| নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ডঃ এম এ আলী
সাধারণ পাঠক ও লেখক
জীবন ধারণের যাবতীয় উত্তম উপাদানসহ চাষাবাদ মানবজীবনের অপরিহার্য অংশ। চাষাবাদ পৃথিবীর প্রাচীনতম পেশা। অনেক আগে থেকেই কৃষিকাজ বা চাষাবাদের সঙ্গে মানুষের সম্পর্ক। ইসলাম এই পেশাকে মর্যাদার চোখে দেখেছে। পৃথিবীর প্রথম মানব আদম (আ.) সম্পর্কে হাদিস শরিফে এসেছে, নবী করিম (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘আমি তোমাদের আদম (আ.) সম্পর্কে বলব। তিনি কৃষিকাজও করতেন।’ (মুসতাদরাক হাকেম, হাদিস : ৪১৬৫)
অসংখ নবীর পিতা হজরত ইবরাহিম (আ.)। তার সম্পর্কে মহানবী (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘আমি তোমাদের ইবরাহিম (আ.) সম্পর্কে বলব। তিনি চাষবাসও করতেন।’ (মুসতাদরাক হাকেম, হাদিস : ৪১৬৫)
প্রিয়নবী মোহাম্মদ (সা.) চাষাবাদকাজে সক্রিয়ভাবে সহায়তা করেছেন বলে প্রমাণ পাওয়া যায়। “ইতিহাসিক সাহাবী জীবনী ও সিরাহ-সৌধে প্রচলিত একটি বর্ণনা মতে, সালমান আল-ফার্সি (রাঃ)কে তাঁর ইহুদি মালিক মুক্তি দিতে ৩০০ খেজুরগাছ লাগানোর শর্ত ধার্য করেছিলেন । প্রিয়নবী মুহাম্মদ (সা.) ও সাহাবীরা মিলিত হয়ে খেজুরগাছের চাড়াগুলো জোগাড় ও রোপণ করেন এবং নবী নিজে এতে সক্রিয় ভূমিকা নেন। ফলশ্রুতিতে সালমানকে মুক্ত করতে সহায়তা করা হয়। (উৎস: সিরাহ ও আধুনিক ঐতিহাসিক/জায়গা-বর্ণনা) Click This Link
আল্লামা সুরুখসি (রহ.) লিখেছেন, মহানবী (সা.) জারফ নামক স্থানে নীজহাতে খেজুর গাছ রোপন করেছেন। (আল-মাবসুত লিস সুরুখসি : ২/২৩)
আল কোরআনে চাষাবাদ
পবিত্র কোরআনের বিভিন্ন আয়াতে চাষাবাদের প্রতি গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। এক আয়াতে এসেছে, ‘তিনিই (আল্লাহ) আকাশ থেকে পানি বর্ষণ করেন, অতঃপর তা দিয়ে আমি সব ধরনের উদ্ভিদ উৎপন্ন করি; তারপর তা থেকে সবুজ ফসল নির্গত করি, যা থেকে ঘন শস্যদানা উৎপাদন করি এবং খেজুর বৃক্ষের মাথা থেকে ঝুলন্ত কাঁদি বের করি আর আঙুরের বাগান সৃষ্টি করি এবং জয়তুন ও আনারও। এরা একে অন্যের সদৃশ ও বিসদৃশ। লক্ষ করো তার ফলের প্রতি, যখন তা ফলবান হয় এবং তার পরিপক্বতার প্রতি দৃষ্টি নিবদ্ধ করো। ইমানদারদের জন্য এগুলোতে অবশ্যই নিদর্শন আছে।’ (সুরা আনআম, আয়াত : ৯৯)।
শুষ্ক বীজ ও শুষ্ক আঁটির ভেতর থেকে শ্যামল ও সতেজ বৃক্ষ বের করে দেওয়া একমাত্র জগৎস্রষ্টারই কাজ। এর মধ্যে মানুষের চেষ্টা ও কর্মের প্রভাব নেই। আল্লাহর কুদরতে বীজ ও আঁটির ভেতর থেকে যে নাজুক অঙ্কুর গজিয়ে ওঠে, তার বেড়ে ওঠার পথ থেকে প্রতিবন্ধক ও ক্ষতিকর বস্তু সরিয়ে দেওয়াই কৃষকের মূল চেষ্টার বিষয়। লাঙল চষে মাটি নরম করা, সার দেওয়া, পানি দেওয়া এতটুকুই কৃষকের কাজ। আসল কাজ হচ্ছে বীজ ও আঁটি থেকে বৃক্ষের অঙ্কুরোদ্গম হওয়া, অতঃপর তাতে রংবেরঙের রকমারি পাতা গজানো এবং তা ফলে-ফুলে সুশোভিত হওয়া। এ ক্ষেত্রে মানবীয় কর্মের কোনো প্রভাব নেই। তাই অন্য আয়াতে বলা হয়েছে, ‘তোমরা কি ওই বীজগুলো দেখো না, যা তোমরা মাটিতে ফেলে দাও? এগুলো থেকে তোমরা ফসল উৎপাদন করো, না আমি করি?’ (সুরা ওয়াকিয়া, আয়াত : ৬৩-৬৪)
কোরআনের অলৌকিকতা হলো, কোরআন চাষবাসের কথা বলছে অথচ সেখানে ঐশী চেতনা জাগ্রত করতে চেয়েছে। কোরআনের বক্তব্য দেখুন ‘মানুষ তার খাদ্যের প্রতি লক্ষ করুক। আমিই প্রচুর বারি বর্ষণ করি। পরে আমি ভূমি প্রকৃষ্টরূপে বিদারিত করি এবং আমি তাতে উৎপন্ন করি শস্য, আঙুর, শাকসবজি, জাইতুন, খেজুর, বহু বৃক্ষের বাগান, ফল ও গবাদি খাদ্য। এটা তোমাদের ও তোমাদের জীবজন্তুর ভোগের জন্য।’ (সুরা আবাসা, আয়াত : ২৪-৩২)
কোরআনের বিভিন্ন স্থানে বৈচিত্র্যময় প্রকৃতির কিছু দৃশ্য মানুষের সামনে তুলে ধরা হয়েছে, যাতে এর বিচিত্র প্রকার, বর্ণ, গন্ধ ও সৌন্দর্য দেখে মানুষ পুলকিত হয়, অভিভূত হয়। যেন সবকিছুর উন্নতি, অগ্রগতি ও সক্রিয়তা দেখে মানুষ আল্লাহর কুদরতের কথা স্মরণ করে। ইরশাদ হয়েছে, ‘তিনি তোমাদের জন্য তা (পানি) দিয়ে জন্মান শস্য, জাইতুন, খেজুরগাছ, আঙুর ও সব ধরনের ফল। অবশ্যই এতে চিন্তাশীল সম্প্রদায়ের জন্য রয়েছে নিদর্শন।’ (সুরা নাহল, আয়াত : ১১)
চাষাবাদের উপযোগী করে মহান আল্লাহ এই জমিনকে বহু আগেই সাজিয়ে রেখেছেন। কোরআন বলছে, ‘তুমি ভূমিকে দেখবে শুষ্ক। পরে আমি তাতে বারি বর্ষণ করলে তা শস্যশ্যামল হয়ে আন্দোলিত ও স্ফীত হয় এবং তা উদ্গত করে সব ধরনের নয়নাভিরাম উদ্ভিদ।’ (সুরা হজ, আয়াত : ৫)
মৃতভূমিকে জীবিত করার জন্য মহান আল্লাহ সুদূর আকাশ থেকে পানি বর্ষণ করেন। সেই পানি জমিনকে জীবিত করে তোলে। এই পুনর্জীবন পুনরুত্থানের প্রতীক। কোরআনের ভাষ্য দেখুন : ‘আকাশ থেকে আমি বর্ষণ করি কল্যাণকর বৃষ্টি। তা দিয়ে আমি সৃষ্টি করি বাগান ও পরিপক্ব শস্যরাজি ও সমুন্নত খেজুরগাছ, যার মধ্যে আছে গুচ্ছ গুচ্ছ খেজুর। (এগুলো) আমার বান্দাদের জীবিকাস্বরূপ। বৃষ্টি দিয়ে আমি সঞ্জীবিত করি মৃতভূমিকে। এভাবেই পুনরুত্থান ঘটবে।’ (সুরা কাফ, আয়াত : ৯-১১)
হাদিসে চাষাবাদ
মরুময় আরবে মহানবী (সা.) জন্মগ্রহণ করেছেন। তথাপি তার বহু বাণী রয়েছে কৃষিকাজের গুরুত্বের ওপর। তার এ হাদিসটি হয়তো অনেকেই জানেন, ‘যে মুসলমান কোনো বৃক্ষ রোপণ করে কিংবা বীজ বপন করে, তারপর তা থেকে কোনো পাখি, মানুষ বা চতুষ্পদ জন্তু ভক্ষণ করে, তাহলে এর বিনিময়ে তার জন্য একটি সদকার সওয়াব রয়েছে।’ (বোখারি শরিফ, হাদিস : ২১৩৭; মুসলিম শরিফ, হাদিস : ১৫৫৩)
এ হাদিসটি আরও স্পষ্ট করে অন্য জায়গায় বলা হয়েছে, ‘যে ব্যক্তি কোনো বৃক্ষ রোপণ করে, আল্লাহতায়ালা এর বিনিময়ে তাকে ওই বৃক্ষের ফলের সমপরিমাণ প্রতিদান দান করবেন।’ (মুসনাদে আহমাদ, হাদিস : ২৩৫৬৭)
