নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

চলুকনা এই জীবন আপন নিয়মে, সীমানা যেথায় তাঁর।\n\n

আল মামুন রাজীব

আল মামুন রাজীব › বিস্তারিত পোস্টঃ

ভালোবাসার অভিমান

১৯ শে মার্চ, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:১৪

সকাল সকাল মেয়েটা এভাবে কক্ষনো আসেনি। মেয়েটার আসা দেখেই আমি টের পেয়েছি নিশ্চয় কিছু একটা বুঝি ঘটে গেছে। তাঁর বাড়িটা আমাদের বাড়ি থেকে সামান্য দূরেই অবস্থিত। চাইলেই আসা যাওয়া করা যায়। শিশির ভেজা ঘাসের উপর দিয়ে দবদব করে হেঁটে আসছে আমার দিকে। মুখে বিষণ্ণতার চাপ। চোখ দুটো লাল হয়ে আছে।
-
রাস্তার দ্বারে বসে ব্রাশ করছিলাম। মেয়েটাও এসে আমার পাশে বসলো। আমি তার বেগতিক অবস্থা দেখে কিছুই বললাম না। সেও কিছু বলছেনা। আমি যেই মেয়েটির পাশে বসে আছি। মেয়েটা প্রচন্ড রাগী। একদম রেগে গেলে মেয়েটা এভাবে আমার হতটা শক্ত করে ধরে জিম মেরে বসে থাকবে। রাগে চেহারা লাল হয়ে আছে। বারবার দাঁতগুলো কড়মড়ি দিচ্ছে।
-
আমি আনমনা হয়ে তাঁর হাতে বন্দি হয়ে আছি। কি করে রাগ ভাঙ্গাবো তাও অজানা। কারণ মেয়েটা সহজে রাগ করেনা। আজকে হয়ত রাগ করার কারণ হলো বহুবার ফোনে কল করেছিলো। লোডশেডিং এর কারণে ফোন চার্জ দিতে পারিনি বলে ফোনটা বন্ধ ছিলো। আর সে কারণে মেজাজ চরমে। আর সে রাগ করলে তা ছুটানো কঠিন। এখন একটাই উপায়। বাধ্য হয়ে স্যারি বলার ব্যর্থ চেষ্টা করা। কিন্তু বললাম না। আমার মন ফিরে গেলো সেই ছোটবেলায়।
-
আমার বয়স ছিলো মাত্র তিন বছর। তখন আমাদের দূর সম্পর্কের আলী চাচার সাথে একদিন রাস্তায় বসে আমার বাবা কথার ফাঁকে বলছিলো। "তোর যদি একটা মেয়ে হয়। তাহলে আমার ছেলেটার সাথে বিয়ে দিবো।" চাচাও রাজী ছিলো। সেই বছরই চাচার সংসার আলোকিত করে জন্ম নিলো।" রিমা", তা দেখেতো আমার বাবা ভীষণ খুশি! যেদিন রিমা পৃথিবীতে আসে, সেদিন আমার মা আমাকে সাথে নিয়ে রিমা'দের বাড়িতে যায়। তখন আমার মা এবং আমার চাচী (রিমার মা) সম্মতি দেয়। এখন রিমার বেঁচে থাকা নিয়ে কথা।
-
পাঁচ বছরের ছোট্ট ছেলে আমি, ততটা বুঝতাম না। মাঝে মাঝে খেলার সাথীদের সাথে রিমা'দের বাড়িতে যেতাম। তখন চাচী আমার কোলে রিমা'কে দিতেন। খুব সুন্দর কিউট একটা মেয়ে ছিলো ছোটকালে। আস্তে আস্তে আমি বড় হতে শুরু করি পড়া লেখাও করতে হয়। কিন্তু এখনও বিষয়টা জানিনা। আমি যখন ক্লাস সিক্সে উঠি তখন রিমা'কে ভর্তি করানো হয়।
-
কিন্তু এখন মোটামুটি বুঝি। তাই বলেই হয়ত কেউ আমাকে আমাদের গোপন কথাটা জানায়না। আমি মেট্রিক পরিক্ষা শেষ করে কলেজে চলে যাই । কিন্তু রিমা'র ব্যাপারে এখনো অবগত নয়। পাড়ার চাচাতো ভাই-বোন হিসেবেই চিনতাম। একদিন আমার বাবা আমাকে বলেছিলো। -বেটা! তোর জন্য একটা বউ ঠিক করে রেখেছি সেই ছোটবেলা থেকেই।
