তাহলে সমাধানের পথ কী ?
বিশ্লেষকরা বলছেন উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মানুষের আর্থিক ক্ষমতা বৃদ্ধির কারণে পশু কোরবানির সংখ্যা যেমন বাড়ছে, সে অনুপাতে চামড়া সংগ্রহ ব্যবস্থা পাল্টায় নি, আর মূল্য নির্ধারণের ক্ষেত্রেও রয়েছে নানা অব্যবস্থাপনা। চামড়া মালিকদের কাছে আগের স্টক থাকা, বৈশ্বিক দর পতন, রপ্তানির শ্লথগতি - নানা কারণ রয়েছে। আধা-প্রক্রিয়াজাত চামড়ার যে বাজারগুলো বিশ্বে রয়েছে সেদিকটি আমাদের ব্যবসায়ীসমাজ ও এক্সপোর্ট প্রমোশন বু্রো (ইপিবি)সঠিকভাবে আমলে নিতে পারেনি, সে দিকটি বিশেষ যত্ন নিয়ে এক্সপ্লোর করতে হবে । পাশাপাশি আভ্যন্তরীণ বাজার তৈরির দিকেও গুরুত্ব দিতে হবে। উদাহরন স্বরূপ বলা যায় একজোড়া চামড়ার জুতা তৈরীর জন্য গড়ে প্রায় ৫ বর্গফুট চামড়ার প্রয়োজন পরে । দেশে ভাল মানের একজোড়া চামড়ার জুতার দাম গড়ে ৩০০০ টাকা । বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর প্রজেকশন এবং জাতিসংঘের সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ী বর্তমানে দেশের লোক সংখ্যা ১৬.৮০ কোটির উপরে । এই জনসংখ্যার মধ্যে প্রায় ৬ কোটির উপরে মানুষের রয়েছে পুর্ণ কর্মসংস্থান । এই সকার লোকজন যদি বছরে মাত্র একজোড়া নতুন চামড়ার জুতা কিনেন তাহলেও প্রায় ৩০ কোটি বর্গ ফুট চামড়ার প্রয়োজন হবে , যা দেশে উৎপাদিত সমুদয় চামড়া দিয়ে যোগান দেয়াও কষ্টকর হবে । অপরদিকে শুধুমাত্র জুতার এই চাহিদাই দেশের ভিতরেই প্রায় ১৮০০০ কোটি টাকার চামড়াজাত পন্যের বাজার তৈরী করতে পারবে , এছাড়াতো অন্যান্য চামড়াজাত পণ্য রয়েই গেছে । তাই চামড়ার দেশীয় বাজার সৃস্টির দিকে মনযোগী হলে কাঁচা চামড়ার দাম বৃদ্ধির সম্ভাবনা তৈরী করা যাবে খুব সহজেই ।
এখন যে প্রক্রিয়ায় চামড়ার দর নির্ধারণ করা হয়, তাতে একটি বিশেষ গোষ্ঠীর সুবিধার বিষয়টা বিবেচনায় রাখা হয়। কিন্তু তাতে তারা সাময়িক লাভবান হলেও আসলে বেশি লাভ হয় না। কারণ সাধারণ ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় চামড়া সংগ্রহের কোন চেইন গড়ে ওঠে না। তাই চামড়ার মূল্য নির্ধারণের ক্ষেত্রে পুরো সাপ্লাই চেইনের বিষয়টি বিবেচনায় রাখা উচিত হবে কিন্তু বিষয়টি উপেক্ষিত হচ্ছে ।দেশের বিভিন্ন স্থানের চামড়া ব্যবসায়ীরা বলছেন, পাইকার এবং কারখানা মালিকরা যে দাম দিতে চাচ্ছেন তাতে তাদের শ্রমিক মজুরীও উঠবে না। ফলে সীমান্ত পথে কাঁচা চামড়া পাচার হয়ে যাওয়ার আশংকাও করছেন অনেকে, (https://www.bbc.com/bengali/news-45300829 )তাই এটা শক্ত হাতে বন্ধ করতে হবে ।
এখানে প্রসঙ্গক্রমে সামুতে দেয়া ব্লগার আখেনাটেন এর (Click This Link ) একটি পোষ্টে মন্তব্যের ঘরে কাল্পনিক_ভালোবাসা বলেছেন, যে প্রক্রিয়াতে আমাদের দেশে চামড়া একটি শিল্পে পরিনত হয়েছে সেটা কু নীতি বা মানুষকে ঠকানোর নীতি। ফলে চামড়া শিল্পে নিয়োজিত আমাদের শ্রমিকদের মুজুরী কম। , চামড়া পিস হিসেবে বিক্রি না করে স্কয়ার ফুট হিসেবে ক্রয় বিক্রয় করা হোক। এতে সকলেই উপকৃত হবেন বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন । সে সাথে দেশীয় চামড়ায় তৈরী পন্যের বিকাশের জন্যও তিনি সরকারের পক্ষ হতে চামড়া ব্যবসায়ি ও নতুন উদ্যোক্তাদের সহজ শর্তে ঋণ সুবিধা প্রদানের জন্য প্রস্তাব করেছেন । তাহলে আগামী ৫ বছররেই এই খাতটি একটি লাভজনক খাতে পরিনত হবে বলেও তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন । তাঁর এই মুল্যবান বক্তব্যের সাথে শুধু আমিই নই, সকলেই একবাক্যে সহমত পোষন করবেন বলে দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি । আশা করি সরকারের সংস্লিষ্ট মহল বিষয়টি যথাযোগ্য গুরুত্বের সহিত বিবেচনায় নিবেন ।
বিভিন্ন জায়গায় ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আরো একটি প্রশ্ন উঠে এসেছে তা হল চামড়ার দাম যখন তলানিতে, তখন জুতো কেন এত দামি? ঢাকায় বর্তমানে ভালো একটি দোকানে চামড়া দিয়ে তৈরি একজোড়া জুতার দাম তিন থেকে আট হাজার টাকা। এ বিষয়টি আভ্যন্তরীন বাজারে চামড়া শিল্পের বিকাশে একটি গুরুত্বপুর্ণ উদ্দিপক হিসাবে কাজ করতে পারে ।
ছবি ৬: বাংলাদেশে কাঁচা চামড়ার দরপতনের পরেও বিপনী বিতানগুলিতে চড়াদামে জুতার পশরা, ক্রেতারাও তা কিনছেন ধুমে
ছবি সুত্র : https://www.bbc.com/bengali/news-45315364
গবাদি পশুর ক্রয়মূল্যের সঙ্গে তার চামড়ার দামের সামঞ্জস্য নেই। আবার চামড়ার সঙ্গে জুতার বিক্রয় মূল্যের সঙ্গতি নেই। বাংলাদেশের ফিনিশড লেদার ও লেদার সামগ্রী প্রস্ততকারক সমিতির সভাপতির মতে , কাঁচামালের সঙ্গে তৈরি হওয়া পণ্যের দাম মেলানো যাবে না। বিশেষ করে চামড়ার মতো কাঁচামাল অনেক হাত ঘুরে তাদের কাছে আসে। তারমতে এর সঙ্গে সেটাকে প্রসেস করাসহ, কারখানার স্থায়ী ও ভেরিয়েবল পরিচালন ব্যয় , শ্রমিক খরচ, পরিবহন, ডিজাইন ও প্যকেজিং খরচ যোগ হবে । ইত্যাকার কারণে জুতার দাম বেশী হলেও ক্রেতাগন একটি ভালমানের পছন্দের জুতা বাজার হতে উচ্চমুল্যে কিনতে তেমন অনিহা প্রকাশ করেন না । ভোক্তাদের এই প্রবনতা দেশীয় চামড়া শিল্পের বিকাশের জন্য একটি উদ্দিপকতো বটেই ।
৭ নং ছবি : প্রসেসড চামড়া দিয়ে শ্রমিকদের জুতা তৈরীর দৃশ্য
ছবিসুত্র : https://www.bbc.com/bengali/news-45315364
বাংলাদেশে এখন প্রায় ১৫০ কোটি ডলার মুল্যের চামড়াজাত পণ্যের বাজার রয়েছে। ২০১৭-১৮ সালে বাংলাদেশের রপ্তানি ছিল ১ দশমিক ০৮ বিলিয়ন ডলার যা বিশ্ববাজারের মাত্র শুন্য দশমিক ৪৫ শতাংশ। এর মধ্যে রয়েছে চামড়া দিয়ে তৈরি জুতা, স্যান্ডেল, ব্যাগ, মানিব্যাগ, বেল্ট, জ্যাকেট ইত্যাদি। কোম্পানি ভেদে পণ্যের মূল্যে রকমফের থাকলেও, তাদের কারো পণ্যেই কাঁচামালের এই দরপতনের প্রভাব দেখা যায়নি। যদিউ এ নিয়ে অনেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম গুলোয় ক্ষোভও প্রকাশ করেছেন।
তবে দেশীয় বাজারে জুতার রমরমা বানিজ্য থাকলেও এবার যে কম দামে চামড়া কেনা বেচা হচ্ছে তা মাথায় নিয়ে বিদেশী ক্রেতারা যখন বাংলাদেশি চামড়াজাত পন্যের অর্ডার দিতে আসবেন তখন তারা কিন্তু চামড়াজাত পণ্যের দাম কম দিতে দিতে চাইবেন। সঙ্গতভাবেই এসব কমের প্রভাব পরবর্তীতে বাজারে দেখা যেতে পারে।ফলে সামনের বছরে কাঁচা চামড়ার বাজারে যে ধ্বস নামবেনা তার কি নিশ্চয়তা আছে , কারণ দেশে উৎপাদিত চামড়ার শতকরা প্রায় ৮০ ভাগই বিবিধ চামড়াজাত পন্য হিসাবে বিদেশেই রপ্তানী হয় । তার ফলে প্রায় রুগ্ন এই চামড়া শিল্পটি আরো ঝুকির মধ্যেই থাকবে এখন, ও অনাগত বছর গুলিতেও, এটা অনেকটাই হলপ করে বলা যায়।
৮ নং ছবি : রুগ্ন চামড়া শিল্প তদুধিক রুগ্ন সেখানে কাজে নিয়োজিত শিশু শ্রমিকদের একটি করুন দিক
সুত্র : Click This Link
আমরা সকলেই জানি যে অনেকগুলি ধাপ অতিক্রম করেই চামড়া প্রক্রিয়াজাত করতে হয়। প্রথম ধাপেই লবণ দিয়ে সংরক্ষণ করা হয়। একটি গরুর চামড়ায় ৮ থেকে ১০ কেজি লবণ লাগে। প্রায় আড়াই লাখ টন লবণ লাগবে চামড়া সংরক্ষণের জন্য। সুযোগ বুঝে লবণ ব্যবসায়ীরাও লবনের দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন। লবণ, জনবল ও অন্যান্য খরচসহ সংরক্ষণ করা প্রতি বর্গফুট চামড়ার দাম দাঁড়ায় ৭৫ থেকে ৮০ টাকা। চামড়ার প্রধানত দুটি গ্রেড হয়। এ গ্রেড এর চামড়া প্রতি বর্গফুট ১২০ টাকা থেকে ১৩০ টাকায় বিদেশে রপ্তানি হয়। প্রকৃতপক্ষে কি দামে রপ্তানীকারকেরা চামড়া রপ্তানী করে তা জানা যায়না অনেক কারণেই । তবে আলী বাবা ডট কম (Click This Link )
হতে কাঁচা ও পাকা চামড়ার আন্তর্জাতিক দাম সম্পর্কে মোটামোটি একটি ধারনা পাওয়া যায় । তাদের ওয়েব লিংক ধরে সরবরাহকারীদের সাথে যোগাযোগ করে যে কেও এর প্রকৃত দাম জেনে নিতে পারেন । অনেক ক্ষেত্রেই সরবরাহকারীদের দাবীকৃত দাম প্রকৃত আন্তর্জাতিক দামের সাথে সঙ্গতিপুর্ণ হয়ে থাকে । নীচে আলী বাবা ডট কম হতে দুএকটি দামের চিত্র দেখানো হল।
ছবি নং ৯ : আলী বাবা ডট কমে থাকা বাংলাদেশী ড্রাই ক্রাষ্ট
গরুর চামড়া (১০+ ব:ফুট) $ ১.৩০ – $১.৭০/ব:ফুট
সুত্র : Click This Link
ছবি নং ১০ :আলী বাবা ডট কমে থাকা ওয়েট সল্টেড
গরুর চমড়া $২.৫০ - $৫.০০/পিছ
সুত্র : Click This Link
আন্তর্জাতিক বাজারেও চামড়ার এ হেন করুন অবস্থার প্রেক্ষাপটে সিন্ডিকেটের কবলে পড়ে এই চামড়া শিল্প খাত ভবিষ্মতে আরো কোন বিপর্যেযর দিকে ধাবিত হচ্ছে তা ভাবতেই এখন গা শিহরিয়া উঠে । আন্তর্জতিক বাজারে চামড়াজাতপণ্যের এহেন দরপতনের যুগ সন্ধিক্ষনে সিন্ডিকেট ওয়ালারা তাদের লাভের ঝুলি কিভাবে ভরবেন সেটা তাদের ব্যপার । তবে আমাদের উদ্বেগের কারণ অন্য আরো একটি জাগায় । সেটা হলো এর উপকরণ হিসাবে কাঁচা চামড়া প্রক্রিয়াকরনের সাথে জড়িত পরিবেশ ও গনস্বাস্থ্য ঝুকির প্রশ্নটি ।
রাজধানীর হাজারীবাগের ট্যানারির কেমিকেল মিশ্রিত বর্জ ব্যবহার করে পোল্ট্রি ও মাছের খাবার তৈরি হচ্ছে । প্রতিবছর মারা যাচ্ছে কোটি কোটি মুরগী, ও মৎস খামারের মাছ ,হাস মুরগী ও মৎস খামারীরা বিপাকে । এর ক্ষতির পরিমানটাও বিশাল । রাজধানীর হাজারিবাগের ট্যানারির কারণে পরিবেশেরও মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে, যার অর্থমূল্য হাজার কোটি টাকার উপরে ৷ ট্যানারিগুলি যে কেমিক্যালগুলো ব্যবহার করে তা পানি ও মাটির জন্য খুবই ক্ষতিকর ৷ প্রাণী বা মানুষের জন্য তো বটেই ৷ পৃথিবীতে বিদ্যমান যেসব ক্ষতিকর কেমিক্যাল আছে তার সবই এর মধ্যে আছে ৷ এমন আজে-বাজে কেমিক্যাল আছে, যা জনস্বার্থের জন্য খুবই ক্ষতিকর৷ পরিবেশের জন্যও অত্যন্ত ক্ষতিকর৷ হাজারিবাগে দু'শর মতো ট্যানারি আছে৷ এগুলির বর্জ্য সব বুড়িগঙ্গায় যাচ্ছে৷
ট্যানারির কারণে পরিবেশের ক্ষতি দীর্ঘ মেয়াদী । এরা নদীকে ধ্বংস করে দিচ্ছে৷ টেনারীর বর্জ নদীর পানীতে মিশার কারণে পানি দুষিত হচ্ছে, মারা যাচ্ছে মাছ, মাটি হচ্ছে পলিউটেড , ফসল নষ্ট হচ্ছে । তাছাড়া যে বিষাক্ত কেমিক্যাল নদীতে যাচ্ছে, সেটা আবার মানুষের শরীরেও আসছে৷ এতে মানুষের স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ায় তাঁরা কাজ করতে পারছেন না৷ শ্রমঘণ্টা নষ্ট হচ্ছে৷
অপরদিকে হাজারিবাগে থাকা ২০০টি ট্যানারিতে প্রায় ২৫ হাজারেরও বেশি শ্রমিক কাজ করেন৷ এ সব ট্যানারিতে চামড়া প্রক্রিয়াজাত করতে ব্যবহৃত হয় ক্রোম পাউডার, কপার সালফেট, সোডিয়াম, অ্যামোনিয়াম ক্লোরাইড, অ্যাসিড, ব্লিচিং পাউডারসহ নানারকম রাসায়নিক৷ শ্রমিকরা নিরাপত্তা সরঞ্জাম ছাড়া খালি হাত-পায়ে ঝুঁকিপূর্ণ এ কাজ করার ফলে চর্মরোগ তাঁদের নিত্যসাথী৷ এছাড়া রাসায়নিকের প্রভাবেও অন্যান্য রোগে ভোগেন নিম্ন আয়ের শ্রমিকরা৷
ছবিনং-১১: নিরাপত্তা সরঞ্জাম ছাড়া খালি হাত-পায়ে ঝুঁকিপূর্ণ কাজের দৃশ্য
ছবি সুত্র : গুগল অর্তর্জাল
হাজারিবাগের ২০০টি ট্যানারী ইউনিট থেকে গড়ে প্রতিদিন প্রায় ৭৫ মেট্রিক টন কঠিন বর্জ্ (লবণ, হাড়, কেমিকেল মিশ্রিত চামড়ার বর্জ্য) নির্গত হয়৷ নির্গত হয় প্রায় ২১ হাজার ৬০০ ঘনমিটার তরল বর্জ্য পরিবেশের জন্য যা মারাত্মক ক্ষতিকর৷ এই বর্জ্যের মধ্যে আছে ক্রোমিয়াম, সীসা, অ্যামোনিয়া, সালফিউরিক অ্যাসিড প্রভৃতি৷ কিন্তু কোনো কারখানাতেই এই বর্জ্য পরিশোধনের ব্যবস্থা নেই৷ ফলে এ সব বর্জ্য আশেপাশের জলাশয় দূষণ করা ছাড়াও গিয়ে মেশে বুড়িগঙ্গা ও ভূগর্ভের পানিতে।