ইসলামি শরিয়তের মূলনীতি হলো, কেউ রাষ্ট্রীয় অনাবাদি জমি আবাদ করলে তার মালিক হয়ে যায়। আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে মহানবী (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘যে ব্যক্তি এমন কোনো জমি আবাদ করে, যা কারও মালিকানায় ছিল না, তাহলে সে ওই জমির (মালিক হওয়ার) বেশি হকদার।’ (বোখারি, হাদিস : ২৩৩৫)
নিজে চাষাবাদ না করলে অন্যকে সুযোগ দেওয়া উচিত। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যার কাছে জমি আছে, সে যেন তা নিজে চাষ করে অথবা তার ভাইকে দিয়ে দেয়। (বোখারি, হাদিস : ২২১৬; মুসলিম, হাদিস : ১৫৩৬)
চাষাবাদ করতে হলে যেতে হবে প্রত্যন্ত অঞ্চলে। তাই মহানবী (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা ভূমির খনিতে বা লুক্কায়িত অংশে রিজিক অন্বেষণ করো।’ (মুসনাদে আবি ইয়ালা, হাদিস : ৪৩৮৪)।
ইসলামে কৃষিকাজ ও চাষাবাদের প্রতি এতই গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে যে, যুদ্ধের সময়ও যেন ক্ষেতখামার নষ্ট না হয়, সেদিকে লক্ষ রাখতে বলা হয়েছে। আবু বকর (রা.) তার শাসনামলে সিরিয়ায় যখন সৈন্যবাহিনী পাঠান, তখন তিনি তাদের প্রতি এ নির্দেশ জারি করেন ‘তোমরা কিছুতেই কোনো ফলবান বৃক্ষ কাটবে না।’ (মুআত্তা ইমাম মালেক, হাদিস : ৯৬৫; তিরমিজি, হাদিস : ১৫৫২)
কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হলে রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নজির স্থাপন করেছেন হজরত ওমর (রা.)।
ইমাম আবু ইউসুফ (রা.) তার প্রখ্যাত ‘কিতাবুল খারাজ’ নামক গ্রন্থে উল্লেখ করেছেন, ‘এক কৃষক ওমর (রা.)-এর কাছে অভিযোগ করেছেন, হে আমিরুল মুমিনিন, আমি চাষাবাদ করেছি। সিরিয়াগামী মুসলিম সৈন্য দল এই ক্ষেতের পাশ দিয়ে অতিক্রম করে। আর (অতিক্রমের মাধ্যমে) তারা ওই ক্ষেত ধ্বংস করে দেয়। এ কথা শুনে ওমর (রা.) ক্ষতিপূরণস্বরূপ রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে ১০ হাজার দিরহাম দিয়ে দেন।’ (কিতাবুল খারাজ, পৃষ্ঠা : ১২৯
ব্যবসা বাণিজ্য ও প্রযুক্তিতে মানুষ যতই উৎকর্ষ করুক না কেন, চাষাবাদ ছেড়ে দিলে জীবনযাত্রা সংকুচিত হয়ে যাবে। উপমহাদেশের শ্রেষ্ঠতম ইসলামী দার্শনিক শাহ ওয়ালিউল্লাহ দেহলভি (রহ.) এ বিষয়ে লিখেছেন, ‘দেশের বেশির ভাগ নাগরিক যদি বিভিন্ন পেশা ও দেশীয় রাজনীতিতে জড়িয়ে যায় এবং তারা যদি পশু পালন ও চাষাবাদে কম অংশগ্রহণ করে, তাহলে জাগতিক জীবনে ওই জাতির অবস্থা শোচনীয় হয়ে পড়বে।’ (হুজ্জাতুল্লাহিল বালিগা : ২/১০৫)।
পবিত্র কোরআন ও হাদিসের উল্লিখিত প্রমাণাদির আলোকে ইসলামি আইন বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, প্রতিটি দেশের মানুষের নির্দিষ্ট অংশের জন্য চাষাবাদ করা প্রয়োজন।
এ বিষয়ে ফতোয়া হলো, ‘যৌথ সামাজিক( Collective Social ) বা ব্যক্তিগতভাবে চাষাবাদ করা ফরজে কিফায়া। কেননা এতে মানুষ ও প্রাণীর (জীবনধারণের) প্রয়োজন আছে।’ (আল-ফিকহ আলাল মাজাহিবিল আরবাআ : ৩/১২)
এখন কোরানের আয়াতের অনুপ্রেরণা ও প্রয়োগিক গবেষনা সম্পর্কে কিছু প্রাসঙ্গিক আলোচনার প্রয়াস নেয়া হল ।
প্রাসঙ্গিক বিবেচনায় প্রয়োগভিত্তিক গবেষণার ধারণা, উদ্দেশ্য, পদ্ধতি এবং এর কুরআনিক ভিত্তি, তার সঙ্গে সামাজিক পরিবর্তন অর্জনে এই ধরনের গবেষণার ভূমিকা আলোচনায় স্থান দেয়া হয়েছে। পরিণাম বিশ্লেষণে দেখা যায় যে, বিশ্ব জনসংখ্যা ক্রমাগত বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে চাষাবাদের জমি কমে যাচ্ছে। এর ফলে খাদ্যের ঘাটতি দেখা দিচ্ছে, যা সামাজিক বাস্তুতন্ত্র, সামাজিক ন্যায়বিচার এবং সামাজিক পরিবর্তনের ওপর গভীর প্রভাব ফেলছে এবং এটি একটি বড় সামাজিক, রাজনৈতিক ও রাস্ট্রিয় সমস্যার জন্ম দিচ্ছে। এমন সমস্যা ও চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় উন্নয়নমুলক কাজের জন্য প্রয়োগভিত্তিক গবেষণা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। উল্লেখ্য সাধারণ সমস্যার সমাধান খুঁজে বের করতে প্রয়োগভিত্তিক গবেষণা ব্যবহৃত হয়। এখানে পরিস্কারভাবে উল্লেখ্য যে পবিত্র কোরান কোন বিজ্ঞান গ্রন্থ নয় , এটা নিদর্শন ও দিক সির্দেশনামুলক একটি ঐশী বাণী সমৃদ্ধ মহাগ্রন্থ । পর্যালোচনায় আরো দেখা যায় যে, পবিত্র কুরআনে সরাসরি ‘প্রয়োগভিত্তিক গবেষণা’ শব্দটি উল্লেখ না থাকলেও এর ভিতরে এই ধরনের গবেষণার ভিত্তি বিদ্যমান। কৃষি গবেষনা কর্মে কুরআনিক আয়াতে থাকা প্রেরণার প্রয়োগভিত্তিক ব্যবহার এবং কৃষিপণ্য বৃদ্ধি করে সামাজিক পরিবর্তন সাধনে তার প্রাসঙ্গিকতা ব্যাখ্যা করা যায়। উল্লেখ্য উন্নত দেশ যুক্তরাষ্ট্র সহ ,উন্নয়নশীল বাংলাদেশ এবং মালয়েশিয়ায় কৃষি খাতে প্রয়োগভিত্তিক গবেষণার মাধ্যমে কীভাবে কৃষিজ পণ্য উৎপাদন বৃদ্ধি করা হয়েছে তার উদাহরণ টানা যেতে পারে।
এ ছাড়া মৌলিক, বৈজ্ঞানিক এবং প্রয়োগভিত্তিক গবেষণার প্রয়োগকে বহু-বিষয়ক দৃষ্টিভঙ্গিতে সংযোজন করে কীভাবে একটি আন্তর্জাতিক বিজ্ঞানী দল বর্তমানে ধানকে C3 উদ্ভিদ থেকে C4 উদ্ভিদে রূপান্তর করার এক উচ্চাভিলাষী প্রকল্পে কাজ করেছে তা উল্লেখ করা যায়। এই গবেষণামুলক লেখাটি গ্রন্থাগারভিত্তিক উৎসসমূহ পর্যালোচনার ওপর ভিত্তি করে তৈরি। এই গবেশনামুলক লেখাটি লেখার সময় তিনটি পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়েছে :পদ্ধতি তিনটি হল : আরোহ( inductive ) পদ্ধতি যেখানে নির্দিষ্ট উদাহরণ থেকে শুরু করে একটি সামগ্রিক সূত্রে পৌঁছানো হয়, গুণগত বিশ্লেষণ, এবং বিশ্লেষণমূলক পদ্ধতি।