-
- কি বলেন?? আব্বা
- হ্যাঁ ঐযে আলী! তাঁর মেয়ে রিমা জন্ম নেওয়ার আগেই আমরা এই কথা বলে রেখেছি। তুই কি বলিস??
- কি যে বলেন আব্বা। আপনি কথা দিছেন। আর আমি কথা রাখবোনা??
- এইতো বাপের ব্যাটা।
রিমা বর্তমানে এলাকা বাছা মেয়ে। তাঁর মত শান্ত, শিষ্ট, সুন্দরী দ্বিতীয়টা নেই। তাই আমি একটু খুশি। আবার অন্যদিকে ভয়। রিমা রাজী না হলে??
আচ্ছা তাহলে এখন থেকে আমরা একে অপরের দেখা শুনা করবো।
এই ভেবে একদিন আলী চাচার ঘরে গিয়ে চাচীকে বললাম। রিমা কোথায়?
- রিমাতো আছে কেন??
- তারঁ সাথে কথা আছে।
চাচী রিমাকে ডেকে দিলেন। আমি চাচীকে বললাম।
-
-চাচী!! আব্বা রিমার ব্যাপারে আমাকে কিছু কথা বলছিলো। আপনি কি বলেন??
- চাচীও রিমার সামনে আমাকে তাই বললো। এখন আমি রিমাকে বললাম তুমি কি বল??
রিমা লজ্জায় মুখ লুকিয়ে ফেললো। এরপর থেকে রিমার সাথে আমার কথাবার্তা চলাফেরা হতো এলাকার সবাই এই বিষয়ে আগ থেকেই জানতো। তাই কেউ কিছু মনে করতোনা। মেয়েটা এলোমেলো হয়ে আমাদের বাড়িতে চলে আসে। আমার সাথে বসে বসে পড়ে। কখনো বিকেল বেলায় আমার মা বোনদের সাথে আড্ডা দেয়। আবার মায়ের মাথায় বেণী কেটে দেয়।আমার মা'ও ভীষণ খুশী।
-
সবসময় আমার খোঁজ নিবে ফোন করে। কিংবা বাড়িতে এসে। আজকে মেয়েটা রেগে যাওয়ার কারণ হলো ফোন বন্ধ। হটাৎ নীরবতা ভেঙে মেয়েটি বলে উঠলো।
- রাতে ফোন বন্ধ ছিলো ক্যান??
- চার্জ নাই, লোডশেডিং এর কারণে চার্জ দিতে পারিনি।
- চার্জ কি খেয়ে ফেলেছো?? আমার মোবাইলেতো চার্জ ছিলো।
- ফেসবুকিং করে চার্জ শেষ করে ফেলেছি
- আর কখনো এমনটা হবে??
- না, আর আমি কি ইচ্ছে করে করছি নাকি??
- হয়েছে হয়েছে। আর ঢং করা লাগবেনা। তাড়াতাড়ি ফ্রেশ হয়ে আমাদের বাড়িতে আসো। নাস্তা বানাচ্ছি।
- তুমি মনে হয় রাতে ঘুমাওনি। এখন ঘুমাও গিয়া। আমি এখানে খেয়ে নিবো।
- তোমাকে যা বলছি তাই কর।
- হুম যাও, আমি আসছি।
যাক বাঁচা গেলো ভাগ্যিস বকা দেয়নি। ফ্রেশ হয়ে তাঁদের বাড়িতে গেলাম। দেখলাম সে আমার জন্য রুটি বানাচ্ছে। আমিও তাঁর দিকে তাকিয়ে আছি। সত্যিই তোমাকে যদি জীবনে পাই। আমার জীবনটা পূর্ণ হয়ে যাবে। রূপ গুণ মিলিয়ে তুমিই একমাত্র নারী। আমি তোমাকেই চাই এই জীবন জুড়ে।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১৯ শে মার্চ, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:৫৬

বিজন রয় বলেছেন: ভাল লিখেছেন।
+++

২| ২০ শে মার্চ, ২০১৬ সকাল ১০:৩৮

আল মামুন রাজীব বলেছেন: ধন্যবাদ ব্রো

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.