ছবি নং-১২ : টেন্যারী হতে কেমিকেল মিশ্রিত তরল দুষিত বর্জ নির্গমন
ঢাকার হাজারিবাগের ট্যানারিগুলিকে সাভারের হেমায়েতপুরে স্থানান্তরের জন্য প্রকল্পটি সেই দুই দশক পুর্বে হাতে নিলেও এখনো তার প্রাথমিক বাস্তবায়ন প্রক্রিয়াই চলছে । টেনারীগুলি এখনো বহাল তবিয়তে ঢাকা শহরেই আছে৷ আগে যেগুলো হয়েছে, সেগুলো এখন স্থানান্তর প্রক্রিয়া চলছে । নিশ্চিত করা হচ্ছে ‘এফ্লুয়েন্ট ট্রিটমেন্ট প্লান্ট' বা ইটিপি৷ এখন ট্যানারিটা হেমায়েতপুরে চলে গেলেও, সেখানে যদি ইটিপি লাগানো না হয়, তবে ঐ এলাকার বংশী বা ধলেশ্বরী নদীও দূষিত হবে৷ আর সেটা হলে, সেই পানি আবারো ঘুরে-ফিরে বুড়িগঙ্গাতেই চলে আসবে৷ যে বুড়িগঙ্গা এককালে ঢাকার রূপ বাড়িয়েছে, সেই বুড়িগঙ্গা আজ বড় বিবর্ণ৷ ঢাকার অন্যান্য বর্জের সাথে রাজধানীর ট্যনারীর দুষিত রাসায়নিক বর্জও বুড়িগঙ্গায় পড়ার ফলে নদীর পানি ধারণ করেছে কৃষ্ণবর্ণ৷ তবুও অত্যাচার থেমে নেই৷
ছবি নং -১৩ : রাসায়নিক মিশ্রিত ঢাকার বুড়ীগঙ্গা নদীর দুষিত পানি
ছবি সুত্র : গুগল অন্তর্জাল
যে শিল্প থেকে বাংলাদেশের মতো একটি দরিদ্র দেশ বছরে এক বিলিয়ন ডলারের বেশি রোজগার করে থাকে, তাকে গাল দিয়েই বা লাভকি ৷ চর্মশিল্প আছে ও থাকবে৷ পরিবেশ আর শ্রমিকদের কি হবে, সেটাই এখন একমাত্র প্রশ্ন৷
নিউ ইয়র্কের ব্ল্যাকস্মিথ ইনস্টিটিউট তাদের ২০১৩ সালের নভেম্বর মাসের রিপোর্টে পৃথিবীর সবচেয়ে দূষিত দশটি জায়গার মধ্যে ফেলেছিল ঢাকার হাজারিবাগকে৷ দিনে নাকি তখন ২২ হাজার কিউবিক মিটার পরিবেশ দূষণকারী তরল বর্জ্য পদার্থ হেক্সাভ্যালেন্ট ক্রোমিয়াম সুদ্ধু বুড়িগঙ্গায় গিয়ে পড়তো৷ এতো গেল পরিবেশ৷ ট্যানারির ভিতরের পরিবেশও কিছু কম বিপজ্জনক নয়৷ শিশুশ্রম তো ছিলই; যা ছিল না, তা হলো শ্রমিকদের জন্য সুরক্ষা-পরিধান; ঘণ্টার পর ঘণ্টা নানা ধরনের রাসায়নিক নিয়ে ঘাঁটাঘাটি – যার মধ্যে সবার আগে আসে ক্রোমিয়াম৷ অথচ ভেজিটেবল ট্যানিং, সিন্থেটিক ট্যানিং, অ্যালাম ট্যানিং, অ্যালডেহাইড ট্যানিং, এ সব ছেড়ে বিশ্বের সবচেয়ে প্রচলিত ট্যানিং পদ্ধতি হল ক্রোমিয়াম ট্যানিং, যা কিনা সবচেয়ে বিষাক্ত৷
ছবি নং ১৪ : ট্যানারী শিল্পে শিশু শ্রমিক থাকলেও নেই তাদের সুরক্ষা
সুত্র : Click This Link
হিউম্যান রাইটস ওয়াচ বা এইচআরডাব্লিউ-র এক গবেষণায় থেকে জানা যায় যে, এই শিল্পে কর্মরত শ্রমিকরা নানা ধরনের স্বাস্থ্য ঝুঁকির মধ্যে রয়েছেন৷ বিশেষ করে শিশুরা, যারা এই শিল্পে কাজ করছে, তাদের অবস্থা নাকি খুবই খারাপ৷ কারখানায় ব্যবহৃত সালফিউরিক অ্যাসিড, ক্রোমিয়াম এবং সীসা স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর৷ তার ওপর এ সব কারখানায় কোনো বর্জ্য শোধনের ব্যবস্থা নেই, নেই কোনো ‘ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট'-ও৷
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের এক গবেষণায় বলা হয়, চামড়া শিল্পে ব্যবহৃত ক্রোমিয়াম মানবদেহের জন্য খুবই ক্ষতিকর৷ তাই ট্যানারিতে শ্রমিকরা যেভাবে খালি গায়ে ও খালি হাতে দীর্ঘ সময় ধরে কাজ করেন, তাতে এই রাসায়নিক প্রবেশ করে তাঁদের ফুসফুসে ও চামড়ায় ক্যানসার হতে পারে৷ এছাড়া নানা ধরনের চর্মরোগও দেখা দিতে পারে৷
এদিকে গত ১৫ বছরে দেশে কেমিকেল আমদানি ৫ গুন বেড়েছে ।
ছবি -নং ১৫ : ঢাকার চকবাজারে ওয়াহিদ ম্যানশনের বেইসমন্টে কেমিক্যালস এর গুদাম
সুত্র : Click This Link
আর চলতি অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় আমদানি বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে। চলতি অর্থবছরের (২০১৮-১৯) প্রথম ছয় মাসে ১২৬ কোটি মার্কিন ডলারের কেমিক্যাল পণ্য আমদানি হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনে দেখা গেছে, ২০০৩-০৪ অর্থবছরে দেশে যেখানে ৪০ কোটি ডলারের কেমিক্যাল পণ্য আমদানি হয়েছে সেখানে গত অর্থবছরে (২০১৭-১৮) আমদানি হয়েছে ২১৩ কোটি ৬০ লাখ ডলারের কেমিকেলস । দেশে কেমিক্যাল পণ্য হিসেবে অর্গানিক কেমিক্যাল, ফার্মাসিউটিক্যালস, ফার্টিলাইজার, ডায়িং প্রভৃতি আমদানি হয়। এসব কেমিক্যাল এর একটি বড় অংশ ব্যাবহৃত হয় চামড়া শিল্পে ।
ছবি নং ১৬ : সম্প্রতি চকবাজার ট্র্যাজেডির পর কেমিক্যালের ভয়াবহতার বিষয়টিও সামনে এসেছে।
সুত্র : Click This Link
২০১০ সালে নিমতলী ট্র্যাজেডির পর পুরান ঢাকার রাসায়নিক গুদামগুলো কেরানীগঞ্জে সরিয়ে নেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এখন পর্যন্ত তা ফাইলবন্দি হয়ে আছে। দেশে আমদানি হওয়া কেমিক্যালের গুদামগুলো এখানো পুরনো ঢাকায় অবস্থিত। আর সেখানে কেমিক্যাল গুদামের আশেপাশেই মানুষের বসবাস। ফলে বিপজ্জনক এ পদার্থ থেকে যেকোনো সময় আরো বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। বিভিন্ন তদন্ত প্রতিবেদনে এ বিষয়ে বারবার সতর্ক করা হলেও এখন পর্যন্ত গুদামগুলো সরানোর উদ্যোগ নেই। রাজধানীর বুকে চামড়া শিল্প ও এর প্রক্রিয়াজাতকরণ ট্যানারীগুলির কারণে এগুলি সেখানে আরো বেশী করে জেকে বসেছে ।মানুষ এখন বলাবলি করছেন ক্যামিকেল গোডাউন ঢাকা শহর থেকে সরানোর দরকার নেই বরং শহরের মানুষগুলো সরিয়ে বনজঙ্গলে নিয়ে যাওয়া হোক । আর তাতে মানুষ নিরাপদ হবে, ঝামেলা চুকে যাবে। চকবাজারে যা ঘটেছে, সেই ২০১০ সালে নিমতলীতেও একই ঘটনা ঘটেছিল। তখন ১২৪ জনের প্রাণহানি ঘটে। ওই ঘটনা থেকে শিক্ষা নিলে চকবাজারে পুনরাবৃত্তি হতো না। শত অঙ্গার হওয়া লাশ আর আমাদের দেখতে হতো না । ক্যমিকেল এর গুদামে যে আগুন লেগেছিল সেখানে চামড়া প্রকৃয়াজাত করার জন্য কেমিক্যাল যে ছিলনা তা কি কেও হলপ করে বলতে পারে ।
যে শিল্প থেকে বাংলাদেশের মতো একটি দরিদ্র দেশ বছরে এক বিলিয়ন ডলারের বেশি রোজগার করে থাকে, তাকে গাল দেয়ার মত দৃষ্টটা দেখানোর অবকাশ যে নেই তা আগেই বলা হয়েছে । তার পরেও কথা থেকে যায় কিছু বুনিয়াদি প্রশ্নে: কাদের জন্য এই ট্যানিং? বাংলাদেশের চর্মশিল্পের উৎপাদনের আশি ভাগ রপ্তানি হয় বিদেশে ৷ চীন আর ভারত ধীরে ধীরে যে সব কাজ ছাড়ার কথা ভাবছে, বাংলাদেশের মতো ছোট দেশগুলি সেই বোঝা কাঁধে বহন করার জন্য এগিয়ে আসবে কেন ? সেকি কেবলই চামড়া শিল্পকে বাঁচানোর তাগিদে৷ বাংলাদেশের চর্মশিল্পের শ্রমিক আর ইউরোপ আমিরিআর গ্রাহক কেউই পরিবেশ অথবা নিজের কিংবা পরের স্বাস্থ্যের হানি কামনা করেন না৷ কিন্তু একদিকে যেমন বাঁচার তাগিদ, অন্যদিকে তেমন সস্তায় কেনার প্রবৃত্তি – এই দুইয়ের সুযোগ নিয়ে বিশ্বায়িত চর্মশিল্প দিব্যি বেঁচে-বর্তে রয়েছে ও থাকবে৷ তারপরেও মানব ও পরিবেশের জন্য বিষাক্ত এই চামড়া শিল্পের জন্য আমাদের এত মায়াকন্না কিসের জন্য! প্রশ্নটি রাখাই যায়!
বিবিধ দিকের প্রশ্ন সামনে রেখ শিল্পমন্ত্রী বলেছেন, চামড়া শিল্পনীতি হচ্ছে (Click This Link )
এটি নাকি এখন অনুমোদনের জন্য প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে রয়েছে। তারা একটি স্থায়ী সমাধানের লক্ষ্যে সব ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বসেছেন । বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি খাত উন্নয়ন বিষয়ক উপদেষ্টা সবার সঙ্গে খোলামেলা আলাপের মাধ্যমে সমস্যার সমাধান হবে বলে আশা ব্যক্ত করেছেন । বিষয়টি মন্ত্রনালয়ের হাত থেকে বেসরকারীখাতের কর্ণধারদের হাতে গিয়েছে। মন্ত্রনালয়ের কার্যকলাপ সম্পর্কে মানুষের ধারনা মনে হয় এসব কারণে এখন একেবারে তলানীতে গিয়ে পৌঁছেছে ।
যাহোক, তারা যাদের সঙ্গে আলোচনায় বসেছেন সেখানে কাঁচা চামড়ার প্রকৃত উৎপাদনকারী গবাদীপশু খামারী , চামড়ার প্রাথমিক বিক্রয়কারী ও কুরবানীর চামড়ার বিক্রয়লব্দ অর্থ ব্যাবহারকারী সাধারন হতদরিদ্র গরীব , মিসকিন ও এতিমদের মধ্য হতে কেও কিংবা তাদের কোন প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন কিনা তা বলা হয়নি, তবে বৈঠকে তাদের উপস্থিতির প্রয়োজন ছিল বলে মনে করি ! তবে আমরা যারা ব্লগে লিখছি তারা এই শ্রেণীর মানুষের মনের কথাগুলি , তাদের দু:খ দুর্দশা , হতাশা , আশা, নিরাশা ও চামড়া নিয়ে কি করনীয় আর কি বর্জনীয় তা যতদুর পারছি তা তুলে ধরছি । এগুলি যদি কোন না কোনভাবে চামড়া নীতিমালা প্রনয়নের সময় প্রধানমন্ত্রীর গোচরীভুত করা হয় তাহলে মনে হয় অনেক ভাল হয় । তবে সংস্লিষ্টগন দেখুন কিংবা নাই দেখুন , আমাদর কথা বিবেচনা করুন কিংবা নাই করুন, আমরা গনমানুষের আর গণস্বার্থের কথা বলেই যাব ।
দেশের চামড়া শিল্পের বর্তমান নাজুক অবস্থা, আন্তর্জাতিক বাজারে কাঁচা-পাকা উভয়বিদ চামড়াজাত পণ্যের ক্রমাগত দরপতন , এর প্রেক্ষিতে চামড়ার প্রাথমিক বাজারে এর ক্রয় বিক্রয় হতে শুরু করে বৈশ্বিক বাজারে তার বাণিজ্যকিকরন , এর পরিবেশগত বিরোপ প্রভাব, এতে ব্যবহৃত কেমিকেল ও দুষিত বর্জের কারণে গনস্বাস্থ্য বিশেষ করে শ্রমিক কর্মচারীদের ক্রমাগত স্বাস্থ্যঝুকি ও তার ক্রমাবনতির বিষয় বিবেচনা করে এই মারাত্বক বিপর্যয় সৃস্টিকারী শিল্পটিকে আমরা পৃষ্টপোষকতা দিয়ে বাঁচিয়ে রাখব না সীমিত পর্যায়ে আন্তর্জাতিক মানদন্ডের ভিতরে এর কার্যক্রম চালিত করার জন্য প্রয়োজনীয় সুযোগ দিয়ে গনহারে এর বিপর্যয় ঘটানোর ক্ষমতাকে রাশ টেনে ধরব , সে সমস্ত বিষয় এখনই সচেতন সকলকে ভাবতে হবে । চামড়া শিল্পের কাঁচামালের দরপতনের সাথে এর ক্ষতিকর প্রভাব দিনকে দিন আরো তীব্রতর করার জন্য দায়ীদেরকে গালি দিয়ে ফালি ফালি করে ফেললেও এ শিল্পের অন্তরনিহীত কু দিকগুলিকে বর্তমান পুজিবাদী অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় কোনমতেই আমরা প্রতিহত করতে পারবনা। এর অন্তরালে থাকা খেলোয়ারদের সুক্ষ হাতের কারসাজি যে বন্ধ করা যাবেনা তা এবার সহ সাম্প্রতিক কালের অভিজ্ঞতা থেকেই প্রমানিত । কিছু সাময়িক প্রতিকার করা গেলেও তা সাসটেইনেবল হবেনা কোন মতেই , চামড়া শিল্পটি রুগ্ন হতে রুগ্ন হতেই থাকবে । তাই এ সকল অবস্থার প্রেক্ষাপটে বিকল্প কিছু প্রস্তাবনা করা সঙ্গত বলে মনে করি । যা এ পোষ্টের দ্বিতীয় পর্বে নীচে তুলে ধরা হল ।
পর্ব -২ : পতনুম্মুখ চামড়া শিল্পকে মাটি চাপা দিয়েই জাতীয় স্বার্থে এর ব্যবহারের বিকল্প একটি প্রস্তাবনা
চামড়ার বিকল্প পরিবেশ বান্ধব ব্যাবহার নিয়ে কথা বলার পুর্বে বলে নেয়া ভাল যে দেশের বৃহত্তম অর্থনৈতিক খাত হলো কৃষি । কৃষিই আবহমানকাল ধরে এ দেশের অর্থনীতির প্রাণ । এর রয়েছে বৈচিত্রময় অর্থনৈতিক ও সামাজিক অবদান । দেশের জিডিপিতে সিংহভাগ অবদান রাখা সহ কর্মসংস্থানেও এটা সর্ববৃহত । এই গুরুত্বপুর্ণ কৃষিখাতের জন্য সার একটি গুরুত্বপুর্ণ উপাদান । সাম্প্রতিককালে সারের দাম আকাশ ছুঁয়েছে। সার ও ঔষধ কিনতে গিয়ে ফিরে আসছেন কৃষকরা। দুই মণ ধান দিয়ে এক বস্তা সার কেনা যাচ্ছে না। কৃষি ওষুধের দামও বাড়ছে দুই-তিন গুণ। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে কৃষকরা না পারছে চাষাবাদ করতে, না পারছে জমি অনাবাদি রাখতে। হতাশ দেশব্যাপী কৃষকরা। গত বছর বস্তা প্রতি ইউরিয়া সারের মূল্য ছিল ১০০০ টাকা । নতুন বছরে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৫০ টাকা। বর্তমান বাজারে ধান বিক্রি হচ্ছে মণপ্রতি ৫০০ টাকা। দুই মণ ধান বিক্রি করে এক বস্তা সার কিনতে প্রানান্ত হচ্ছেন কৃষকেরা।