এটি সকলেরই জানা কথা ( কিছু অবিশ্বাসী ব্যতিত) পবিত্র কুরআন একটি ঐশী বার্তা, যা শিক্ষাগত, আধ্যাত্মিক, প্রযুক্তিগত, অর্থনৈতিক, চিকিৎসাবিষয়ক, সম্পদ ব্যবস্থাপনা, রাজনৈতিক ও সামাজিক সব ধরনের উন্নয়নে মানুষকে উদ্দীপিত করে, যাতে সমস্যার সমাধান করা যায় এবং মানবজীবনের পরিস্থিতির উন্নতি সাধিত হয়। প্রকৃতপক্ষে প্রাকৃতিক পরিবেশব্যবস্থা, সামাজিক পরিবেশব্যবস্থা, সামাজিক ন্যায়বিচার ও সামাজিক পরিবর্তন এসবই পরস্পর গভীরভাবে সম্পর্কিত। খাদ্যাভাবও একটি সামাজিক সমস্যা, যা আরও নানা সামাজিক সংকট সৃষ্টি করে। পবিত্র কুরআন আমাদের সমস্যার সমাধান করতে এবং মানবিক অবস্থার উন্নতি ঘটাতে উদ্বুদ্ধ করে। সে কারণে গবেষকেরা বাস্তব জীবনের সমস্যার সমাধানে এর গুরুত্বকে তুলে ধরার প্রয়াস পান ( এটা বিশ্বাসী অবিশ্বাসী সকলের জন্যই প্রযোয্য)।
প্রয়োগমূলক গবেষণা (Applied Research) বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিগত অনুসন্ধানের মাধ্যমে এমন তথ্য তৈরি করে, যা কোনো তাৎক্ষণিক তো বটেই, দীর্ঘস্থায়ী সামাজিক সমস্যা সমাধানেও সহায়তা করে। সাধারণত সরকার, ব্যবসা বানিজ্য ও শিল্প প্রতিষ্ঠান, এবং স্থানীয় কিংবা অন্তর্জাতিক দাতা সংস্থাসমুহ সামাজিক সমস্যাগুলো সম্পর্কে জানতে এবং সেই সমস্যাসমূহের সমাধানে প্রয়োজনীয় সেবা প্রদান করতে আগ্রহী হওয়ায়, প্রয়োগমূলক গবেষণা পরিচালনা বাস্তবায়ন অনেকটাই সহজ হয়ে থাকে ।
সামাজিক পরিবর্তনের ধারণা
সামাজিক পরিবর্তন বলতে একটি সমাজের সামাজিক কাঠামো বা শৃঙ্খলার পরিবর্তনকে বোঝায় যার মধ্যে রাস্ট্র পরিপালনা সঙক্রান্ত বিয়াবলীও অন্তর্ভুক্ত। অপরদিকে দ্রুত শিল্পায়ন কিংবা অবনয়ন, কর্মসংস্থানের হ্রাসবৃদ্ধি , দ্রুত নগরায়ণ কিংবা শ্রমশক্তির দেশান্তকরণ প্রবনতা কিংবা মানব বুদ্ধিবৃত্তিক বিকাশের উঠানামা ( যেমনটি সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে ঘটে চলেছে বিবিধ উপায়ে নিরবধি) সমাজকে এসব ক্রমান্বয়িক পরিবর্তনের সঙ্গে সামঞ্জস্য রাখতে নিজেকেও পরিবর্তিত হতে হয়। এর জন্য প্রয়োজন হয় যথাযথ শিক্ষা, আর্থ সামাজিক অবকাঠামো , সঠিক নীতিবোধ ও সামাজিক , ধর্মীয় ও রাজনৈতিক মুল্যবোধ ও শৃংখলা ।
সামাজিক পরিবর্তন হলো এমন একটি প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে সমাজে কোনো না কোনো ধরনের পার্থক্য, সংশোধন, রূপান্তর বা প্রতিস্থাপন ঘটে। এই পরিবর্তনগুলো অনুভূত হয় মানুষের জীবনযাপন, চিন্তাভাবনা, মনোভাব, পারস্পরিক সম্পর্ক, সমাজের কাঠামো ও কার্যপ্রণালী এবং জীবনযাত্রার সামগ্রিক অবস্থার মধ্যে।
সময়ের সাথে সাথে সামাজিক মানদণ্ড, সাংস্কৃতিক মূল্যবোধ বা আচরণগত ধরনগুলোতে যে কোনো বড় ধরনের পরিবর্তনকে সামাজিক পরিবর্তন বলা হয়। মানুষের পারস্পরিক সম্পর্ক এবং সেই সম্পর্ক যেসব সাংস্কৃতিক প্রেক্ষাপটে ঘটে তার গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তনকেও সামাজিক পরিবর্তন হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
প্রয়োগমূলক গবেষণা, যা সামাজিক গবেষণারই একটি অংশ, এমন সমস্যার সমাধান দেয়, যা কল্যানমুখি সামাজিক পরিবর্তনকে ত্বরান্বিত করে। সমস্যাগুলোর সমাধান ব্যতীত আমরা কাঙ্ক্ষিত সামাজিক পরিবর্তন অর্জন করতে পারি না, এবং সেই সাথে জীবনযাত্রার মানও উন্নত করা সম্ভব হয় না।
পবিত্র কুরআনে প্রয়োগমূলক গবেষণার ভিত্তি
সৃষ্টির প্রতিটি অংশই এমন এক গুরুত্বপূর্ণ গবেষণার বিষয়, যার মাধ্যমে মানুষের কল্যাণে পৃথিবীর সবকিছুকে আরও সার্থকভাবে কাজে লাগানো যায়। পৃথিবীতে যা কিছু রয়েছে, তা মূলত মানুষেরই মঙ্গলার্থে। তাই আল্লাহ্ তাআলা সমগ্র মহাবিশ্বের সৃষ্টির ওপর গবেষণা করতে আমাদের উৎসাহিত করেছেন। আল্লাহ্ তাআলা বলেন:
اَوَ لَمۡ یَنۡظُرُوۡا فِیۡ مَلَكُوۡتِ السَّمٰوٰتِ وَ الۡاَرۡضِ وَ مَا خَلَقَ اللّٰهُ مِنۡ شَیۡءٍ ۙ وَّ اَنۡ عَسٰۤی اَنۡ یَّكُوۡنَ قَدِ اقۡتَرَبَ اَجَلُهُمۡ ۚ فَبِاَیِّ حَدِیۡثٍۭ بَعۡدَهٗ یُؤۡمِنُوۡنَ ﴿۱۸۵﴾
“তারা কি আসমান-যমীনের রাজত্বে আর আল্লাহ যে সব বস্তু সৃষ্টি করেছেন তাতে কিছুই দেখে না? তারা কি চিন্তা করে না যে হয়ত তাদের জীবনের মেয়াদ নিকটেই এসে গেছে? এরপর তারা কোন বাণীর উপর ঈমান আনবে?” কোরআন, সূরা আ-‘আরাফ, আয়াত ১৮৫
আল্লাহ্ তাআলা আরও বলেন:
قُلِ انۡظُرُوۡا مَاذَا فِی السَّمٰوٰتِ وَ الۡاَرۡضِ ؕ وَ مَا تُغۡنِی الۡاٰیٰتُ وَ النُّذُرُ عَنۡ قَوۡمٍ لَّا یُؤۡمِنُوۡنَ ﴿۱۰۱﴾
“বলুন, আসমান ও জমিনে কী আছে, তা পর্যবেক্ষণ করো। কিন্তু যারা ঈমান আনে না তাদের জন্য নিদর্শন ও সতর্কবার্তা কোনো কাজে আসে না।”সূরা ই ইউনুস, আয়াত ১০১।
এই আয়াতই মৌলিক, প্রয়োগমূলক, বৈজ্ঞানিক ও অন্যান্য সব ধরনের গবেষণার ভিত্তি।
আবু আল-লায়স আস-সামারকান্দি (৩৩৩–৩৭৩ হি.) উক্ত কুরআনি আয়াত যথা “বলুন, আসমানে কী আছে, তাকিয়ে দেখো”–এর ব্যাখ্যায় বলেছেন এর অর্থ হচ্ছে: আল্লাহ্ তাআলা তাঁর রাসূলকে আদেশ করছেন, যেন তিনি মানুষকে বলেন তোমরা সৃষ্টিকর্তার নিদর্শনসমূহের দিকে তাকাও; আকাশের দিকে তাকাও যেখানে রয়েছে সৌরজগৎ, সূর্য, চাঁদ ও তারকারাজি; এবং “পৃথিবীর দিকে তাকাও”যার মধ্যে রয়েছে পশুপাখি, পাহাড়, সমুদ্র, গাছপালা ও ফলমূল। এগুলো নিয়ে তোমরা চিন্তা ভাবনা করবে, অনুধাবন করবে এবং ঈমান আনবে যে এসব সৃষ্টির পিছনে অবশ্যই একজন মহান স্রষ্টা আছেন।
এরপর আল্লাহ্ তাআলা সেইসব মানুষের সম্পর্কে বলেন, যারা চিন্তাভাবনা করে না, বোঝে না এবং বিশ্বাসও করে না: “কিন্তু যারা ঈমান আনে না, তাদের জন্য নিদর্শন ও সতর্কবার্তা কোনো কাজে আসে না।”
অর্থাৎ, আকাশ পৃথিবীর অসংখ্য নিদর্শন এবং আল্লাহর রাসূলের সতর্কবার্তাগুলো থেকেও তারা উপকৃত হয় না, কারণ তারা বিশ্বাস করতে চায় না। আর “যারা ঈমান আনে না” বলতে বোঝানো হয়েছে যারা আল্লাহ্র প্রতি ঈমান আনতে চায় না এবং সঠিক প্রশ্নও করে না কিংবা অনুধাবনো করেনা ।