অপর দিকে দেশের সারের চাহিদা মেটাতে প্রতিবছর প্রায় ১৫ থেকে ১৮ লাখ মেট্রিক টন সার আমদানি করতে হয় ( Click This Link ) তাই কেবলমাত্র সার আমদানী খাতেই প্রায় হাজার কোটি টাকা ব্যয় হয়ে যায় । অপরদিকে ২০১৪-১৫ অর্থবছরে সরকার সার বাবদ প্রায় ৭ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দিয়েছে। এখানে প্রসঙ্গক্রমে পুণরায় উল্লেখ্য যে বিদেশে চামড়া রপ্তানী করে দেশ বছরে গড়ে ১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার তথা প্রায় সারে ৮হাজার কোটি টাকার বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করে । এই আয় হতে এ শিল্পের জন্য প্রয়োজনীয় কেমিকেলস আমদানীখাতেই বলতে গেলে অর্ধেকই ব্যয় হয়ে যায় । তাই দেশে উৎপাদিত কাঁচা চামড়ার একটি উল্লেখ যোগ্য অংশকে যদি কোন প্রকার কেমিকেলস ব্যতিত ব্যবহার করা যায় তবে তা পরিবেশ সহ গনস্বাস্থের উপর ঝুকি কমাতে সহায়তা করবে উল্লেখযোগ্যভাবে, সে সাথে এটা দেশের কৃষিপন্যের উৎপাদন বৃদ্ধির পাশাপাশি সার আমদানি ও সারের উপর ভর্তুকীর পরিমান কমানোতেও সহায়তা করবে ।
এখানে উল্লেখ্য যে খানা খাদ্যের জন্য জবাইকৃত একটি প্রাণীর প্রায় ৪০% থেকে ৬০% বাজারজাতীয় পণ্যে রূপান্তরিত হয়, বাকি ৪০% থেকে ৬০% প্রাণীর উপজাত হিসাবে শ্রেণীবদ্ধ হয়। পশু জবাইয়ের পর এই উপজাতগুলির বেশিরভাগ অখাদ্য - রক্ত, হাড়, পশম , খুর, ও শিং গুলিকে কৃষি উৎপাদন সহায়ক কম্পোষ্ট তথা জৈবসারে রূপান্তরিত করা যায় (Click This Link ) ।
কম্পোষ্ট সারের দামও কিন্তু বাজারে কম নয় । এই লিংকে ক্লিক করে বাজারে প্রতি কেজি কম্পোষ্ট সারের দামের একটি চিত্র দেখা যেতে পারে । প্রকার ভেদে প্রতি কেজি কম্পোষ্ট সারের বিক্রয় মুল্য ৫০ টাকা হতে ৯০ টাকার মধ্যে (Click This Link ) ধার্য করা আছে মর্মে দেখা যায়।
এখানে উল্লেখ্য যে চামড়াজাত পন্য তৈরী ও কাঁচা চামড়া বিদেশে রপ্তানী বানিজ্যের বিষয়ে লাভক্ষতির ফিনানসিয়াল এনালাইসিস ( Financial Analysis) তাকে ভায়াবল হিসাবে দেখালেও অর্থনৈতিক তথা ইকনমিক এনালাইসিস এর মাধ্যমে লাভক্ষতি নিরোপন করা হলে এর পরিবেশ ও স্বাস্থখাতে ক্ষতির পরিমান এতই বেশী হয় যে এটা তখন একটি দেশের অর্থনীতির জন্য কোনভাবেই আর ভায়াবল ( Viable) থাকেনা । অপরদিকে কাঁচা চামড়াকে উপকরণ হিসাবে প্রয়োগ করে কম্পোষ্ট সার তৈরীর জন্য ফিনানসিয়েল এনালাইসিসে এটা ভায়াবল না হলেও এর সামগ্রিক সুফল বিশেষ করে পরিবেশ বান্ধব কৃষি পন্য সেসাথে গণস্বাস্থ্য খাতের সুফল বিবেচনায় নিয়ে এর অর্থনৈতিক এনালাইসিস লব্দ ফলাফল একে অনেক বেশী ভায়াবল প্রকল্প ও সম্পদের সর্বোত্তম ব্যবহারকারী হিসাবে চিহ্নিত করবে বলে মনে করি ।
এমতাবস্থায়, দেশের সকল গবাদি পশু সহ কুরবানীর পশুর উপজাতগলিকে ( কাঁচা চামড়া সহ )কম্পোষ্ট সার তৈরীর উপাদান হিসাবে ব্যবহারের এই দিকটি দেশের সংস্লিষ্ট গবেষনা প্রতিষ্ঠান যথা বিসিআইসি , বিআইডিএস , বিএআরসি ,কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় সহ অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকগন বিবেচনা করে দেখতে পারেন । আমার ধারনা এ বিষয়ে তাঁরা একটি ফলপ্রসু ও গ্রহনযোগ্য ফলাফল জাতিকে জানাতে পারবেন । পৃথিবীর বিভিন্ন দেশই এখন চামড়া সহ এনিমেল বাই প্রডাক্ট ,Animal By Products ( ABPs) কম্পোষ্ট সার হিসাবে তৈরীর বিষয়ে যথেষ্ট গুরুত্ব দিচ্ছে । এর জন্য একদিকে যেমন রয়েছে বানিজ্যিক উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান, তেমনি রয়েছে সরকারী ও বেসরকারী পর্যায়ে গবেষনা প্রতিষ্ঠান । তারা এনিমেল বাই প্রডাক্টস গুলি দিয়ে কম্পোষ্ট তৈরীর দিকটি যেমন প্রচার করছেন তেমনি এটা তৈরির কারিগরী কলাকৌশলগুলিউ গনমাধ্যম ও ইন্টরনেটে ছড়িয়ে দিচ্ছেন । সাথে দিচ্ছেন এর সম্পর্কে প্রয়োজনীয় গাইডলাইন ।
কম্পোষ্ট তৈরীর বিষয়ে যুক্তরাষ্টের Cornell Waste Management Institute এর Composting Animal Mortalities (Click This Link ) লিংকটিতে ক্লিক করে Animal By Products ব্যবহার করে কিভাবে কম্পোষ্ট তৈরী করা যায় তা দেখা যেতে পারে । এছাড়াও ইউরোপিয়ান দেশ সমুহ বিশেষ করে যুক্তরাজ্যে Animal By Products ব্যাবহার করে কিভাবে কম্পোষ্ট তৈরী করা যায় তা Regulations for Disposing of Animal By Products ( ABPs) এই লিংকে ক্লিক করে (Click This Link ) জানা যাবে । এ সম্পর্কে বিস্তারিত গাইডেন্স জানা যাবে Making fertiliser from processed animal by-products (ABPs) (Click This Link ) ক্লিক করে । এনিমেল বাই প্রডাক্ট ব্যবহার করে কিভাবে কম্পোষ্ট সার তৈরী করা যায় তা জানা যাবে How to process ABP material for use in fertilizer (Click This Link )
ছবি নং -১৭ : জৈবসারে বেড়ে উঠা একটি চারাগাছ
এখন দেখা যাক কাঁচা চামড়া হতে কম্পোষ্ট তৈরীর প্রস্তাবটি কিভাবে বাস্তবায়ন করা যায় । বাস্তবায়ন প্রস্তাবনাটি একটি ধারনাপত্র মাত্র । এ বিষয়ে দেশের বিশেষজ্ঞগন এবং এ ব্লগের বিজ্ঞ ব্লগারবৃন্দ আরো উত্তম কর্মপন্থা কিংবা দিক নির্দেশনা দিতে পারবেন বলে দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস রাখি ।
এই কুরবানীর ঈদের সময় জবাইকৃত গবাদিপশুর অবিক্রিত চামড়ার বিশাল স্তুপ দেশের সকল প্রচার মাধ্যমেই সচিত্র দেখানো হয়েছে । ক্রয়কৃত চামড়া বিক্রয় করতে না পেরে অনেক ফরিয়া তাদের সংগৃহীত চামড়া রাস্তার উপর ফেলে বাড়ীতে চলে গেছেন আবার কেও কেও তা মাটিতে পুতে রেখেছন । উল্লেখ্য যে প্রচুর পরিমান চামড়া মাটিতে পুতে রাখার দৃশ্য অবলোকনের ফলশ্রুতিতেই এটাকে কম্পোষ্ট সার হিসাবে মুল্যবান একটি সহায়ক সম্পদ হিসাবে পরিনত করার ধারনাটি মাথায় আসে । এই ধারণা হতেই চামড়ার বর্তমান বাজার হালহকিকত, এর বৈশ্বিক বানিজ্যিক হালচাল, এর সুফল কুফল, এর সুদুর প্রসারী প্রভাব প্রভৃতি বিষয়ে চিন্তা ও গবেষনার শুরু ।
বিষয়টি নিয়ে তাথ্যিক পর্যালোচনায় দেখা যায় যে দেশে বর্তমানে যে পরিমান কাঁচা চামড়া উৎপন্ন হয় তার প্রক্রিয়াকরন অকাঠামো, তাদের পরিবেশগত প্রভাব, বিদেশে রপ্তানী ক্ষেত্রে এর দুর্বল ও সবলদিকসমুহের প্রেক্ষাপট বিবেচনায় রেখে এর আরো বিকাশ সাধন করা হলে তা অর্থনৈতিক ও সামাজিক দৃষ্টিকোন হতে কতটুকু সুফল দিবে সেসকল বিষয় পর্যালোচনা ও মুল্যায়নের একটি প্রয়াস নেয়া হয় , পর্যালোচনা ফলাফল উপরে প্রথম পর্বে তুলে ধরা হয়েছে, সেখানে চামড়া শিল্পকে কিভাবে বাঁচিয়ে রাখা যায় তার কিছু দিক নির্দেশনাও দেয়া হয়েছে ।
এখন এ পর্বে বিভিন্ন সুযোগসন্ধানী মহলের পৃষ্টপোষকতায় বিবিধ কায়দায় দেশের চামড়া শিল্পের সাথে জড়িত সিন্ডিকেটটি বহাল তবিয়তে টিকে থাকার বিষয়টি বিবেচনায় রেখেই এই অতি ক্ষমতাধর সিন্ডিকেটের মতলববাজী আচরণকে আকার্যকর করে দেয়ার চিন্তা ভাবনা থেকে কম্পোষ্ট তৈরী করার প্রস্তাবটি বাস্তবায়নের রূপরেখার একটি খসড়া এখানে তুলে ধরা হলো ।
১) প্রথম দিকটি হলো কুরবানীর চামড়া বিক্রয়লব্দ অর্থ তাৎক্ষনিকভাবে গরীব এতিমদের মধ্যে বিতরন না করে চামড়াটিকে কম্পোষ্ট তৈরীর মত উৎপাদনশীল কাজে প্রয়োগ করে তার থেকে প্রাপ্ত আয় ভোগে তাদেরকে সহায়তা করার বিষয়ে দেশব্যপী একটি গনসচেতনতা গড়ে তুলা।
২) কুববানীসহ সকল প্রকার গবাদীপশুর চামড়া ক্রয়-বিক্রয় হয় এমন সকল বাজারের/কেন্দ্রের আশেপাশে সরকারী, বেসরকারী ও এনজিউ পর্যায়ে কম্পোষ্ট ম্যনুফেকচারিং প্লান্ট স্থাপন করা । উদাহরনস্বরূপ টাঙ্গাইলের ঘাটাইলের পাকুটিয়া চামড়ার হাটটির কথা বলা যায় । বিগত ১৯৮১ সালে ঘাটাইল উপজেলার পাকুটিয়ায় চামড়ার হাটটি প্রতিষ্ঠার পর সেখনে চামড়া শিল্পকে ঘিরে সপ্তাহের প্রতি রবি ও বুধবার একটি বিরাট চামড়ার হাট বসে ।অবশ্য সেই হাটেও এবার ধস নেমে এসেছে। ফড়িয়ারা যে দামে মফস্বল থেকে চামড়া কিনেছেন, তার অর্ধেক দামেও বিক্রি করতে না পেরে অসহায় হয়ে পড়েছেন বলে খবর বেরিয়েছে । যাহোক পাকুটিয়া চামড়ার হাটের মত অন্য হাটের আশেপাশে বানিজ্যিকভাবে কম্পোষ্ট ম্যনুফেকচারিং প্লান্ট সৃজন করা যেতে পারে। এতে প্লান্টের জন্য চামড়া প্রাপ্তি সুলভ হবে ।
ছবি নং ১৮ :টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার পাকুটিয়ায় অবস্থিত চামড়ার হাট
ছবি সুত্র : Click This Link
৩) চামড়ার প্রাপ্তি ও পরিমানের উপর নির্ভর করে নিন্মের মত বিভিন্ন প্রকারের কম্পোষ্ট ম্যনুফেকচারিং প্রান্ট স্থাপন করা যেতে পারে :
ক) কুববানীর চামড়ার বিক্রয়লব্দ অর্থ দিয়ে বিতরনযোগ্য মানুষদের পরিবারের বাড়িতে অথবা তাদের সুবিধামত স্থানে ড্রাম কিংবা প্লাস্টিকের ব্যরেলে একটি মাইক্রো কম্পোষ্ট মেকিং প্লান্ট সরকারী বেসরকারী কিংবা এনজিউ অনুদানে তৈরী করে দেয়া যায় ।
এই প্লান্টের সাথে প্রয়োজনে সেখানকার সমজাতীয় ইচ্ছুক মানুষ/পরিবারকে সম্পৃক্ত করে গড়ে তোলা দলকে কুরবানী দানকারী ব্যাক্তি/ব্যক্তিবর্গ তাঁদের জবাইকৃত পশুর গোটা চামরাটি বিনামুল্যে দিয়ে দিতে পারেন। এর পর এই মাইক্রোপ্লান্ট ব্যাবহার করে কিভাবে তারা কম্পোষ্ট তৈরী করবে ও বাজারে বিক্রয় করে আয় অর্জন করতে পারবে সে বিষয়ে তাদের জন্য যথাযথ প্রশিক্ষনের ব্যবস্থা করতে হবে । প্রথমে এটাকে পাইলট প্লান্ট হিসাবে ব্যাবহার করতে হবে । এর সাফল্যের ভিত্তিতে পরে এটাকে সারা দেশে ছড়িয়ে দিতে হবে । এরকম প্লান্ট ধনি গরীব নির্বিশেষে একজন প্নান্তিক কৃষকের বাড়ীতেও স্থাপন করা যেতে পারে । এর ফলে সে বা তারা নীজেরাই তাদের প্রয়োজনীয় জৈব সার তৈরী করতে পারবেন । এ ব্যবস্থায় চামড়া বিক্রয়ের জন্য ফরিয়া, পাইকার, আড়তদার, টেনারীর মালিক কিংবা সরকারের দাম বেধে দেয়ার কোন প্রয়োজন পরবেনা । ট্যানারী মালিক ও আড়তদারেরা সরকার নির্ধারিত দামকে কাচকলা দেখাবার দৃষ্টতাও পাবেনা । তারা বরং বুরবানীর চামড়া কেনার জন্য নীজেরাই এর দাম বাড়িয়ে প্রাথমিক বিক্রেতাদেরকে প্রলুব্দ করবে ।
ছবি নং- ১৯ : মাইক্রো লেভেলে চামড়া হতে কম্পোষ্ট সার তৈরির জন্য একটি ব্যরেল কম্পোষ্টিং প্লান্ট
সুত্র : Click This Link
খ)সরকারী বেসরকারী সহায়তায় নিন্মের চিত্রের মত চামড়া পাইলিং করে কম্পোষ্ট মেকিং প্লান্ট তৈরী করা যেতে পারে ।
ছবি নং-২০ : চামড়া হতে সার তৈরীর জন্য একটি পাইল কম্পোস্টিং প্লান্ট (জর্দান অধিকৃত প্যলেষ্টাইন)
সুত্র : Click This Link
আরবের দেশগুলিতে জবাই করা গবাদি পশুর রক্ত, হাড় , চামড়া ও অন্য্যান্য জৈব বর্জ গুলিকে উপরের চিত্রের মত পাইলিং করে কিংবা মাটিতে পুতে কম্পোষ্ট সার তেরী করা হয় । এগুলিকে আর কোন কিছু না করে শুধু কিছুদিন রেখে দেয়া হয় মাটি চাপা দিয়ে । তারপর ডিকম্পোজ করে সেগুলিকে সার হিসাবে ফসলের জমিতে প্রয়োগ করা হয় ।
গ) পাশ্চাত্ত দেশ গুলিতেও এনিম্যাল বাই প্রডাক্টস তথা মৃত পশু পাখীসহ কশাইকতৃক জবাই করা পশুর রক্ত, হাড়, মাংস, চামড়া খুর ও শিং কে স্বীকৃত পন্থায় কম্পোষ্ট তৈরীর কাজে ব্যবহার করা হয়। এর জন্য রয়েছে তাদের বিভিন্ন ধরনের কম্পোষ্ট ম্যানুফেকচারিং প্লান্ট, নীচে তেমনি একটি প্লান্টের ছবি দেখনো হল ।
ছবি- নং ২১ : একটি ইন-ভেসেল কম্পোস্টিং প্লান্ট : এই farm-scale rotating drumটি যুক্তরাষ্ট্রের টোক্সাস সাইটে অবস্থিত.
সুত্র : Robert Rynk, Compost Education and Resources for Western Agriculture project, Washington State University.
ঘ) শুধু কুরবানীর গবাদিপশুর চামড়াইই নয় , ঝর, জলোচ্ছাস , প্লাবন , বন্যা , ও বিভিন্ন প্রকারের রোগ মহামারীতে আক্রান্ত হয়ে কিংবা স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় মৃত সকল প্রকার পশু , পাখী , হাস ,মুরগী , মাছ প্রভৃতিকে নিন্মের মত কম্পোষ্ট ম্যনুফেকচারিং প্লান্টে ফেলে জৈবসারে রূপান্তরিত করা যাবে বানিজ্যিক ভিত্তিতে ।উল্লেখ্য দেশে মৃত পশু ও প্রাণীর সংখ্যাও একেবারে কম নয় , উপযুক্ত ব্যবস্থায় মৃত এ সমস্ত প্রানীকেও অমুল্য সম্পদে পরিনত করা যাবে ।
ছবি-নং ২২ : মরা জীবজন্তু পাখ পাখালীকে রোটেটিং ড্রাম প্লান্টের মাধ্যমে কম্পোষ্টে রূপান্তরের একটি চিত্র
ছবি সুত্র : Click This Link
৪) চামড়া ব্যবসায়ীদেরকে কুরবানীর চামড়া ক্রয় করে পরবর্তীতে সেসকল চামড়া সরকারী, বেসরকারী ও এনজিও প্রতিষ্ঠানের তত্বাবধানে পরিচালিত কম্পোষ্ট ম্যনুফেকচারিং প্লান্টসমুহে বিক্রয় করার জন্য প্রয়োজনীয় প্রনোদনা দান করা । এর ফলে কাঁচা চামড়ার স্থানীয় চাহিদা বৃদ্ধির একটি সুফল সামগ্রিক ভাবে চামড়ার বাজারে পড়বে, এর ফলে চামড়া কারবারিদের সিন্ডিকেট অকেজো হয়ে যাবে অনেকাংশে , অবশ্য ছলের কলের অভাব হয়না , তারপরেও তারা স্থানীয় পর্যায়ে গড়ে উঠা চামড়ার একটি বিকল্প বাজারের প্রতিযোগীতার মুখামুখীতো হবেই । এর ফলে কাঁচা চামড়ার বাজারে অনাকাংখিত দরপতন রোধ করা অনেকাংশেই সম্ভব হবে।
৫) বর্তমান পুঁজিবাদী অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় চামড়া শিল্পের যে কাঠামো গড়ে উঠেছে সে দিকে মনোযোগ দিয়ে একটু তাকালেই পরিষ্কার হয়ে উঠবে যে এটা আসলে নৈর্ব্যক্তিক একটা শোষণযন্ত্র। এর কাজ হলো নীচ থেকে রস শুষে অনবরত ওপরের দিকে পাঠাতে থাকা । বহু স্তরে বিন্যস্ত এই যন্ত্র ধাপে ধাপে নিচের স্তরের রস বিবিধ কায়দায় ওপরের স্তরে পাঠায়। এর সর্বনিম্ন স্তরটি সবচেয়ে বিশাল। সেখানে গবাদী পশুপালনকারী কৃষক ও খামারী হতে শুরু করে সমাজের বিভিন্ন শ্রেণী পেশার অসংখ্য মানুষ নিরলসভাবে বিন্দু বিন্দু করে রস তৈরি করে। তার উপরের স্তরটিতে তুলনামূলকভাবে অনেক কম মানুষ, কিন্তু যন্ত্রে তাদের অবস্থানের কারণে শক্তিতে তারা অনেক বলবান। তাই তারা নীচের সংগ্রহ করা রস অনায়াসে নিজের কাছে টেনে নেয়। উপরে যারা আছে, তারা দুর্নীতিপরায়ন বলেই যে এটা হচ্ছে, তা কিন্তু নয়। যন্ত্রের কারণেই মূলত এটা হচ্ছে । যন্ত্রটাই এভাবে বানানো হয়েছে। স্তরে স্তরে সাজানো মানুষগুলো নিচের স্তরের রস ওপরে টেনে নিয়ে নিচ্ছে তাদের শক্তির কারণে। সাময়িক কিছু ব্যঘাত দেখা দিলেও একে অপরকে দোয়ারূপ করে সকলেই ভাল থাকতে চায় এতে কেউ দোষের কিছু দেখে না, বরং ধরে নেয় যে এটাই জগতের নিয়ম। ঠিক এমনটিই ঘটেছে এবারে কুরবানীর চামড়ার বাজারে দামের অকল্পনীয় দর পতনে । এখানে উল্লেখ্য যে সামাজিক লক্ষ্য অর্জনের জন্য বর্তমান চামড়া শিল্পের ব্যবসায়িক কাঠামো তৈরি হয়নি। বাস্তবে নৈতিক ও সামাজিক দায়িত্ববোধের বিষয়টি নিদারুনভাবে উপেক্ষিত হয়েছে । তাই চামড়া শিল্প সংস্লিষ্ট বর্তমান বানিজ্যিক ক্রয় বিক্রয়ের মুল কাঠামো ঠিক রেখে এর জন্য যতকিছুই করা হোক না কেন তা আখেরে কোন ফলই দিবেনা । দেশের চামড়া শিল্পের মুল কুশিলবগুলি তাদের কুকর্মগুলি আরো সুসংহত করে এর কুপ্রভাবগুলি ক্রমান্বয়ে আরো কুৎসিত ভাবেই দেশ ও জনজীবনকে বিপর্যস্ত ও বিষিয়ে তুলবে ।
উল্লেখ্য যে দেশের প্রচলিত অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় ব্যক্তিগত মুনাফাভিত্তিক ব্যবসার বাইরে ব্যবসার কোনো সুযোগ নেই। অর্থাৎ স্বার্থপর হওয়া ছাড়া ব্যবসা করার কোনো সুযোগ নেই। স্বার্থহীনভাবে কিছু করতে চাইলে দানখয়রাতের জগতে প্রবেশ করতে হয়। দাতব্য কর্মকাণ্ডে সমাজের অবহেলিত মানুষের অনেক উপকার হয় তাতে কোন সন্দেহ নাই । কিন্তু এসব কর্মকাণ্ড বরাবরই পরমুখাপেক্ষী এবং অনুৎপাদনশীল থেকে যায়। আত্মনির্ভর হওয়ার কোনো সুযোগ এদের থাকে না। কুরবানীর চামড়ার বিক্রয়লব্দ অর্থ দান খয়রাতে ব্যবহৃত হলেও এটাকে ঘিরে আছে ব্যবসা । অপরদিকে এই ব্যবসাটিকে সামাজিকিকরনের প্রভুত সম্ভাবনা রয়েছে । সামাজিক ব্যবসা যেহেতু ব্যবসা, সে কারণে টাকাটা ফিরে আসে। একই টাকাকে বারবার ব্যবহার করে ব্যবসা সম্প্রসারণ করা যায়। সামাজিক ব্যবসাকে নিজস্ব ক্ষমতায় স্থায়ীভাবে টিকিয়ে রাখা যায়। সমাজের যত সমস্যা আছে, সবকিছুর সমাধান সামাজিক ব্যবসার মাধ্যমে অর্জন করা যায়। সমাজের অবহেলিত দরিদ্র জনগুষ্ঠি ও মাদ্রাসা এতিমখানায় অধ্যয়নকারী দরিদ্র তরুনদেরকে সামাজিক ব্যাবসার কাঠামোতে সংগঠিত করে তাদের রুজি ও আয় বাড়ানোর জন্য সামাজিক ব্যবসার মাধ্যমে সামাজিক সমস্যা সমাধানের লড়াইয়ে নামানো যায় । তাদেরকে অতিসহজেই কুরবানীর চামড়ার বিক্রয়লব্দ অর্থ হতে প্রয়োজনীয় তহবিল যোগানোর মাধ্যমে কিংবা বানিজ্যিকভাবে পরিচালনার জন্য কম্পোষ্ট ম্যানুফেকচারিং প্লান্টের সাথে সম্পৃক্ত করে সামাজিক ব্যবসার অংশীদার করা যায় । এখানে অবশ্য উল্লেখ্য যে একটি ব্যবসা পরিচালনার জন্য মুলত দুই রকমের দক্ষতার প্রয়োজন। প্রথমত: প্রয়োজন হবে সামাজিক ব্যবসার অংশিদার তথা মালিক হিসাবে মুনাফা বাড়ানোর জন্য প্রয়োজনীয় কলাকৌশল আয়ত্ত করা, দ্বিতিয়ত: প্রয়োজন হবে ব্যবসায়িক পদ্ধতিতে সামাজিক সমস্যা দ্রুত সমাধানের দক্ষতা অর্জন করা। সরকারের পক্ষ হতে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষন দানের মাধ্যমে তাদেরকে এই উভয়খাতে দক্ষতা অর্জনে সক্ষমতা দেয়া যেতে পারে ।
কুরবানীর চামড়াসহ চামড়া শিল্পসংস্লিষ্ট কর্মকান্ড নিয়ে তৃণমুল পর্যায়ে সংগঠিত সামাজিক ব্যবসা কাঠামোটি নীচ থেকে ওপরে রস চালান দেওয়ার গতিটা কমাবে। পুঁজি, ঋণ, স্বাস্থ্য, প্রযুক্তি , শিক্ষা প্রভৃতির প্রাতিষ্ঠানিক আয়োজন সমন্বিত করে গড়ে তোলা সামাজিক ব্যবসা কাঠামোটি নিচের তলার লোকের কাছে একটি সফল ও লাভজনক ব্যবসা সহজলভ্য করে দিতে পারে। এর ফলে তাদের সম্পদ ও আয় বৃদ্ধির সুযোগ সৃষ্টি হবে। সামাজিক ব্যবসার পরিমাণ যদি ব্যক্তিগত মুনাফাকেন্দ্রিক ব্যবসার চেয়ে বেশি হতে আরম্ভ করে, তাহলে যত না নীচের রস ওপরে যাবে, তার চেয়ে বেশি ওপরের রস নিচে আসতে শুরু করবে। উল্লেখ্য ব্যক্তিস্বার্থ বা স্বার্থপরতার একচ্ছত্রবাদ থেকে বের হয়ে আসতে না পারলে দারিদ্র্য, আয়বৈষম্য, বেকারত্ব, স্বাস্থ্যহীনতা, পরিবেশদূষণ কোন কিছু থেকেই বের হওয়া যাবে না। সবশেষে সকলকে অনুভব করতে হবে যে পৃথিবীতে আমি ছাড়া আরও মানুষ আছে, আরও প্রাণী আছে। সবার সমবেত মঙ্গলই আমার মঙ্গল, আমাদের মঙ্গলই আমার মঙ্গল । চামড়া শিল্পে বিরাজমান অশুভ সিন্ডিকেট নিপাত যাক, তাদের কর্মকার্ডের ফলে মাটিতে পুতে ফেলা চামড়া তাদের জন্য মারনাস্স্র হিসাবে কম্পোষ্ট আকারে উঠে আসুক ধরনী ফুরে, পৃথিবীকে পরিনত করুক একটি সুখী সমৃদ্ধশালী পরিবেশ বান্ধব আবাসভুমি হিসাবে।
দীর্ঘক্ষন সাথে থাকার জন্য সকলকে ধন্যবাদ ।
সুত্র :
লেখা ও ছবির সুত্র যথাস্থানে লিংক আকারে দেয়া হয়েছে । নীচে সহায়ক গ্রন্থ সুত্রসমুহ দেয়া হলো
Ali, M A. 2004. Sustainable Composting. WEDC, UK – This book comprises a series of case studies from around the world, each looking at how marketing contributed to a wide range of composting initiatives.
Ali, M A. 2002 . Promoting compost as a business of the urban poor. Fieldwork note from Bangladesh . Unpublished. DBKP , Dhaka.
Rytz, I. 2001. Assessment of a decentralized composting scheme in Dhaka, Bangladesh – Technical, operational, organizational and financial aspects. Dübendorf. Available
online: Click This Link
২১ শে আগস্ট, ২০১৯ সকাল ৭:৪৯
ডঃ এম এ আলী বলেছেন:
পোষ্টটি অসাধারণ অনুভুত হওয়ার জন্য ধন্যবাদ ।
দেশের মানুষ যেমনই হোক ভাল কিছু আশা করেই যাব
হতাশা বা নৈরাশ্যে ভোগবনা কিছুতেই , জীবনের শেষ
প্রান্তে পৌঁছেও বলে যাব , স্বপ্ন তো দেখতেই হবে।
স্বপ্নগুলো সব কাচের মতো ভেঙে গুঁড়িয়ে গেলেও
আবার সেগুলো জড়ো করতে চেষ্টা করেই যাব ।
শুভেচ্ছা রইল
২| ২১ শে আগস্ট, ২০১৯ সকাল ৭:৪২
রাজীব নুর বলেছেন: চমৎকার বিশ্লেষন।
২১ শে আগস্ট, ২০১৯ সকাল ৭:৫৫
ডঃ এম এ আলী বলেছেন:
অনেক ধৈর্য ধরে এই লম্বা চওরা অতি নিরস পোষ্টিটি
পাঠান্তে সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য ধন্যবাদ ।
শুভেচ্ছা রইল
৩| ২১ শে আগস্ট, ২০১৯ সকাল ৭:৫৭
চাঁদগাজী বলেছেন:
মুল্য, লাভ বা ক্ষতির কারণে কেহ সম্পদ বিনষ্ট করার অধিকার রাখে না; কেহ ইচ্ছা করলে নিজের ধানের গোলায় আগুন দিতে পারবে না, লাভ না হলে, চামড়া বিনষ্ট করা ছিল অপরাধ।
কোরবাণীর দিন ১ কোটী ৫ লাখ পশুর চামড়া বাজারে এসেছে; এত বেশী চামড়াকে প্রসেস ও সংরক্ষণ করার পুরো প্ল্যানটা অর্থমন্ত্রী, টেনারির মালিকগণ ও আড়তদাররা ১ মাস আগে বসে ঠিক করলে, এই সমস্যা দেখা দিতো না।
২১ শে আগস্ট, ২০১৯ সকাল ৮:২৯
ডঃ এম এ আলী বলেছেন:
সময়ের কাজ সময়ে না করলে এমনটিই হয় ।
বিনষ্ট সম্পদকেই আরো শক্তিশালি একটি সম্পদে
পরিনত কার জন্য প্রচেষ্টা ।
৪| ২১ শে আগস্ট, ২০১৯ সকাল ৭:৫৯
চাঁদগাজী বলেছেন:
আপনি অনেক পরিশ্রম করে, অনেক তথ্যের ভিত্তিতে সমস্যাটিকে তুলে ধরেছেন।
২১ শে আগস্ট, ২০১৯ সকাল ৮:৩৩
ডঃ এম এ আলী বলেছেন: সমস্যাটি সকলে্ই বিশেষ করে ব্লগারগন
বিশেষভাবে অবগত আছেন । আমি
শুধু এর একটি বিকল্প ব্যবহারের
ধারনা সকলের সাথে শেয়ার করছি ।
ধন্যবাদ ।
৫| ২১ শে আগস্ট, ২০১৯ সকাল ৮:০০
চাঁদগাজী বলেছেন:
পুরো দেশে কিছু ব্লগার সত মানুষ, পুরো সরকারে শেখ হাসিনা সত মানুষ।
২১ শে আগস্ট, ২০১৯ সকাল ৮:৩৭
ডঃ এম এ আলী বলেছেন:
সততাই সম্পদ , এটা যে যত বেশী বুঝতে পারবে তার ততই মঙ্গল ।
এতদিন জনতাম সরকারে দক্ষ লোক নাই , এখন দেখি শুধু দ্ক্ষই নয়
বিজ্ঞ লোকেরো তীব্র অভাব রয়েছে সরকারে ও তার প্রশাসনে ।
৬| ২১ শে আগস্ট, ২০১৯ সকাল ১০:০৩
সোহানী বলেছেন: যা লিখেছেন তা পড়তে আরো দু'দিন লাগবে। চোখ বুলিয়েছি মাত্র..... পড়া শেষ করে আবার আসবো।
২১ শে আগস্ট, ২০১৯ দুপুর ২:৫৪
ডঃ এম এ আলী বলেছেন:
এসে কষ্ট করে দেখার জন্য ধন্যবাদ ।
আবার অসার অপেক্ষায় থাকলাম ।
শুভেচ্ছা রইল
৭| ২১ শে আগস্ট, ২০১৯ দুপুর ১২:২৭
গিয়াস উদ্দিন লিটন বলেছেন: আপাত ঝঞ্ঝাল চামড়া ব্যবহারের বিকল্প প্রস্তাবনা নিয়ে চমৎকার একটি পোস্ট।
পড়তে কিছুটা ক্লান্তিকর ঠেকলেও এধরনের পোস্ট তৈরি করা বিশাল শ্রমসাধ্য আর সময় সাপেক্ষ।
আপনার পোস্টগুলি প্রতিনিয়ত ব্লগকে সমৃদ্ধ করছে। অভিনন্দন নিন ।
২১ শে আগস্ট, ২০১৯ বিকাল ৩:১৮
ডঃ এম এ আলী বলেছেন: পোষ্টটি চমৎকার অনুভুত হয়েছে শুনে খুবই খুশী হলাম ।
এটা পড়ে যে পাঠক ক্লান্ত হবেন তা আমার বিলক্ষন জানা জানা ছিল । এ জানাটুকু মাথায় নিয়েও এটা লিখেছি ।
শুধু চামড়া কেন এবারের কুববানীর ঈদের সবগলু দিকের অব্যবস্থাপনা দেখেই মনটা বিষিয়ে উঠে ।
ঈদের দিন কয়েক পুর্ব হতেই দিনমান শত শত কিলোমিটার ঝানজট , ট্রেনের শিডিউল বিপর্যয় ,
দিনরাত ট্রেনের প্লাটফর্মে এই তীব্র গরমের মধ্যে ছোট ছোট বাচ্চা কাচ্চা সহ অগনিত মানুষের ভোগান্তি,
কুববনীর গরুর দাম পতন , ক্ষুদ্র গরুব্যাবসায়ী ও খামরীদের লোকসান নিয়ে আহাজরী , রাজধানীর
কুরবানীর গরুর নামে রাজধানীর সকল রাস্তার জায়গা দখল ও যত্র তত্র কুরবানী দিয়ে ঝঞ্জাল সৃস্টি,
অথচ মোহাম্মদপুরে আধুনিক সরকরী জবাইখনায় মাত্র একটি কুরবানীর গরু জবাই । সবশেষে
চামড়া নিয়ে সিন্ডিকেট বানিজ্য করে কুবানীর চামড়ার হকদার গরীবদেরকে ঠকানোর মহোৎসব ।
কত আর বলব । কুববানীর পশুর চামড়াই বা কেন, প্রশাসনে যে ঝঞ্জাল স্তুপিকৃত হচ্ছে এদেরকে
নিয়ে জাতির ভোগান্তির শেষ হবে কবে সেটাই এখন ভাবনার বিষয় ।
আপনার সুললিত প্রশংসা শুনে অনুপ্রাণীত হলাম ।
শুভেচ্ছা রইল
৮| ২১ শে আগস্ট, ২০১৯ বিকাল ৩:২৫
রাজীব নুর বলেছেন: লেখক বলেছেন:
অনেক ধৈর্য ধরে এই লম্বা চওরা অতি নিরস পোষ্টিটি
পাঠান্তে সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য ধন্যবাদ ।
শুভেচ্ছা রইল
পড়াতেই আমার আনন্দ। আজকাল প্রাম ভালোবাসা নিয়ে লেখা আড় ভালো লাগে না। এরকম লেখা পড়েই বেশি ভালো লাগে।
২১ শে আগস্ট, ২০১৯ বিকাল ৩:৩৭
ডঃ এম এ আলী বলেছেন:
ঠিকই বলেছেন ক্ষুধার রাজ্যে কবিতাই যেখানে গদ্যময়
সেখানে প্রেম ভালবাসা তো জানালা দিয়ে পালাবেই,
তখন তা ভাল লাগবে কেমনে । তার চেয়ে পথের
পাচালীর মত আপনার লেখা দিনমানের ডায়রিগুলি
পাঠেই বেশী আনন্দ যোগায় ।
আবার আসার জন্য ধন্যবাদ ।
শুভেচ্ছা রইল
৯| ২১ শে আগস্ট, ২০১৯ বিকাল ৩:৪৯
ঠাকুরমাহমুদ বলেছেন: ডঃ এম এ আলী ভাই, আপনার উল্লেখিত সম্পূর্ণ পোষ্ট ও এছাড়া আরো যদি কোনো তথ্য যোগ করার থাকে তা সহ এ-ফোর সাইজ প্যাপারে প্রিন্ট করে আপনি দয়াকরে নিম্ন উল্লেখিত প্রতিষ্ঠানে “সেক্রেটারী জেনারেল” বরাবর জমা দিন।
The Federation of Bangladesh Chambers of Commerce and Industry (FBCCI)
60, Motijheel C/A, Dhaka, Bangladesh.