প্রখ্যাত ইসলামী লেখক ইমাদ উদ্দিন আবুল ফিদা ইসমাইল ইবন কাসীর (৭০১–৭৭৪ হি.) ব্যাখ্যা করেছেন যে, আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা তাঁর বান্দাদের আদেশ দেন তারা যেন তাঁর নেয়ামতসমূহ এবং আকাশ ও পৃথিবীতে সৃষ্টি করা বিভিন্ন বিষয়ের ওপর চিন্তাভাবনা করে। আকাশমণ্ডলে যে সব দৃষ্টিনন্দন সৃষ্টি রয়েছে উজ্জ্বল চাঁদ, দিন ও রাত, এবং এদের পার্থক্যএসবই চিন্তাশীলদের জন্য শিক্ষণীয় নিদর্শন। একইভাবে আকাশের উচ্চতা ও বিস্তৃতি, আর আল্লাহ তায়ালার প্রেরিত বৃষ্টির মাধ্যমে মৃত পৃথিবীর পুনর্জাগরণ যার ফলে নানা ধরনের ফল, শস্য, উদ্ভিদের হাজারো প্রজাতি, অসংখ্য ফুলের জাত, বিচিত্র আকার-আকৃতির ও রঙের প্রাণী জন্মায় এবং মানুষ এদের থেকে উপকার পায় সবই মহান আল্লাহ ব্যতীত আর কোনো স্রষ্টা নেই এই সত্যের সাক্ষ্য বহন করে।
এ ছাড়াও পাহাড় ও তৃণভূমি, সাগরের বিস্ময়কর দৃশ্যাবলি, উত্তাল তরঙ্গ এসব কিছুর মধ্যেও রয়েছে ওই একমাত্র স্রষ্টার অস্তিত্বের সুস্পষ্ট প্রমাণ।
আকাশ ও পৃথিবীতে বিদ্যমান বিভিন্ন সম্পদ মৌলিক, প্রয়োগাধর্মী, বৈজ্ঞানিক এবং নানান ক্ষেত্রের গবেষণার উপকরণ। তাই এই আয়াত মানুষকে নির্দেশ দেয় তারা যেন আকাশ ও পৃথিবীতে থাকা সৃষ্টি ও সম্পদ নিয়ে চিন্তা ও গবেষণা করে, যাতে তারা বৈজ্ঞানিক তথ্য, লুকায়িত সত্য, বিভিন্ন বাস্তবতা উদ্ঘাটন করতে পারে এবং সমস্যার সমাধান খুঁজে পায়।
এই আয়াতগুলোতে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা শুধুমাত্র উৎসাহই দেননি, বরং জোর দিয়েছেন মানুষ যেন আকাশ ও পৃথিবীতে থাকা সৃষ্টিজগত এবং অন্যান্য বিষয়ের ওপর অধ্যয়ন, গবেষণা, অনুসন্ধান, পর্যবেক্ষণ ও বিশ্লেষণ করে। আল্লাহ মানুষকে উৎসাহ দেন যেন তারা সম্পদসমূহ নিয়ে চিন্তা ও গবেষণা করে মহাবিশ্বের পরিবেশগত উপাদানগুলো সম্বন্ধে জ্ঞান অর্জন করে, আল্লাহর সৃষ্টির দক্ষতা উপলব্ধি করে, এবং আল্লাহ, মানুষ ও পরিবেষ্টিত সম্পদের মধ্যে সম্পর্ক গড়ে তোলে।
এখানে “নিদর্শন” শব্দটি দ্বারা বোঝানো হয়েছে সমস্ত সম্পদ ও সৃষ্টি। আর “সতর্কবাণী” শব্দটি মানুষকে স্মরণ করিয়ে দেয় তারা যেন স্রষ্টার প্রতি ঈমান আনে, সম্পদের অপচয় ও অপব্যবহার পরিহার করে; নচেৎ তারা নানান সামাজিক ও প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের সম্মুখীন হবে। এসব সতর্কতার পর মানুষকে আরও সতর্ক, সংযত, দায়িত্বশীল ও নৈতিক হতে হবে সম্পদের ব্যাপারে; আর গবেষকদের দায়িত্ব সমস্যার সমাধান খুঁজে বের করা।
মানুষকে বারবার তাদের হৃদয় ও আত্মাকে পর্যালোচনা করতে হবে নিজেদের অবস্থার উন্নতি করতে এবং সমস্যার সমাধান করতে। আল্লাহ মানুষের অবস্থা পরিবর্তন করেন না, যতক্ষণ না তারা নিজের ভেতরকার অবস্থা পরিবর্তন করে। পবিত্র কুরআনে বলা হয়েছে-
اِنَّ اللّٰهَ لَا یُغَیِّرُ مَا بِقَوۡمٍ حَتّٰی یُغَیِّرُوۡا مَا بِاَنۡفُسِهِمۡ
“নিশ্চয়ই আল্লাহ কোনো জাতির অবস্থা পরিবর্তন করেন না, যতক্ষণ না তারা নিজেরা নিজেদের অন্তর পরিবর্তন করে।”
সূরা আর-রাআদ , আয়াত ১১
এই বক্তব্যের ইতিবাচক ও নেতিবাচক উভয় দিকই রয়েছে। অর্থাৎ, যতক্ষণ মানুষ পথভ্রষ্টতার দিক থেকে ফিরে না আসে, আল্লাহ তাদের থেকে তাঁর নেয়ামত প্রত্যাহার করেন না; একইভাবে যারা ইচ্ছাকৃতভাবে পাপ করে, তারা তওবা না করা পর্যন্ত কিংবা আল্লাহর অনুগ্রহ পাওয়ার যোগ্য না হওয়া পর্যন্ত আল্লাহ তাদের প্রতি তাঁর দান স্থগিত রাখেন।
এটি আল্লাহর বিধান, তথা ঐশী আইন যা ব্যক্তি ও সামষ্টিক উভয় জীবনেই কার্যকর। সভ্যতার বিকাশও মানুষের নৈতিক চরিত্র এবং তাদের অভ্যন্তরীণ পরিবর্তনের ওপর নির্ভরশীল।
মানুষ তার সামর্থ্যের বাইরে কোনো কিছুর জন্য দায়ী নয়, এবং সে বিষয়ে তাকে জিজ্ঞাসাও করা হবে না। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা বলেন;
لَا یُكَلِّفُ اللّٰهُ نَفۡسًا اِلَّا وُسۡعَهَا ؕ لَهَا مَا كَسَبَتۡ وَ عَلَیۡهَا مَا اكۡتَسَبَتۡ ؕ
“আল্লাহ কোনো প্রাণীকে তার সহনক্ষমতার বাইরে দায়িত্ব দেন না; মানুষ যে সৎকর্ম করবে তার ফল সে পাবে, এবং যে অসৎকর্ম করবে তার দায়ও তার ওপরই বর্তাবে” সুরা বাকারা আয়াত ২৮৬।
ইবন আব্বাস (রাঃ) এই আয়াতের ব্যাখ্যায় বলেন—আল্লাহ ঘোষণা করেছেন: মানুষের আত্মাকে এমন কোনো আনুগত্যের কাজে পরীক্ষা করা হয় না, যা তার সামর্থ্যের বাইরে। কারণ আত্মা শুধুমাত্র তার প্রাপ্য সৎকর্মের প্রতিদান পায়, আর ভুলে যাওয়া, ভুল করা ও বাধ্য হওয়া, এ সব ক্ষমার বিষয়; একইভাবে, যে অসৎকর্মের সে যোগ্য, কেবল সেইটুকুই তার বিরুদ্ধে লিপিবদ্ধ হয়, ভুল, বিস্মৃতি ও জবরদস্তি এতে গণ্য হয় না।
এই আয়াত প্রত্যেক মানুষকে উৎসাহ দেয় সে যেন আল্লাহর আনুগত্য করে, সব ধরনের মন্দ কাজ থেকে দূরে থাকে, এবং সৎ, আদর্শবান, পরিশ্রমী ও দায়িত্বশীল মানুষ হয়ে ওঠে।
একইভাবে, এই আয়াত বিজ্ঞানীদেরও অনুপ্রাণিত করে তাঁরা যেন তাঁদের বুদ্ধিবৃত্তিক ক্ষমতা, শক্তি, সম্পদ ও সময় সঠিকভাবে ব্যবহার করে নতুন প্রযুক্তি আবিষ্কার করে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য রেখে যায়, সমস্যার সমাধান খুঁজে বের করে, আত্মিক উন্নতি সাধন করে এবং সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তন আনে।
প্রয়োগমূলক গবেষণায় কুরআনিক প্রেরণার প্রয়োগ এবং কৃষিজ পণ্যের উৎপাদন বৃদ্ধির মাধ্যমে সামাজিক পরিবর্তন
উপরোক্ত কুরআনের আয়াতসমূহ নানা ধরনের গবেষণার ভিত্তি, যার মধ্যে প্রয়োগমূলক গবেষণাও অন্তর্ভুক্ত। এগুলো গবেষণা ও উন্নয়নের ক্ষেত্রে ঐশী প্রেরণা হিসেবে কাজ করে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কৃষিবিভাগ (USDA) তাদের সরকারি ওয়েবসাইটে জানায়—Applied Research and Development Program (ARDP) হলো ফসল সুরক্ষা ও কীটপতঙ্গ ব্যবস্থাপনা কর্মসূচির (CPPM) অধীনে তিনটি প্রধান শাখার একটি, যা ইন্টিগ্রেটেড পেস্ট ম্যানেজমেন্ট (IPM) গবেষণা ও সম্প্রসারণ প্রকল্পগুলোকে সহায়তা করে।