Tel: 88-02-9560102-3, 9560482
Fax: 88-02-9567621
E-mail: [email protected].
URL: http://www.fbcci-bd.org
Dhaka Chamber of Commerce & Industry (DCCI)
DCCI Building
65-66 Motijheel C/A
Dhaka-1000, Bangladesh
Office Hour: Saturday-Wednesday: 9am - 5pm Thursday: 9am - 1pm
Phone : 880-2-9552562
Fax : 880-2-9560830
Email : [email protected]
Web Site : http://www.dhakachamber.com
এতে যদি আপনার যথাযথ সম্মানী এবং আপনার জন্য কোনো সাড়া না আসে তার জন্য যা ব্যাবস্থা নেওয়া যায় তার সর্বাত্বক ব্যাবস্থা নেওয়ার চেষ্টা করবো। প্লিজ একটু ভেবে দেখুন। এছাড়া যেহেতু প্রমাণস্বরুপ সম্পূর্ণ প্রস্তাবণা আপনার সামহ্যোয়ারইন ব্লগে পোষ্ট দেওয়া আছে তাই কপি রাইট করা আছে বলা চলে। আপনি এর যথাযথ মুল্যায়ন পাবেন।
আমি আরো বিস্তারিত লিখবো। ধন্যবাদ।।
২১ শে আগস্ট, ২০১৯ রাত ৮:৪২
ডঃ এম এ আলী বলেছেন: আপনার মুল্যবান পরামর্শের জন্য ধন্যবাদ ঠাকুরমাহমুদ ভাই ।
আপনার পরামর্শটি সক্রিয় বিবেচনায় রাখলাম । এটাতো
ব্লগের জন্য লেখা । প্রফেশনলদের জন্য লিখতে হলে এর
সাথে আরো তথ্য উপাত্ত ও বিশ্লেষন দিতে হবে ।
তারা চাইলে চামড়াজাত পন্যের দেশীয় ও বৈশ্বিক
বাজার বিকাশ সহ এনিম্যাল বাই প্রোডাকটস
ব্যাবহার করে বানিজ্যিক ভিত্তিতে আন্তর্জাতিক
মানের প্লান্ট স্থাপনের জন্য একটি পুর্ণাঙ্গ প্রকল্প
প্রস্তাবনা প্রনয়ন করে দিতে পারি । তাতে করে
প্রকল্পটি বাস্তবায়নের জন্য তারা USAID , WHO ,
FAO , IDB , ADB , JICA , NORAD সহ
অন্যান্য আন্তর্জাতিক দাতা সংস্থা হতে অনুদান
হিসাবে আর্থিক সহায়তা নিতে পারবে বলে আমি
দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি । সম্ভব হলে তাদের সাথে
কথা আমাকে জনাতে পারেন , তাহলে আমার
পক্ষে প্রস্তুতি নিতে সহয়ক হবে ।
অনেক অনেক শুভেচ্ছা রইল
১০| ২১ শে আগস্ট, ২০১৯ বিকাল ৫:৪২
গরল বলেছেন: ঠিক এজন্যই দরকার সোস্যাল বিজনেস, ড. ইউনুসের উদ্ভাবিত এই মডেল এখন একারণেই বিশ্বে জনপ্রীয় হচ্ছে। কর্পোরেটদের দ্বারা আর কতদিন মানুষ বন্দি হয়ে থাকবে, দরকার নতুন উদ্যোগ।
২১ শে আগস্ট, ২০১৯ রাত ১০:১৮
ডঃ এম এ আলী বলেছেন: ঠিকই বলেছেন সোসাল বিজনেস ব্যবস্থাটির প্রচলন এখন খুব বেশী দরকার ।
শান্তিতে নোবেল বিজয়ী দেশের প্রখ্যাত অর্থনীতিবিদ ড.মোহাম্মদ ইউনুছের প্রতি প্রগার শ্রদ্ধা রেখেই সামজিক ব্যবসা মডেলটিকে স্মরণ করছি এখানে । এর উৎপত্তির ইতিহাস ও এর নীতিমালা নীচে তুলে ধরলাম সকলের সাথে শেয়ার করার মানসে :
The idea of a social enterprise as a distinct concept first developed in the late 1970s in the UK as an alternative commercial organisational model to private businesses, co-operatives and public enterprise. The concept, at that time, had five main principles divided into 3 values and 2 paradigm shifts. The 2 paradigm shifts were:
• a common ownership legal structure where members/owners have one voting share and different forms of investment
• democratic governance, where each worker/community resident is a member with one vote
The 3 principles, now referred to as the 'Triple Bottom Line' were:
• trading and financially viable independence
• creating social wealth
• operating in environmentally responsible ways
Dr. Muhammad Yunus used the term "social enterprise" in his book 'Banker to the Poor', published in 2009. Muhammad Yunus used the term referring to microfinance.
সত্র : Click This Link
ডক্টর ইউনুছ সোসাল বিজনেস কনসেপ্টটিকে সফলভাবে ব্যবহার করেছেন তার লেখা বইয়ে এবং প্রয়োগ করেছেন মাইক্রোক্রেডিট কর্মসুচীতে । ৭০ দশকে বৃটেনে উদ্ভাবিত এই কনসেপ্টটিকে তৃতীয় বিশ্বের আর্থ-সামাজিক কাঠামোর সাথে যথাযথভাবে সমম্বয় করে একে কিভাবে আরো ভাল ভাবে প্রচলন করা যায় সে লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছেন দুনিয়ার বিভিন্ন প্রান্তে । তার এ মহতি উদ্যোগ সফল হোক এ কামনাই করছি । এখানে উল্লেখ্য যে, সাসাজিক ব্যবসা কনসেপ্টটির প্রতি আমি নীজেও অনুরক্ত ।
নতুন উদ্যোগের প্রয়োজনীয়তা অনুভবের জন্য আপনাকে ধন্যবাদ ।
শুভেচ্ছা রইল
১১| ২১ শে আগস্ট, ২০১৯ সন্ধ্যা ৭:৫১
বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: এক নতুন বিপ্লবী প্রস্তাবনা!
সমস্যার গভীরে গিয়ে মূল সমস্যা শুধু চিহ্নিতকরণই নয়, বরং দেশ, কৃষি, এবং শিল্প খাতে
তথা সার্বিক অর্থনৈতি এবং জৈব সারের মাধ্যমে কৃত্রিম সারের কৃত্রিমতা থেকে মুক্তির এক
যুগান্তকারী প্রস্তাব উপস্থাপন করেছেন।
হ্যাটস অফ টু ইউ স্যার
আর ঠাকুর মাহমুদ ভায়ার দারুন প্রস্তাবনায় ভাল লাগা। আপনি উদ্যোগ নিতেই পারেন।
প্রিয়তে রেখে দিলুম ।
+++++++++++
২২ শে আগস্ট, ২০১৯ রাত ১২:৫৪
ডঃ এম এ আলী বলেছেন:
জৈব সারের মাধ্যমে কৃত্রিম সারের কৃত্রিমতা থেকে মুক্তির এক
যুগান্তকারী প্রস্তাব হিসাবে স্বিকৃতি দিয়ে আমার পোষ্টটিকে
অনেক উচ্চতায় নিয়ে যাওয়া সহ পোষ্টটকে প্রিয়তে নেয়ার
জন্য কৃতজ্ঞতা জানবেন ।
শুভেচ্ছা রইল
১২| ২১ শে আগস্ট, ২০১৯ রাত ৯:৩৬
পুলক ঢালী বলেছেন: আপনার পোষ্ট পড়া মানেই পুঙখানুপুঙ্খ ভাবে বড় বিষয় ছোট বিষয় সব এক জায়গায় করে একটা গবেষনা পত্র পাঠ করা। সব সমস্যাগুলি তুলে ধরেছেন সব সমাধান গুলি এক জায়গায় নিয়ে এসেছেন। অসম্ভব পরিশ্রমের ফসল হিসেবে আমরা এমন একটা পোষ্ট পেলাম। সরকারের কাঁচা চামড়া রফতানীর ঘোষনা আসলে অসার স্টান্টবাজী ছাড়া আর কিছু নয় (রপ্তানীর জন্য ২৭টা ধাপ পেরুনো এই গদাইলস্করী চালে চলা দেশের ক্ষেত্রে অসম্ভবই মনে হয়) অথবা টেরাকোটা জাতীয় ক্ষতিকর কোন উদ্দেশ্য সামনে রেখে হয়তো কোন ষড়যন্ত্র তা পরিষ্কার হয়েছে। কারন যেখানে একটা ETP তৈরীতে বছরের পর বছর পার হয়ে যায় সেখানে ফাইটো সেনিটারী টেষ্ট ল্যাব বসাতে ১০০ বছর পেড়িয়ে যেতে পারে কাজের চেয়ে কথা সর্বস্ব এই দেশের সরকারগুলির। বিকল্প ব্যবহারে কম্পোষ্ট সার তৈরীর দিকনির্দেশনা দারুন যুগোপযোগী হয়েছে।
যে ব্লগে এমন পোষ্ট আসে সেই ব্লগকে সরকার ব্লক করে রেখেছে। আপনার পোষ্ট সরকারের কারো নজরে পড়ার সম্ভাবনা নেই। ঠাকুরমাহমুদ ভাইয়ের প্রস্তাব বিবেচনা করতে পারেন তবে শুধু সম্মানীর জন্য নয় বরঞ্চ এই প্রস্তাবনাগুলি বাস্তবায়িত হলে দেশের যদি কিছু উপকার হয় সেই বিবেচনায়।
ভাল থাকুন।
২২ শে আগস্ট, ২০১৯ রাত ২:০৪
ডঃ এম এ আলী বলেছেন:
পোষ্টের প্রসংসায় অনুপ্রানীত হলাম । কাঁচা চামড়া রপ্তানীর সিদ্ধান্তের ষ্ট্যান্টবাজী ধরতে পেরেছেন দেখে ভাল লাগল ।
ETP আর Phytosanitary laboratory কথা কি আর বলব । বছর দুয়েক আগে এই আগষ্ট মাসে ডেইরী স্টারে প্রকাশিত একটি সংবাদ ভাষ্যে দেখেছিলাম সাভারে ট্যানারীতে ইটিপি প্লান্টটি নির্মানের জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত চাইনীজ ঠিকাদারী প্রতিষ্টান Jiangsu Lingzhi Environmental Protection Co. Ltd (JLEPCL) এর বিরোদ্ধে Bangladesh Environmental Lawyers Association (Bela) কতৃক হাইকোর্টে দায়ের কৃত একটি পিটিশনের কারণে কোর্ট তাদেরকে হাজিরা দেয়ার জন্য সমন জারী করেছিল । Belaর পিটিশনে বলা হয়েছিল চাইনীজ ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান JLEPCL চুক্তির শর্ত অনুযায়ী টেনারীর বর্জ দিনরাত ২৪ ঘন্টা সেন্ট্রাল ETPতে শোধন না করে তা সেখানকার ধলেশ্বরী নদীতে ফেলে দিচ্ছে ( সুত্র Click This Link ) যা আবার ঘুরে ফিরে সেই বুড়ীগঙ্গাতেই চলে আসছে । সেরকমভাবে ফাইকো সেনিটারী টেস্ট লেব হতে সর্টিফিকেট নিয়ে কাঁচা চামড়া বাংলাদেশের বর্ডার পাড়ী দিতে পারলেও শেষ পর্যন্ত না আবার তা ইউরোপিয়ান দেশের বোর্ডারে গিয়ে ধরা খেয়ে ফেরত না আসে । সব সম্ভবের দেশে এমনটি হলেও অবাক কিছু থাকবেনা ।
কাঁচা চামড়ার বিকল্প লাভজনক ব্যবহার প্রসঙ্গে দেশের বিষেজ্ঞগন বিবেচনা করে দেখতে পারেন , আমি শুধু একটা পতাকা তুলে ধরেছি ।
শুভেচ্ছা রইল
১৩| ২১ শে আগস্ট, ২০১৯ রাত ১১:১০
নতুন বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে যে এতো কস্ট করে এ্মন একটা গবেষনা ধমী লেখার জন্য।
এটা আসলে আমাদের মন্ত্রী এবং প্রধান মন্ত্রীকেই পড়ানো দরকার। তবে এই সমস্যার বিষয়ে অনেক কিছুই বুঝতে পারবেন।
একটু কস্ট করে অব্যশ্যই উপরে ঠাকুরমাহমুদ ভাইয়ের অনুরোধ মতন তাদের পাঠাবেন।
আসলে বানিজ্য মন্ত্রী এবং প্রধান মন্ত্রীকেও পাঠানো দরকার। এদের কাছে চাটার দল যারা থাকে তাদের কেউই এমন ভাবে ভাববার মতন ক্ষমতা নাই। তাই এরা সঠিক ধারনা পায় না।
২২ শে আগস্ট, ২০১৯ রাত ৩:২৩
ডঃ এম এ আলী বলেছেন:
আমাদের মন্ত্রীরা যদি একটু পড়াশুনা করত তাহলে
আমাদের প্রধানমন্ত্রীকে একাই সব কিছু করতে হয় বলে
কথাটা বোধ হয় শুনতে হতোনা । আমি জানি প্রতিটা
মন্ত্রনালয়ে একজন করে তথ্য কর্মকর্তা আছেন, যার
কাজ হলো সকালে অফিসে এসেই সেদিনকার দৈনিক পত্র,
সাময়িকী ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশিত
তার মন্ত্রনালয় সহ দেশের গুরুত্বপুর্ণ সকল সংবাদের
ক্লিপিং ফাইলে করে মন্ত্রীর কাছে পাঠানো । তিনি তার
দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করলে গুরুত্বপুর্ণ পক্ষ বিপক্ষ
সকল খবরই মন্ত্রীদের জানার কথা । কারন দিনের কাজ
শুরু করার আগেই মন্ত্রীদেরও সেগুলি দেখার কথা ।
যাহোক আপনার পরামর্শ সক্রিয়ভাবে বিবেচনাযোগ্য।
শুভেচ্ছা রইল
১৪| ২১ শে আগস্ট, ২০১৯ রাত ১১:৩১
আখেনাটেন বলেছেন: গড়ল বলেছেন: ঠিক এজন্যই দরকার সোস্যাল বিজনেস, ড. ইউনুসের উদ্ভাবিত এই মডেল এখন একারণেই বিশ্বে জনপ্রীয় হচ্ছে। কর্পোরেটদের দ্বারা আর কতদিন মানুষ বন্দি হয়ে থাকবে, দরকার নতুন উদ্যোগ। -- সহমত। পুঁজিবাদী যুগে অসাম্যের বাড়বাড়ন্তে অনেকেই এখন বিকল্প খোঁজার চেষ্টা করছে।
এরই থাবা পড়েছে দেশের একটি ভাইটাল সেক্টরে। যার ধাক্কায় গরীবের হক হাজারো কোটি টাকা ভেসে গেল।
আপনার ট্রেডমার্ক সেই অনেক পরিশ্রমী লেখাটির জন্য অশেষ ধন্যবাদ। আশা করি কর্তৃপক্ষ এই গুরুত্বপূর্ণ শিল্পকে গোরস্থানে পাঠানো থেকে বিরত থাকবে। এবং আশু ব্যবস্থা গ্রহণপূর্বক সমস্যার মূলে করাঘাত করে সমাধানের প্রয়াস পাবে।
লেখা অতি উত্তম হওয়ায় প্রিয়তে নিয়ে রাখলাম।
২২ শে আগস্ট, ২০১৯ রাত ৩:০২
ডঃ এম এ আলী বলেছেন:
পোষ্টের সারকথা আর অন্যতম লক্ষ্যটাই বলে দিয়েছেন মন্তব্যেের ঘরে সুন্দর করে
পুঁজিবাদী যুগে অসাম্যের বাড়বাড়ন্তে অনেকেই এখন বিকল্প খোঁজার চেষ্টা করছে
গরীবের হক মেরে হাজার কোটি টাকা আবার বিবিধ প্রকারে উড়াল না দিলেই হয় ।
লেখাটি প্রিয়তে তুলে রেখেছেন শুনে ভাল লাগল ।
শুভেচ্ছা রইল
১৫| ২১ শে আগস্ট, ২০১৯ রাত ১১:৫৮
কাওসার চৌধুরী বলেছেন:
প্রিয়তে রাখলাম। সময় নিয়ে পড়ে আবার আসছি।
২২ শে আগস্ট, ২০১৯ রাত ৩:০৪
ডঃ এম এ আলী বলেছেন:
প্রিয়তে নেয়ায় খুশী হলাম ।
সময় করে পড়বেন শুনে ভাল লাগল ।
শুভেচ্ছা রইল
১৬| ২২ শে আগস্ট, ২০১৯ রাত ১:৪২
আর্কিওপটেরিক্স বলেছেন: এমন চমৎকার পোস্টের শিরোনামে বানানের সমস্যাটা দৃষ্টিকটু। নিচের মতো এডিট করে দিলে ভালো হয় !