নিশ্চয়ই প্রয়োগমূলক কৃষি গবেষণার ফলেই আধুনিক বিশ্বে কৃষিজ পণ্যের (শস্য, পশুপালন, মৎস্য) ব্যাপক বৃদ্ধি সম্ভব হয়েছে। পৃথিবীর খাদ্য উৎপাদন উদ্বেগজনক হারে বাড়তে থাকা জনসংখ্যার সঙ্গে তাল মিলিয়ে নাটকীয়ভাবে কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে।
উদাহরণস্বরূপ বাংলাদেশের কথা উল্লেখ করা যায়।
১৯৭১ সালে দেশের জনসংখ্যা ছিল ৭ কোটি ৫০ লাখ, এবং খাদ্য উৎপাদন ছিল ১ কোটির একটু বেশি মেট্রিক টন। আধুনিক কৃষি প্রযুক্তি গ্রহণ, নীতিগত সহায়তা, উন্নত জাত, পর্যাপ্ত উপকরণ এবং সর্বোপরি পরিশ্রমী কৃষকসমাজের কারণে আজ বাংলাদেশ বছরে ৩ কোটি ৫০ লাখ মেট্রিক টনেরও বেশি খাদ্যশস্য উৎপাদন করে। গত চার দশকে বাংলাদেশ ধান উৎপাদনে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হারকে ছাড়িয়ে যেতে সক্ষম হয়েছে। মাত্র ৪৫ বছরে দেশটি তার প্রধান খাদ্যের উৎপাদন তিনগুণেরও বেশি বাড়িয়েছে।
একইভাবে, মালয়েশিয়ার সরকারি পরিসংখ্যান জানায় ২০১৭ সালে ৩৩টি কৃষিজ পণ্য বিবেচনায় নেওয়া হয় এবং এর মধ্যে ১৬টির Self-Sufficiency Ratio (SSR) ছিল ১০০ শতাংশেরও বেশি (Malaysia, 2013–2017)।
পৃথিবীর মাত্র ২৯ শতাংশ ভূমি, এবং এরও মাত্র এক তৃতীয়াংশ কৃষির উপযোগী; বাকিটা বরফ, মরুভূমি, বন, পর্বত বা কৃষির অনুপযোগী। সহজভাবে বললে মানবজাতির খাদ্য উৎপাদনের জন্য পৃথিবীর মাত্র ১০ শতাংশ ভূমি ভৌগোলিক ও জলবায়ুগতভাবে উপযুক্ত।
তার ওপর বিশ্বের ৬০ শতাংশ মানুষ এশিয়ায় বাস করে যেখানে ধান উৎপাদনে ব্যবহৃত প্রতি হেক্টর জমি বর্তমানে প্রায় ২৭ জন মানুষের খাদ্য যোগায়; কিন্তু ২০৫০ সালে একই জমি কমপক্ষে ৪৩ জনকে খাদ্য দিতে হবে।
অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগে Plant Development-এর অধ্যাপক এবং C4 Rice Project-এর প্রধান গবেষক প্রফেসর জেন ল্যাংডেল বলেছেন—
“বিশ্বের ৩০০ কোটিরও বেশি মানুষ বেঁচে থাকার জন্য ধানের ওপর নির্ভরশীল। জনসংখ্যা বৃদ্ধি ও নগরায়ণের কারণে ২০১০ সালে যে জমি ২৭ জনকে খাদ্য দিত, ২০৫০ সালে সেই পরিমান জমিকেই ৪৩ জনের জন্য খাদ্য যোগান দিতে হবে।”
এদিকে শহর ও শিল্পপ্রসারের কারণে ধান উৎপাদনের জমি ক্রমাগত কমছে, মাটির অবক্ষয় তো আছেই।
এই পরিস্থিতিতে, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বিজ্ঞানীরা ধান গাছের জৈব-ভৌত গঠন পরিবর্তনের কঠিন চ্যালেঞ্জ হাতে নিয়েছেন যাতে গাছটি সূর্যালোককে আরও দক্ষতার সঙ্গে ব্যবহার করতে পারে। কোন ফসল কতটা সূর্যশক্তি ধরে রাখতে পারে, তার ওপরই তার বৃদ্ধি ও ফলন নির্ভর করে।
ধান বর্তমানে C3 photosynthetic pathway ব্যবহার করে, যা ভুট্টার C4 pathway-এর তুলনায় কম কার্যকর। তাই আন্তর্জাতিক ধান গবেষনা ইন্সটিটিউট ( IRRI) থেকে শুরু করে যুক্তরার্জ্যের অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি,, চীনা বিজ্ঞান একাডেমি থেকে কেমব্রিজ—বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞানীরা একটি উচ্চাভিলাষী প্রকল্পে কাজ করছেন ধান গাছকে C3 থেকে C4-এ রূপান্তর করার জন্য।
অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় এক বিবৃতিতে বলেছে;
“যদি ধানকে C4 photosynthesis-এ রূপান্তর করা যায়, তাহলে তাত্ত্বিকভাবে তার উৎপাদন ৫০ শতাংশ বাড়তে পারে।”
Journal of Experimental Botany-তে প্রকাশিত একটি নতুন গবেষণায় বিজ্ঞানীরা বলেছেন;
“এই পর্যালোচনায় আমরা C4 ফসলের আলোকসংশ্লেষ দক্ষতা বাড়ানোর প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেছি যা ফলন উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধির একটি সম্ভাবনাময় উপায়।”
C4 উদ্ভিদের তুলনায় C3 উদ্ভিদে আলোকসংস্লেষণের দক্ষতা বৃদ্ধির ওপর গবেষণা তুলনামূলকভাবে কম হলেও, প্রচুর প্রমাণ রয়েছে যে এই কৌশল সফলভাবে বাস্তবায়ন করা সম্ভব এবং ফলন বৃদ্ধিতে তা উপকারী হতে পারে। কৃষিজ পণ্যের উৎপাদন বাড়াতে এবং সৃষ্টিকর্তা মানুষের জন্য যে সকল সম্পদ দান করেছেন সেগুলো সংরক্ষণ করতে বিজ্ঞানীরা বারবার নতুন গবেষণা পরিচালনা করছেন।
এখানে আলোচনার সুবিধার্থে C4 ধানের উপর গবেষনাটির অবস্থা অগ্রগতি (২০০৮ –২০২৫) ও চ্যালেঞ্জ সমুহ একটু বিস্তারিতভাবে আলোচনার প্রয়াস নিয়েছি ( যদিও এই প্রকল্পের নাতিদীর্ঘ বিবরণটি অনেকের কাছেই বিরক্তির উদ্রেক ঘটাবে, তথাপি প্রয়োজনীয় রেফারেন্সসহ প্রকল্পির একটি সার্বিক চিত্র এখানে তুলে ধরেছি, এই আশায় যে, লেখাটি যদি কপালগুলে সংস্লিষ্টদের নজরে আসে তাহলে এই সামু ব্লকে আমার করা গবেষনাধর্মী পুর্বের কতক পোষ্টের ন্যয় এটাও যদি নজরে আসে তাহলে তাদের মধ্যে সচেতনা সৃজনে সহায়ক হবে )
C4 ধান প্রকল্প বিবরণী
১৯৯৫ সালে C4 ধান উদ্ভাবনের প্রথম প্রস্তাব করেছিলেন ইরির ( IRRI) তত্কালীন উদ্ভিদ শারীরতত্ত্ববিদ ড. জন সিহির। তবে গবেষণার কাজ শুরু হয় ২০০৮ সালে। সে সময় বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশন C4 ধান গবেষণায় ১১.১ মিলিয়ন ডলার অনুদান দেয়। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর জেন ল্যাংডেল এই গবেষণার সমন্বয় করছেন। এ প্রকল্পে আটটি দেশের ১৫টি প্রতিষ্ঠানের মোট ২০টি গবেষণা গ্রুপের বিজ্ঞানী ও গবেষকেরা যুক্ত হন।