মাটিতে পোঁতা কুরবানীর পশুর চামড়াই ধ্বংসের হাতিয়ার হয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ুক চামড়াশিল্পের অশুভ সিন্ডিকেট বিনাশে
পোঁতা না ব্যবহার করে প্রোথিত বা ভূ-নিহিত শব্দগুলো ব্যবহার করতে পারেন।
বিশাল পোস্ট। সময় করে পড়বো। তবে মূল্যবান নিঃসন্দেহে !!
২২ শে আগস্ট, ২০১৯ রাত ২:১৫
ডঃ এম এ আলী বলেছেন:
ভ্রম টুকু ধরিয়ে দেয়ার জন্য অনেক ধন্যবাদ ।
সংশোধন করে দিয়েছি । পোষ্টটি মুল্যবান
অনুভুত হওয়ায় ভাল লাগল। সময় করে
পড়বেন শুনে আরো বেশী খুশী হলাম ।
শুভেচ্ছা রইল
১৭| ২২ শে আগস্ট, ২০১৯ ভোর ৬:০৯
এমজেডএফ বলেছেন:
চামড়া শিল্পের সমস্যা ও সম্ভাবনা নিয়ে তথ্যসমৃদ্ধ ও বিশ্লেষণধর্মী বিশাল আকারের লেখাটির জন্য আপনাকে যথোপযুক্ত ধন্যবাদ দেওয়ার মতো ভাষা আমার জানা নেই!
সামু ব্লগের বর্তমান নিভু নিভু অবস্থা এবং এখানে সমজদার পাঠক স্বল্পতার কারণে অনেকেই পরিশ্রম ও দীর্ঘ সময় নিয়ে বিশ্লেষণধর্মী পোস্ট লেখার উৎসাহ পায় না। গতানুগতিক কবিতা, গল্প ও হালকা ধরনের অগনিত পোস্টে যখন ব্লগের আলো ক্ষীন হয়ে আসে তখন আপনার লেখা পোস্টগুলো মেরুজ্যোতির মতো উজ্জ্বল রঙিন আলোর দীপ্তি হয়ে দৃশ্যমান হয়।
আমাদের দেশে অনেক ভালো ভালো উদ্যোগের অপমৃত্যু হয়েছে শুধুমাত্র দুর্নীতি ও মানুষের নৈতিক অবক্ষয়ের কারণে। তাই যে কোনো আর্থ-সামাজিক পরিকল্পনায় দুর্নীতি ও নীতিহীন মানুষের প্রতিবন্ধকতাকে জয় করে এগিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থাপত্র বা প্রতিকার থাকতে হবে। সিন্ডিকেট এখন যেমন আছে ভবিষ্যতেও থাকবে। কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর একচেঠিয়া আধিপত্য শিল্প-সংস্কৃতি, রাজনীতি, অর্থনীতি কোনো কিছুর জন্যই ভালো নয়। সিন্ডিকেটের মাধ্যমে কোরবানীর সময়ে কাঁচা চামড়ার দরপতন ঠেকাতে হলে চামড়ার বহুবিদ ব্যবহারের পদক্ষেপ নিতে হবে। কাঁচা চামড়াকে জৈব সারের উপাদান হিসাবে ব্যবহার করার প্রস্তাবটি খুবই যুক্তিসঙ্গত মনে করি। কম্পোস্টিং প্ল্যান্ট ও চামড়া সংরক্ষণের উদ্যোগ নিয়ে সামাজিক ব্যবসা বা সমবায়ের মাধ্যমে মাদ্রাসা, মৌসুমি ব্যবসায়ী ও খামারীদের এগিয়ে আসতে হবে। তখন আড়তদারেরা আজকের মতো পানির দামে কাঁচা চামড়া বিক্রি করতে স্থানীয় চামড়া বেপারীদের বাধ্য করতে পারবে না।
ঠাকুরমাহমুদ ভাইয়ের সাথে একমত হয়ে জানাতে চাই, আপনার এই লেখাটির একটি প্রিন্ট সংস্করণ তৈরি করে জাতীয় পত্র-পত্রিকা ও যথাযথ কতৃপক্ষের বরাবরে প্রেরণ করুন। সরকার বা কর্তৃপক্ষ কতটুকু মূল্যায়ন করলো সেটা বড় কথা নয়, অন্ততপক্ষে মানুষ জানুক, সবার মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি হউক। এভাবেই সমস্যার সমাধান ও সব বাধা অতিক্রম করার পথ বের করে আমরা দেশ ও জাতি হিসাবে এগিয়ে যেতে পারবো। ভালো থাকুন, শুভকামনা–
২৩ শে আগস্ট, ২০১৯ ভোর ৬:২৮
ডঃ এম এ আলী বলেছেন:
ইদানিংকালের ব্লগের লেখাগুলির একটি যতার্থ মুল্যায়ন করেছেন । ব্লগের এই ক্রান্তিকালে দেখা যায় ছোট ছোট অনেক রকমের উপাদেয় লেখা লিখে ব্লগকে সচল রাখার একটা কালচার শুরু হয়েছে । ব্লগের গুণী লেখকদের লেখাগুলি আগে চোখ এড়াতনা । এখন অনেকের লেখার ফ্রিকোয়েন্সি এতই বেশী যে উনাদের অনেক লেখাই দেখা হয়ে উঠছেনা , পরে যখন হাতে একটু সময় নিয়ে উনাদের ব্লগে গিয়ে লেখা দেখতে যাই তখন দেখা যায় উনাদের অনেক লেখাই দেখতে মিস হয়ে গেছে , তখন নীজের কাছেই লজ্জা লাগে এই ভেবে যে প্রিয় লেখকদের লেখাগুলি দেখতে মিস হয়ে গেল । পারস্পরিক মিথক্রিয়াটা কোথায় যেন আজকাল তাল ছিড়ে যাচ্ছে বিবিধ করণে । যাহোক সে অনেক কথা ।
চামড়া শিল্পের সুষ্ঠ ও সুন্দর বিকাশ ঘটানোর জন্য আপনার শুভকামনার সাথে রইল সর্বাত্মক সহযোগীতার আশ্বাস । , সকল সমস্যার সব বাধা অতিক্রম করে সকলে মিলে পথ বের করে দেশ ও জাতিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য আপনার প্রত্যয়ের সাথে সহমত ।
শুভেচ্ছা রইল
১৮| ২২ শে আগস্ট, ২০১৯ সকাল ৭:৫৪
ল বলেছেন: বিশাল থিসিস.....
সমস্যা, সমাধান, সবিই দেয়া।।।।
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা লেখাটা পড়া উচিৎ।।।
২৩ শে আগস্ট, ২০১৯ ভোর ৬:৪২
ডঃ এম এ আলী বলেছেন: থিসিস অআর লিখতে পারলাম কৈ লেখার পরিসর অনেক বড় হয়ে যাবে বলে ইচ্ছার বাইরে গিয়ে লেখাটির রাস টেনে ধরতে হয়েছে ।
সমস্যার অতি সামান্যই তুলে ধরা হয়েছে , বিবিধ কারণে অনেক গুরুত্বপুর্ণ সমস্যা তুলে ধরা যায়নি , অবশ্য সমস্যাটি তৈরী হহওয়ার পিছনের অনেক কথাই উঠে আসতেছে অনেক বিজ্ঞ পাঠকের মন্তব্যের কথায় ।
সমস্যাটির সমাধান সার্বিকভাবে নির্ভর করে সকলের সচেতনতা ও সকল প্রকার অনিয়মের বিরোদ্ধে উচ্চ কন্ঠ হওয়ার মধ্যে ।
সংস্লিষ্টদের লেখাটি পড়ার বিষয়ে আপনার আশাবাদের সাথে সহমত পোষন করি ।
শুভেচ্ছা রইল
১৯| ২২ শে আগস্ট, ২০১৯ সকাল ৯:১৫
হাসান কালবৈশাখী বলেছেন:
কস্ট করে বিশাল একটা গবেষনাধমী লেখা লিখেছেন। ধন্যবাদ আপনাকে।
তবে আমার কিছু কথা।
বাংলাদেশে কোরবানি সিস্টেমটি তৃটিপুর্ন মনে হয়। সবাই ইন্ডিভিজুয়াল ভাবে কোরবানি দেয়, রাস্তায় জবাই, মাংশ প্রসেস অবশেষে চামড়া ক্রেতা খোজ করা হয়। পৃথিবীর কোন দেশেই এমনটা হয় না।
চামড়ার প্রথম ক্রেতা পাড়ার তরুন বা পান্ডা কেউ একজন
দ্বিতীয় দফায় সেটা ভ্যান নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা এক মাস্তান গ্রুপের কাছে বিক্রি
৩য় দফায় সেটা যায় পাইকারি ক্রেতার কাছে
৪র্থ দফায় হাত বদল হয় চামড়ার আড়তদারদের হাতে।
৫ম দফায় যায় ট্যানারি মালিকের কাছে ।
১ দিনে এক কোটি ৩০ লাখ চামড়া বাজারে। যেখানে কোন দেশে পেট্রলিয়াম প্রডাক্সান সামান্য বাড়লেই দাম ১০ ডলার পড়ে যায়, সেখানে ১ দিনে পচনশীল কোটি চামড়া বিক্রির অপেক্ষায় ক্রেতা মাত্র একজন মানে ১টি পক্ষ (সংগবদ্ধ ট্যানারি মালিক)
যেকোন মালিক যদি চামড়া কিনবো না, টাকা নেই বলে ১-২ ঘন্টা ডিলে করলেই দাম অর্ধেক পড়ে যাওয়ার কথা।
বাংলাদেশে ইন্ডিভিজুয়াল কোরবানি সিস্টেমটি বাদ দিতে হবে উম্মুক্ত রাস্তায় জবাই, মাংশ প্রসেস এ এক অসভ্যতা।
বিশ্বের কোথাও এভাবে হয় না, সব ক্ষেত্রে রেজিষ্ট্রার্ড কশাইখানাতে কোরবানির অর্ডার নেয়া হয়, বা স্থানীয় গ্রোসারির মাধ্যমেও কশাইখানায় অর্ডার দেয়া যায়। মার্কিন ডলারে গরুর ভাগা ১৭০ খাশি বা ভ্যাড়া ২৫০ ভাগা। এনিমেল ফার্মেও গরু ছাগল চয়েস করে কোরবানি দেয়া যায়, রেট কিছু কম সেটাও তাদের নিজস্য রেজিষ্ট্রার্ড কশাইখানাতে। রক্ত কেউ দেখে না। সেখানে চামড়া চিন্তা আপনার না। চামড়া ১৪ হাত বদল হয় না, চামড়া মাফিয়াও নেই।
আমেরিকা আরব এশীয়া সবদেশেই কমবেশী একই সিষ্টেম।
২৩ শে আগস্ট, ২০১৯ ভোর ৬:৪৭
ডঃ এম এ আলী বলেছেন:
সমস্যাটির গভীরে গিয়ে মুল্যবান পর্যবেক্ষন তুলে ধরার জন্য ধন্যবাদ ।
আপনার উত্থাপিত বিষয়গুলি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনায় ফিরে আসার
ইচ্ছা রাখি বিকালের দিকে ।
অনেক অনেক শুভেচ্ছা রইল
২০| ২৬ শে আগস্ট, ২০১৯ সকাল ৭:২৪
সোহানী বলেছেন: চামড়া শিল্পের সাথে জড়িত সকল বিষয়ই এসেছে আপনার লিখায়। যা লিখেছেন তা এক কথায় পুরো একটি গবেষনা পেপার। তাই ঠাকুরমাহমুদের প্রস্তাবটি ভেবে দেখার অনুরোধ থাকলো।
হাঁ, আপনি আমি সবাই জানি বিষয়টির সমাধান। সরকার পর্যায়ে যদি এগিয়ে আসে তাহলে যেকোন সমস্যার সমাধান। যেমন যা আপনি বলেছেন সরকারী পর্যায়ে কয়েকমাস আগের থেকে মাস্টার প্লান করে পুরো বিষয়টিকে সামাল দেয়া। কিন্তু সেটি কি হবার আছে? কেউ কি এ নিয়ে চিন্তা করে? যদি চিন্তা করতো তাহলে এমন চমৎকার সুযোগ কোন দেশেই হাতছাড়া করা কথা নয়। আমাদের মতো এতো বৃহৎ পশুর চামড়ার বাজারতো মনে হয় আর নেই। তাই কম্পোস্ট সার করার কোন দরকার নেই। সংরক্ষন করে চামড়া শিল্পে উদ্যোগ নিলে তা গার্মেন্টস সেক্টর থেকেও বড় ইন্ডাস্ট্রি হবে।
তবে হাসান কালবৈশাখী এর সাথে আমিও একমত। এভাবে রাস্তা ঘাটে পশু জবাই করা যেসন পরিবেশের ক্ষুত তেমনি সরকারী কন্ট্রোল থাকে না। তার থেকে যদি স্লটার হাউজ আইডিয়া ইমপ্লিমেন্ট করা যায় তাহলে সব দিক থেকেই তা লাভজনক। কিন্তু এভাবে কোটি কোটি গরু কোরবানী দেবার মতো যথেষ্ট স্লটার হাউজ তৈরীও একটি বিশাল ব্যাপার।
যাহোক, শুধু দরকার সরকারী উদ্যোগ বা ব্যাক্তি উদ্যোগে সরকারী সহায়তা। আর দরকার দেশের জন্য এক চিমটে ভালোবাসা! সেটি দেবার মতো সরকারী বা রাজনৈতিক ব্যাক্তিত্ব এর সময় আছে কি????
২৬ শে আগস্ট, ২০১৯ সন্ধ্যা ৭:৫২
ডঃ এম এ আলী বলেছেন:
আবার এসে পাঠ করে মুল্যবান মন্তব্য রেখে যাওয়ার জন্য ধন্যবাদ ।
আপনাদের অনুরোধ রাখার চেষ্টা করবো । আধুনিক পশু জবইখানা স্থাপন করে সেখানে কুবরানীর পশু জবাই করার জন্য ভাল কথা বলেছেন । এখানে প্রসঙ্গক্রমে উল্লেখ্য যে, ঢাকায় এখন সিটি করপোরেশনের দুটি জবাইখানা চালু আছে। একটি মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেটের ভেতরে, অন্যটি মিরপুর ১১ নম্বরের নিউ সোসাইটি মার্কেটে। এই দুটি জবাইখানায় প্রতিদিন চার শ পশু জবাই করার ব্যবস্থা আছে। ডিএনসিসির আওতাভুক্ত এলাকাগুলোতে দৈনিক দুই হাজারের বেশি পশু জবাই হয়।
এই পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্যসম্মত পশু জবাইখানার চাহিদার কথা বিবেচনা করে ইসলামিক রিলিফ ইউএসএর অর্থায়নে ও ইসলামিক রিলিফ বাংলাদেশের সহায়তায় মহাখালী নতুন কাঁচাবাজার-সংলগ্ন স্থানে আরো একটি পশু জবাইখানা বানায় ডিএনসিসি। আধুনিক এ জবাইখানায় পশু বিশ্রামাগার, বায়োগ্যাস প্ল্যান্ট, বৃষ্টির পানি সংগ্রহ, সৌরবিদ্যুৎ, বর্জ্য ও রক্ত সংগ্রহ এবং ব্যবস্থাপনা সুবিধা, চামড়া, শিং, হাড় সংগ্রহ ও ব্যবস্থাপনা, যন্ত্রাংশ জীবাণুমুক্ত করার জন্য পানি গরম করার ব্যবস্থা রয়েছে।তার পরেও এটা ব্যবহার হচ্ছেনা , শুন্য ঘর খা খা করছে .।
নতুন এই পশু জবাইখানার নির্মাণকাজ শেষ হয় গত বছরের এপ্রিলে। এরপর এটি উদ্বোধন করতেই সময় লেগে যায় ছয় মাসের বেশি। উদ্বোধনী আনুষ্ঠানিকতা শেষে হলেও এখন পর্যন্ত শুরু হয়নি এর ব্যবহার। অনেকেই বলছেন, ‘আমলাতান্ত্রিক’ জটিলতার কারণেই এই বিলম্ব।
যাহোক, এই কোরবানীর ঈদে সিটিকর্পোরেশন নিয়ন্ত্রিত জবাইখানায় মাত্র একটি গরু জবাই হয়েছে বলে বেসরকারী টিভি চ্যানেলগুলির নিউজে দেখতে পাই । অথচ সিটি কর্পোরেশনের দুইজন মেয়র ও কাউন্সিলরগুলিও যদি তাদের নীজেদের পশুও এখানে জবাই দিত তাহলে শখানেকের বেশী হতো । এই যদি হয় অবস্থা তাহলে যতই আধুনিক পশু জবাইখানা স্থাপন করা হোক না কেন , তাতে কোন কাজ হবেনা , এগুলি কে নিয়েই পশু জবাইকারীগন পরিবেশকে বিপন্ন করে মানুষের বেচেঁ থাকাটাকেই কঠীন করে তুলবে । তাই এহেন মানসিকতার প্রেক্ষাপটে চামড়া শিল্পের গায়ে যতই ভ্যালু এডিশন লাগাইনা কেন তথা লাভজনক করার কৌশলই প্রয়োগ করিনা কেন তা আখেরে পরিবেশকে বিপন্ন করে দেশের পুরা পরিবেশটিকেই মানব বসবাসের জন্য দুর্বিসহ করে তুলবে তাতে কোন সন্দেহ নাই ।
এসমস্ত অবস্থার প্রেক্ষিতে মনের দু:খে বিষয়টিক নিয়ে বিকল্প কিছু করা যায় কিনা তাই ভাবছিলাম ।
অনেক অনেক শুভেচ্ছা রইল
২১| ২৬ শে আগস্ট, ২০১৯ সন্ধ্যা ৭:৫২
জুন বলেছেন: গতকাল টিভির খবরে দেখলাম চামড়া নিয়ে এই সেক্টরে আবার সবাই ব্যাস্ত হয়ে উঠেছে ডঃ এম এ আলী। আপনার লেখাটি স্বার্থক।
২৬ শে আগস্ট, ২০১৯ রাত ৮:৫২
ডঃ এম এ আলী বলেছেন:
চামড়া নিয়ে এই সেক্টরে আবার সবাইকে ব্যাস্ত করে তোলার জন্য
বস্তুতপক্ষে সামু স্বার্থক । চামড়া শিল্পের বিপর্যয় ও সংস্লিষ্ট কতৃপক্ষের
ব্যর্থতা নিয়ে লেখা এ ব্লগের একটি পোষ্টকে সামু স্টিকি করে বিষয়টি
নিয়ে ব্যপক গনচেতনতা সৃজনের ক্ষেত্র তৈরী করে দিয়েছে । আপনিসহ
এ ব্লগের সকল গুণী ব্লগারগন তাঁদের উদ্বিগ্নতা ও এবিষয়ে করনীয়
নিয়ে অনেক মুল্যবান মতামত রেখেছেন । সরকারের নড়ে চড়ে
বসার পিছনে সকলের সোচ্চার কণ্ঠস্বর ভুমিকা রাখছে ও এখনো
রেখে চলেছে । জাতীয় কোন বিপর্যয়ের সময়ে সকলেই যদি গঠণ
মুলক সমালোচনা নিয়ে এগিয়ে আসেন তাহলে সে সমস্যার
কিছু না কিছু সমাধানতো আশা করাই যায় ।
মুল্যবান মতামত রাখার জন্য ধন্যবাদ ।
শুভেচ্ছা রইল
২২| ২৬ শে আগস্ট, ২০১৯ রাত ৯:৩৪
করুণাধারা বলেছেন: মাটিতে প্রোথিত কুরবানীর পশুর চামড়াই ধ্বংসের হাতিয়ার হয়ে ঝাপিয়ে পড়ুক চামড়াশিল্পের অশুভ সিন্ডিকেট বিনাশে প্রার্থনা করি, তাই যেন হয়।
তথ্যপূর্ণ, সুলিখিত দুটি পর্ব পড়ে শেষ করতে দীর্ঘ সময় লাগলো; এটা লিখতে আপনার না জানি কত সময় লেগেছে!!
চামড়া নিয়ে বর্তমান দুর্ভাগ্যজনক অবস্থা কাটিয়ে একে লাভজনক করে তোলার জন্য আপনি যে পন্থা বলেছেন, তা আপনার উদ্ভাবনী ভাবনার পরিচায়ক! কিন্তু এর মূল্যায়ন করার মতো মানুষ খুব কমই আছে।
অনলাইন পত্রিকার পাঠক সংখ্যা সামু ব্লগের পাঠক সংখ্যার চাইতে অনেক বেশি। (বিশেষ করে সামুর বর্তমান অবস্থায়) আপনি কি অনলাইন পত্রিকায় এই লেখাটি দিতে ইচ্ছুক নন? আমার মনে হয় সে ক্ষেত্রে আরো অনেক মানুষ এমন মূল্যবান ভাবনার সাথে পরিচিত হবার সুযোগ পেত।
২৮ শে আগস্ট, ২০১৯ রাত ১০:৪৩
ডঃ এম এ আলী বলেছেন:
কষ্ট করে বেশ লম্বাচওরা এই পোষ্টটি দেখে সুন্দর একটি মন্তব্য রেখে যাওয়ার জন্য ধন্যবাদ ।
আপনি ঠিকই বলেছেন পোষ্টটি লিখতে সময় লেগেছে তবে এটায় আরো বেশী সময় দেয়া প্রয়োজন ছিল বলে মনে করি ।
আকার বড় হয়ে যাবে বিবেচনায় অনেক কথা বাদ দিয়েছি যা থাকলে ভাল হত বলে মনে করি ।
চামড়া শিল্পের সাম্প্রতিক দুর্দশা দেখে অনেকেই বেশ মুল্যবান পোষ্ট দিয়েছেন । তার সুফল পাওয়া শুরু হয়েছে বলে দেখা যায় ।
অনলাইন প্রত্রিকায় লেখা দিতে আপত্তি নাই, তবে তেমন কেও কি আছেন যে আমার লেখা প্রকাশ করবেন? তাদের প্রকাশ উপযোগী লেখাইবা লিখতে পারব কি? যাহোক, আপনার মুল্যবান পরামর্শের জন্য আবারো ধন্যবাদ ।
শুভেচ্ছা রইল
২৩| ২৮ শে আগস্ট, ২০১৯ সকাল ৮:৩০
ঠাকুরমাহমুদ বলেছেন: করুণাধারা আপা আপনার পরিচিত কোনো অনলাইন পত্রিকা যদি থাকে তাদের দয়াকরে বলুন ডঃ এম এ আলী ভাইয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করার জন্য। অথবা তাদের ই-মেইল এড্রেস সংগ্রহ করে ডঃ এম এ আলী ভাইকে দিন।
ডঃ এম এ আলী ভাই আপনাকে উৎসর্গ করে সামান্য একটি লেখা আজ পোষ্ট দিয়েছি। পড়ার জন্য অনুরোধ করছি।
২৮ শে আগস্ট, ২০১৯ রাত ১০:৪৮
ডঃ এম এ আলী বলেছেন:
আপনার লেখাটি দেখে ছোট একটি মন্তব্য করে এসেছি ।
লেখাটি যে সামান্য নয় তা আমার করা মন্তব্যটি দেখলে বুঝতে পারবেন ।
আমাকে উৎসর্গ করার জন্য কৃতজ্ঞতা জানবেন ।
অনেক অনেক শুভেচ্ছা রইল
২৪| ০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৯ রাত ১২:৩১
সোহানী বলেছেন: সত্যি বলতে কি পশু কুরবানীর এ ব্যবস্থা যত না ধার্মিক তার থেকেও লোক দেখানো। রাস্তা জুড়ে পশু কোরবানী দিবে, চারপাশ রক্ত ময়লায় গিজগিজ করবে... উৎসুক জনতা আলোচনা করবে কার গরুতে কত বেশী মাংস হয়েছে? কার দামের তুলনায় মাংস বেশী পেয়েছে? কে কত টাকা দিয়ে কিনেছে?..... এরকম সাক্ষাত সিনেমা থেকে মনে হয় না কেউ জনতাকে বচ্ঙিত করবে তাই তারা রাস্তা বাদ দিয়ে কসাইখানায় যাবে কিনা তা নিয়ে আমার সন্দেহ আছে। তাই সবার আগে দরকার মানসিকতার পরিবর্তন!!!! তাই নয় কি??
ওওও ভালো কথা, কালই ৭ দিন নিউইয়র্ক এ ছুটি কাটিয়ে ফিরলাম। ফোবানা দেখতে গিয়েছিলাম বাট হতাশ হতেই হলো....
০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৯ সন্ধ্যা ৬:০০
ডঃ এম এ আলী বলেছেন: সময়মত মন্তব্যের নোটিশ পাইনি বলে উত্তর দিতে বিলম্বের জন্য দু:খিত ।
ভাল কথা বলেছেন
তাই সবার আগে দরকার মানসিকতার পরিবর্তন!!!! তাই নয় কি??
তবে এতসব ভাল ও মুল্যবান কথা শেষে !!! এবং ?? সমস্ত চিহ্নের ব্যবহার কেন তা এই মোটা মাথা নিয়ে বুঝতে পারলাম না । এগুলিতো জানি সকল অবস্থায় খুবই মুল্যবন ও গুরুত্ব পুর্ণ কথা বিশেষ করে দুর্যোগময় মহুর্তে । সে সময় এসকল কথার সাথে আশ্চর্যবোধক ও প্রশ্নবোধক চিহ্নের ব্যবহার তার গুরুত্ব কমিয়ে দেয় কিনা সে দুর্ভাবনায় আছি । অবশ্য বিজ্ঞ মানুষদের বিজ্ঞজনচিত কথা বার্তা বুজার ক্ষমতা এই অভাজনের একেবারেই নেই । যাহোক, যে কোন অবস্থাতেই কামনা করি মানুষের হীন কায়েমী কোন স্বার্থ হাছিলের মানসিকতার যেন পরিবর্তন হয় অচীরেই , এতে কোন প্রশ্ন তুলার অবকাশ নেই এটা এখন সময়ের দাবী, যত বাধাই সামনে আসুক না কেন , সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে যেতে হবে মানসিকতা পরিবর্তনের লক্ষ্যে ।
ফোবনা নিয়ে কেন হতাশ হলেন তাতো বললেন না । যাহোক ফোবানা সনমেলনে অতিথিদের প্রতিক্রিয়া নিয়ে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত দু তরফেরই কিছু কথামালা নীচে তুলে দিলাম । এরকমটা কাম্য ছিল কিনা সে বিষয়ে প্রশ্নতো রাখাই যায় ।
৩৩তম ফোবানা সম্মেলন, অতিথিদের প্রতিক্রিয়া
ফোবানা সম্মেলন নিয়ে প্রবাসীর আত্মকথন
২৫| ২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৯ দুপুর ২:৪৯
করুণাধারা বলেছেন: কিছু অনলাইন পত্রিকাতে সিটিজেন জার্নালিজম বলে একটা কলাম আছে, সেখানে অনেককেই লিখতে দেখি। সম্প্রতি দেখেছি এই পোস্টটি। view this link। আমার ধারণা, এটি আমাদের প্রিয় ব্লগার জুনের স্বামীর লেখা পোস্ট! উনি কিন্তু সামুতে পোস্টটি না দিয়ে বিডি নিউজ ২৪ ডটকমে দিয়েছেন, এর ফলে অনেক বেশি মানুষ তার পোস্টটি পড়তে পেরেছে।
@ ঠাকুর মাহমুদ, আমি একজন লো- প্রোফাইল মানুষ, আমার কোন অনলাইন পত্রিকার সাথে চেনা জানা নেই। সেজন্য আন্তরিক ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও আমি ডঃ এম এ আলী কে সাহায্য করতে পারছিনা, দুঃখিত আন্তরিকভাবে। আমি খুবই চাই, তার এই চমৎকার লেখাগুলো অনেক বড় পরিসরে ছড়িয়ে যাক।
২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৯ ভোর ৫:৪৮
ডঃ এম এ আলী বলেছেন:
কষ্ট করে আবার এসে আমার লেখগুলি বৃহত্তর পরিবেশে ছড়িয়ে পড়ার
বিষয়ে সুপরামর্শ দেয়ার জন্য ধন্যবাদ সাথে কৃতজ্ঞতা জানবেন।
এ প্রসঙ্গে অতি বিনয়ের সহিত জানাতে চাই যে, একমাত্র কবিতা ছাড়া আমার সকল লেখার আকারই বিশাল পরিসরের, আর তার সাথে থাকে বেশ কিছু ছবি । ছবিগুলি আমার বলা কথাগুলিকে পাঠকের কাছে সহজ উপলব্দি এনে দেয় বলে আমার বিশ্বাস । আর আমার লেখার বিষয়গুলি অনেকটাই গবেশনাধর্মী । এগুলিকে প্রয়োজনীয় ছবি ব্যতিত সংক্ষেপিত করলে তা মুলত সাংবাদিক সুলভ একটি ফরমায়েসি সংবাদভাষ্যে পরিনত হয়ে যায় বলে আমি মনে করি । এটি এমনিতেই মনে হয় নি , এর পিছনে কিছু কারণও রয়েছে । একান্ত অনিচ্ছা সত্বেও জানাচ্ছি যে, দেশের প্রথম সারির কিছু কিছু সংবাদপত্রে প্রকাশিত সম্পাদকীয় , উপসম্পাদকীয়, বিশেষ ফিচার বা নিবন্ধ নিয়ে প্রায়ই ঐ সমস্ত সংবাদপত্রের সম্পাদক/ নির্বাহী সম্পাদক ও বার্তা সম্পাদকদের সাথে ফোনে আমার মতামত বিনিময় হয়। আমার কিছু লেখার সাথেও অনেকেই বিলক্ষন পরিচিত বলে সে সময় আলাপ চারিতায় জানতে পারি , তাদের অনুসন্ধানী চোখে আমার কিছু লেখা ধরা পরে বলে জানা যায়। আমার লেখার বিষয়বস্তু বা সমবিষয়ক কোন কিছু গুগলে সার্চ করতে গিয়ে নাকি তাঁরা আমার বেশ কিছু লেখাও দেখতে পান । তার সুত্র ধরে আলাপচারিতার সময় অনুরোধ আসে আমার লেখাগুলি হতে ছবি বাদ দিয়ে বেশ কিছু লেখা কাট ছাট করে সংক্ষেপিত আকারে এক পৃষ্ঠার মত করে তাদের কাছে পাঠানোর জন্য। কিন্তু এ কাজে আমি আমার মনের দিক হতে সারা পাইনা। আমার কেবলি মনে হয় তাদের কাছে প্রকাশের জন্য লেখা পাঠালে হয়তবা আমার লেখার পাঠক বাড়বে তবে আমার লেখার কোয়ালিটি যেমনটি রাখতে চাই তেমনটি থাকবেনা । নামের বিনিময়ে গুণের প্রতি সমজোতা করতে আমার মন চায় না । তাই এখানে এই সামুতেই দেয়ার পরে যে কয়জন গুণী ব্লগার ও পাঠক আমার লেখা পাঠ করে তাঁদের মুল্যবান মতামত ব্যক্ত করেন তাতেই আমি নীজকে ধন্য মনে করি । এছাড়া আমার লেখাগুলি নিয়ে (সাম্প্রতিক বিষয়গুলি বাদ দিয়ে ) একটি বই প্রকাশের অপেক্ষায় আছে । দোয়া করবেন যেন সফলকাম হই ।