অবশ্য এ গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পে বাংলাদেশ ধান গবেষনা ইসন্টিটিউট( BRRI) সরাসরি অন্তর্ভুক্ত আছে মর্মে প্রকল্পটির ওয়েবসাইটে দেখা যায়না । তবে BRRI এর বার্ষিক প্রতিবেদন/পরিচিতিতে তারা “C₄ Rice”-গবেষণা এলাকাকে দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনায় যুক্ত করার কথা উল্লেখ করা পর্যন্তই আছেন মর্মে দেখা যায় (সেখানে এমনটি লেখা আছে “for breaking yield ceiling … rice and C4 rice”): এটি পুরাতন “BRRI at a Glance” ডকুমেন্টে উল্লেখ আছে। old.bansdoc.gov.bd তবে এটি আধিকারিক তথা “Consortium সদস্য” হিসেবে নয়, বরং সম্ভাব্য বা পরিকল্পনামূলক অংশগ্রহণকে বোঝায়। তাইতো, আমি আমার পুরাতন পোষ্টে বলেছি নীজের মধ্যে আলো জ্বালিয়ে কোন উন্নততর মহত কাজে নিয়োজিত করার লক্ষ্যে দৈনিক একবার করে হলেও কোরানের আয়াত ,কিংবা ধর্মবানী কিংবা যে কোন নীতিকথা পাঠ করে নীজেদেরকে ভালকাজে তৈরী বা উদ্যোগী হতে । যদি বাংলাদেশ রাইস রিসার্চ ইসন্টিটিউটের সংস্লিস্ট উর্ধতন কতৃপক্ষ নিজেদের মধ্যে যথাসময়ে যথাযথভাবে সচেতন হয়ে এই আন্তর্জাতিক মুল্যবানন গবেষনা প্রকল্পের সহিত যুক্ত হতো তবে তার সুফল প্রাপ্তি বহুলাংশে সহজ ও মসৃন হতো । যদি তারা কৃষিকাজে আত্মনিয়োগ করে এর উন্নতির লক্ষ্যে সর্বোচ্য প্রয়াস বা গবেষনায় রতি হত তাহলে এই গুরুত্বপুর্ণ আন্তর্জাতিক গবেষনা কর্মে সরাসরি যুক্ত হওয়ার প্রয়াস নিত, অন্যের করা গবেষনার ফল ধার করে নিয়ে এসে দেশের ধান উৎপাদন বৃদ্ধি করার জন্য দেশবাসীকে শুধু আশার আলো দেখিয়ে যেতোনা ।
বাংলাদেশ ধান গবেষনা ইনস্টিটিউট ধানকে C3 হতে C4 এ রূপান্তরিত ফল দিয়ে দেশের ধান উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য ভবিষ্যত পরিকল্পনায় শুধু আশার আলোই দেখাচ্ছে ।
https://www.bigganchinta.com/biology
যাহোক, কামনা করি এই প্রকল্পের সুদুর প্রসারী গুরুত্ব উপলব্ধি করে তারা যেন এই প্রকল্পের সাথে যুক্ত হয় সর্বোতভাবে ।
প্রকল্পটির সাফল্য সম্পর্কে সকলেই আশাবাদী , ২০৩৫ সালের মধ্যে এশিয়ার ১৩টি দেশে ট্রান্সজেনিক C4 রাইস ছাড়করণ সম্ভব হবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্ট বিজ্ঞানীরা।
C4 Rice Project গবেষণার অবস্থা এবং অগ্রগতি
C4 Rice Project টি একটি বড় মাপের আন্তর্জাতিক প্রকল্প, যার লক্ষ্য ধানকে C4 ফটোসিনথেসিস পাথওয়ে দেওয়া। সুত্র :
https://www.ox.ac.uk/news/2017-10-19-breakthrough-efforts-âsuperchargeâ-rice-and-reduce-world-hunger?
এই প্রকল্পে দুইটি দিক থেকে কাজ করা হচ্ছে:
১.আনাটমি পরিবর্তন (leaf anatomy): যেমন, Kranz anatomy তৈরি করা, যেখানে ধানের পাতা এমনভাবে সাজাতে হবে যেন C₄-এর মত কাজ করতে পারে। সুত্র : Click This Link
২.বায়োকেমিক্যাল পরিবর্তন : C₃পাথওয়ের জন্য প্রয়োজনীয় জেন এবং এনজাইম (যেমন PEPCase ইত্যাদি) ধানে প্রবেশ করানো।
সুত্র : Click This Link
প্রাথমিক সফলতা
এক গবেষণা-পেপারে, বিজ্ঞানীরা একট একটি একক ভুট্টা জিন (A single Maize gene) GOLDEN2-LIKE ধানে প্রবেশ করিয়েছেন। এটি ধানের শিরায় (vein sheath) কোষগুলিতে ক্লোরোপ্লাস্ট এবং মাইটোকন্ড্রিয়া বৃদ্ধি করতে সাহায্য করেছে, যা “proto-Kranz” আর্কিটেকচারের দিকে নিয়ে যায়।সুত্র : সুত্র : https://pubmed.ncbi.nlm.nih.gov/29056456/
এই ধাপটি একটি “প্রথম evolutionary ধাপ” হিসেবে দেখা হচ্ছে C₃ থেকে C₄ রূপান্তরের পথে।
সুত্র : Click This Link
অন্যান্য জেন যুক্ত করা হচ্ছে কাজ চলছে যাতে আরও C₄-সংক্রান্ত জিন (যেমন পাঁচটি C₄ এনজাইম) একসাথে ধানে প্রবেশ করানো যায়। এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে, পাঁচটি জিনকে একসাথে যুক্ত করার চেষ্টা করা হয়েছে।
সুত্র : file:///C:/Users/mdaal/Downloads/2020-11-c4-rice-reality (3).pdf
তবে, শুধুমাত্র জিন ঢোকানো যথেষ্ট নয় পাতা গঠন, কোষের বিন্যাস এবং নিয়ন্ত্রণ তুল্যভাবে গুরুত্বপূর্ণ।
সুত্র : Click This Link
এর মডেলিং এবং থিওরিটিক্যাল বিশ্লেষণ
এক শ্রেষ্ঠিকরণ অধ্যয়নে (3D reaction-diffusion মডেল) দেখা গেছে, ধানের বর্তমান C₃ আর্কিটেকচারে কিছু C₄ মেটাবলিক পথ “সংযুক্তভাবে” চালালে (C₃ ও C₄ এক সাথে) ফটোসিনথেসিসে লাভ হতে পারে।
এক রিভিউতে বলা হয়েছে যে, ক্রমাগত গবেষণা সত্ত্বেও ফটোসিনথেটিক দক্ষতা এখনও অনেকাংশে বাড়েনি (মাপক-ফল হিসেবে) এবং চ্যালেঞ্জ রয়েছে। সুত্র : https://pubmed.ncbi.nlm.nih.gov/27628301/
নিয়ন্ত্রণকারী জিন এবং রেগুলেটরি নেটওয়ার্ক
সম্প্রতি এক নতুন গবেষণায় (২০২৪), এক ধরনের “single-cell sequencing” প্রযুক্তি ব্যবহার করে দেখা গেছে, ধান (C₃) এবং C₄ গাছ (যেমন সোরঘাম)-এ জিন নিয়ন্ত্রণকারী কিছু ফ্যাক্টর (DOF regulators) সাদৃশ্য দেখায়।
সুত্র: Click This Link
এই তথ্যটি ইনজিনিয়ারিংয়ের জন্য অনেক মূল্যবান, কারণ এটি নির্দেশ করে কোন জিন নিয়ন্ত্রণকারী উপাদান পরিবর্তন করলে C₄-মতো অভ্যন্তরীণ কোষ পরিচয় তৈরি করা যেতে পারে। সুত্র : Click This Link
Insights into how photosynthesis evolved could help develop climate-resilient crops
বায়োকেমিক্যাল পথের অংশগুলো ফিট করা সংক্রান্ত অগ্রগতি
গবেষকরা ধানে C₄-এর প্রধান এনজাইম (যেমন PEPC, PPDK, NADP-ME ইত্যাদি) সক্রিয় করে দেখিয়েছেন ও একাধিক জিন একসাথে (multi-gene stacks) প্রবর্তনের কৌশল উন্নত করেছেন; ফলত কোষস্তরে C₄-ধরনের প্রতিক্রিয়া অংশটির প্রাথমিক কার্যকারিতা ল্যাব পর্যায়ে প্রদর্শিত হয়েছে। সুত্র : https://c4rice.com/phase-i-ii/?
অ্যানাটমি (Kranz anatomy) হল সবচেয়ে বড় প্রযুক্তিগত চ্যালেঞ্জ
C₄ কার্যকারিতার জন্য পাতের বিশেষ ধরনের কোষবিন্যাস (বাণ্ডল-শীথ ও মেসোফাইলের বিভাজন ও ক্লোরোপ্লাস্ট বণ্টন) দরকার; যে জিনগত নিয়ন্ত্রণই এই আর্কিটেকচার তৈরি করে তা সম্পূর্ণভাবে চিহ্নিত ও কার্যকরভাবে নিয়ন্ত্রিত করা এখনো অসম্পূর্ণ এজন্য অনুচ্চ অগ্রগতির প্রয়োজন।সুত্র : Click This Link
অফ-ট্র্যাকেট/প্রবাহ পর্যায়ের অর্জন ও বিকল্প পদ্ধতি
সম্পূর্ণ C₄ রূপান্তরের চাইতে কিছু দল (উদাহরণ: RIPE প্রকল্প) ফটোরেস্পিরেশন কমানো বা Rubisco উন্নতকরণ ইত্যাদি বিকল্প কৌশলে ফসল-উৎপাদন বাড়ানোর আরও বাস্তবসম্মত/ত্বরিত পথ অনুসরণ করছে; এগুলো সিঁড়ি ধরে ফলন বাড়াতে দারুন কার্যকর প্রমাণিত হয়েছে। সুত্র : https://ripe.illinois.edu/press?
এখন পর্যন্ত “সম্পূর্ণ এবং উৎপাদন-যোগ্য C₄ ধান”একদম শেষ ধাপে পৌঁছায়নি; অনেক বায়োলজিক্যাল এবং প্র্যাকটিক্যাল বাধা অব্যাহত আছে।
সময়রেখা : এখনও এটি একটি দীর্ঘমেয়াদি প্রকল্প
অফিসিয়াল আপডেট ও সাম্প্রতিক পর্যালোচনায় বলা হয়েছে যে ‘কৃষিতে ব্যবহারের যোগ্য’ C4 ধান তৈরির জন্য কর্মতালিকা, বায়োমেকানিক্স ও বহু-বর্ষের পরীক্ষার প্রয়োজন; অনেকেই অনুমান করেন ইতিবাচক আলোচনার পরও বাস্তব মাঠ-প্রটোটাইপ পেতে বছরে দশেক তারো কম বা বেশী সময় লাগবে। এই টাইমলাইন অনুমানভিত্তিক; নির্দিষ্ট তারিখ এখনও ঘোষিত হয়নি)। সুত্র : Click This Link
https://www.bigganchinta.com/biology
2025 Annual Meeting in Bangkok
ছবিসুত্র : https://www.bigganchinta.com/biology
কারা কাজ করছে / মূল প্লেয়ার কারা
C₄ Rice Consortium / C4 Rice Project : আন্তর্জাতিক কনসোর্টিয়াম ৪টি মহাদেশ হতে ৮টি দেশের ১৫টি রিসার্চ ইনস্টিটিউট/পবেষনা প্রতিষ্ঠানের ২০টি গবেষক/কৃষিবিজ্ঞানী দল (ইউকে, নেদারল্যান্ডস, ফিলিপাইন, চীন, অস্ট্রেলিয়া ইত্যাদি ) এই প্রকল্পে কাজ করছেন । সুত্র : https://ripe.illinois.edu/press?
বিশ্ববিদ্যালয়/গবেষণা গ্রুপ ও প্রকল্প যেমন RIPE (ইলিনয়স ও অন্যান্য অংশীদার), IRRI সহ CGIAR সংস্থাগুলি ইনপুট/কলাবরেশন এবং বায়োএনার্জেটিক্/বায়োটেক সহায়তা করছে। সুত্র : https://ripe.illinois.edu/press?

C3 and C4 Gas Exchange. Credit: Moonsub Lee/University of Illinois
প্রকল্পটি হতে কি পাওয়া গেছে ২০২৩–২০২৫ পর্যন্ত সময়কালে
২০২৩ এ একাধিক পর্যালোচনা ও স্টেট-অফ-দ্যা-আর্ট নিবন্ধ C₄ রাইস প্রকল্পের অতীত অর্জন ও অগ্রগতির সারমর্ম করেছে , বিশেষত biochemical module ইনস্টলেশনে প্রযুক্তিগত অগ্রগতি। সুত্র : Click This Link
প্রকল্পের ওয়েবসাইট ও আপডেটগুলোতে (phase I/II) বর্ণিত আছে যে জিন-মডিউল একত্রিত করা, উপযুক্ত প্রমোটার শনাক্তকরণ ও সিঙ্ক্রোনাইজেশনে কাজ চলমান। কিন্তু এখনও “ওপেন-ফিল্ড” স্তরের সফল প্রোটোটাইপ রিপোর্ট করা হয়নি। সুত্র : https://c4rice.com/phase-i-ii/?
আরো গভীরে গিয়ে দেখতে চাইলে নীচের লিংকে গিয়ে পড়তে পারেন ;
Furbank et al., “The evolving story of C4 rice” (Photosynthesis Research, 2023) — সাম্প্রতিক পর্যালোচনা।
অফিসিয়াল C4 Rice Project সাইট (project goals, phase progress)।
RIPE প্রকল্পের প্রেস রিলিজ ও কৌশল-পেজ (ফটোসিন্থেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং-এর বিকল্প/সংপূরক পন্থা)।
এই আন্তর্জাতিক গবেষণা প্রকল্পটি গত কয়েক বছরে স্পষ্ট অগ্রগতি দেখিয়েছে বিশেষত C₄ বায়োকেমিস্ট্রি রাইসে ঢুকানোর ক্ষেত্রে,তবে পাতার অ্যানাটমি ও সব প্রয়োজনীয় বৈশিষ্ট্য একসাথে স্থায়ীভাবে স্থাপন করে মাঠে ব্যবহারযোগ্য C₄ ধান তৈরি করা এখনও অর্জিত হয়নি; এটি এখনো উচ্চ-প্রাধান্য ও বহু-দলীয় গবেষণা ও তহবিলপ্রাপ্ত দীর্ঘমেয়াদি প্রকল্প।
এখন পূনরায় ফিরে যাওয়া যাক কোরানের প্রেরণাদায়ক আয়াতগুলির দিকে । পবিত্র কুরআনে আল্লাহ বলেছেন ,তিনি মানুষের অবস্থা পরিবর্তন করেন না এবং করবেন না, যতক্ষণ না তারা নিজেদের ভেতরের গুণাবলি পরিবর্তন করে, যদি তারা তা করতে সক্ষম হয়। একইভাবে, মানুষ যখন অন্যায় ও অবাধ্যতার পথে চলে না, তখন তিনি তাঁর অনুগ্রহ কমিয়ে শাস্তি দেন না এবং দেবেন না। কুরআনে বলা হয়েছে:
“নিশ্চয়ই আল্লাহ কোন সম্প্রদায়ের অবস্থা পরিবর্তন করেন না, যতক্ষণ না তারা নিজেদের ভেতরের অবস্থা পরিবর্তন করে; আর যখন আল্লাহ তাদের নিজেদের কৃতকর্মের কারণে কোন বিপদ উপস্থিত করতে চান, তখন তা প্রতিহত করার কেউ থাকে না; এবং তাদের জন্য আল্লাহ ছাড়া কোনো রক্ষাকারী নেই।”
এই বাণীর একটি ইতিবাচক ও একটি নেতিবাচক দিক রয়েছে: অর্থাৎ, মানুষ যখন নৈতিকভাবে অধঃপতিত না হয়, তখন আল্লাহ তাঁর দান রহমত প্রত্যাহার করেন না; ঠিক তেমনি, যারা ইচ্ছাকৃতভাবে পাপ করে চলেছে, তারা নিজেদের ভেতরের অবস্থা না বদলানো পর্যন্ত আল্লাহর অনুগ্রহ লাভ করতে পারে না। ব্যাপক অর্থে এটি আল্লাহর সেই চিরন্তন কারণ - কার্য সম্পর্কের আইন যার অধীনে ব্যক্তি ও সমাজের জীবন পরিচালিত হয় এবং যা সভ্যতার উত্থান পতনকে নির্ধারণ করে মানুষের নৈতিক গুণাবলি ও তাদের আত্মিক পরিবর্তনের উপর ভিত্তি করে।
অতএব, আল্লাহ আমাদের নির্দেশ দিয়েছেন মানুষকে সৎকর্মে সাহায্য ও উৎসাহ দিতে এবং অসৎ কাজে সহযোগিতা করা থেকে বিরত রাখতে। কুরআনে বলা হয়েছে:
“সৎকর্ম ও তাকওয়ার কাজে পরস্পরকে সহযোগিতা করো, আর পাপ ও শত্রুতার কাজে একে অপরকে সহযোগিতা করো না; এবং আল্লাহকে ভয় করো নিশ্চয়ই আল্লাহ কঠোর শাস্তিদাতা।”
এছাড়া আরও বলা হয়েছে:
“সুতরাং তোমরা সৎকর্মে একে অপরের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করো।”
সমাজে সমস্যা সমাধান করা এবং শান্তি প্রতিষ্ঠা করা একটি মহৎ কর্ম ও অবদান। জটিল সমস্যা সমাধান সহজ নয়, কিন্তু অসম্ভবও নয়। বর্তমান বিশ্বের সমস্যাগুলো সমাধানে গবেষকরা বহুবিধ ও আন্তঃবিষয়ক পদ্ধতি প্রয়োগ করেন। পবিত্র কুরআন আমাদের উৎসাহ দেয় সকল প্রকার সৎকর্মে ব্যক্তিগত ও সামষ্টিকভাবে সমস্যা সমাধান করাও এর অন্তর্ভুক্ত হওয়া।
উপসংহারে এসে বলা যায় যে কোন কল্যানকামী উন্নয়নমুলক কর্ম বা গবেষণায় পবিত্র কুরআনে প্রয়োগিক (Applied) গবেষণার ভিত্তি প্রেরণাদায়ক শক্তি হিসাবে প্রয়োগতুল্য । কৃষিপণ্য উৎপাদনের লক্ষ্যে যুক্তরাষ্ট্র, বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়ার কৃষিক্ষেত্রে প্রয়োগমূলক গবেষণার দেশভিত্তিক উদাহরণও এতে উল্লেখ করে দেখানো হয়েছে ।