ঠাকুর মাহমুদের দৃষ্টি আকর্ষন করা আপনার মন্তব্যের অংশটুকু তাঁকে তাঁর ব্লগে গিয়ে জানিয়ে দিয়েছি । আশা করি তিনি এসে তা দেখবেন । তবে আপনি এক জন লো-প্রোফাইল মানুষ এ কথার সাথে কোনমতেই একমত হতে পারলাম না, কেননা একেতো আপনি এ ব্লগের গুণী মানুষদের মধ্যে অন্যতম একজন, তার পরেও কার পরিচিতি যে কতদুর পর্যন্ত বিস্তৃত তা অনেকেই হয়তবা কল্পনাও করতে পারেন না। আপনি বিনয়ের অবতার, তাই হয়ত নীজকে নিয়ে এমনভাবে বলতে পারছেন ।
শুভেচ্ছা রইল
২৬| ২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৯ ভোর ৬:১৬
ঠাকুরমাহমুদ বলেছেন: করুণাধারা আপা, আপনি ডঃ এম এ আলী ভাইয়ের বোন, আপনি আমার বোন, আপনি ব্লগের সকল ব্লগারের বোন, আপনি অবস্যই হাই প্রোফাইলের মানুষ। আমি ডঃ এম এ আলী ভাইয়ের লেখা নিয়ে এক জন বিশেষ মানুষের সাথে কথা বলেছি (তিনি আমাদের সবার পরিচিত তাই নাম উল্লেখ্য করছি না) তিনি ডঃ এম এ আলী ভাইয়ের চামড়া নিয়ে লেখাটি সম্ভবত অর্ধেক বা কিছু কিছু করে পড়েছেন, তিনি জানলেন এই প্রকল্পে যেতে দেশে রেভ্যুলেশন করতে হবে। বাদবাকী আমি ডঃ এম এ আলী ভাইয়ের সাথে কথা বলবো।
২৩ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৯ ভোর ৫:১৩
ডঃ এম এ আলী বলেছেন: এসে দেখে মুল্যবান মতামত রেখে যাওয়ার জন্য ধন্যবাদ ।
২৭| ১৯ শে জুলাই, ২০২১ সকাল ১১:৫৬
শেরজা তপন বলেছেন: আপনি আপনার লেখায় তথ্যগত দিকগুলো বাস্তবতার সাথে মিলিয়ে যে সুদীর্ঘ ও বস্তুনিষ্ঠ আলোচনা করেছেন সেটা আমার এই লেখা শুরুর আগে দুর্ভাগ্যবশত দৃষ্টি এড়িয়ে গেছে। আপনার লেখাটা আরো আগে পড়লে আমার লেখার উতকর্ষতা আরো বেশ খানিকটা বাড়ত বলে আমি মনে করি।
আপনার দীর্ঘ নিবন্ধে শুধু কাঁচা চামড়া এক্সপোর্ট নিয়ে যে সকল পর্যালোচনা,প্রতিবন্ধকতা ও ডকুমেন্টাল প্রসেসিং নিয়ে যেভাবে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন সেটা সত্যি অভাবনীয়। এ বিষয়ে আপনার গভীর জ্ঞান ও প্রজ্ঞা ফুটে উঠেছে।
প্রতিটা সেক্টর ধরে ধরে এবং এর গভীরে ঢুকে যেভাবে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন সেটা দারুন প্রশংসার দাবি রাখে।
তবে আমি যতদুর জানি, বাংলাদেশ থেকে কাচা চামরা কখনো রপ্তানি হয়নি- শুধু ব্লু ওয়েট রপ্তানি হয়েছে। এর আগে বরংচ অন্যদেশ থেকে কাঁচা চামড়া আমদানি করে ব্লু ওয়েট করে রপ্তানী করা হোত।
আমাদের চামড়ার দামের এই ভয়ঙ্কর অবনমনের পেছনে চায়নিজদের হাত আছে। দেশের চামড়া বাজারকে অস্থিতিশীল করার জন্য তাদের অন্য দেশকে টপকে পুরো চামড়ার বাজারটা দখল করে- পরবর্তীতে বিশাল বিশাল অর্ডার ক্যান্সেল করে পরে স্থানীয় ফরিয়াদের যোগসাজসে সেই চামড়া স্টক লটে কিনে, এক্সপোর্টার ও কিছু ট্যানারি মালিকদের পথে বসিয়ে দিয়েছে।
(আমার কেন যেন ধারনা হয়, কোন এক সময় এদেশে বিশাল একটা প্রসেসিং ইউনিট( ব্লু ওয়েটের জন্য) বসিয়ে পুরো কাঁচা চামরার বাজার তারা দখলে নিয়ে নিবে। নামমাত্র মুল্যে কিনে তারা ব্লু ওয়েট করে নিজের দেশে নিয়ে প্রসেস করে সারা বিশ্বে চড়া দামে পন্য বিক্রি করবে। আমরা তখন বাধ্য হব পুরো চামড়া সল্পদামে তাদের হাতে তুলে দিতে- সরকার বাধ্য হবে ওদের সাথে অসম চুক্তি সাক্ষর করতে।)
চা যেমন এখন আমাদের উল্টো ইম্পোর্ট করতে হচ্ছে তেমনি দেশের বাজার ধরার জন্য সঠিক উদ্যোগ নেয়া যায় তাহলে একসময় চামড়া রপ্তানীর কোন প্রয়োজনই পড়বে না। আপনি ঠিক বলেছেন, দেশের বাজারেই চামরার বিশাল চাহিদা আছে। আমি যেহেতু দেশের বাজারের সাথে পুরোপুরি সম্পৃক্ত আছি সেহেতু আমাদের অভ্যান্তরিন চাহিদা সন্মন্ধে আমি ভালভাবে অবগত।
দেশকে ভালবেসে আমরা হয়তো দেশের সার্বিক উন্নয়নের জন্য ব্লগে সুদীর্ঘ আলোচনা করতে পারি কিন্তু আদৌ সেটা দেশের উন্নয়নের জন্য কোন কাজে আসবে কিনা সেটা প্রশ্ন সাপেক্ষ। কেননা হর্তাকর্তাদের এই সব আলোচনা পর্যালোচনা দৃষ্টিগোচর হবে কিনা সন্দেহ থেকে যায়।
তবু আমাদের ক্ষুদ্র সামর্থ দিয়ে পরিচিত মাধ্যমে যতটুকু সম্ভব চেষ্টা চালিয়ে যাওয়া আমাদের কর্তব্যের মধ্যে পড়ে। দেশের প্রতি আমাদের কতটা পালন করতে পারছি জানিনা তবুও চেষ্টা যে চালিয়ে যাচ্ছি এটাই বা কম কি।
সামু ব্লগে আপনার মত ঋদ্ধ ব্যক্তিত্ত্বের খুব প্রয়োজন। আমি ফের সময় করে আপনার ব্লগে এসে আমার ক্ষুদ্র সামর্থে যতটুকু সম্ভব হয় আলোচনা করে যাব।
১৬ ই আগস্ট, ২০২২ ভোর ৫:৫০
ডঃ এম এ আলী বলেছেন:
মন্তব্যের কোন নোটিশ পাইনি বলে বেশ পুরাতন একটি পোষ্টে আপনার মুল্যবান এই মন্তব্যটি
আমার দৃষ্টিগোচর হয়নি । তার পরে বেশ কিছুদিন যাবত অসুস্থ ছিলাম বলে ব্লগে নিয়মিত
ছিলাম না । আনেক যতন্ করে আমার আমার এই বেশ লম্বা চওরা পোষ্টটি পাঠ করে
অতি মুল্যবান দিক নির্দেশনামুলক যে মন্তব্য রেখে গেছেন তা পাঠ করে আমি অভিভুত ।
চাইনীজ অভিসন্দি নিয়ে আপনার ভাবনার সাথে সহমত পোষন করি । সকলকে সচেতন
হতে হবে , দেশের চামড়া শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য সকলের পক্ষ থেকে সর্বাত্মক
প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে । চামড়া শিল্পের সমস্যা দুরীকরণ ও সম্ভাবনার দিকগুলি নিয়ে
মাস মিডিয়াতে ব্যপক আকারে আলোচনা চলতে থাকলে একটি সুফল পাওয়া যেতে পারে।
আপনার জন্য শুব কামনা রইল ।
২৮| ০৮ ই জুলাই, ২০২২ দুপুর ১:৩২
বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: বছর আসে বছর যায়!
আলোচনা আলোচনাতেই থেকে যায়!
সমস্যা বাড়ে নিরন্তর!!!!
কি অসম্ভব অদ্ভুত এক কি!উট জাতি আমরা
“এবারে মাননীয় মন্ত্রী মহোদয় চামড়া গাড়ী চলাচলে নিষেধাজ্ঞা দিলেন কার স্বার্থে? প্রশ্ন করার উপায় আছে কি?
বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেছেন, কোরবানির সাতদিন পর্যন্ত ঢাকা অভিমুখে এবং আন্তঃজেলায় কোনো চামড়াবাহী যানবাহন চলাচল করতে পারবে না। এসময়ে কোরবানির পশুর চামড়া যাতে নষ্ট না হয় সেজন্য পশু কোরবানির পর নিজেদের প্রয়োজনীয় লবণ যুক্ত করে সংরক্ষণ করতে হবে বলে তিনি জানান।
মঙ্গলবার (৫ জুলাই) সচিবালয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় আয়োজিত আসন্ন পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে কোরবানির পশুর কাঁচা চামড়ার মূল্য নির্ধারণ এবং সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা বিষয়ে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এসব কথা বলেন।”
‘ঈদের সাত দিন চামড়াবাহী গাড়ি চলাচলে নিষেধাজ্ঞা’
১৬ ই আগস্ট, ২০২২ ভোর ৫:৫৮
ডঃ এম এ আলী বলেছেন:
মন্তব্যের কোন নোটিশ পাইনি বলে বেশ পুরাতন একটি পোষ্টে আপনার মন্তব্যটি
আমার দৃষ্টিগোচর হয়নি । তার পরে বেশ কিছুদিন যাবত অসুস্থ ছিলাম বলে ব্লগে নিয়মিত
ছিলাম না ।
গুত্বপুর্ণ তথ্য জানার নিমিত্ত লিংকটি তুলে দেয়ার জন্য ধন্যবাদ ।
কুববানির চামড়ার সুষ্ঠ ব্যবস্থাপনা, ক্রয় বিক্রয় ও সংরক্ষন বিষয়ে
দেশের নীতি নির্ধারক ও শাসকদের আরো বেশি সুবিবেচনাপ্রসুত
কৌশল প্রনয়ন , অনুসরন ও বাস্তবায়ন প্রয়োজন ।
অনেক অনেক শুভেচ্ছা রইল ।
২৯| ১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৩ রাত ৮:৫১
খায়রুল আহসান বলেছেন: সময়ের দাবী মেটানো একটি তথ্যসমৃদ্ধ পোস্ট। এই শ্রমসাধ্য কাজটি সুসম্পন্ন করার জন্য আপনাকে আন্তরিক অভিনন্দন!
কাঁচা চামড়া বিদেশে রপ্তানীর জন্য করণীয় ও পালনীয় স্তর সমূহে যে ২৭টি পয়েন্টের উল্লেখ করেছেন, সেগুলো পড়ে তো রীতিমত মাথা ঘুরছে! একজন ব্যবসায়ী বা রপ্তানীকারককে তো এতসব শর্ত পূরণ করতে হলে তার কয়েক জোড়া জুতোর সোল ক্ষয় করতে হবে! এবং অবশেষে নিজেকেও ক্ষয় করতে হবে! এই সিদ্ধান্ত ঘোষণার আগে আপনার বেঁধে দেওয়া তিন মাস সময়ও যথেষ্ট হতো না বলে আমার মনে হচ্ছে।
২৮ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ভোর ৫:০১
ডঃ এম এ আলী বলেছেন:
আপনার সুদীর্ঘ মুল্যবান মন্তব্যগুলি পাঠে আমি মুগ্ধ ও অনুপ্রানীত ।
সময় হাতে নিয়ে এসে মন্তব্যগুলির বিষয়ে আমার অনুধাবনকৃত
বিষয়গুলি নিয়ে কথা বলব ।
শুভেচ্ছা রইল
৩০| ১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৩ রাত ১১:২১
খায়রুল আহসান বলেছেন: যে সরকারের জনগণের নিকট জবাবদিহিতার কোন দায় নেই, সে সরকারের নিকট জনবান্ধব কোন কর্মসূচী আশা করাটা নিতান্তই দুরাশা।
কি কি কারণে চামড়ার দরপতন রোধ করা যাবে না, সে কারণগুলো আপনি চমৎকারভাবে ব্যাখ্যা করেছেন। সমাধানের পথও সুন্দরভাবে বাৎলে দিয়েছেন। বিশেষ করে দেশীয় বাজার সৃষ্টির ব্যাপারে আপনার সাজেশনগুলো প্রণিধানযোগ্য।
ট্যানারি শিল্প কারখানা থেকে নিঃসৃত যে সকল রাসায়নিক বর্জ্য বছরের পর বছর ধরে আমাদের নদী, ভূমি ও বায়ুকে দূষিত করেছে, জনস্বাস্থ্যের উপর তার সুদূরপ্রসারী প্রতিক্রিয়ার কথা চিন্তা করতে গেলেও গা শিউরে উঠে। কতটা অবিবেচক হলে একটি দেশ তার রাজধানীর প্রধান নদীটিকে এভাবে ধ্বংস করে দিতে পারে। এ দূষণ পরিশোধনের অযোগ্য থেকে যাবে যুগের পর যুগ ধরে।
৩১| ২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৩ দুপুর ১২:০৭
খায়রুল আহসান বলেছেন: বছরের পর বছর ধরে হাজারীবাগের ট্যানারি কারখানাগুলো থেকে নির্গত ৭৫ মেট্রিক টন করে দূষিত, রাসায়নিক বর্জ্য থেকে আমাদের পোল্ট্রী ও মৎস্য সম্পদ এবং তা থেকে নাগরিকদের স্বাস্থ্য ক্রমাগতভাবে বিপন্ন হয়ে চলেছিল, এ কথা ভাবতেও সব সরকার এবং নগর প্রশাসনের উপর মনে ধিক্কার জন্মে। বিশেষ করে দরিদ্র ও অসহায় শিশুশ্রমিকরা যে ভয়াবহ ও বিপজ্জনক স্বাস্থ্য হুমকির সম্মুুখীন হয়ে তাদের দৈনন্দিন রুজি সংগ্রহ করছে, তার প্রতিকার এ মুহূর্তেই হওয়া উচিত। আপনার লেখায় এই বিপদের কথা সবিস্তারে বর্ণিত হয়েছে, ছবি ও অন্যান্য তথ্য উপাত্তসহ।
"পর্ব-২" এর আগের অনুচ্ছেদ দুটোতে বর্ণিত আপনার সংবেদনসীল মনের কথাগুলোর জন্য আপনাকে আন্তরিক ধন্যবাদ। কথাগুলো আমাকে স্পর্শ করেছে, ভাবিয়ে তুলেছে এবং আপনার প্রতি আমার উচ্চ সমীহকে আরও উন্নত করেছে।
কখন বিদ্যুুৎ চলে যায়, সারাদিন সেই ভয়ে থাকি। এজন্য মন্তব্য সামগ্রিকভাবে কমপ্লিট করার আগেই পোস্ট করে ফেলি। আপনার এ রকম গবেষণাধর্মী পোস্টগুলো আমি মন দিয়ে পড়ি, ভাবি এবং তার পর মন্তব্য করি। বিদ্যুুৎ এর খামখেয়ালিপনার কারণে মন্তব্য পোস্ট করার আগেই যদি বিদ্যুৎ সংযোগ হারিয়ে যায়, তবে সে পণ্ডশ্রমের জন্য আফসোসের সীমা থাকে না। বিদেশে বসে হয়তো আপনি এ সমস্যাটা সম্যক উপলব্ধি করতে পারবেন না। যাহোক, আমার এই খণ্ডিত মন্তব্যগুলোর উত্তর আপনি একটিমাত্র প্রতিমন্তব্যে দিলেই আমি খুশি থাকবো। না দিলেও সমস্যা নেই, আপনি পড়লেই হলো।
©somewhere in net ltd.
১| ২১ শে আগস্ট, ২০১৯ সকাল ৭:৩৬
মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন: অসাধারণ একটি পোস্ট। তবে বাংলাদেশের মানুষ খুবই খারাপ ।তাদের দ্বারা ভাল কিছু আশা করা এখন বোকামি।