পবিত্র কুরআনের নির্দেশ অনুযায়ী, প্রাকৃতিক সম্পদ ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করতে সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রের বিজ্ঞানীদের প্রয়োজন প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও তার অন্তর্নিহিত কারণগুলো শনাক্ত করা যেগুলো প্রাকৃতিক পরিবেশব্যবস্থাকে ক্ষতিগ্রস্ত করে, স্থলে ও সাগরে সম্পদ ধ্বংস করে, এবং প্রাকৃতিক ও সামাজিক উভয়ভাবে পরিবেশ দূষণ ঘটায়। এর ফলে প্রাকৃতিক সম্পদ, পারিবারিক বন্ধন, সামগ্রিক পরিবেশ এবং মানবসম্পদ সবই ঝুঁকির মুখে পড়ে। পবিত্র কুরআন প্রাসঙ্গিক আয়াতের মর্মবানী বিজ্ঞানীদের উৎসাহিত করে স্বীকৃত সমস্যাগুলোর কারণ শনাক্ত করে, প্রয়োগমূলক গবেষণার মাধ্যমে তার সমাধান খুঁজে বের করতে। আল্লাহ্ তা‘আলার দানকৃত নেয়ামত সংরক্ষণ ও বৃদ্ধি করতে হলে সঠিক পদ্ধতি আবিষ্কার করা জরুরি। মানুষকে নিজের অবস্থা উন্নত করতে হবে এবং দুঃসহ পরিস্থিতি থেকে বের হয়ে আসতে হবে; তাই সময়ের প্রয়োজন অনুযায়ী উপকারী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির উন্নয়ন অপরিহার্য।
মানুষকে তাই বারবার চেষ্টা করে নিজের অবস্থার উন্নয়ন ঘটিয়ে তার আলোকে সমস্যার সমাধান করা । সমাজে সমস্যার সমাধান করা এবং নতুন ইতিবাচক পরিবর্তন সৃষ্টি করা । নিশ্চয়ই ভয়াবহ সমস্যার সমাধান সহজ নয়, কিন্তু অসম্ভবও নয়। বর্তমান বিশ্বের কিছু জটিল সমস্যা সমাধানে গবেষকদের বহুবিধ ও আন্তঃবিষয়ক পদ্ধতি প্রয়োগ করতে হয়। পবিত্র কুরআন আমাদের ব্যক্তিগত ও সামষ্টিকভাবে সব ধরনের সৎকর্ম সম্পর্কিত সমস্যা সমাধানসহ করতে উদ্বুদ্ধ করে।
আমরা জানি, মৌলিক গবেষণা (basic research) পরিচালিত হয় জ্ঞান বৃদ্ধি করার জন্য ,প্রাকৃতিক বা সামাজিক যে কোনো জ্ঞানশাখা, পরিবেশ ব্যবস্থা, প্রাকৃতিক বা সামাজিক ঘটনা সম্পর্কে বোঝার লক্ষ্যে। সুতরাং, সমস্যাকে সনাক্ত করা এবং তার কারণ নির্ণয় হলো মৌলিক গবেষণার অংশ; আর সমস্যার সমাধান বের করা হলো প্রয়োগমূলক গবেষণা (applied research)।
এভাবে সমাজ পরিবর্তনের পথে মৌলিক গবেষণা ও প্রয়োগমূলক গবেষণার মধ্যে এক উজ্জ্বল সামঞ্জস্য রচিত হয়।আর এ ধরনের সামঞ্জস্যতা বিধানের কাজে নীজ নীজ ধর্মবিশ্বাস ও ধর্মগ্রন্থে থাকা বানী বা সুনীতিকথামালা সমুহ কোরানিক উদ্দিপনা/অনুপ্রেরণামুলক বানীগুলির মতই উদ্দিপিত করে তোলে গবেষনা কর্মে ব্রতি হতে, যা সামগ্রিক অর্থে সমস্ত বিশ্ব মানব সমাজের কল্যানের দিকেই
ধাবিত হয় ।
ধন্যবাদ দীর্ঘক্ষন সাথে থাকার জন্য ।
তথ্য সুত্র : যথাস্থানে লিংক যুক্ত করে দেয়া হয়েছে।
২৩ শে নভেম্বর, ২০২৫ রাত ১:১৮
ডঃ এম এ আলী বলেছেন:
ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্যের জন্য । ঠিক আছে ধীরে সুস্থে পাঠ করে বলুন কোথাও কোন
ভুল আছে কিনা । সংশোধনের মত কিছু পেলে জানাবেন । কারণ পোস্টটি বহু
দুরে সংস্লিষ্টদের কাছে যাবে । এই কৃষি প্রকল্পটির সাথে ধান গবেষনা ইন্টিটিটিটের
ঘনিষ্ট সম্পৃক্ততার বিষয়টি খতিয়ে দেখার ঈঙ্গিত পাওয়া গেছে আমার ঘনিষ্ট
একজনের কাছ হতে ।
শুভেচ্ছারইল
২|
২২ শে নভেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:২৪
মহাজাগতিক চিন্তা বলেছেন: গুরুত্বপূর্ণ বিষয় কুরআন হাদিসের আলোকে তুলে ধরার জন্য ধন্যবাদ।
২৩ শে নভেম্বর, ২০২৫ রাত ১:২১
ডঃ এম এ আলী বলেছেন:
ধন্যবাদ লেখাটির বিষয়ে সুন্দর মন্তব্যের জন্য ।
শুভেচ্ছা রইল ।
৩|
২২ শে নভেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:৩৮
স্বপ্নের শঙ্খচিল বলেছেন: আপনার এই তথ্য অনেকের জন্য দরকারি
কিন্ত এখানে জাপান কৃষিতে অনেক দুর এগিয়ে আছে
সে বিষয়ে কোন আলোকপাত করেননি দেখে
আমি বিস্মিত হলাম ।
.......................................................................
তাদের বিপনণ ব্যবস্হা আরও চমকপ্রদ ।
২৩ শে নভেম্বর, ২০২৫ রাত ১:২৫
ডঃ এম এ আলী বলেছেন:
ধন্যবাদ মুল্যবান মন্তব্যের জন্য ।
ভুল হয়ে গেছে , জাপানের কৃষি ব্যবস্থার
সাফল্যের উদাহরণ পোস্টে তুলে ধরা
হয়নি । বিষয় বিবেচনায় নিলাম।
এডিট করে সংযুক্ত করে দিব ।
শুভেচ্ছা রইল
৪|
২২ শে নভেম্বর, ২০২৫ রাত ১০:৩২
জ্যাক স্মিথ বলেছেন: সত্যিই কোরানের বিস্ময়কর জ্ঞান দেখে অভিভূত না হয়ে পারা যায় না- আকাশ থেকে পানি পরে, মাটির নিচ থেকে বীজ অঙ্কুরিত হয়, বাতাস জলরাশিকে বয়ে নিয়ে যায়, সাগরের জল লবনাক্ত, সূর্য পশ্চিমে অস্ত যায় এবং পুর্বদিক হতে উদিত হয় ইত্যাদি জ্ঞানগুলো আমরা শুধুমাত্র কুরআন থেকেই জানিতে পারি, কুরাআন ব্যতিত এই জ্ঞান অর্জন করা অসম্ভব।
২৩ শে নভেম্বর, ২০২৫ রাত ১:৩৩
ডঃ এম এ আলী বলেছেন:
ধন্যবাদ , প্রিত হলাম মন্তব্যে ।
কোরান এগুলি জানতে বলেনি,
বলেছে তাকিয়ে দেখতে ও ভাবতে
কেমন করে তারা কৃষি কাজে
উপকারে লাগে এবং এ সমস্ত
পাকৃতিক সম্পদের সর্বোত্তম
ব্যবহার এর পন্থা নিয়ে
ভাবতে আর সেসকল নিয়ামতের
সৃস্টিকর্তার প্রতি শুকরিয়া
জানাতে, যদি ইচ্ছা হয়,
কোন বাধ্যবাধকতা
নেই ।
শুভেচ্ছা রইল
৫|
২২ শে নভেম্বর, ২০২৫ রাত ১০:৫৮
কলাবাগান১ বলেছেন: এত কস্ট করার দরকার কি বিজ্ঞানীরা আপনার লিখা পড়ে সুরা কালাম পড়ে C3 উদ্ভিদ কে ফু দিলেই C4 এ রূপান্তরিত হয়ে যাবে..। কি অপচয় মানব মনন এর
গত ১০ বছর ধরে BIOL101 ক্লাশে পড়াচ্ছি C3 C4 এর মলিকুলার/মেকানিজম ডিফারেন্স। নেক্সট সেমিস্টার এর সিলেবাসে দোয়া-দরুদ এর রোল role in C3 and C4 plants যোগ করতে হবে...ধন্যবাদ এমন একটা ইফেক্টিভ রোল কে আমরা এতদিন ইগনোর করে আসছিলাম
©somewhere in net ltd.
১|
২২ শে নভেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:২৩
নতুন নকিব বলেছেন:
দীর্ঘ এবং মূল্যবান পোস্টটি সময় নিয়ে পড়ার ইচ্ছে থাকলো। গুরুত্বপূর্ণ বিষয় কুরআন হাদিসের আলোকে তুলে ধরার জন্য ধন্যবাদ।